নয়াদিল্লি, ০১ এপ্রিল, ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মহারাষ্ট্রের মুম্বাইতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ৯০ বছর উপলক্ষে আরবিআই@৯০-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন। শ্রী মোদী আরবিআই-এর ৯০ বছর উপলক্ষে একটি স্মারক মুদ্রারও প্রকাশ করেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) ১৯৩৫-এর পয়লা এপ্রিল কাজ শুরু করেছিল এবং আজ পড়লো ৯০ বছরে।
অনুষ্ঠানে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ৯০ বছর সম্পূর্ণ করে আজ ঐতিহাসিক মাইলফলকে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, আরবিআই স্বাধীনতা পূর্ব এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময় দুয়েরই সাক্ষী থেকেছে এবং নিজের পেশাদারিত্ব এবং দায়বদ্ধতার জোরে বিশ্বজুড়ে নিজস্ব পরিচিতি তৈরি করেছে। প্রধানমন্ত্রী আরবিআই-এর ৯০ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সকল কর্মীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আরবিআই-এর বর্তমান কর্মীরা ভাগ্যবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যে নীতি তৈরি হচ্ছে তা আরবিআই-এর পরবর্তী দশকটিকে রূপ দেবে এবং পরবর্তী ওই ১০ বছরে আরবিআই পৌঁছে যাবে শতবর্ষে। দ্রুতগতির বৃদ্ধিতে অগ্রাধিকার এবং আস্থা ও স্থায়িত্বে আরবিআই-এর বিশেষ নজরের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘আগামী দশক বিকশিত ভারতের সংকল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ প্রধানমন্ত্রী লক্ষ্য এবং সংকল্প পূরণের জন্য তাঁর শুভেচ্ছাও জানান।
দেশে জিডিপি এবং অর্থনীতিতে মুদ্রা নীতি এবং আর্থিক নীতির সমন্বয়ের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালে আরবিআই-এর ৮০ বছর পূর্তি উৎসবকে স্মরণ করেন এবং সেই সময় দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সামনে অনুৎপাদক সম্পদ এবং স্থিরতার সমস্যা ও সংকটকে মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন যে সেই থেকে শুরু করে আজ আমরা একটি বিন্দুতে পৌঁছেছি যেখানে ভারতীয় ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে সারা বিশ্বের মধ্যে শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে। একসময়ে প্রায় মুমূর্ষু ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা আজ লাভের মুখ দেখছে এবং রেকর্ড পরিমাণ ঋণ প্রদান করছে।
প্রধানমন্ত্রী রূপান্তরের জন্য নীতির স্বচ্ছতা, উদ্দেশ্য এবং সিদ্ধান্তকে কৃতিত্ব দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন উদ্দেশ্য ঠিক হয়, তখন ফলাফলও সঠিক হয়।’ সংস্কারের সার্বিক প্রকৃতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান যে, সরকার স্বীকৃতি, সংকল্প এবং পুনর্মূলধনীকরণের কৌশল নিয়ে কাজ করছে। বহু প্রশাসনিক সংস্কারের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে সাহায্য করতে ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা মূলধন দেওয়ার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র দেউলিয়া বিধির ফলেই ৩.২৫ লক্ষ টাকা পরিমাণের ঋণের সমাধান হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এও জানান যে ৯ লক্ষ কোটি টাকার বেশি খেলাপি সংক্রান্ত ২৭,০০০-এর বেশি আবেদনের সমাধান হয়েছে আইবিসি গ্রহণ করার আগেই। ২০১৮-য় ব্যাঙ্কের মোট অনুৎপাদক সম্পদ ছিল ১১.২৫ শতাংশ, তা ২০২৩এর সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমে ৩ শতাংশের নীচে নেমে গেছে। তিনি বলেন যে, দুটি করে ব্যালেন্স শিটের সমস্যা এখন অতীত। প্রধানমন্ত্রী মোদী এই রূপান্তরের জন্য আরবিআই-এর অবদানের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে, আরবিআই নিয়ে আলোচনা যদিও আর্থিক সংজ্ঞা এবং জটিল নামকরণে সীমাবদ্ধ থাকে প্রায়ই, কিন্তু আরবিআই-এর কাজে সরাসরি প্রভাব পড়ে সাধারণ মানুষের জীবনে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এবং পংক্তির শেষতম ব্যক্তির মধ্যে সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন এবং দরিদ্র মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির উদাহরণ দেন। তিনি বলেন যে দেশে ৫২ কোটি জনধন অ্যাকাউন্টের ৫৫ শতাংশই মহিলাদের। তিনি আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রভাবের উল্লেখ করে বলেন, কৃষি এবং মৎস্য চাষ ক্ষেত্রে যেখানে ৭ কোটির বেশি কৃষক মৎস্যজীবী এবং পশুপালক পিএম কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পাচ্ছে, ফলে গ্রামীণ অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটছে। গত ১০ বছরে সমবায় ক্ষেত্রে অগ্রগতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সমবায় ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নিয়মবিধির গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি এও বলেন যে, ইউপিআই—র মাধ্যমে মাসে ১২০০ কোটির বেশি লেনদেন এটিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত মঞ্চের রূপ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি নিয়ে কাজকর্ম বিষয়ে বলেন, গত ১০ বছরে যত রূপান্তর ঘটেছে তাতে নতুন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা, অর্থনীতি এবং মুদ্রা ব্যবস্থা তৈরি সহজ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আগামী ১০ বছরে লক্ষপূরণে স্বচ্ছতার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। ডিজিটাল লেনদেনের প্রসারে নগদ বিহীন অর্থনীতির দ্বারা যে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তার ওপর নজর দেওয়ার গুরুত্বের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি জোর দেন।
ভারতের মতো বড় দেশে বৈচিত্রপূর্ণ ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা সহজ করা এবং নাগরিক কেন্দ্রিক পরিষেবার উন্নতিতে গুরুত্ব দিতে হবে। এই সূত্রে তিনি কৃত্রিম মেধা এবং প্রযুক্তি শিক্ষার ভূমিকার কথা বলেন।
দেশে দ্রুত এবং দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নে আরবিআই-এর ভূমিকার ওপর আলোকপাত করেন তিনি। ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রজ্ঞার সঙ্গে নীতি রূপায়ণে আরবিআই-এর সাফল্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তার আগাম সমীক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্ত সক্রিয় পদক্ষেপ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি ব্যাঙ্কগুলিকে সরকারি সহায়তার আশ্বাস দেন। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ যেমন মুদ্রাস্ফীতি স্থির করার অধিকার আরবিআই-কে দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী এবং এই ক্ষেত্রে মানিটারি পলিসি কমিটির কাজের প্রশংসা করেন তিনি। বাজারদরের নিয়মিত সমীক্ষা এবং তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আর্থিক নীতি নেওয়ার ফলেই মুদ্রাস্ফীতি সব সময়ই একটি মাঝামাঝি জায়গায় থাকতে পেরেছে; এমনকি করোনার মতো সংকট কালেও।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘যদি কোনোও দেশের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলি স্পষ্ট হয় তাহলে কেউ তাকে আটকাতে পারবে না।’ কোভিড অতিমারির সময় সাধারণ মানুষের জীবনকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং আর্থিক ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার দিকে নজর দেওয়ার উদাহরণ দেন তিনি। যার ফলে ওই সংকটকাল অতিক্রম করতে পেরেছিলেন দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণী এবং তারজন্যই আজ দেশের অগ্রগতি হচ্ছে দ্রুততার সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতীয় অর্থনীতি এমন একটা সময়ে নতুন রেকর্ড করছে যখন বিশ্বের অনেক দেশই অতিমারীর দরুণ আর্থিক সংকট থেকে এখনও বেরোবার চেষ্টা করে যাচ্ছে।’ ভারতের সাফল্যকে বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে আরবিআই-এর ভূমিকার উল্লেখ করেন তিনি। বিকাশশীল দেশগুলির জন্য মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নয়নের মধ্যে ভারসাম্য রাখার গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী আস্থার সঙ্গে বলেন যে, এরজন্য আরবিআই বিশ্বের কাছে একটি মডেল হতে পারে এবং নেতৃত্বদান করতে পারে। যার থেকে সমগ্র দক্ষিণ বিশ্ব অঞ্চল সাহায্য পাবে।
বর্তমানে বিশ্বে ভারত সবচেয়ে বেশি তারুণ্যপূর্ণ দেশ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী যুবাদের প্রত্যাশা পূরণে আরবিআই-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বলেন। দেশে নতুন নতুন ক্ষেত্রের উদ্ভাবন হচ্ছে যার থেকে আজ যুব সমাজের জন্য একাধিক সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, তার জন্য সরকারি নীতির প্রশংসা করেন তিনি। দূষণহীন শক্তি ক্ষেত্রের প্রসারের উদাহরণ দেন তিনি এবং সেইসূত্রে সৌরশক্তি, গ্রীন হাইড্রোজেন এবং ইথানল মিশ্রণের কথা বলেন। তিনি দেশে তৈরি ফাইভ-জি প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রপ্তানী বৃদ্ধির উল্লেখ করেন। ভারতের উৎপাদন শিল্পে এমএসএমই মেরুদণ্ড হয়ে উঠেছে। সেইসূত্রে প্রধানমন্ত্রী জানান, কোভিড অতিমারীর সময় এমএমএমই-গুলিকে সাহায্য করতে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম রূপায়ণ করা হয়েছিল। নতুন ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত যুব সমাজের জন্য ঋণ নিশ্চিত করতে আরবিআই-কে নতুন নতুন ভাবনা-চিন্তা করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
একবিংশ শতাব্দীতে উদ্ভাবনের গুরুত্বে জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আগামীদিনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে দক্ষ দল এবং ব্যক্তিকে প্রস্তুত করে রাখার আহ্বান জানান। তিনি ব্যাঙ্কার এবং বিধি প্রস্তুতকারকদের মহাকাশের মতো নতুন এবং পর্যটনের মতো চিরকালীন ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা মেটানোর জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বিশেষজ্ঞদের কথা উল্লেখ করেন যাঁরা মনে করেন যে অযোধ্যা আগামীদিনে বিশ্বে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় পর্যটনস্থল হয়ে দাঁড়াবে।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং ডিজিটাল পেমেন্টের জন্য সরকারি কাজের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী এবং জানান, এর জন্য ছোটখাটো ব্যবসা এবং পথ বিক্রেতাদের আর্থিক সক্ষমতায় স্বচ্ছতা তৈরি হয়েছে এবং তাঁদের আর্থিকভাবে ক্ষমতায়নের জন্য এই তথ্যকে কাজে লাগানো উচিত।
আগামী ১০ বছরে ভারতের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী যাতে ভারতের ওপর আন্তর্জাতিক সংকটের প্রভাব পড়ে কম। শ্রী মোদী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক জিডিপি বৃদ্ধির ১৫ শতাংশ ভাগিদারী নিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক উন্নয়নের ইঞ্জিন হয়ে উঠেছে’। সারা বিশ্বে ভারতীয় টাকাকে গ্রহণযোগ্য করতে প্রয়াসের ওপর জোর দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী অত্যাধিক অর্থনৈতিক প্রসার এবং ঋণ বৃদ্ধির বিষয়টিও ছুঁয়ে যান এবং বলেন অনেক দেশেই বেসরকারি ক্ষেত্রে ঋণের পরিমাণ সেদেশের জিডিপি-র দ্বিগুণ। অনেক দেশের ঋণের মাত্রা বিশ্বে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, ভারতের উন্নয়নের ক্ষমতা এবং সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে আরবিআই যেন এই বিষয়ে একটি সমীক্ষা করে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের প্রকল্পগুলির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থান করতে শক্তিশালী ব্যাঙ্কিং শিল্পের গুরুত্বের উল্লেখ করেন। এআই এবং ব্লকচেনের মতো প্রযুক্তির জন্য যে পরিবর্তন এসেছে সেটি ছাড়াও ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্বের উল্লেখ করেন তিনি। তিনি দর্শক-শ্রোতাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবনের অর্থকরী দিকটির কথা মাথায় রেখে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার কাঠামোয় প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে বলেন। প্রধানমন্ত্রী সব শেষে বলেন, ‘বিকশিত ভারতের জন্য বিশ্বের নামী সংস্থা থেকে শুরু করে পথ বিক্রেতা এবং অত্যাধুনিক ক্ষেত্র থেকে শুরু করে প্রাচীন দেশজ শিল্পের ঋণের সংস্থান করা জরুরি এবং বিকশিত ভারতের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সার্বিক রূপ বদল ঘটাতে আরবিআই উপযুক্ত সংস্থা’।
PG/AP/NS….