Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী আজ ওড়িশায় ৮০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিভিন্ন রেল প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন

প্রধানমন্ত্রী আজ ওড়িশায় ৮০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিভিন্ন রেল প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন


নয়াদিল্লি,  ১৮  মে, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে ওড়িশায় ৮০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিভিন্ন রেল প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন। পুরী এবং হাওড়ার মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করলেন তিনি। পুরী এবং কটক রেল স্টেশন দুটির আধুনিকীকরণ প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন তিনি। ওড়িশার ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ চালিত রেলপথ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া ডাবল লাইনের সম্বলপুর-তিতলাগড় রেলপথ, আঙ্গুল-সুকিন্দা নতুন ব্রডগেজ লাইন, মনোহরপুর-রাউরকেল্লা-ঝারসুগুদা-জামগা রেলপথের তৃতীয় লাইন এবং বিচ্চুপল্লি-ঝারতারভা নতুন ব্রডগেজ লাইন প্রকল্পগুলির সূচনা হল আজ।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে উপহার স্বরূপ এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস আধুনিক এবং উন্নয়নকামী ভারতের প্রতীক। বিভিন্ন জায়গায় বন্দে ভারত ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়া ভারতের দ্রুতি এবং প্রগতিকে স্পষ্ট করে তোলে। এই ধরনের পরিষেবা বিকাশের অর্থে নতুন মাত্রা যোগ করে, পাশাপাশি যাত্রীদের ভ্রমণ আরও স্বচ্ছন্দ করে দেয়। তীর্থযাত্রাই হোক, বা অন্য কোনো কাজেই হোক, মানুষ এখন মাত্র সাড়ে ৬ ঘণ্টায় কলকাতা এবং পুরীর মধ্যে যাতায়াত করতে পারবেন এই ট্রেনে সওয়ার হয়ে- যা আগের তুলনায় অনেক কম। এরফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ বাড়বে। নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে নতুন প্রজন্মের সামনে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুরের কোথাও যাতায়াতের প্রশ্নে মানুষের প্রথম পছন্দ ট্রেন। কাজেই পুরী এবং কটক রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণ নতুন রেলপথ কিংবা ওড়িশায় ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ চালিত রেলপথ চালু হওয়া সাধারণ মানুষের কল্যাণের প্রশ্নে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

স্বাধীনতার অমৃতকালের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐক্য এবং সম্মিলিত সক্ষমতা দেশকে উন্নতির সোপানে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রাথমিক শর্ত। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত-এর ধারণাকে প্রতিফলিত করে।

প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ভারত যেভাবে বিকাশের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে তাতে প্রতিটি রাজ্যের অবদান রয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন ভারত নিত্য-নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং তার সুফল প্রান্তিকতম এলাকাতেও পৌঁছে দেওয়ায় দায়বদ্ধ বলে আবারও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বন্দে ভারত ট্রেনের পাশাপাশি ফাইভ জি প্রযুক্তি এবং অতিমারীর সময় প্রতিষেধক উৎপাদনের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশার জন্য রেল খাতে বরাদ্দ বাজেটে অনেকটাই বেড়েছে। ২০১৪র আগে যেখানে প্রতি বছর গড়ে মাত্র ২০ কিলোমিটার রেলপথ তৈরি হত সেখানে ২০২২-২৩এ নির্মিত হয়েছে ১২০ কিলোমিটার রেলপথ। ওড়িশার বকেয়া নানা রেল প্রকল্পের কাজও দ্রুত সম্পন্ন করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন।

ওড়িশা হল সেই রাজ্যগুলির একটি যেখানে ১০০ শতাংশ রেলপথ বিদ্যুৎ চালিত- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গেও সব রেলপথকে বিদ্যুৎ চালিত করে তোলার কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। বিদ্যুৎ চালিত রেলপথ খনিজ সমৃদ্ধ ওড়িশাকে নানান দিক থেকে উপকৃত করবে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। পরিবেশের পাশাপাশি সামগ্রিক বিকাশের প্রশ্নেও বিদ্যুৎ চালিত রেলপথ ইতিবাচক ও সহায়ক বলে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য।

পরিকাঠামোগত বিকাশ মানুষের জীবনযাপন সহজ সাধ্য করে তোলার পাশাপাশি ক্ষমতায়নের বিষয়টিও নিশ্চিত করে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এক্ষেত্রে তিনি পিএম সৌভাগ্য যোজনার কথা বলেন- যার আওতায় দেশের আড়াই কোটি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে গেছেন। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৭ লক্ষ ২৫ হাজার এবং ওড়িশার ২৫ লক্ষ পরিবার।

দেশে উড়ান পরিষেবাও দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে বিমান বন্দরের সংখ্যা ৭৫ থেকে বেড়ে ১৫০ হয়েছে। সাধারণ মানুষও এখন এই পরিষেবা ব্যবহার করছেন যা বোঝা যায় সোস্যাল মিডিয়ায় তাঁদের পোস্ট থেকে। পরিকাঠামো খাতে ১০ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি কৃষকদের সামনে নতুন নতুন বাজারের দরজা খুলে দেওয়া, পর্যটনের প্রসার এবং শিক্ষার্থীদের পছন্দমতো প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ সামনে এনে দেওয়ার মতো নানান লক্ষ্য পূরণ সম্ভব করে তোলে। সাধারণ মানুষের কল্যাণে সরকারের গৃহীত গরিব কল্যাণ যোজনা, আয়ুষ্মান কার্ড, আবাস যোজনা কিংবা জল জীবন মিশনের মতো নানা কর্মসূচির উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের দ্রুত বিকাশের প্রশ্নে রাজ্যগুলির যথার্থ উন্নয়ন প্রাথমিক শর্ত। একথা মাথায় রেখেই পঞ্চদশ অর্থ কমিশন পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার মতো রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় ওড়িশা যাতে আরও দক্ষ হয়ে ওঠে সেজন্য ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করেছে সরকার।

পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং প্রতিটি অঞ্চলের বিকাশ নতুন ভারতের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওড়িশার রাজ্যপাল গনেশীলাল, মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা, দক্ষতা বিকাশ ও ঔদ্যোগিকতা দপ্তরের মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান প্রমুখ।

প্রেক্ষাপট

পুরী এবং হাওড়ার মধ্যে চলাচলকারী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই ট্রেনের যাত্রাপথে পড়ছে ওড়িশার খুরদা, কটক, জাজপুর, ভদ্রক ও বালেশ্বর জেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর, পুর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়া জেলা। দ্রুত গতির এই ট্রেন যাত্রীদের সাচ্ছন্দের পাশাপাশি পর্যটন এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশের পালে হাওয়া লাগাবে।

পুরী এবং কটক রেল স্টেশন দুটির আধুনিকীকরণ প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী। এই কাজ শেষ হলে যাত্রীরা পাবেন আন্তর্জাতিক মানের পরিষেবা।

ওড়িশায় ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ চালিত রেলপথ প্রধানমন্ত্রী উৎসর্গ করেছেন জাতির উদ্দেশে। এর ফলে ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি আমদানি করা অপরিশোধিত তেলের ওপর নির্ভর কমবে। প্রধানমন্ত্রী আজ আরও যেসব প্রকল্পের সূচনা করেন তা পূরণ করবে ওড়িশার মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা।

 

PG/AC/NS