Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর নারী শক্তি সে সংবাদ অনুষ্ঠানে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন

প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর নারী শক্তি সে সংবাদ অনুষ্ঠানে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন


নয়াদিল্লি, ১২ অগাস্ট, ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘আত্মনির্ভর নারী শক্তি সে সংবাদ’ কর্মসূচিতে যোগ দেন। তিনি দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা – ন্যাশনাল রুরাল লাইভিহুড মিশন (ডিএওয়াই – এনআরএলএম) – এর আওতায় স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে মতবিনিময় করেন। শ্রী মোদী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠীর সদস্যদের সাফল্যের ঘটনাবলী সম্বলিত একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে ৪ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ১ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। এছাড়াও, অনুষ্ঠানে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প মন্ত্রকের প্রকল্পের আওতায় পিএমএফএমই (পিএম ফরমালাইজেশন অফ মাইক্রো ফুড প্রসেসিং এন্টারপ্রাইসেস) – এর সঙ্গে যুক্ত ৭ হাজার ৫০০ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রকল্প শুরু করার জন্য ২৫ কোটি টাকা এবং ৭৫টি কৃষি পণ্য উৎপাদক সংগঠনকে ৪ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী শ্রী গিরিরাজ সিং, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী স্বাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি এবং ফগগ্‌ন সিং কুলস্তে, পঞ্চায়েতি রাজ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল, কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প মন্ত্রী শ্রী পশুপতি কুমার পরশ, দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল উপস্থিত ছিলেন।
মহিলা পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি করোনা সময়কালে যে অভূতপূর্ব পরিষেবা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন। তিনি মাস্ক ও স্যানিটাইজার তৈরি এবং দরিদ্র মানুষদের খাদ্য বিতরণ ও জনসচেতনতা প্রসারে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে মহিলাদের আরও অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে এবং রাখি উৎসবের প্রাক্কালে ৪ লক্ষেরও বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা গ্রামীণ ভারতে নতুন বিপ্লবের সূচনা করেছে। বিগত ৬-৭ বছর ধরে মহিলা পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আজ দেশ জুড়ে ৭০ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী কাজ করছে। এই সংখ্যা আগের তুলনায় তিন গুণ বেশি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের আগে কোটি কোটি বোনেদের কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না। ব্যাঙ্কিং পরিষেবা থেকে তাঁরা ছিলেন শত যোজন দূরে। আর তাই সরকার জন ধন অ্যাকাউন্ট খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। আজ ৪২ কোটিরও বেশি জন ধন অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যার মধ্যে ৫৫ শতাংশ অ্যাকাউন্টই মহিলাদের। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ফলে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া সহজ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় জীবিকা মিশনের আওতায় সরকার আমাদের বোনেদের যে পরিমাণ অর্থ দিয়ে সাহায্য করছে, পূর্ববর্তী সরকারের তুলনায় তা বহুগুণ বেশি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য ৪ লক্ষ কোটি টাকার অনিশ্চয়তা ঋণ দেওয়া হচ্ছে। বিগত সাত বছরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি ব্যাঙ্কে ঋণ পরিশোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। একটা সময় ছিল, যখন ব্যাঙ্কে অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯ শতাংশ। আজ তা কমে ২-৩ শতাংশ হয়েছে। মহিলা পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সততার তিনি প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য গ্যারান্টি ছাড়া ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ করার কথা ঘোষণা করেছেন। এখন থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি গ্যারান্টি ছাড়া ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে। এ ছাড়াও যে অ্যাকাউন্টে ঋণ দেওয়া হচ্ছে, তার সঙ্গে সেভিংস অ্যাকাউন্ট যুক্ত করার শর্তাবলী প্রত্যাহার করে নেওয়া হ’ল। শ্রী মোদী জানান, আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে মহিলারা আরও উৎসাহ সহকারে যুক্ত হবেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে সময় এসেছে নতুন শক্তি নিয়ে নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার। বোনেদের সংঘবদ্ধ শক্তি তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের বোনেরা গ্রামগুলিকে সমৃদ্ধ করার কাজে যাতে যুক্ত হতে পারেন, তার জন্য সরকার উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহিলা পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির কৃষি ও কৃষি-ভিত্তিক শিল্পে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। গোষ্ঠীর সদস্যরা যাতে কৃষি-ভিত্তিক বিভিন্ন কাজে যুক্ত হতে পারেন, তার জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে। গোষ্ঠীর সব সদস্যরাই এর সুবিধা নিতে পারেন। এক্ষেত্রে সুদের হার যথাযথ এবং অন্যদেরকেও এই সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
শ্রী মোদী বলেন, নতুন কৃষি সংস্কারের সুবিধা শুধুমাত্র আমাদের কৃষকরাই পাবেন না, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির কাছেও তার সীমাহীন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা কৃষকদের থেকে সরাসরি ডালের মতো খাদ্যশস্য কিনে তা বাড়ি বাড়ি বিক্রি করতে পারেন।
খাদ্যশস্য মজুত রাখার ক্ষেত্রে এখন কোনও বিধিনিষেধ নেই। প্রধানমন্ত্রী স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে পরামর্শ দিয়েছেন, তারা কৃষকদের থেকে সরাসরি খাদ্যশস্য কিনতে পারেন। এর পর খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প সংস্থা তৈরি করে সেই শস্য সুন্দরভাবে প্যাকেটজাত করার মধ্য দিয়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। তিনি অনলাইন সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথভাবে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী শহরাঞ্চলে সরবরাহ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
শ্রী মোদী বলেন, সরকার দেশে খেলনা তৈরিতে উৎসাহ দিচ্ছে। এ কাজে সব ধরনের সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে। আমাদের উপজাতি জনগোষ্ঠীর বোনেরা প্রথাগত খেলনা তৈরি করলে তাঁদের বিশেষ সহায়তা দেওয়া হবে। এ কাজেও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দেশকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক থেকে মুক্ত করার সময় এসেছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি একাজে দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে পারে। গোষ্ঠীর সদস্যরা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক যাতে কেউ না ব্যবহার করেন, তার জন্য প্রচার চালাতে পারেন। আবার, প্লাস্টিকের বিকল্পের সন্ধান দিতে পারেন। গোষ্ঠীর সদস্যদের তিনি অনলাইনে সরকারের ই-মার্কেটপ্লেসের পুরো সুবিধা নেওয়ার পরামর্শ দেন। ভারতের পরিবর্তনের ফলে আমাদের বোনেদের সামনে অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন বাড়ি, শৌচালয়, বিদ্যুৎ, জল ও রান্নার গ্যাস – এগুলি সবই আমাদের বোনেরা পাচ্ছেন। সরকার আমাদের বোনেদের চাহিদা মতো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, টিকার ব্যবস্থা করছে। এর ফলে, মহিলাদের মর্যাদা যেমন বাড়ছে, একই সঙ্গে আমাদের মা-বোনেদের আস্থাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে প্রধানমন্ত্রী অমৃত মহোৎসবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশ গড়ার কাজে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ৮ কোটিরও বেশি সঙ্ঘবদ্ধ ক্ষমতায় অমৃত মহোৎসব এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে। পরিষেবার মানসিকতা নিয়ে কিভাবে তাঁরা সহযোগিতা করতে পারেন, তিনি সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে পরামর্শ দেন। এই প্রসঙ্গে মহিলাদের জন্য পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা, কোভিড-১৯ টিকাকরণের বিষয়ে প্রচার, গ্রামে স্বচ্ছতা ও জল সংরক্ষণের কাজে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ভূমিকার উদাহরণ দেন। মহিলা পরিচালিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে স্থানীয় দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, গোবর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘুরে দেখে সেখানকার ভালো পদ্ধতিগুলিকে জানতে হবে।
আত্মনির্ভর ভারতের সাফল্য নিহিত রয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির হাতে। কারণ, তাঁরা দেশের সর্বত্র মানুষকে সচেতন করে তোলার উদ্যোগ নেন। এর সুফল দেশ আজ পাচ্ছে।

CG/CB/SB