এনডিআরএফ ৪৬টি দলকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছে, ১৩টি দলকে বিমানে করে আজ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে
ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং নৌবাহিনী ত্রাণ, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কাজের জন্য জাহাজ ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রেখেছে
মাঝ সমুদ্রে যাঁরা বিভিন্ন কাজে রয়েছেন তাঁদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন
বিদ্যুৎ, টেলি-যোগাযোগ পরিষেবা খুব কম সময়ে চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন
উপকূলবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দা, শিল্পসংস্থা সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সতর্ক রাখতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় কি কি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তা নিয়ে আলোচনার জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে পৌরোহিত্য করেছেন। বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রক ও দপ্তর যোগ দেয়।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে ২৬ মে সন্ধ্যেবেলা ঘণ্টায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর ওড়িশা উপকূলের মধ্যবর্তী স্থানে আছড়ে পরবে। ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চলে জলস্তর ২-৪ মিটার পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির জন্য সর্বশেষ আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তি, দপ্তর নিয়মিত প্রকাশ করবে।
জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কমিটির একটি বৈঠক গতকাল ক্যাবিনেট সচিবের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। এই বৈঠকে উপকূলবর্তী রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মুখ্য সচিবরা ছাড়াও কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রক ও দপ্তরের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক প্রতি মুহুর্তে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করছে এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। মন্ত্রক বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রথম পর্যায়ে কয়েকটি দলকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। নৌকো, গাছ কাটার সরঞ্জাম, টেলি-যোগাযোগ পরিষেবার সরঞ্জাম, সহ বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে ৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ৪৬টি দলকে মোতায়েন করেছে। আজ আরও ১৩টি দলকে বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়াও ১০টি দলকে চূড়ান্ত সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং নৌবাহিনী ত্রাণ, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কাজের জন্য জাহাজ ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রেখেছে। বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ নৌকা ও ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। ৭টি জাহাজ পশ্চিম তটে মানবিক সাহায্য এবং বিপর্যয়ের ফলে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।
সমুদ্রে যেসমস্ত তেল উত্তোলন ও পরিশোধনের ব্যবস্থাপনা আছে, সেগুলির নিরাপত্তার জন্য পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক সব রকমের ব্যবস্থা নিয়েছে। তাদের জাহাজগুলিকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে। বিপর্যয়ের পর জরুরি পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রক সব রকমের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে। বিদ্যুৎ পরিষেবা দ্রুত শুরু করার জন্য ট্রান্সফর্মার, ডিজি সেট এবং অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। টেলি-যোগাযোগ মন্ত্রক টেলিফোনের টাওয়ারগুলিতে নজরদারি চালাচ্ছে। ঝড়ের পর দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার জন্য সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক যেসব রাজ্য এই ঘূণিঝড়ের কারণে প্রভাবিত হবে সেখানে বিশেষ প্রস্তুতির জন্য নীতি-নির্দেশিকা জারি করেছে। বিশেষ করে কোভিড চিকিৎসার ক্ষেত্রে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রক সব জাহাজের সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে। জরুরি পরিস্থিতির জন্য ‘টুগ’ জলযান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নিচু এলাকা থেকে মানুষদের সরিয়ে নিয়ে আসার কাজে রাজ্যগুলির বিভিন্ন সংস্থাকে সাহায্য করছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় কি কি করতে হবে সে বিষয়ে জন-সচেতনতামূলক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষদের নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে চলবার নির্দেশ দিয়েছেন । তিনি বিভিন্ন দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকদের মাঝ সমুদ্র যাঁরা রয়েছেন তাঁদের দ্রুত ফিরিয়ে আনা নিশ্চিত করতে বলেছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ ও টেলি-যোগাযোগ পরিষেবা যাতে খুব সময়ে বন্ধ থাকে এবং দ্রুত সেগুলি চালু করা যায় সেটি নিশ্চিত করতে বলেছেন। রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে যথাযথভাবে সমন্বয় বজায় রেখে পরিকল্পনা করতে তিনি আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন। হাসপাতালে কোভিডের চিকিৎসা এবং টিকাকরণ অভিযানে যাতে বিঘ্ন না ঘটে শ্রী মোদী সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেছেন। ভালো পদ্ধতি সম্পর্কে জানার জন্য তিনি জেলা প্রশাসনকে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ের সময় কি কি করণীয় এবং কোন কোন জিনিস করা যাবে না সে বিষয়ে স্থানীয় ভাষায় প্রচার চালানোর জন্য তিনি আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ে প্রভাবিত জেলাগুলিতে মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য উপকূলবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দা, শিল্পসংস্থা সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার জন্য তিনি নির্দেশ দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, ক্যাবিনেট সচিব, স্বরাষ্ট্র, টেলি-যোগাযোগ, মৎস্য পালন, অসামরিক বিমান চলাচল, বিদ্যুৎ, বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ, ভূবিজ্ঞান মন্ত্রক/দপ্তরের সচিবরা ছাড়াও রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সদস্য এবং সচিব, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও আবহাওয়া দপ্তরে মহানির্দেশক এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকরা এই বৈঠকে যোগ দেন।
CG/CB/NS
Reviewed the preparedness to tackle Cyclone Yaas.
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2021
Was briefed on the various efforts to assist people living in the affected areas. https://t.co/pnPTCYL2Fm
Emphasised on timely evacuation as well as ensuring power and communications networks are not disrupted. Also emphasised on ensuring COVID-19 treatment of patients in affected areas does not suffer due to the cyclone.
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2021
Praying for everyone’s safety and well-being.