ঋণের বোঝা কমানোর আর্জি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীর এ বিষয়ে বক্তব্য
আজ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কুমারী মমতা বন্দোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদলকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের ঋণের বোঝা সংক্রান্ত সমস্যাটির কথা উত্থাপন করেন। এ সমস্যা পূর্ববর্তী সরকারের কাজকর্মের নিরিখে উৎসারিত। পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়ন সংক্রান্ত ব্যয়ে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে ঋণের বোঝা, ফলে চড়া সুদ প্রদান করতে হচ্ছে রাজ্যকে। মুখ্যমন্ত্রী এই ঋণের বোঝার থেকে অব্যাহতির আর্জি জানান প্রধানমন্ত্রীকে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানান, তিনি সমবায় যুক্তরাষ্ট্রবাদে বিশ্বাসী। তিনি বরাবরই বলেছেন, শক্তিশালী রাজ্যই ভারতবর্ষকে আরও মজবুত করতে পারে এবং সেজন্যই রাজ্যগুলিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে যাতে মানুষের বিকাশের চাহিদা মেটানো যায়।
পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতাকে তার নিজের স্বার্থেই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সামিল হতে হবে, যাতে ঐ অঞ্চলটি উপকৃত হয়। এর জন্য ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি রয়েছে। এই অঞ্চলে বহু কর্মদক্ষ মানুষ রয়েছেন, রয়েছে প্রচুর সহায়-সম্পদও। কথা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতার উন্নয়নে তিনি বদ্ধপরিকর।
এই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার আগামী পাঁচ বছরে রাজ্যগুলিকে করের আরও ৪২ শতাংশ বিভাজ্য অংশ হিসাবে হস্তান্তরিত করবে বলে মতামত জ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এখন এই হার ৩২ শতাংশ। অভূতপূর্বভাবে এই হার বাড়িয়ে ৪২ শতাংশ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার রাজস্ব ঘাটতি অনুদান ও অন্যান্য অনুদান-সহ চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ মেনে নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের অন্যতম বৃহৎ ভোক্তা পশ্চিমবঙ্গ। এর ফলে যে সব সুযোগ পশ্চিমবঙ্গ উপভোগ করতে পারবে তার মধ্যে রয়েছে :-
২০১৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত পাঁচ বছরে
ক) আগামী পাঁচ বছরে, অর্থাৎ ২০১৫ – ১৬ থেকে ২০১৯ – ২০ পর্যন্ত কর হস্তান্তরের পরিমাণ ২,৯০,০০০ কোটি টাকা। বিগত পাঁচ বছরে এই পরিমাণ ছিল ১,০৬,০০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ , এ ক্ষেত্রে ১৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি (টাকার পরিমাণে এই অঙ্ক ১,৮০,০০০ কোটি টাকা)।
খ) পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে করের অংশ ৭.২৬৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৩২৪ শতাংশ করা হয়েছে।
গ) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ২০১৫ – ১৬-তে রাজস্ব ঘাটতি অনুদানের পরিমাণ ৮,৪৪৯ কোটি টাকা করা হয়েছে এবং মোট রাজস্ব ঘাটতি অনুদান করা হয়েছে ১১,৭৬০ কোটি টাকা। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অন্য দুটি রাজ্য যেখানে
এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সে দুটি হল কেরল এবং অন্ধ্রপ্রদেশ। রাজস্ব ঘাটতি অনুদানের আওতায় ঋণের দরুণ একটি
২
রাজ্যে সুদের বোঝার বিষয়টিও রয়েছে।
ঘ) অতএব, আগামী পাঁচ বছরে পশ্চিমবঙ্গের জন্য অতিরিক্ত সহায়সম্পদ ব্যবস্থার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ালো ২,০৫,৯০০ কোটি টাকা অর্থাৎ, গত পাঁচ বছরের তুলনায় ১৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি।
২০১৫ – ১৬
ঙ) পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ২০১৫ – ১৬-তে কর হস্তান্তরের পরিমাণ ২০১৪ – ১৫ তুলনায় ১৩,০০০ কোটি টাকা বাড়বে। ২০১৪-১৫-তে এই পরিমাণ ছিল ২৫,৩৪০ কোটি টাকা এবং হিসাবমতো ২০১৫-১৬-তে এটি ৩৮,৪৬১ কোটি টাকায় এসে দাঁড়াবে।
চ) ২০১৫ – ১৬-তে পশ্চিমবঙ্গ ৮,৪৪৯ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতির অনুদান পাচ্ছে। আঞ্চলিক সংস্থাগুলিকে প্রদত্ত অনুদানও দ্বিগুণ করা হয়েছে।
ছ) বছরের হিসাবে, আর্থিক হস্তান্তরের পরিমাণ একত্রিত করলে দেখা যাবে ২০১৪ – ১৫-র তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সহায়সম্পদের পরিমাণ ২০১৫ – ১৬-তে বেড়ে দাঁড়াবে ২২,০০০ কোটি টাকা, অর্থাৎ ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি।
জ) ঋণ সংক্রান্ত সমস্যা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বোঝা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। কেন্দ্রও উত্তরাধিকারসূত্রে ঋণের বোঝা পেয়েছে। কেন্দ্র – রাজ্য উভয়কেই এই সমস্যার সমাধান যৌথভাবে করতে হবে। চতুর্দশ অর্থ কমিশন রাজ্যগুলির সুদের বোঝা চিহ্নিত করেছে এবং এর ফলে উদ্ভূত রাজস্ব ঘাটতি পুরোপুরিভাবে মিটিয়ে দিয়েছে। এর জন্যই পশ্চিমবঙ্গ অন্যান্য দুটি রাজ্যের সঙ্গে অতিরিক্ত রাজস্ব ঘাটতি অনুদান পাচ্ছে। অতএব, ভবিষ্যতে বিকাশমূলক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে সুদের বোঝা কোনও প্রভাব ফেলবে না। চলতি অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার অতিরিক্ত আর্থিক সহায়সম্পদ প্রদান করবে – এর ফলে রাজ্যের সুদের বোঝার অনেকটাই হাল্কা হবে এবং রাজ্যের বিকাশ ত্বরান্বিত হবে অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের প্রেক্ষিতে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার কয়লা ও অন্যান্য খনিজ পদার্থে পশ্চিমবঙ্গকে রয়্যালটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরফলে, বছরে রাজ্যের লাভ হবে ১,৬০০ কোটি টাকা। নিলাম হওয়া কয়লা ব্লক থেকে পশ্চিমবঙ্গ ১১,২০০ কোটি টাকা পাবে এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে, অতীতের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ অপেক্ষাকৃতভাবে উন্নত পরিস্থিতিতে রয়েছে এবং বিকাশমূলক কার্যকলাপ ত্বরান্বিত করার প্রেক্ষিতে পর্যাপ্ত অর্থের অধিকারী।
এম.জি.এন.আর.ই.জি.-র অন্তর্গত অর্থ বন্টনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ যাতে উপকৃত হয় তার জন্য এই প্রকল্প পুরোপুরিভাবে প্রদানের আশ্বাস জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, এ বছর পশ্চিমবঙ্গ এই খাতে ৩,৭৭৪ কোটি টাকা পেয়েছে, বাকি অর্থ অর্থাৎ ১,৫০০ কোটি টাকা এ মাসেই দিয়ে দেওয়া হবে।
পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সর্বতোভাবে সাহায্যের আশ্বাসের দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।
WB CM Mamata Banerjee met PM @narendramodi. @MamataOfficial pic.twitter.com/GSjm0kDePw
— PMO India (@PMOIndia) March 9, 2015
PM said he is a firm believer in Cooperative Federalism. He called for states being strengthened to meet development needs of their people. — PMO India (@PMOIndia) March 9, 2015
Prime Minister stated during his meeting with WB CM @MamataOfficial that he is fully committed for West Bengal’s and Kolkata’s development.
— PMO India (@PMOIndia) March 9, 2015
You inherited a large (debt) burden. We too inherited a large burden. Centre & States must collectively find a solution to this: PM to WB CM — PMO India (@PMOIndia) March 9, 2015
PM also pointed that Centre decided to give WB royalty on coal & other minerals. This will provide benefit of Rs 1,600 cr to WB annually.
— PMO India (@PMOIndia) March 9, 2015
On the issue of releasing funds under MNREGA, the Prime Minister assured that this scheme is fully provided for. — PMO India (@PMOIndia) March 9, 2015
No stone will be left unturned for the development of West Bengal: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) March 9, 2015
Met WB CM Mamata Banerjee. Assured her that Centre will leave no stone unturned for WB’s progress. @MamataOfficial pic.twitter.com/MQJq9IeJ5B — Narendra Modi (@narendramodi) March 9, 2015
Centre’s ‘Act East’ policy is guided by our commitment to harness WB’s talent for growth of the State & the Nation. http://t.co/AAAAebd7FP
— Narendra Modi (@narendramodi) March 9, 2015