Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী আমেদাবাদের বোপালে ইন-স্পেসের সদর দপ্তর উদ্বোধন করেছেন

প্রধানমন্ত্রী আমেদাবাদের বোপালে ইন-স্পেসের সদর দপ্তর উদ্বোধন করেছেন


নতুন দিল্লি,  ১০ জুন,  ২০২২
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ আমেদাবাদের বোপালে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্পেস প্রমোশন অ্যান্ড অথরাইজেশন সেন্টার (ইন-স্পেস)-এর সদর দপ্তরের উদ্বোধন করেছেন। এই উপলক্ষে ইন-স্পেস সদর দপ্তর এবং মহাকাশ ভিত্তিক প্রযুক্তি প্রয়োগ ও পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত বেসরকারি কয়েকটি সংস্থার মধ্যে সমঝোতাপত্র সম্পর্কিত নথি বিনিময় হয়। মহাকাশ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণ মহাকাশ কর্মসূচিতে আরও গতি সঞ্চার করবে এবং ভারতের মেধাবী যুবসম্প্রদায়ের কাছে সুযোগ-সুবিধার নতুন দ্বার খুলে দেবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল এবং মহাকাশ শিল্প ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 
 
এই উপলক্ষে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে আধুনিক ভারতের উন্নয়নের যাত্রাপথে আজ এক স্মরণীয় মুহূর্তের সূচনা হল। তিনি এজন্য সমস্ত দেশবাসী এবং বিজ্ঞানী মহলকে অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী ইন-স্পেস সদর দপ্তরের সূচনাকে আখেরে ভারতীয় মহাকাশ শিল্পের জন্য ‘এদিকে দেখুন’ শীর্ষক একটি মুহূর্ত বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এই কেন্দ্রটি মহাকাশ ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধার অগ্রদূত হয়ে উঠবে। শ্রী মোদী বলেন, ইন-স্পেস কেন্দ্রটি ভারতের যুবসম্প্রদায়কে তাদের মেধা জনসমক্ষে তুলে ধরার সুযোগ করে দেবে। ভারতের যুবারা সরকারি বা বেসরকারি যেক্ষেত্রেই কাজ করুন না কেন, ইন-স্পেস সেন্টারটি সকলের কাছে বড় সুযোগ এনে দেবে। ইন-স্পেস সেন্টারটি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের মহাকাশ ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা এর রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আপনারা সকলেই এই মহাকাশ কেন্দ্রটির দিকে দেখুন। আসলে ইন-স্পেস হল মহাকাশ, ইন-স্পেস হল গতি এবং ইন-স্পেস হল অপরকে টেক্কা দেওয়া। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাকে বিক্রেতা হিসেবে দেখা হয়েছে। এই ক্ষেত্রটিতে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণের সুযোগে সর্বদাই বিঘ্ন ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেন, বড়মাপের চিন্তা-ভাবনাই বিজয়ী হয়। মহাকাশ ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে যাবতীয় বিধি-নিষেধ দূর করা হচ্ছে। ইন-স্পেস কেন্দ্রটির মাধ্যমে বেসরকারি শিল্প সংস্থার অংশগ্রহণে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। দেশ আজ বিজেতা তৈরির করার অভিযান গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, বেসরকারি ক্ষেত্র কেবল এখানে বিক্রেতা হিসেবে নয়, বরং মহাকাশ ক্ষেত্রের বিজয়ী হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারি মহাকাশ প্রতিষ্ঠানগুলির সক্ষমতা এবং ভারতের বেসরকারি ক্ষেত্রের আগ্রহ যখন মিলিত হবে, তখন আকাশসীমাও ছাড়িয়ে যাবে।
 
প্রধানমন্ত্রী অনুতাপ প্রকাশ করে বলেন, আগে ভারতের যুবারা তাদের সম্ভাবনার পূর্ণ বাস্তবায়নের সুযোগ-সুবিধা পেতেন না। ভারতীয় যুবাদের মধ্যে এখন উদ্ভাবন, নতুন প্রাণশক্তি সঞ্চার এবং অনুসন্ধানের মানসিকতা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, এটা দেশের কাছে দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ ও বাধা-নিষেধের মধ্যে বিভেদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু আজ আমরা আমাদের তরুণদের কাছে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য শুধু সরকারি পথ অনুসরণের শর্তই রাখতে পরি না। এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, নিয়ন্ত্রণ কায়েমের সময় পার হয়েছে এবং সরকার যুবাদের এগিয়ে চলার পথে যাবতীয় বাধা-বিপত্তি দূর করছে। তিনি প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্র উদার করার নীতি, আধুনিক ড্রোন নীতি, ভূ-স্থানিক ডেটা বা তথ্য সম্পর্কিত নীতি-নির্দেশিকা এবং টেলিযোগাযোগ বা তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নিজের সুবিধা মত জায়গা থেকে কাজ করার সুবিধা গ্রহণের উদাহরণ দেন। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ভারতে বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য সহজে ব্যবসা বাণিজ্যের অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তুলতে হবে, যাতে বেসরকারি ক্ষেত্র সাধারণ মানুষের জীবন-যাপনের মানোন্নয়নে সমান অবদান রাখতে পারে। 
 
তিনি বলেন, একজন বিজ্ঞানীই হোন বা একজন কৃষক / শ্রমিক, তিনি বিজ্ঞান উপলব্ধি করুন বা নাই করুন – এই সমস্ত কিছুকেই অতিক্রম করে আমাদের মহাকাশ অভিযান দেশের মানুষের অভিযান হয়ে উঠেছে। আমরা চন্দ্রযান অভিযানের সময় সাধারণ মানুষের মধ্যে আবেগের এক একাত্মতা লক্ষ্য করেছি। তিনি খুশি প্রকাশ করে বলেন, আজ ৬০টির বেশি বেসরকারি সংস্থা দেশের মহাকাশ ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। দেশে মহাকাশ ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনার জন্য তিনি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ইসরোর ভূমিকার প্রশংসা করেন। শ্রী মোদী মহাকাশ ক্ষেত্রকে আরও উদার করার প্রয়োজনীয়তার কথা পুনরায় উল্লেখ করে এই ক্ষেত্রে ইসরোর পারদর্শিতা ও দক্ষতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভারতের মহাকাশ কর্মসূচি আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের সবথেকে বড় পরিচয় হয়ে উঠেছে। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে মহাকাশ প্রযুক্তি আমূল পরিবর্তনের মূল ভিত্তি হয়ে উঠছে। মহাকাশ প্রযুক্তি আজ না কেবল দূরবর্তী অঞ্চলে যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে বরং আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়েও সংযোগ স্থাপনের বড় মাধ্যম হয়ে উঠছে। এপ্রসঙ্গে তিনি মহাকাশ প্রযুক্তির সুযোগ-সুবিধা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ইন-স্পেস সেন্টারটিকে নিরলস কাজ করে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বেসরকারি মহাকাশ সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে সংগৃহীত তথ্য ভবিষ্যতে এগিয়ে চলার বড় মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। শ্রী মোদী বলেন, বিশ্ব মহাকাশ ক্ষেত্রের বাজার ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৪০ নাগাদ এই বাজার এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছোনোর প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিশ্ব মহাকাশ ক্ষেত্রে ভারতের অংশীদারিত্ব আরও বাড়ানোর সুযোগ এসেছে এবং এক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থারগুলি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। মহাকাশ পর্যটন এবং মহাকাশ কূটনৈতিক দৌত্যের ক্ষেত্রে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। দেশে অপার সম্ভাবনা থাকলেও তার সদ্ব্যবহার সীমিত প্রয়াসের মাধ্যমে কখনই সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। এপ্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সকলকে আশ্বস্ত করে বলেন, মহাকাশ ক্ষেত্রে সংস্কারমূলক প্রক্রিয়া কোন বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই অব্যাহত থাকবে। অবশ্য এজন্য বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও বাণিজ্যিক সম্ভাবনার বিষয়টি সঠিক ভাবে উপলব্ধি করে তার সদ্ব্যবহারের সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য এক উপযুক্ত ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। ইন-স্পেস কেন্দ্রটি বেসরকারি ক্ষেত্রের যাবতীয় প্রয়োজনীয়তা মেটাতে এক জানালা ব্যবস্থা এবং স্বাধীন নোডাল এজেন্সি হিসেবে কাজ করবে। 
 
এক নতুন ভারতীয় মহাকাশ নীতি প্রণয়নে সমন্বয়সাধনের জন্য সরকারি সংস্থা, মহাকাশ শিল্প সংস্থা, স্টার্টআপ এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার কাজ চলছে। এপ্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, ভারত এক নতুন মহাকাশ নীতি প্রণয়নে কাজ করছে এবং মহাকাশ ক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করার নীতি গ্রহণ করেছে। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবজাতীর ভবিষ্যৎ ও কল্যাণে দুটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। এই দুটি হল – মহাকাশ ও সমুদ্র। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতকে অবিলম্বে এই দুটি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের পথে অগ্রসর হতে হবে। তিনি বলেন, এই দুটি ক্ষেত্রে দেশে যে সমস্ত সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, সেই সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এক্ষেত্রে বিদ্যালয়গুলিতে অটল টিঙ্কারিং ল্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি জানান, শ্রীহরিকোটায় কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ চাক্ষুষ করার জন্য ১০ হাজার মানুষের বসার একটি গ্যালারি তৈরি করা হয়েছে। 
 
প্রধানমন্ত্রী সন্তোষপ্রকাশ করে বলেন, গুজরাট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় কেন্দ্র হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যেই জামনগরে (হু) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরম্পরাগত চিকিৎসা পদ্ধতির আন্তর্জাতিক কেন্দ্র, জাতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়, পন্ডিত দীনদয়াল শক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় উদ্ভাবন ফাউন্ডেশন, ভাষ্করাচার্য ইন্সটিটিউট ফর স্পেস অ্যাপ্লিকেশনস এবং সদ্য উদ্বোধন হওয়া ইন-স্পেস প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি সারা দেশের, বিশেষ করে গুজরাটের যুবাদের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানগুলির সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান। 
 
উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০২০-র জুন মাসে ইন-স্পেস সদর দপ্তর স্থাপনের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে মহাকাশ সম্পর্কিত কর্মকান্ডে উৎসাহদান ও নিয়ন্ত্রণে মহাকাশ দপ্তরের একটি স্বশাসিত তথা একক জানালা বিশিষ্ট নোডাল এজেন্সি হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সদ্ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে। 
 
 
CG/BD/AS/