Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী ওয়ান আর্থ ওয়ান হেল্থ- অ্যাডভান্টেজ হেল্থকেয়ার ইন্ডিয়া ২০২৩-এর ষষ্ঠ সংস্করণের সূচনা করেছেন

প্রধানমন্ত্রী ওয়ান আর্থ ওয়ান হেল্থ- অ্যাডভান্টেজ হেল্থকেয়ার ইন্ডিয়া ২০২৩-এর ষষ্ঠ সংস্করণের সূচনা করেছেন


নয়াদিল্লি,  ২৬  এপ্রিল, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে নতুন দিল্লির প্রগতি ময়দানে ওয়ান আর্থ ওয়ান হেল্থ- অ্যাডভান্টেজ হেল্থকেয়ার ইন্ডিয়া ২০২৩-এর ষষ্ঠ সংস্করণের সূচনা করেছেন এবং ভাষণ দিয়েছেন।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বের স্বাস্থ্যমন্ত্রী পশ্চিম এশিয়া সার্ক আশিয়ান এবং আফ্রিকান অঞ্চলের প্রতিনিধিদের সাদর অভ্যর্থনা জানান। ‘সকলে খুশি থাকুক, সকলে নীরব থাকুক, সকলের ভালো কিছু ঘটুক এবং কেউ যেন দুঃখি না হয়’ এই সংস্কৃত শ্লোকটি উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী দেশের সবাইকে নিয়ে চলার দর্শনটি তুলে ধরেন এবং বলেন যখন হাজার বছর আগে সারা বিশ্বে কোনো অতিমারি ছিল না তখন ভারতের স্বাস্থ্য চিন্তা ছিল বিশ্বজনীন। তিনি বলেন, ওয়ান আর্থ, ওয়ান হেল্থ সেই বিশ্বাসকেই অনুসরণ করে এবং কাজেও সেই ভাবনারই প্রতিফলন ঘটায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ভাবনা শুধুমাত্র মানুষকে নিয়ে নয়, সম্পূর্ণ পরিবেশকে নিয়ে। গাছপালা থেকে প্রাণী, মাটি থেকে নদী যখন আমাদের ঘিরে থাকা চারিপাশ সুস্থ থাকে তখনই আমরা সুস্থ থাকতে পারি।” সাধারণভাবে মানুষের যে ভাবনা তা হল অসুস্থতার অভাব মানেই ভালো স্বাস্থ্য। এটির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু অসুস্থতা কম থাকার ওপরই ভারতের চিন্তা-ভাবনা সীমিত নয়, তার লক্ষ্য প্রত্যেকের সুস্থতা এবং প্রত্যেকের কল্যাণ। তিনি বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতা।”

‘ওয়ান আর্থ, ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান ফিউচার’-এর থিম নিয়ে জি২০ সভাপতিত্বকালে ভারতের যাত্রার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভাবনাকে রূপ দিতে হলে সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার মজবুত হওয়ার গুরুত্ব আছে। তিনি বলেন, সুস্থ গ্রহের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের এক জায়গা থেকে আর এক জায়গা যাওয়ার গুরুত্ব আছে। এবং এই লক্ষ্যে ওয়ান আর্থ ওয়ান হেল্থ- অ্যাডভান্টেজ হেল্থকেয়ার ইন্ডিয়া ২০২৩ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠান ভারতের জি২০ সভাপতিত্বকালীন থিমের অনুরণন যা প্রমাণিত হচ্ছে একাধিক দেশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ অর্থাৎ বিশ্ব একটি পরিবার। ভারতের এই দর্শন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে সরকারি বেসরকারী পাশাপাশি পেশাদার এবং শিক্ষাবিদদের উপস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

প্রকৃত স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতার দিকটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রতিভা, প্রযুক্তি, পূর্বেকার রেকর্ড এবং ঐতিহ্যকে স্বীকার করেন। তিনি আরও  বলেন, সারা বিশ্ব ভারতীয় চিকিৎসক, সেবিকা, স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজকর্ম প্রত্যক্ষ করেছেন এবং তাঁরা তাঁদের দক্ষতা এবং প্রতিভার জন্য সর্বত্র সম্মানিত। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে অনেক স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থা ভারতীয় পেশাদারদের প্রতিভা থেকে উপকৃত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের সাংস্কৃতিক, জলবায়ুগত এবং সামাজিক বৈচিত্র্য বিশাল।” তিনি বলেন, এটি লক্ষ্য করা গেছে ভারতে স্বাস্থ্য পরিষেবা পেশাদারদের প্রশিক্ষণ এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। তিনি আরও বলেন, ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রতিভা বিশ্বের আস্থা অর্জন করেছে তাদের ব্যতিক্রমী দক্ষতার জন্য যা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।

শতাব্দীতে একবারই হয় এমন অতিমারীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এতে বিশ্ব অনেকগুলি সত্যের সম্মুখীন হয়েছেন যেমন, নিবিড়ভাবে সংযুক্ত বিশ্বে সীমান্ত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাকে আটকাতে পারে না। তিনি আরও বলেন, গ্লোবাল সাউথের দেশগুলি নানা রকম সংকট এবং সমস্যার সম্মুখীন যার মধ্যে আছে সম্পদ না পাওয়া। তিনি বলেন, “সত্যিকারের উন্নতি ব্যক্তি কেন্দ্রিক। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যতই উন্নতি হোক না কেন তা সুদূরবর্তী প্রান্তিক মানুষটির কাছে পৌঁছতে হবে।” শ্রী মোদী বলেন, তিনি লক্ষ্য করেছেন স্বাস্থ্য পরিষেবা বিষয়ে অনেক দেশেরই প্রয়োজন একজন বিশ্বস্ত অংশীদার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত গর্বিত অনেক দেশেরই অংশীদার হতে পেরে টিকা এবং ওষুধের মাধ্যমে জীবন রক্ষার পুণ্য কর্মে। বিশ্বের বৃহত্তম এবং দ্রুততম কোভিড-১৯ টিকাকরণ অভিযান, মেড ইন ইন্ডিয়া টিকা এবং ১০০টিরও বেশি দেশে ৩০০ মিলিয়ন কোভিড-১৯ টিকার ডোজ পাঠানোর মাধ্যমে ভারত এই কাজ করেছে। শ্রী মোদী বলেন, এতে ভারতের সক্ষমতা এবং দায়বদ্ধতার একাংশ মাত্র প্রমাণিত হয়। ভবিষ্যতে এই দেশ প্রত্যেকটি দেশের বিশ্বস্ত বন্ধু হয়ে ওঠার প্রয়াস চালিয়ে যাবে তাদের নাগরিকদের সুস্বাস্থ্যের লক্ষ্যে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যের প্রতি ভারতের মনোভাব বহু হাজার বছর ধরে একই থেকে গেছে। তিনি বলেন, যোগা এবং ধ্যানের মতো প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ঐতিহ্য প্রাচীন ভারতের উপহার আধুনিক বিশ্বকে। আজ এটি বিশ্বজুড়ে আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। তিনি আয়ুর্বেদের বিষয়টিরও উল্লেখ করেন যা সুস্থ রাখতে একটি সম্পূর্ণ ব্যবস্থা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য শুধু শরীর নয়, মনের দিকেও লক্ষ্য রাখে এই চিকিৎসা। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ব মানসিক চাপ এবং জীবনযাপন থেকে উদ্ভুত অসুখের সমাধান খুঁজছে। ভারতের ঐতিহ্যবাহী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এর অনেক উত্তর আছে। তিনি আরও বলেন, মিলেট ভারতের চিরাচরিত খাদ্য। এবং সারা বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির জন্য এটি আবশ্যক।

প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচীর ওপর আলোকপাত করে বলেন, এটি বিশ্বের বৃহত্তম সরকারি স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচী। প্রধানমন্ত্রী জানান এর আওতায় আছে ৫০০ মিলিয়নের বেশি ভারতীয় নাগরিক যার মধ্যে ৪০ মিলিয়নের বেশি মানুষ নগদ বিহীন, কাগজ বিহীন চিকিৎসা পরিষেবা প্রাপ্ত হয়েছেন। তাদের সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার।

ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবার সমস্যাগুলিকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা উচিত নয়। এখন সময় হয়েছে সুসংহতভাবে সবাইকে নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এর মোকাবিলা করার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের জি২০ সভাপতিত্বকালে এটি অন্যতম বিষয়। আমাদের লক্ষ্য স্বাস্থ্য পরিষেবাকে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া খুব কম মূল্যে। শুধুমাত্র আমাদের নাগরিকদের জন্য নয়, সারা বিশ্বের জন্য।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের লক্ষ্য বৈষম্য হ্রাস করা এবং যারা পরিষেবা পায়নি তাদের পরিষেবা দেওয়ায় দেশের মন্ত্র। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, আজকের উপস্থিতি এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করবে ‘ওয়ান আর্থ, ওয়ান হেল্থ’-এর অভিন্ন কর্মসূচীতে যোগ দেওয়ার জন্য অন্যান্য দেশের সহযোগিতা প্রার্থনা করেন তিনি।

 

PG/AP/NS