Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী কারিয়াপ্পা ময়দানে এনসিসি পিএম র‍্যালিতে ভাষণ দিয়েছেন

প্রধানমন্ত্রী কারিয়াপ্পা ময়দানে এনসিসি পিএম র‍্যালিতে ভাষণ দিয়েছেন


নয়াদিল্লি, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দিল্লির কারিয়াপ্পা ময়দানে বার্ষিক এনসিসি পিএম র‍্যালিতে ভাষণ দিয়েছেন। এ বছর জাতীয় সমর শিক্ষার্থী বাহিনী (এনসিসি)-র ৭৫তম বর্ষপূর্তি। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এনসিসি-র সাফল্যের ৭৫ বছরকে স্মরণ করে ৭৫ টাকার একটি স্মারক মুদ্রা এবং স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছেন। তাঁর হাতে ‘ঐক্য শিখা’ তুলে দেওয়া হয়। এই শিখা কন্যাকুমারী থেকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে। কারিয়াপ্পা ময়দানে র‍্যালিটি দিনে এবং রাতে অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ ভাবনায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর ঐতিহ্যে ১৯টি দেশের ১৯৬ জন আধিকারিক ও শিক্ষার্থীকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, এ বছর ভারত এবং এনসিসি উভয়েই ৭৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করছে। দেশ গড়ার কাজে এনসিসি-র ভূমিকার প্রশংসা করে শ্রী মোদী বলেন, “আপনারা এনসিসি ক্যাডেট এবং দেশের যুব সম্প্রদায় যাঁরা মূলত ‘অমৃত প্রজন্ম’-এর প্রতিনিধি তাঁরা বিকশিত ও আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলবেন।” তিনি ‘ঐক্য শিখা’ নিয়ে আসার জন্য ক্যাডেটদের প্রশংসা করেছেন। এইসব ক্যাডেটরা ৬০ দিন ধরে দৈনিক ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কন্যাকুমারী থেকে দিল্লিতে শিখাটি নিয়ে এসেছেন। অনুষ্ঠানে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ভাবনায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে এনসিসি ক্যাডেটদের অংশগ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এবারই প্রথম ‘কর্তব্য পথ’-এ এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হল। তিনি এনসিসি ক্যাডেটদের জাতীয় যুদ্ধ স্মারক, পুলিশ সৌধ, লালকেল্লায় নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু সংগ্রহশালা, প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহালয়, সর্দার প্যাটেল সংগ্রহালয় এবং বি আর আম্বেদকর সংগ্রহালয় ঘুরে দেখার পরামর্শ দেন। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা তাঁদের জীবনে চলার পথে অনুপ্রাণিত হবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের যুব সম্প্রদায়ই দেশকে চালনা করার মূল শক্তি। “যখন স্বপ্ন সঙ্কল্পে পরিণত হয় এবং সেই স্বপ্ন পূরণে জীবন উৎসর্গ করা হয় তখন সাফল্য নিশ্চিত। ভারতের যুব সম্প্রদায়ের জন্য নতুন নতুন সুযোগের এটিই সময়। এখন সময় ভারতের। সারা বিশ্ব আজ ভারতের দিকে তাকিয়ে। এর মূল কারণ এ দেশের যুবশক্তি।” ভারতের সভাপতিত্বে জি-২০ গোষ্ঠীর প্রতি যুব সম্প্রদায়ের উৎসাহের দিকটিও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

“যে দেশ যুব সম্প্রদায়ের শক্তি ও উদ্দীপনায় ভরপুর সেই দেশ যুব সম্প্রদায়কেই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে” বলে শ্রী মোদী জানান। সরকার যুব সম্প্রদায়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য তাদের বিশেষ মঞ্চের ব্যবস্থা করছে। আজ ডিজিটাল বিপ্লব, স্টার্ট-আপ বিপ্লব অথবা উদ্ভাবন বিপ্লব – বিভিন্ন ক্ষেত্রকে যুব সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে। শ্রী মোদী বলেন, অতীতে রাইফেল এবং বুলেট প্রুফ জ্যাকেট আমদানি করতে হত। কিন্তু, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের সংস্কারের ফলে আজ ভারতে নানা ধরণের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদিত হচ্ছে। সীমান্ত অঞ্চলে বর্তমানে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ দ্রুত হারে এগিয়ে চলেছে। এর ফলে দেশের যুব সম্প্রদায়ের কাছে নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

যুব সম্প্রদায়ের প্রতি আস্থা প্রকাশের ফলে যে ইতিবাচক পরিস্থিতি গড়ে উঠেছে, সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ভারতের মহাকাশ ক্ষেত্রের উদাহরণ তুলে ধরেন। বর্তমানে মহাকাশ ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার ফলে বেসরকারি উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মতো গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে যা আসলে দেশের যুবশক্তির প্রতিভাকে কাজে লাগানোর ফসল। আজ গেম এবং অ্যানিমেশন, ড্রোন প্রযুক্তির হাত ধরে বিনোদন ও কৃষিক্ষেত্রে পণ্য পরিবহণের মতো নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং সংস্থাগুলিতে দেশের যুব সম্প্রদায়ের যুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের মেয়েদের জন্য প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং সংস্থাগুলিতে প্রচুর কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। গত আট বছরে পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীতে মহিলা সদস্যের সংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি শাখাতেই মহিলাদের দৃপ্ত পদচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নৌ-বাহিনীতে নাবিক হিসেবে এবং সশস্ত্র বাহিনীর কমব্যাট ফোর্সে মহিলারা এই প্রথম যোগ দিয়েছেন। এছাড়াও, তাঁরা পুণের এনডিএ-তে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এই প্রথম সৈনিক স্কুলগুলিতে মেয়েদের পড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলস্বরূপ, এইসব স্কুলে ১,৫০০ জন ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। গত এক দশকে এনসিসি-তে মহিলাদের অংশগ্রহণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

যুবশক্তির ক্ষমতার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল ও উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ১ লক্ষের বেশি ক্যাডেট যোগ দিয়েছেন। দেশ গড়ার কাজে বিপুল সংখ্যক যুবক-যুবতী এগিয়ে আসলে নির্ধারিত লক্ষ্য সহজেই পূরণ হবে। শ্রী মোদী আশা প্রকাশ করেন যে ক্যাডেটদের ব্যক্তিত্ব এবং প্রতিষ্ঠানের প্রভাবে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় দেশের জন্য অনেকে আত্মোৎসর্গ করেছিলেন। আজ দেশের যুব সম্প্রদায় দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছে।

মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করার যে কোনও উদ্যোগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগগুলি কখনই ভারতের জনসাধারণের মধ্যে বিভেদ গড়ে তুলতে পারে না। একতার মন্ত্রই একমাত্র পথ যা ভারতের শক্তি। এর মধ্য দিয়েই ভারতের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়।”

তাঁর ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সময়কালটি শুধু ভারতের অমৃতকালই নয়, এটি ভারতের যুব সম্প্রদায়েরও অমৃতকাল। দেশ যখন স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করবে তখন যুব সম্প্রদায়ও তাদের সাফল্য উদযাপন করবে। “আমাদের কোনও সুযোগ হাতছাড়া করা উচিৎ নয়, ভারতকে নতুন উচ্চতায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।”

অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং, এনসিসি-র মহানির্দেশক লেঃ জেনারেল গুরবীরপাল সিং, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ লেঃ জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে, নৌ-বাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আর হরিকুমার, বিমানবাহিনীর প্রধান এবং প্রতিরক্ষা সচিব শ্রী গিরিধর আর্মানে উপস্থিত ছিলেন।

 

PG/CB/DM/