Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ডাভোস অ্যাজেন্ডায় ‘বিশ্বের পরিস্থিতি’র বিষয়ে বিশেষ বক্তব্য রেখেছেন

প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ডাভোস অ্যাজেন্ডায় ‘বিশ্বের পরিস্থিতি’র বিষয়ে বিশেষ বক্তব্য রেখেছেন


নতুন দিল্লি, ১৭ই জানুয়ারী, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ডাভোস অ্যাজেন্ডায় বিশ্বের পরিস্থিতির বিষয়ে বিশেষ বক্তব্য রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সতর্কভাবে ও আস্থার সঙ্গে ভারত, মহামারীর আরেকটি ঢেউকে সামাল দিচ্ছে এবং অনেক সম্ভাবনাময় ফলাফল সহ অর্থনৈতিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, ভারতের শক্তিশালী গণতন্ত্র মানব জাতিকে আশার আলো দেখাচ্ছে। গণতন্ত্রের প্রতি ভারতের অবিচল আস্থা, একবিংশ শতাব্দীর সময়োপযোগীর প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতায়ন এবং ভারতীয়দের মেধা ও মনোভাবের কারণে এই আস্থা অর্জিত হয়েছে। করোনার সময়কালে ভারত ‘এক বিশ্ব, এক স্বাস্থ্য’ পন্থা অনুসরণ করে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ ও টিকা সরবরাহের মাধ্যমে বহু প্রাণ বাঁচিয়েছে। ভারত, বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম ওষুধ উৎপাদনকারী রাষ্ট্র এবং বিশ্বের ওষুধের ভান্ডার বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজ ভারত রেকর্ড সংখ্যক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সারা বিশ্বে পাঠাচ্ছে। ভারতে ৫০ লক্ষের বেশি সফটওয়্যার ডেভলপার কাজ করছেন। আজ ইউনিকর্ণের সংখ্যার নিরিখে ভারত বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। বিগত ৬ মাসে ১০ হাজারের বেশি স্টার্টআপ সংস্থা নিবন্ধীকরণ করেছে। তিনি বলেন, ভারতের বিপুল, নিরাপদ, ও সফল ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থাপনা রয়েছে। গত মাসে ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেসের মাধ্যমে ৪৪০ কোটির বেশি লেনদেন হয়েছে। শ্রী মোদী সহজে ব্যবসা করা এবং বিভিন্ন কাজে সরকারের হস্তক্ষেপ কমানোর জন্য নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। আজ কর্পোরেট ট্যাক্সের হারে সরলীকরণ করা হয়েছে। সারা বিশ্বে এটিকে সব থেকে বেশি প্রতিযোগিতামূলক করে তোলা হয়েছে। ড্রোন, মহাকাশ, জিও স্প্যাটিয়াল মানচিত্রর ক্ষেত্রে নিয়মকানুন শিথিল করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ও বিপিও ক্ষেত্রের জন্য সাবেকী টেলি যোগাযোগ নিয়মাবলীর সংস্কার ঘটানো হয়েছে। “আমরা এক বছরের মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি বিভিন্ন পুরোনো নিয়মের পরিবর্তন ঘটিয়েছি।”

অংশীদার হিসেবে ভারতের ক্রমবর্ধমান আকর্ষণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে বিশ্বের কাছে  আস্থাশীল অংশীদার হয়ে ওঠার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আজ ভারত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করছে। উদ্ভাবন, প্রযুক্তি, নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ ও শিল্পোদ্যোগের মানসিকতার জন্য ভারতকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আদর্শ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভারতে বিনিয়োগের এটি সব থেকে ভালো সময়। তিনি বলেন, ভারতীয় যুব সম্প্রদায়  আজ শিল্পোদ্যোগের নতুন উচ্চতায়  দেশকে পৌঁছে দিয়েছে। ২০১৪ সালে দেশে মাত্র ১০০টি নতুন শিল্পোদ্যোগ বা স্টার্টআপ সংস্থা ছিল। আজ ৬০ হাজারের বেশি স্টার্টআপ সংস্থা এদেশে রয়েছে। এর মধ্যে ৮০টি ইউনিকর্ণ সংস্থা আছে। যার মধ্যে ২০২১ সালেই ৪০টি ইউনিকর্ণ গড়ে উঠেছে।  

ভারতের আস্থাশীল উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী জানান, যখন সারা বিশ্ব করোনার সময়কালে বিভিন্ন উদ্যোগের বাস্তবায়নের জন্য  পরিমাণের উপর গুরুত্ব দিয়েছিল,  ভারত সেই সময়ে তার সংস্কারকে শক্তিশালী করেছে। আজ ৬ লক্ষ গ্রামে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকাঠামোর উন্নয়নে ১৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ হচ্ছে। ৮ হাজার কোটি ডলারের সংস্থান করতে সম্পদের মুদ্রাকরণ এবং গতিশক্তি জাতীয় মাস্টার প্ল্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে  পণ্য, যাত্রী ও পরিষেবা সংক্রান্ত বাধাহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে,   সংশ্লিষ্ট সকলে যার সুফল  পাবেন। শ্রী মোদী বলেছেন, আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার জন্য ভারত বিভিন্ন পন্থা – পদ্ধতি শুধু সহজই করছে না, বিনিয়োগ ও উৎপাদনে উৎসাহ দেওয়ার জন্য নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। ১৪টি ক্ষেত্রে ২৬০০ কোটি ডলারের উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহ প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। ভারত আগামী ২৫ বছরের কথা বিবেচনা করে নীতি প্রণয়ণ করেছে। এই সময়কালে দেশ সর্বোচ্চ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং কল্যাণমূলক কাজের সর্বোচ্চ সুফল সকলের কাছে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে। এই সময়কালে উন্নয়ন হবে পরিবেশবান্ধব, স্বচ্ছ, স্থিতিশীল ও আস্থাশীল।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজকের জীবনশৈলী ও নীতির কারণে বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমাদের জীবনশৈলী দায়ী বলে উল্লেখ করেন। ’ফেলে দেওয়া’ সংস্কৃতি ও ভোগবাদী মনোভাব  জলবায়ু সমস্যাকে জটিল করে তুলেছে। আজকের ‘নেওয়া – বানানো – ব্যবহার করা – ফেলে দেওয়া’ অর্থনীতি থেকে বৃত্তীয় অর্থনীতির দিকে  দ্রুত এগোতে হবে। কপ – ২৬ সম্মেলনে মিশন জীবনের কথা তিনি উল্লেখ করেন। পরিবেশের জন্য জীবনশৈলী এলআইএফই –কে গণআন্দোলনের রূপ দেওয়ার জ্ন্য ‘প্রো প্ল্যানেট পিউপল’ অর্থাৎ তিনটি পি –এর সাহায্যে দৃঢ় ভিত গড়ে তুলতে হবে। এলআইএফই অর্থাৎ পরিবেশের জন্য জীবনযাত্রা আমাদের প্রাণবন্ত ও স্থিতীশীল জীবনশৈলীর একটি নতুন পর্ব ౼ যেখানে জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার একযোগে সমাধান করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই জলবায়ু সংক্রান্ত এই লক্ষ্য পূরণে ভারত নজরকাড়া সাফল্য দেখিয়েছে,  যা নির্ধারিত সময়ের আগেই অর্জিত হয়েছে।   

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বের পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী নতুন নতুন পন্থা – পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। আজ বিশ্বের পরিবর্তিত পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক পরিবারকে নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করেছে। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হলে প্রতিটি দেশ এবংআন্তর্জাতিক সংস্থাকে তিনি একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। এই প্রসঙ্গে তিনি ক্রিপ্টোকারেন্সির কথা উল্লেখ করেন। এখানে কোনো একটি দেশের পক্ষে একক ভাবে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। শ্রী মোদী  প্রশ্ন তোলেন যে , বিশ্বের পরিবর্তিত পরিস্থিতি  বহুস্তরীয় সংস্থাগুলি কি মোকাবিলা করার মতো অবস্থানে রয়েছে। আর তাই বহুস্তরীয় সংস্থাগুলির সংস্কারের জন্য প্রত্যেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে উদ্যোগী হতে হবে, যাতে বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলি তারা যাতে যথাযথভাবে সমাধান করতে পারে।

CG/CB/SFS