Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী উত্তরাখণ্ডের মানায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সড়ক ও রোপওয়ে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন

প্রধানমন্ত্রী উত্তরাখণ্ডের মানায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সড়ক ও রোপওয়ে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন


নয়াদিল্লি, ২১ অক্টোবর, ২০২২

 

“আমার কাছে সীমান্তের প্রতিটি গ্রামই দেশের প্রথম গ্রাম” 

“আমাদের ঐতিহ্যের গর্ব এবং উন্নয়নের জন্য সম্ভাব্য সমস্ত প্রচেষ্টা হল একুশ শতকের উন্নত ভারতের দুটি প্রধান স্তম্ভ” 

“এই উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন হলে সারা বিশ্বের ভক্তরা আনন্দিত হবেন”

“শ্রমিকরা ভগবানের কাজ করছেন। আপনারা তাঁদের খেয়াল রাখবেন, কখনই তাঁদের অর্থের বিনিময়ে কাজ করা শ্রমিক বলে মনে করবেন না”

“এই ধর্মীয় স্থানের জর্জরিত অবস্থা দাসত্বের মানসিকতার স্পষ্ট পরিচায়ক ছিল”

“বর্তমানে কাশী, উজ্জয়িনী, অযোধ্যা এবং আরও অনেক ধর্মীয় স্থান নিজেদের হৃতগৌরব ফিরে পাচ্ছে”

“আপনার ভ্রমণ বরাদ্দের ৫ শতাংশ স্থানীয় সামগ্রী কেনার জন্য ব্যয় করুন” 

“আমরা এই সীমান্ত এলাকাগুলি থেকে কাজ করা শুরু করেছি”

“সীমান্ত এলাকার জীবনযাত্রা যাতে উন্নত হয়, সেই লক্ষ্যেই এই কাজ”

প্রধানমন্ত্রী, শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তরাখণ্ডের মানায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সড়ক ও রোপওয়ে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী কেদারনাথ পরিদর্শন করেন এবং শ্রী কেদারনাথ মন্দিরে দর্শন ও পূজা করেন। তিনি আদি গুরু শঙ্করাচার্য সমাধি স্থল পরিদর্শন করেন এবং মন্দাকিনী অস্থাপাথ ও সরস্বতী অস্থাপথের কাজ নিয়ে পর্যালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বদ্রীনাথেও যান এবং শ্রী বদ্রীনাথ মন্দিরের দর্শন ও পূজা করেন।  এরপর, তিনি অলকানন্দা নদী তীরে চলতে কাজেরও পর্যালোচনা করেন।

সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মন্দির দর্শন ও পূজার্চনা করে আনন্দিত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমি আশীর্বাদধন্য, আমার মন তুষ্ট হয়েছে। এর আগে উত্তরাখন্ড সফরের সময় তিনি যে বক্তব্য রেখেছিলেন, সেগুলি স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা কেদার ও বদ্রী বিশালের উপর তাঁর অগাধ আস্থা রয়েছে”। 

ভারতীয় সীমান্তের শেষ গ্রাম হিসাবে পরিচিত মানা গ্রামের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্তগ্রী বলেন, “আমার জন্য সীমান্তবর্তী প্রতিটি গ্রামই দেশের প্রথম গ্রাম এবং এখানে বসবাসকারী জনগণ দেশের শক্তিশালী প্রহরী”। তিনি মানাবাসীকে তাঁদের ভালোবাসা ও সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। 

প্রধানমন্ত্রী একুশ শতকে ভারতের উন্নয়নের দুটি মূল স্তম্ভের কথা উল্লেখ করেন। প্রথমটি, ঐতিহ্যের প্রতি গর্ব অনুভব করা এবং দ্বিতীয়টি হ’ল – উন্নয়নের জন্য সম্ভাব্য সবরকম চেষ্টা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি এখানকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প পর্যালোচনা করেছেন। কেদারনাথ থেকে গৌরিকুন্ড ও হেমকুন্ড রোপওয়ে দুটির কাজ বাবা কেদারনাথ ও বদ্রী বিশাল এবং শিখ গুরুর আশীর্বাদেই সম্পন্ন করা যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী এখানকার উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের নিরাপত্তার প্রার্থনা জানান, তিনি বলেন, কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। এই শ্রমিকরা ভগবানের কাজ করছেন। তাঁদের যত্ন নিতে হবে, কখনই যেন তাঁদের অর্থের বিনিময়ে কাজ করা শ্রমিক হিসাবে মনে করা না হয়। 

লালকেল্লার প্রাকার থেকে দেশকে দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্ত করার যে আহ্বান তিনি জানিয়েছিলেন, সেকথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই উন্নয়নমূলক কাজগুলি দেশের জনগণের দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্ত করতে সহায়ক হবে। দীর্ঘদিন ধরে পূজার্চনা স্থানগুলির উন্নতিসাধন হয়নি। বর্তমানে সেই কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ববর্তী সরকারের অবহেলার জন্য দেশের ধর্মীয় স্থানগুলির কোনও উন্নতিই হয়নি। 

বর্তমানে কাশী, উজ্জয়িনী ও অযোধ্যার মতো আরও অনেক ধর্মীয় স্থান তাদের হৃতগৌরব ফিরে পাচ্ছে। কেদারনাথ, বদ্রীনাথ ও হেমকুন্ড সাহিবেও চলছে সংস্কার। ভারতের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যগত উন্নয়ন ঘটছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংস্কারমূলক কাজের ফলে পার্বত্য এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হচ্ছে। যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। এর ফলে, পর্যটনও বাড়ছে। 

স্থানীয় পণ্য সামগ্রীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির প্রচেষ্টার ফলে বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় পণ্য বাজারে আসছে। তিনি পর্যটকদের তাঁদের ভ্রমণের জন্য নির্দিষ্ট অর্থের ৫ শতাংশ স্থানীয় পণ্য কেনার জন্য ব্যয় করার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এর ফলে, স্থানীয় পণ্য সামগ্রীর বিকাশ ঘটবে”।

পার্বত্য এলাকার জনগণের পরিশ্রমী মানসিকতার প্রশংসা করেন তিনি। দেশের সীমান্ত এলাকাগুলি আগে অবহেলিত ছিল বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার এইসব এলাকার উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে। “পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সমাধান খুঁজে পাচ্ছি আমরা”। তিনি গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ, হর ঘর জল, অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির কথাও তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকার যুবক-যুবতীদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ জরুরি। সরকার গত ৮ বছর ধরে এর জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী ভারতমালা ও সাগরমালা প্রকল্পের উদারহণ তুলে ধরেন। জম্মু – কাশ্মীর ও অরুণাচল প্রদেশে গত ৮ বছরে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক সম্প্রসারণ হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০১৪ সাল থেকে সরকার ৭ হাজার কিলোমিটার নতুন সড়ক এবং শতাধিক সেতু ও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুড়ঙ্গ নির্মাণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য রাজ্যগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে গৃহীত পর্বতমালা যোজনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “ব্যাপক আকারে রোপওয়ে ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে”। মানা থেকে মানা পাস পর্যন্ত যে সড়ক নির্মিত হচ্ছে, তা এই এলাকার জনগণের বিশেষ উপকারে আসবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। যোশীমঠ থেকে মালারি পর্যন্ত সড়কের সম্প্রসারণ হলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি, সেনা জওয়ানরাও উপকৃত হবে এবং সহজেই তাঁরা সীমান্তে পৌঁছতে পারবেন। 

বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, রাজ্যের আশা-আকাঙ্খা পূরণে কঠোর পরিশ্রম সুফল দেবে। তিনি বলেন, আমি এখানে বাবা কেদার ও বদ্রী বিশালের আশীর্বাদ নিতে এসেছি। 

উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পুষ্কর সিং ধামি, উত্তরাখন্ডের রাজ্যপাল (অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল) গুরমিত সিং, সাংসদ শ্রী তিরথ সিং রাওয়াত, উত্তরাখন্ড সরকারের মন্ত্রী শ্রী ধনসিং রাওয়াত এবং বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি শ্রী মহেন্দ্র ভাট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রেক্ষাপট –

কেদারনাথ রোপওয়েটি ৯.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ গৌরিকুন্ড থেকে কেদারনাথের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করবে। এই দুই স্থানের যাত্রার সময় ৬-৭ ঘন্টা থেকে কমে ৩০ মিনিট হবে। হেমকুন্ড রোপওয়ে গোবিন্দ ঘাট থেকে হেমকুন্ড সাহিব পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপন করবে ১২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রোপওয়েটি চালু হলে যে পথ পাড়ি থেকে ১ দিনেরও বেশি সময় লাগতো তা মাত্র ৪৫ মিনিটেই অতিক্রান্ত করা যাবে। এই রোপোয়ে-গুলি নির্মাণ ব্যয় হবে আনুমানিক ২ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। এগুলি রূপায়িত হলে এখানকার পর্যটন উন্নত হবে। 

 

PG/PM/SB