Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক ঘোষণা : ৮ নভেম্বরমধ্যরাত্রি থেকে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে লেনদেনের আইনি বৈধতা থাকছে না


দুর্নীতি, কালোটাকা, বেআইনি অর্থের লেনদেন, সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা ও সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মে মদতদিতে অর্থ বিনিয়োগ এবং জাল নোটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রেআরেকটি ঐতিহসিক পদক্ষেপ সূচিত হল ০৮ নভেম্বর। ঐদিন মধ্যরাত্রি থেকেই ৫০০ টাকা এবং১০০০ টাকার লেনদেনের আইনি বৈধতা বাতিল বলে ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয়রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরামর্শ ও সুপারিশ অনুসারে তার পরিবর্তে বাজারে চালু করা হবেনতুন ৫০০ টাকা এবং ২০০০ হাজার টাকার নোট। তবে, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫, ২ এবং ১ টাকারলেনদেন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবারঅর্থাৎ ৮ নভেম্বর রাত্রে টেলিভিশনের পর্দায় জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত এক ভাষণে এইগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলির কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।তিনি বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে সৎ এবং খেটে খাওয়া নাগরিকদের স্বার্থপুরোপুরি অক্ষুণ্ণ ও সুরক্ষিত থাকবে। কিন্তু, সমাজ বিরোধী এবং জাতীয়তা বিরোধীদেরহাতে মজুত ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার নোট পরিণত হবে নিছকই কাগজের টুকরোয়।

প্রধানমন্ত্রীআরও বলেন যে, সরকারের এই পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দুর্নীতি, কালো টাকা এবং জাল ও নকলনোটের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সাধারণ নাগরিকদের হাত আরও শক্ত হবে। আগামী কিছুদিন সাধারণনাগরিকদের কষ্ট ও অসুবিধার প্রতি সংবেদনশীল প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতি সহজ করে তুলতেআরও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও ঘোষণা করেছেন।

নাগরিকদের হাতেথাকা ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার পুরনো নোট আগামী ১০ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্তব্যাঙ্ক অথবা ডাকঘরে জমা দেওয়া যাবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, আগামীঅল্প কিছুদিনের জন্য ব্যাঙ্ক ও এটিএম থেকে টাকার তোলার ব্যাপারে নির্দিষ্ট সীমাবেঁধে দেওয়া হচ্ছে।

শ্রী মোদী তাঁরঘোষণায় আরও বলেন যে, মানবতার কারণে সরকারি হাসপাতাল, হাসপাতালগুলির ওষুধ বিক্রয়কেন্দ্র, রেলের বুকিং কাউন্টার, সরকারি বাস, বিমানের টিকিট সংগ্রহের কাউন্টার,রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির পেট্রোল, ডিজেল ও গ্যাস বিক্রয় কেন্দ্র, কেন্দ্র ওরাজ্যের অনুমোদিত সমবায় ভাণ্ডার, সরকারি দুধ বিক্রয় কেন্দ্র, শ্মশান, সমাধিক্ষেত্র ইত্যাদি স্থানে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট গ্রহণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীবিশেষ জোরের সঙ্গে ঘোষণা করেছেন যে, চেক, ডিমান্ড ড্রাফ্‌ট, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডএবং ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কোনও রকম নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়নি।

বাজারে প্রচলিতপ্রচুর পরিমাণ অর্থ কিভাবে মুদ্রাস্ফীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং অসৎ উপায়ে ও অসৎউদ্দেশ্যে আর্থিক লেনদেনের ফলে মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতির কিভাবে অবনতি ঘটছে, সেকথাওতাঁর ভাষণে বিবৃত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই ধরণের পরিস্থিতি দরিদ্র ওমধ্যবিত্ত মানুষের বিশেষ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, ঘরবাড়ি কেনার সময়েসাধারণ মানুষ যে ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তার উদাহরণও তিনি তুলে ধরেন তাঁরভাষণে।

কালো টাকারজমানা দূর করতে সরকারি অঙ্গীকার

কালো টাকা মজুতও তার লেনদেনের প্রবণতা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে সরকার যে অঙ্গীকারবদ্ধ একথাপ্রধানমন্ত্রী বারংবার ঘোষণা করেছেন বিভিন্ন সময়ে ও বিভিন্ন উপলক্ষে। কেন্দ্রেএনডিএ সরকারের বিগত আড়াই বছরে তাঁর এই ঘোষণার পাশাপাশি কাজের দৃষ্টান্তও তিনিস্থাপন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীশ্রী মোদীর নেতৃত্বে গঠিত এনডিএ সরকারের প্রথম সিদ্ধান্তই ছিল কালো টাকা বিষয়ে একবিশেষ তদন্ত দল ‘সিট’ গঠন।

বিদেশিব্যাঙ্কে গচ্ছিত আমানতের ঘোষণা সম্পর্কে একটি আইন চালু করা হয় ২০১৫ সালে। এরপর,২০১৬’তে বেনামী লেনদেন বন্ধ করতে চালু করা হয় কিছু কঠোর নিয়মনীতি। ঐ একই সময়ে কালোটাকা ঘোষণা সম্পর্কে একটি কর্মসূচিও রূপায়িত হয়।

কেন্দ্রীয়সরকারের এই প্রচেষ্টার সুফলও ইতিমধ্যে লক্ষ্য করা গেছে। ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি কালোটাকা মজুতের ঘটনা প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হয়েছে।

আন্তর্জাতিকমঞ্চে কালো টাকার বিষয় উত্থাপন

গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্নআন্তর্জাতিক বৈঠকে কালো টাকার প্রশ্নটি বিভিন্ন সময়ে উত্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও কালো টাকার সমস্যানিয়ে তিনি আলোচনা ও মতবিনিময়ও করেছেন ।

গত আড়াই বছরেরেকর্ড পরিমাণ অগ্রগতি

প্রধানমন্ত্রীবলেছেন যে, সরকারি প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে ভারত এক উজ্জ্বল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেবিশ্ব অর্থনীতিতে । বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ভারত বর্তমানে রয়েছে এক পছন্দের তালিকায়। কারণ, এখানেবাণিজ্যিক কাজকর্ম করা যায় অনেক সহজভাবে। বিশ্বের অগ্রণী অর্থ সংস্থা ওপ্রতিষ্ঠানগুলি ভারতের সমৃদ্ধির বিষয়ে এখন বিশেষভাবে আশাবাদী।

এছাড়াও, ‘মেকইন ইন্ডিয়া’, ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ এবং ‘স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সুবাদেভারতীয় উদ্ভাবন ও শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রগুলি বিশেষভাবে উৎসাহ লাভ করেছে। ভারতে নতুননতুন শিল্পোদ্যোগ স্থাপন, উদ্ভাবন প্রচেষ্টা এবং সমীক্ষা ও গবেষণার কাজকে আরওজোরদার করে তুলতেই এই কর্মসূচিগুলির সূচনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ।

মঙ্গলবার রাতেপ্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক ঘোষণার পথ ধরে সরকারি উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার ক্ষেত্রটি আরওবলিষ্ঠ হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

PG/SKD/SB