Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটকের হুব্বাল্লি-ধারওয়াড়-এ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন

প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটকের হুব্বাল্লি-ধারওয়াড়-এ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন


নয়াদিল্লি, ১২ মার্চ, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কর্ণাটকের হুব্বাল্লি-ধারওয়াড়-এ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। যে প্রকল্পগুলি উদ্বোধন করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে – আইআইটি ধারওয়াড়, শ্রী সিদ্ধারুধা স্বামীজি হুব্বাল্লি স্টেশনে ১,৫০৭ মিটার দীর্ঘ বিশ্বের দীর্ঘতম রেল প্ল্যাটফর্ম, হাম্পি আন্দোলনের নিদর্শন সম্বলিত নবনির্মিত হসপেট স্টেশন এবং হসপেট-হুব্বাল্লি-তিনাইহাট শাখার বৈদ্যুতিকীকরণ। প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ধারওয়াড়-এ বিভিন্ন গ্রামে জল সরবরাহ প্রকল্প, হুব্বাল্লি-ধারওয়াড় স্মার্ট সিটি কর্মসূচির বিভিন্ন প্রকল্প, জয়দেব হাসপাতাল ও রিসার্চ সেন্টার এবং টুপারিহাল্লা বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প।

এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছরের শুরুতে তিনি হুব্বাল্লি এসেছিলেন। সেই সময় মানুষ তাঁকে যেভাবে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আশীর্বাদ করেছেন তা ভোলার নয়। বেঙ্গালুরু থেকে বেলগাভি, কালবুর্গি থেকে শিবামোগগা অথবা মাইশুরু থেকে টুমকুরু সফরকালে তিনি কন্নড়িগাদের থেকে যে ভালোবাসা ও আশীর্বাদ পেয়েছেন তা অভূতপূর্ব। রাজ্যের মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তোলা, যুব সম্প্রদায়ের জন্য নতুন নতুন কাজের সুযোগ গড়ে তোলা এবং এই অঞ্চলের মহিলাদের ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁদের সেই ঋণ পরিশোধ করবেন। “ডবল ইঞ্জিন সরকার সততার সঙ্গে রাজ্যের প্রতিটি জেলা, গ্রাম ও জনপদে উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালেনাডু এবং বায়ালু সিনি অঞ্চলের প্রবেশ পথ হিসেবে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ধারওয়াড় পরিচিত হয়ে এসেছে। এই শহর সকলকে খোলা মনে স্বাগত জানিয়েছে। পাশাপাশি, সকলের কাছ থেকে বিভিন্ন জিনিস শিখে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছে। আর তাই, “ধারওয়াড় শুধু একটি প্রবেশপথই নয়, এই শহর ভারতের সাংস্কৃতিক প্রাণবন্ত রূপের প্রতিফলন।” কর্ণাটকের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত ধারওয়াড় সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সঙ্গীত চর্চার অন্যতম পীঠস্থান। তিনি ধারওয়াড়-এর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

আজ দিনের শুরুতে তাঁর মাণ্ডিয়া সফরের কথা শ্রী মোদী তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নবনির্মিত বেঙ্গালুরু-মাইশুরু এক্সপ্রেসওয়ে কর্ণাটককে সফটওয়্যার হাব হিসেবে পরিচিত করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বেলাগাভিতে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করা হয়েছে। শিবমোগগা কেভাম্পু বিমানবন্দরের মতো প্রকল্পগুলি কর্ণাটকের উন্নয়ন যাত্রায় নতুন অধ্যায় সূচিত করেছে।

শ্রী মোদী বলেন, “ধারওয়াড়ে আইআইটি-র নতুন ক্যাম্পাস উন্নতমানের শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে। এই প্রতিষ্ঠান উন্নত ভবিষ্যতের জন্য তরুণ-তরুণীদের সাহায্য করবে।” নতুন এই আইআইটি-র ক্যাম্পাস কর্ণাটকের উন্নয়ন যাত্রার ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের রচনা করেছে। ধারওয়াড় আইআইটি-র ক্যাম্পাসে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে পাঠদান করা হবে। এই প্রতিষ্ঠানের শিলান্যাস ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীই করেছিলেন। কোভিড অতিমারীর মধ্যেও মাত্র ৪ বছরে প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হয়েছে। “ডবল ইঞ্জিন সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস থেকে উদ্বোধন পর্যন্ত একই গতিতে কাজ করে চলেছে। আমরা যে প্রকল্পগুলির শিলান্যাস করেছি, সেগুলি উদ্বোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অতীতে যে কোনও বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্প্রসারণ ঘটালেই তার সুখ্যাতি হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হত। এর ফলে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যুব সম্প্রদায়। নতুন ভারত সেই ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসেছে। “সকলের কাছে, সকলের জন্য উন্নতমানের শিক্ষা পৌঁছনো নিশ্চিত করতে হবে। আরও বেশি মানুষের কাছে যাতে উন্নতমানের শিক্ষা পৌঁছয় তার জন্য বেশি সংখ্যায় ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।” আর তাই, ভারতে গত ৮ বছর ধরে উন্নতমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা লাগাতারভাবে বেড়ে চলেছে। এইমস-এর সংখ্যা তিনগুণ হয়েছে। এই সময়কালে ২৫০টি নতুন মেডিকেল কলেজ খোলা হয়েছে। এছাড়াও, নতুন নতুন আইআইএম এবং আইআইটি গড়ে তোলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীর ভারত তার শহরগুলিকে আধুনিক করে তুলছে। হুব্বাল্লি-ধারওয়াড় স্মার্ট সিটি প্রকল্পের আওতায় এসেছে এবং আজ এই প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। “প্রযুক্তি, পরিকাঠামো এবং সুপ্রশাসন হুব্বাল্লি-ধারওয়াড় অঞ্চলকে নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।”

শ্রী মোদী বলেন, বেঙ্গালুরু, মাইশুরু এবং কালবুর্গিতে শ্রী জয়দেব ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভ্যাস্কুলার সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ যেভাবে কাজ করে চলেছে তার ফলে কর্ণাটকের মানুষের মনে এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আস্থা গড়ে উঠেছে। আজ হুব্বাল্লিতে এই সংস্থার আরও একটি শাখা গড়ে তোলার জন্য শিলান্যাস করা হল।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ধারওয়াড় এবং সংলগ্ন অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কাছে স্বচ্ছ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য একযোগে কাজ করছে। আজ ১ হাজার কোটি টাকার বেশি একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জল জীবন মিশনের আওতায় রেণুকা সাগর জলাধার এবং মালাপ্রভা নদী থেকে জল তুলে তা ১ লক্ষ ২৫ হাজার বাড়িতে নলের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে। ধারওয়াড়-এ নতুন যে জল শোধন প্রকল্পটি গড়ে উঠবে তার সুফল জেলার প্রতিটি মানুষ পাবেন। প্রধানমন্ত্রী আজ টুপারিহাল্লা বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। এর ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আগামীদিনে কমবে।

সিদ্ধারুধা স্বামীজি স্টেশনে দীর্ঘতম প্ল্যাটফর্ম জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি শুধুমাত্র একটি প্ল্যাটফর্মের সম্প্রসারণ নয়, এটি হল পরিকাঠামো উন্নয়নক অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সময়োচিত এক পদক্ষেপ। হসপেট-হুব্বাল্লি-তিনাইহাট শাখায় বৈদ্যুতিকীকরণ এবং হসপেট স্টেশনটি সংস্কার করা হয়েছে। এর ফলে, এই অঞ্চল দিয়ে শিল্প সংস্থাগুলির জন্য আরও বেশি করে কয়লা পরিবহণ করা সম্ভব হবে। বৈদ্যুতিকীকরণের ফলে ডিজেলের ব্যবহার কমবে এবং পরিবেশ রক্ষা করা যাবে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আর্থিক উন্নয়ন যেমন বৃদ্ধি পাবে, পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটবে।

শ্রী মোদী বলেছেন, উন্নতমানের পরিকাঠামো গড়ে তুললে তা মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও সহজতর করে তোলে। উন্নতমানের সড়ক এবং হাসপাতাল না থাকায় এতদিনে মানুষ নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। আজ দেশজুড়ে উন্নত পরিকাঠামোর সুফল সকলেই ভোগ করতে পারছেন। ছাত্রছাত্রী, কৃষক এবং মধ্যবিত্ত – প্রত্যেকেই উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল ভোগ করছেন এবং নির্ধারিত গন্তব্যে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী জানান যে গত ৯ বছরে পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণের কাজ জোরকদমে চলেছ। ‘পিএম সড়ক যোজনা’র আওতায় গ্রামাঞ্চলে সড়ক নির্মাণ দ্বিগুণ হারে হয়েছে। জাতীয় সড়কের পরিমাণ ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৯ বছরে বিমানবন্দরের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে ইন্টারনেট জগতে ভারতের পরিচিতি কম ছিল। আজ বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী ডিজিটাল অর্থনীতির দেশ হিসেবে ভারত পরিচিত হয়ে উঠেছে। এর মূল কারণ সরকার সস্তায় ইন্টারনেটের সুবিধা প্রদান করছে যার সুফল গ্রামাঞ্চলেও গিয়ে পৌঁছেছে। “গত ৯ বছরে গড়পড়তা হিসেবে প্রতিদিন ২.৫ লক্ষ ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আজ দেশের চাহিদা অনুযায়ী পরিকাঠামোর বিকাশ ঘটানোয় এই কাজে গতি এসেছে। আগে রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির অঙ্ক বিবেচনা করে রেল এবং সড়ক প্রকল্প ঘোষিত হত। আজ ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ সারা দেশের জন্য বাস্তবায়িত হচ্ছে। ফলে, দেশের যেখানে পরিকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন, সেই অঞ্চলে দ্রুতগতিতে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রী সামাজিক পরিকাঠামোর ওপর অগ্রাধিকারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন যে এক সময় আবাসন, শৌচাগার, রান্নার গ্যাসের সংযোগ, হাসপাতাল এবং পানীয় জলের সঙ্কট ছিল। বর্তমানে এইসব সমস্যাগুলির সমাধান করা হয়েছে। “আজ আমরা আমাদের যুব সম্প্রদায়কে সব ধরনের সম্পদ দিয়ে সাহায্য করছি যাতে আগামী ২৫ বছরে তাঁরা তাঁদের বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করতে পারেন।”

ভগবান বাসবেশ্বরার অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনুভব মণ্ডপম’ গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি লন্ডনের বাসবেশ্বরার প্রতিকৃতির উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করেন। তবে, এটি দুর্ভাগ্যজনক যে লন্ডনেই ভারতের গণতন্ত্রকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। “আমাদের শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাসে ভারতের গণতন্ত্রের শিকড় প্রোথিত রয়েছে। বিশ্বের কোনও শক্তিই ভারতের গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির ক্ষতি করতে পারবে না। এসব সত্ত্বেও কিছু মানুষ ভারতের গণতন্ত্রকে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এইসব মানুষেরা ভগবান বাসবেশ্বর এবং কর্ণাটক ও দেশের মানুষকে অপমান করছেন।” তিনি কর্ণাটকবাসীকে এ ধরনের মানুষের থেকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কর্ণাটক উন্নত প্রযুক্তির ভারতবর্ষের চালিকাশক্তি। এই চালিকাশক্তিকে সাহায্য করতে একটি ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বাসবরাজ বোম্মাই, কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী সহ কর্ণাটক সরকারের মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

PG/CB/DM/