1. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী গত ৮ জুন এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট মিঃ বারাক ওবামার সঙ্গে। এটি ছিল দু’জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বড় ধরনের দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, সকলের জন্য মানবাধিকার, সহনশীলতা, বহুত্ববাদ, সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা এবং আইনের শাসন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবারের শীর্ষ বৈঠকে। সেইসঙ্গে, এই সমস্ত ক্ষেত্রে পারস্পরিক কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও নিবিড় করে তোলার পন্থা-পদ্ধতির বিষয়টিও তাঁরা খতিয়ে দেখেন। অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও নিরন্তর বিকাশের লক্ষ্যে এবং দেশে ও বহির্বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তার বাতাবরণকে আরও সুরক্ষিত করে তোলার উদ্দেশ্যে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় মিলিত হন। একইসঙ্গে, অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রম রক্ষায় এবং পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নেতৃত্বদান প্রসঙ্গেও গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা হয় দুই নেতার মধ্যে।
2. দুই নেতার কার্যকালে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে তাৎপর্যপূর্ণ প্রসার ও অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে, তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান দুই নেতাই। ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর এবং পরের বছর জানুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট মিঃ বারাক ওবামার ভারত সফরকালের ভিত্তিতে প্রদত্ত যৌথ বিবৃতির রূপরেখার পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির বিষয়টি সবিস্তারে পর্যালোচনা করেন দুই নেতা। সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার প্রশ্নে সহযোগিতার এই সম্পর্ক অটুট রাখার ওপর জোর দেন দু’জনেই।
জলবায়ু ও বিশুদ্ধ জ্বালানি ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন নেতৃত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে
3. গত দু’বছরে ভারত-মার্কিন সংযোগরক্ষাকারী গোষ্ঠীর মাধ্যমে পরমাণু ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপগুলিকে স্বাগত জানান শ্রী মোদী এবং মিঃ ওবামা। ভারতের পরমাণু বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেড ও ওয়েস্টিং হাউসের ঘোষণাকেও স্বাগত জানান দুই বিশ্ব নেতা। অসামরিক পরমাণু ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন সহযোগিতার এক দশক পূর্তিতে গৃহীত পদক্ষেপগুলিরও পর্যালোচনা করেন তাঁরা। ভারতে ছ’টি এপি ১০০০ রিয়্যাক্টর সংস্থাপনের যে কাজ শুরু করেছে ওয়েস্টিং হাউস তার প্রস্তুতিপর্বের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেন দু’জনে। এই প্রকল্পে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি-রপ্তানি ব্যাঙ্ক এবং ভারত যে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলেছে তার অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
4. জলবায়ু এবং বিশুদ্ধ জ্বালানি ক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিতে ভারত ও আমেরিকা একে অপরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। শুধু তাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় দুটি দেশই একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করে চলেছে। প্যারিস চুক্তির সম্পূর্ণ রূপায়ণে অঙ্গীকারবদ্ধ দুটি দেশই। জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনায় বিশ্ব জুড়ে যে আশঙ্কা ও অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তার কার্যকর মোকাবিলায় একে অপরের বিশেষ সহযোগী। প্যারিস চুক্তিতে অংশগ্রহণের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অঙ্গীকারের কথা দৃঢ়তার সঙ্গে পুনরায় ব্যক্ত করেছে এবং সম্ভবত এ বছরই তাতে স্বাক্ষর করতে চলেছে। ভারতও সমানভাবে চুক্তির লক্ষ্য পূরণে নিজেকে প্রস্তুত করে তুলেছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাত্রাকে সহনশীলতার পর্যায়ে নামিয়ে আনার ব্যাপারেও একমত হন শ্রী মোদী ও মিঃ ওবামা। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণ সূত্রে যে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের ঘটনা ঘটে তার মোকাবিলায় আসন্ন আন্তর্জাতিক অসামরিক বিমান পরিবহণ সংগঠনের অধিবেশনে যুক্তভাবে কাজ করার সংকল্প নেন দুই নেতাই। এছাড়াও, জি-২০ নেতৃত্বের আওতায় চিহ্নিত লক্ষ্য পূরণে সুনির্দিষ্ট পথ ও উপায় অনুসরণ করে যেতেও সম্মত হন দুই বিশ্ব নেতা।
5. জ্বালানি নিরাপত্তা, বিশুদ্ধ জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত একটি চুক্তি এবং গ্যাস হাইড্রেট্স ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত একটি মউ স্বাক্ষরের বিষয়কে স্বাগত জানান শ্রী মোদী ও মিঃ ওবামা।
6. বন্যপ্রাণী সংরক্ষণকে উন্নয়নের তালিকায় একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ রূপে অন্তর্ভুক্তির যে আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী, তার পরিপ্রেক্ষিতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এবং বন্যপ্রাণী পাচার রোধে সহযোগিতা প্রসার সম্পর্কিত মউ স্বাক্ষরের বিষয়টিকেও স্বাগত জানান দুই নেতা।
বিশুদ্ধ জ্বালানি কর্মসূচিতে আর্থিক সহায়তা
7. ১৭৫ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে একটি প্রকল্প গড়ে তোলার যে উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক জাতীয় লক্ষ্য স্থির করেছে ভারত সরকার তাকে সমর্থন জানাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভারতে এই প্রকল্পটিতে ১০০ গিগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে সৌরশক্তি আহরণের মাধ্যমে।
8. আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা গড়ে তোলার বিষয়টিকেও আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ঐ দেশ মনে করে যে সৌরশক্তির আহরণ ও উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এই সমঝোতা। এর সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন মিঃ বারাক ওবামা। এই লক্ষ্যে এবং আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতাকে আরও জোরদার করে তুলতে ভারত ও আমেরিকা এই সমঝোতার তৃতীয় উদ্যোগটির কাজ শুরু করবে যুক্তভাবে। এ বছর সেপ্টেম্বরে ভারতে আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার যে প্রতিষ্ঠা-সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে তাতে অফগ্রিড ব্যবস্থায় সৌর জ্বালানির বিকাশের বিষয়টিতে জোর দেবে দুটি দেশই। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির উৎস সন্ধানে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলির মিলিত প্রচেষ্টার লক্ষ্য পূরণে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতোআর্থিক সহায়তা সংগ্রহের কাজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে বলে ঐ দেশের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে।
9. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব প্রযুক্তিগত ক্ষমতা ও সহায়সম্পদকে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির বিকাশ ও উন্নয়নে ব্যবহার করতে আগ্রহী। এই লক্ষ্যে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টা ও কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হতে চায় ঐ দেশ। এই সহযোগিতার সম্পর্ক যাতে আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলির কাছে অনুসরণযোগ্য একটি আদর্শ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখবে ভারত ও আমেরিকা দুটি দেশই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট মিঃ ওবামার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুগ্ম সহযোগিতার যে ক্ষেত্র ও বিষয়গুলি চিহ্নিত করা হয়, তার মধ্যে রয়েছে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে ভারত-মার্কিন বিশুদ্ধ জ্বালানি তহবিল গড়ে তোলা। এই তহবিলে সমানভাবে অর্থ বিনিয়োগের ব্যবস্থা করবে ভারত ও আমেরিকা দুটি দেশই। দু’দেশের এই যুক্ত প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে বিশুদ্ধ ও পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎ শক্তির উৎপাদন ও যোগান এবং আগামী ২০২০ সালের মধ্যে ১০ লক্ষের মতো বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো আর্থিক সহায়তা তহবিল গড়ে ওঠা সম্ভব বলে দু’দেশের পক্ষ থেকে যৌথভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও, এই দুটি দেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় বিশুদ্ধ জ্বালানি কেন্দ্র বা অঞ্চল গড়ে তোলারও পরিকল্পনা করা হয়েছে। গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেও একযোগে কাজ করে যাবে ভারত ও আমেরিকা – এই দুটি সহযোগী দেশ।
10.উদ্ভাবন মিশনের লক্ষ্য পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত ও আমেরিকা। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দুটি দেশের বিশুদ্ধ জ্বালানি উৎপাদন সম্পর্কিত গবেষণা ও উন্নয়নের কাজে বিনিয়োগের পরিমাণ দ্বিগুণ করে তোলার লক্ষ্যে প্যারিসে সিওপি-২১ শীর্ষ বৈঠককালে এই উদ্যোগের সূচনা করে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে গবেষণা ও উন্নয়ন ক্ষেত্রে পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা প্রসারের সঙ্কল্প গ্রহণ করেন দুই নেতা। এই লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিত অংশগ্রহণে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো বিনিয়োগ সহযোগিতা গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা করা হয় দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে।
অস্ত্র রোধ ও সংবরণেআন্তর্জাতিক প্রয়াস ও প্রচেষ্টাকে জোরদার করে তোলার লক্ষ্যে
11.২০১৬-তে ওয়াশিংটন ডিসি-র পরমাণু নিরাপত্তা শীর্ষ বৈঠকে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং বিশেষ অবদানের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আগামী ২০১৮ সালে ব্যাপক ধ্বংসের কাজে সন্ত্রাসবাদীদের অস্ত্র ব্যবহার রোধে যে শীর্ষ বৈঠক আহ্বানের প্রস্তাব দিয়েছেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী তাকেও স্বাগত জানান মিঃ বারাক ওবামা। সন্ত্রাসবাদীরা যে সমস্ত রাসায়নিক, জৈব, পরমাণু ও বেতার অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে সন্ত্রাস বৃদ্ধি করে চলেছে তার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে কাজ করার সঙ্কল্প গ্রহণ করে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
12.ব্যাপকভাবে ধ্বংসাত্মক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার রোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত ও আমেরিকা। এই কারণে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ সংস্থায় ভারতের দ্রুত অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বিশেষভাবে আশাবাদী এই দুটি দেশ। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীতে (এনএসজি) যোগদানের জন্য ভারতের আবেদনকে সমর্থন ও স্বাগত জানান প্রেসিডেন্ট ওবামা। তিনি বলেন, এই সদস্যপদ গ্রহণে ভারত এখন সর্বতোভাবে প্রস্তুত বলে তিনি মনে করেন। এ মাসের শেষের দিকে পরমাণু সরবরাহকারী দেশগুলির মিলিত গোষ্ঠীর পূর্ণাঙ্গ সম্মেলনে ভারতের এই অন্তর্ভুক্তির আবেদনকে সমর্থন জানানোর জন্য গোষ্ঠীভুক্ত সবক’টি দেশের কাছে আবেদন জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
জল, স্থল, অন্তরীক্ষ এবং সাইবার দুনিয়াকে সুরক্ষিত করে তোলার উদ্দেশ্যে
13.এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ২০১৫ সালের মার্কিন-ভারত যৌথ কৌশলগত চিন্তাভাবনা ক্ষেত্রে সহযোগিতার রূপরেখা রচনার কাজ সম্পূর্ণ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন দুই নেতা। আগামী বছরগুলিতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলসমূহে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রসারে পথপ্রদর্শকের কাজ করবে ঐ রূপরেখাটি। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে দুটি দেশই পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার সঙ্কল্প গ্রহণ করে।
14.নৌ-নিরাপত্তা সম্পর্কিতআলোচনার জন্য উদ্বোধনী বৈঠকটিকেও স্বাগত জানান দুই বিশ্ব নেতা। নৌ-নিরাপত্তা এবং নৌ-অঞ্চল সম্পর্কিত সচেতনতার বিষয়ে পারস্পরিক স্বার্থ সম্পর্কিত সহযোগিতা প্রসারে একটি প্রযুক্তিগত চুক্তি সম্পাদনের বিষয়কেও আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান শ্রী মোদী ও মিঃ ওবামা।
15.নৌ-নিরাপত্তার বিকাশ ও উন্নয়নে ভারত-মার্কিন সহযোগিতা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে সঙ্কল্পবদ্ধ হন দুই নেতা। নৌ-চলাচল সম্পর্কিত স্বাধীনতার বিষয়টিকে নিশ্চিত করে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তাঁরা। ভূ-খণ্ডের সীমারেখা সম্পর্কিত বিরোধের শান্তিপূর্ণ মীমাংসার পথ অন্বেষণে আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করার অনুকূলে বিভিন্ন দেশকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করার কাজেও সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তাঁরা। এব্যাপারে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রচলিত আইনগুলিও মেনে চলার সপক্ষে মতপ্রকাশ করেন দুই নেতা।
16.ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সামরিক পর্যায়ে সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করার আহ্বান জানায় দুটি রাষ্ট্র। বিশেষত, যৌথ মহড়া ও অনুশীলন, প্রশিক্ষণ, বিপর্যয় মোকাবিলা এবং মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে সাহায্য ও সহযোগিতা প্রসারের কাজে একযোগে পরস্পরের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন তাঁরা। ব্যবহারিক দিক থেকে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন এই দুই নেতা। এর পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তির স্মারকলিপি বিনিময় সম্পর্কিত নিয়মাবলী রচনার কাজ চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টিকে বিশেষভাবে স্বাগত জানান তাঁরা।
17.ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সম্পর্ক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারে এই বিষয়টিকে স্মরণে রেখে ভারতকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এক বিশেষ ও বড় অংশীদার রূপে স্বীকার করে আমেরিকা। এই লক্ষ্যে :
o ভারতের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময়ের কাজ অটুট ও অক্ষুণ্ণ রাখবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
o ভারতের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে সমর্থন জানানোর লক্ষ্যে এবং প্রতিরক্ষা উৎপাদন সম্পর্কিত বড় বড় শিল্পগুলিকে সহযোগিতা প্রসারের উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশের সংশ্লিষ্ট আইন অনুসরণ করে পণ্য ও প্রযুক্তি সরবরাহের কাজ অক্ষুণ্ণ রাখবে বলে ঘোষণা করে। ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সমর্থনে যৌথ উদ্যোগে যে সমস্ত প্রকল্প ও কর্মসূচির কাজ গ্রহণ করা হয়েছে বা হবে তাতে সম্ভাব্য সমস্তরকম সহযোগিতা প্রসারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
18.ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সমর্থনে এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও বাণিজ্য উদ্যোগের আওতায় যুগ্মভাবে প্রযুক্তি উৎপাদন ও বিকাশের কাজে সহযোগিতা প্রসারে সঙ্কল্প গ্রহণ করে দুটি দেশই। এই উপলক্ষে একটি নতুন কর্মীগোষ্ঠী গঠনের বিষয়টিকেও স্বাগত জানান তাঁরা। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ক্ষেত্রে নৌ, আকাশ এবং অন্যান্যভাবে অস্ত্রের প্রয়োগ ও ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখবে এই নতুন গোষ্ঠী। বিমান পরিবহণকারী প্রযুক্তি সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে যৌথ কর্মীগোষ্ঠীর আওতায় তথ্য বিনিময়ের খসড়া চূড়ান্ত করার কথাও ঘোষণা করেন দুই নেতা।
19.দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিখোঁজ সেনানীদের সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের যে উদ্যোগ গ্রহণ করে ভারত সেজন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নিখোঁজ ঐ সেনানীদের স্মৃতিচিহ্ন ফিরিয়ে দেওয়ার কাজে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি। এব্যাপারে পরস্পরকে সাহায্য ও সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতির কথা আরও একবার দৃঢ়তার সঙ্গে ব্যক্ত করেন দুই নেতা।
20.মহাকাশ ব্যবহারকারী দুটি দেশ হিসেবে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করে যে মানুষের অনুসন্ধান ও প্রচেষ্টার ক্রমপ্রসারমান একটি ক্ষেত্র হিসেবে মহাকাশের গুরুত্ব অপরিসীম। এই লক্ষ্যে এবং ভূ-পর্যবেক্ষণ, মহাশিক্ষা, মহাকাশ যান এবং মঙ্গল অভিযান সম্পর্কে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও গভীরতর করে তুলতে আগ্রহী দুটি দেশই। ইসরো-নাসা হেলিওফিজিক্স কর্মীগোষ্ঠী গঠন সংক্রান্ত কাজকর্মের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে দুটি দেশই। ভূ-পর্যবেক্ষণ সম্পর্কিত উপগ্রহ তথ্য বিনিময়ে একটি স্মারকলিপি রচনার কাজ চূড়ান্ত করার ওপরও জোর দেয় ভারত ও আমেরিকা।
21.অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়নের কাজে সাইবার ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও অবদানের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে দুই নেতাই এক সুরক্ষিত ও বিশ্বাসযোগ্য ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রসারের অঙ্গীকার দৃঢ়তার সঙ্গে পুনর্ব্যক্ত করেন। সাইবার নিরাপত্তায় পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও অঙ্গীকার করেন তাঁরা। এই লক্ষ্যে আগামীদিনে ভারত-মার্কিন সাইবার সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো চূড়ান্ত করা সম্পর্কে দু’দেশের মধ্যে যে সমঝোতা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে তাকেও স্বাগত জানানো হয় আন্তরিকতার সঙ্গে। গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো, সাইবার অপরাধ, ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজে সাইবারের ব্যবহার ইত্যাদি ক্ষেত্রেও পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা অটুট ও অক্ষুণ্ণ রাখার অঙ্গীকার করেন তাঁরা। সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত গবেষণা ও উন্নয়ন কাজও অন্তর্ভুক্ত এই সহযোগিতার কর্মসূচিতে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণে সাইবার ক্ষেত্রটির স্থিতিশীলতার বিকাশ ও উন্নয়নে একযোগে কাজ করে যাওয়ার সঙ্কল্প গ্রহণ করেন শ্রী মোদী এবং মিঃ ওবামা।
22.ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা অজ্ঞাতসারে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো বিনষ্টকারী অনলাইন কার্যকলাপের বিরোধিতার প্রশ্নেও সহমত পোষণ করে দুটি দেশই। কোন পক্ষই যাতে এই ধরনের বেআইনি ও নীতি বহির্ভূত কাজকর্মকে প্রশ্রয় বা সমর্থন না দেয় সে বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকারঅঙ্গীকারগ্রহণ করা হয় দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে। সাইবার ক্ষেত্রে দুটি দেশই পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রেখে চলবে পরস্পরের সুনির্দিষ্ট আইনগুলি অনুসরণ করে। তথ্যচুরি, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি-সমর্থিত উপায়ে মেধাস্বত্ত্ব হরণ, বাণিজ্যিক গোপনীয়তা ফাঁস এবং অন্যান্য গোপন বাণিজ্যিক তথ্য প্রকাশ করে দেওয়ার মতো ঘটনাতে কোন পক্ষই যাতে যুক্ত না থাকে বা এই ধরনের ঘটনাকে সমর্থন না করে, সে বিষয়েও পরস্পরের কাছে সঙ্কল্পবদ্ধ হয় দুটি দেশই।
হিংসা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার
23.সন্ত্রাসবাদী হামলা ও আক্রমণের ঘটনা যেভাবে মানবসভ্যতাকে বিপন্ন ও বিপর্যস্ত করে তুলেছে, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন দুই বিশ্ব নেতা। একইসঙ্গে, প্যারিস থেকে পাঠানকোট এবং ব্রাসেল্স থেকে কাবুল পর্যন্ত সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনাগুলির তীব্র নিন্দা করেন তাঁরা। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এবং সহমতাবলম্বী অন্যান্য দেশগুলির সাহায্য ও সমর্থনে অভিযুক্ত জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদীদের বিচারের কাঠগড়ায় তুলতে একযোগে কাজ করে যাওয়ার সঙ্কল্প গ্রহণ করেন তাঁরা।
24.ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বকে একুশ শতকের সন্ত্রাসবিরোধী একটি জোট শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে ২০১৫-র জানুয়ারিতে ভারত-মার্কিন যৌথ অঙ্গীকার ও বিবৃতি এবং ঐ বছরেরই সেপ্টেম্বর মাসে জঙ্গি হামলার মোকাবিলায় ভারত-মার্কিন যৌথ ঘোষণার ভিত্তিতে সন্ত্রাস দমনের কর্মপ্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করে তোলার কথা ঘোষণা করেন শ্রী মোদী এবং মিঃ ওবামা।
25.আল কায়দা, দায়েশ/আইএসআইএল, জৈশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা, ডি কোম্পানি এবং তাদের সহযোগী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির হুমকির মোকাবিলায় সহযোগিতার বাতাবরণকে আরও সুদৃঢ় করে তোলার অঙ্গীকার গ্রহণ করেন দুই নেতা। জঙ্গি দমন সম্পর্কিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রস্তাব ও ঘোষণা অনুসারে এই কাজ আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্কল্প গ্রহণ করা হয় দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে। এই লক্ষ্যে ভারত-মার্কিন সন্ত্রাস মোকাবিলায় যৌথ কর্মীগোষ্ঠীর পরবর্তী বৈঠকে সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মী ও আধিকারিকদের নির্দেশ দেন দুই নেতাই।
26.সন্ত্রাস বিরোধী তৎপরতায়ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এক গুরুত্বপূর্ণ দিকচিহ্ন বলে স্বীকার করেন দুই নেতাই। এর ভিত্তিতে সন্ত্রাসবাদীদের চিহ্নিত করার কাজে প্রয়োজনীয় তথ্যের যোগান ও বিনিময় সংক্রান্ত একটি ব্যবস্থা চূড়ান্ত করার বিষয়টিকেও সমর্থন জানান তাঁরা। ২০০৮-এর মুম্বাই এবং ২০১৬-র পাঠানকোটের ঘটনায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসবাদীদের বিচারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য তাঁরা আহ্বান জানান পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে।
27.আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে একটি সুসংবদ্ধ কর্মসূচি স্থির করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সম্মেলন আহ্বানের বিষয়টিকে সমর্থন জানান দুই নেতাই। কোনরকম ক্ষোভ বা অভিযোগকে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ ও হামলার যুক্তিসঙ্গত কারণ হিসেবে খাড়া করার যে কোন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে বিশ্বশক্তির সহযোগিতাকে একত্রিত ও ঐক্যবদ্ধ করে তোলার লক্ষ্যেই এই সম্মেলনের আহ্বান।
অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার প্রসার ও উন্নয়ন
28.ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়গুলিকে তুলে ধরা হয় দুই নেতার পর্যালোচনা বৈঠকে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নিরন্তর করে তোলার লক্ষ্যে সমস্তরকম সাহায্য ও সহযোগিতার কাজে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন তাঁরা। দু’দেশের মধ্যে এই সম্পর্কের উত্তরোত্তর প্রসার ও ব্যাপ্তি ঘটায় এবং তা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠায় ক্রেতাসাধারণের চাহিদা, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনমূলক কাজকর্মে এই ধরনের সহযোগিতাকে পরস্পরের দেশে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্কল্প গ্রহণ করেন তাঁরা।
29.দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকেযথেষ্ট মাত্রায় উন্নীত করতে নতুন নতুন সুযোগ অন্বেষণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন দুই বিশ্ব নেতা। পণ্য ও পরিষেবা যোগানের কাজে যাবতীয় বাধা-বিপত্তি দূর করারও আহ্বান জানান তাঁরা। একইসঙ্গে, বিশ্বের যোগান-শৃঙ্খলে এক দৃঢ় ও সুসংহত ব্যবস্থা নিয়ে আসার কথাও বলেন তাঁরা। এর মধ্য দিয়ে দুটি দেশেই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভ সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। এবছরের শেষের দিকে ভারতে কৌশলগত ও বাণিজ্যিক আলাপ-আলোচনার দ্বিতীয় বছরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে আলোচনা ও মতবিনিময় করা হবে এই বৈঠকে। বাণিজ্যিক নীতি ফোরামের আওতায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে দু’দেশের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনার সপ্রশংস উল্লেখ করেন দুই নেতা। এ বছর বাণিজ্যিক নীতি ফোরামের যে পরবর্তী বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তার ফলাফল আশানুরূপ হবে বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী ও মিঃ ওবামা। ভারতের স্মার্ট সিটি কর্মসূচিতে আমেরিকার বেসরকারি সংস্থাগুলির অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তকেও স্বাগত জানান তাঁরা।
30.ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসাধারণের মধ্যে মৈত্রীর যে দৃঢ় বন্ধন গড়ে উঠেছে তার সপ্রশংস উল্লেখ করে দুই নেতাই বলেন যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্রমবিকাশে দু’দেশের জনসাধারণের সম্পর্কের গভীরতা এক দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছে। দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য, পর্যটন ও শিক্ষামূলক সফর নজিরবিহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধুমাত্র ২০১৫ বছরটিতেই ১০ লক্ষেরও বেশি ভারতীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন। প্রায় সমান সংখ্যক মার্কিন নাগরিক এসেছেন ভারতে। দু’দেশের ছাত্র, পেশাদার ব্যক্তি, বিনিয়োগকারী এবং বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদের বিনিময় সফরসূচিকে উৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দুই নেতা। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন মানুষে-মানুষে সংযোগ বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে তেমনই দুটি দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক তথা প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কও আরও জোরদার হয়ে উঠবে। এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সফর সম্পর্কিত একটি উদ্যোগের বিকাশ ও উন্নয়ন সম্পর্কিত মউ স্বাক্ষরের বিষয়কে স্বাগত জানান তাঁরা। গ্লোবাল এন্ট্রি কর্মসূচিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে পদ্ধতিগত প্রক্রিয়ার কাজ আগামী তিন মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে।
31.ভারত-মার্কিন পূর্ণ সহযোগিতা সম্পর্কিত একটি চুক্তি অনুসরণের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুকূলেও সহমত পোষণ করেন দুই বিশ্ব নেতা। এই প্রসঙ্গে ২০১৫-র আগস্ট এবং ২০১৬-র জুনে দু’দেশের মধ্যে বিনিময় কর্মসূচি ফলপ্রসূ হয়েছে বলে স্বীকার করেন তাঁরা। এবছরের শেষের দিকে এ সম্পর্কিত আলোচনা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এক সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেন তাঁরা।
32.উদ্ভাবনী প্রতিভা ও শিল্পোদ্যোগীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এক অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন শ্রী মোদী এবং মিঃ ওবামা। আগামী ২০১৭-তে বিশ্ব শিল্পোদ্যোগ শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করতে চলেছে ভারত। ভারতের এই ভূমিকার বিশেষ প্রশংসা করে এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
33.মেধা সম্পত্তি রক্ষা সম্পর্কিত উচ্চ পর্যায়ের কর্মীগোষ্ঠীর অধীনে মেধাস্বত্ত্ব রক্ষার কাজে অগ্রগতির ঘটনা লক্ষ্য করে এই প্রচেষ্টা ও উদ্যোগকে স্বাগত জানান দুই নেতা। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার মাধ্যমে মেধাসম্পদ রক্ষার বিষয়টিকে নিশ্চিত করে তুলতে বিভিন্ন উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার কাজে উৎসাহদানের সঙ্কল্প গ্রহণ করেন তাঁরা।
34.এশীয় অর্থনীতির একটি সচল তথা গতিশীল অঙ্গ হল ভারত। এই কারণে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা মঞ্চে যোগদানে ভারতের আগ্রহের বিষয়টিকে সর্বতোভাবে সমর্থন ও স্বাগত জানায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রসার ও উন্নয়ন
35.বিজ্ঞানের মূল নীতিগুলির অন্বেষণ প্রচেষ্টায় দুটি জাতির পারস্পরিক সমর্থন ও সহযোগিতার কথাও তুলে ধরেন দুই নেতা। ভারতে একটি লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরি অর্থাৎ, লিগো গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার প্রস্তাবে সম্মত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অদূর ভবিষ্যতেই প্রস্তাবিত লিগোটি স্থাপিত হতে চলেছে। এছাড়াও, এই প্রকল্পের সার্বিক দেখভাল ও আর্থিক তহবিল গঠনের লক্ষ্যে সমন্বয়সাধনের দায়িত্ব বহন করবে ভারত-মার্কিন এক যৌথ গোষ্ঠী।
36.ওয়াশিংটন ডিসি-তে এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ‘আমাদের মহাসাগর সম্মেলন’ আয়োজিত হতে চলেছে। এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবে ভারত। এছাড়াও, এ বছরের শেষের দিকে মহাসাগরীয় বিষয়সমূহ নিয়ে প্রথম ভারত-মার্কিন কথাবার্তাও শুরু হতে চলেছে। সমুদ্র-বিজ্ঞান, মহাসাগরীয় উৎস থেকে শক্তি সন্ধান, মহাসাগরীয় অঞ্চলে জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক দূষণ রোধ এবং সমুদ্র সম্পদের নিরন্তর ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যেই এই আলাপ-আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
37.আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্পর্কিত কর্মসূচিটির রূপায়ণ এবং সঠিক সময়ে তা সম্পূর্ণ করার কাজে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত ও আমেরিকা। এ সম্পর্কিত কাজে যে স্টিয়ারিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে তাতে ভারতের বিশেষ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতাক্রমে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়গুলির মূল্যায়নের লক্ষ্যে এক যৌথ দায়িত্বশীলতার ওপর জোর দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট মিঃ বারাক ওবামা।
38.মাল্টি-ড্রাগ প্রতিরোধী যক্ষ্মা (এমডিআর-টিবি) যেভাবে বিশ্ব জুড়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে যক্ষ্মা প্রতিরোধ, নিবারণ ও নির্মূল করার কাজে শ্রেষ্ঠ পন্থা-পদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যেতে সঙ্কল্প গ্রহণ করে ভারত ও আমেরিকা।
39.সংক্রামক নয়, এ ধরনের রোগ-ব্যাধি যেভাবে দিন দিন বেড়ে চলেছে তাতে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেন দুই বিশ্ব নেতা। এই ব্যাধিগুলির ক্ষেত্রে যে সমস্ত ঝুঁকি রয়েছে তার মোকাবিলায় মানব দেহে শর্করা নিয়ন্ত্রণ, লবনের পরিমিত ব্যবহার, শিশু, কিশোর ও তরুণ তথা যুবকদের মধ্যে ব্যায়াম ও অন্যান্য শারীরিক কাজকর্ম বৃদ্ধিতে উৎসাহদান, তামাকের ব্যবহার কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ এবং সুস্থ জীবনশৈলী গড়ে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এছাড়াও, যোগাভ্যাস সহ প্রচলিত ও চিরাচরিত চিকিৎসা-পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে এক সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণেরও আহ্বান জানান তাঁরা।
40.ভারত-মার্কিন যৌথ উদ্যোগ ও সহযোগিতায় প্রতিষেধক টিকাদান কর্মসূচির প্রসারের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন দুই নেতা। এই প্রতিষেধক টিকাদানের কাজে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতায় সমীক্ষা ও গবেষণার কাজকেও বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে যাতে যক্ষ্মা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া সহ যে সমস্ত ব্যাধির সংক্রমণ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্ব জুড়ে, তার প্রতিরোধে উপযুক্ত প্রতিষেধক উদ্ভাবন ও আবিষ্কার সম্ভব হয়ে ওঠে।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নেতৃত্ব
41.বিশ্বের উন্নয়নের প্রশ্নে এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা ও দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে ভারত ও আমেরিকা পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করে যাবে বলে এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে স্থির হয়। প্রয়োজনে বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিরও সাহায্য চাওয়া হবে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে গৃহীত ২০৩০ সাল পর্যন্ত নিরন্তর উন্নয়নের কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে দুই নেতাই অঙ্গীকারবদ্ধ হন এই উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক কর্মসূচিটিকে দেশে-বিদেশে সঠিক রূপায়ণের লক্ষ্যে প্রসারিত করার ওপর। নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিশ্বের সবক’টি দেশের সঙ্গে কার্যকরভাবে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরও জোর দেন তাঁরা।
42.রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রস্তাবে সমর্থন যুগিয়ে যেতে অঙ্গীকারবদ্ধ হন দুই নেতা। সেইসঙ্গে, নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য রূপে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিকেও আমেরিকা সমর্থন করে যাবে বলে স্থির হয় দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত এদিনের বৈঠকে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদ অনুযায়ী বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার কাজে নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকা যাতে কোনভাবেই খর্ব না হয়, তা নিশ্চিত করতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
43.রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তি রক্ষার কাজে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সফল শীর্ষ বৈঠক আহ্বানের বিষয়টিকে স্বাগত জানান শ্রী মোদী এবং মিঃ ওবামা। বিশ্বের তৃতীয় দেশগুলিতে শান্তিরক্ষার কাজে রাষ্ট্রসঙ্ঘের উদ্যম ও প্রচেষ্টাকে আরও সংহত করে তোলার লক্ষ্যে দুটি দেশই বিশেষভাবে সহযোগিতা করে যাবে। এজন্য এ বছর নয়াদিল্লিতে আয়োজিত হবে আফ্রিকার সহযোগী দেশগুলির জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রথম শান্তিরক্ষা সম্পর্কিতকর্মসূচি সম্মেলন। আফ্রিকার ১০টি রাষ্ট্র এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা সম্পর্কিত কাজকর্মকে আরও জোরদার ও শক্তিশালী করে তুলতেও দু’দেশের পক্ষ থেকে সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন দুই বিশ্ব নেতা।
44.মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আফ্রিকার নেতৃবৃন্দের শীর্ষ বৈঠক এবং ভারত-আফ্রিকা ফোরাম শীর্ষ বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে দুই নেতাই আফ্রিকার সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার প্রসার ও উন্নয়নে সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুকূলে মতপ্রকাশ করেন। বিশেষত কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, নারীর ক্ষমতায়ন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মতো ক্ষেত্রগুলিতে ভারত, আমেরিকা ও আফ্রিকার মিলিত প্রচেষ্টা আফ্রিকা মহাদেশে এক নতুন অগ্রগতি ও উন্নয়নের সূচনা করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তাঁরা। এশিয়া, আফ্রিকা এবং অন্যান্য মহাদেশেও ভারত-মার্কিন সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষেও মতপ্রকাশ করেন তাঁরা।
দু’দেশের জনগণের মধ্যে উন্নততর সম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে
45.ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের দেশে অতিরিক্ত দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আমেরিকার সিয়াটেলে ভারত একটি নতুন দূতাবাস স্থাপন করবে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও একটি নতুন দূতাবাস গড়ে তুলবে দু’দেশের পছন্দমতো ভারতেরই একটি শহরে।
46.দুই নেতাই এই মর্মে ঘোষণা করেন যে ২০১৭ সালে সফর ও পর্যটন ক্ষেত্রে ভারত ও আমেরিকা একে অপরের অংশীদার হয়ে উঠবে। দু’দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা মঞ্জুরির ব্যবস্থা আরও সহজ ও সরল করে তোলারও প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা।
47.দুটি দেশের মধ্যে এক শক্তিশালী শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বন্ধন গড়ে উঠেছে। এই বিষয়টির অবতারণা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পঠনপাঠনরত ভারতীয় ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানান দুই নেতাই। ২০১৪-১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার। ভারতেও আমেরিকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য পঠনপাঠনের উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা যাবে বলে দুই নেতাই আশা ব্যক্ত করেন। বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় ‘ফুলব্রাইট-কালাম জলবায়ু ফেলোশিপ’-এর মাধ্যমে দু’দেশের সরকারের যৌথ প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে বহু ছাত্রছাত্রী জলবায়ু বিজ্ঞানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভেরসুযোগ পাবেন বলে মনে করেন দুই বিশ্ব নেতাই।
48.দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে ঘনিষ্ঠতর সংযোগ গড়ে তোলার ওপরও জোর দেন শ্রী মোদী ও মিঃ ওবামা। সফল সংযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যে সমস্ত বাধা রয়েছে সেগুলি দূর করতে সর্বতোভাবে প্রচেষ্টা চালানো হবে বলে তাঁরা ঘোষণা করেন। এ সম্পর্কিত আইনি বাধা, দু’দেশের নাগরিকদের মধ্যে বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, সন্তানের দায়িত্ব সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুটি দেশের মধ্যে যে মতপার্থক্য রয়েছে তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুকূলেমতপ্রকাশ করেন তাঁরা।
49.প্রাচীন শিল্পকলা নিদর্শন ভারতে ফেরত পাঠানোর যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে আমেরিকা, সেজন্য আমেরিকার ভূমিকার বিশেষ প্রশংসা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক শিল্পকলা নির্দশন চুরি ও পাচারের ঘটনার মোকাবিলায় দু’দেশের প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করে তুলতে অঙ্গীকার গ্রহণ করেন দুই নেতা।
50.মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোয় এবং তাঁর উষ্ণ আতিথেয়তার ব্যবস্থা করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। মিঃ বারাক ওবামাকে ভারত সফরেরও আমন্ত্রণ জানান তিনি।
PG/SKD/DM/S
Delighted to meet @POTUS again. We had very good discussions on India-USA ties. pic.twitter.com/dcxkWI5gnO
— Narendra Modi (@narendramodi) June 7, 2016
'The United States and India: Enduring Global Partners in the 21st Century'...the India-US Joint Statement. https://t.co/3BGlBXOUgo
— Narendra Modi (@narendramodi) June 7, 2016
The India-US Joint Statement covers important topics of India's relations with USA, including clean energy, defence, security & trade.
— Narendra Modi (@narendramodi) June 7, 2016
The Statement reaffirms the joint commitment of India & USA to stand together against terrorism & violent extremism.
— Narendra Modi (@narendramodi) June 7, 2016
We want to deepen cooperation in science, technology, health & boost people-to-people ties. This has been addressed in the Joint Statement.
— Narendra Modi (@narendramodi) June 7, 2016