Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রীর ইটানগর সফর

প্রধানমন্ত্রীর ইটানগর সফর

প্রধানমন্ত্রীর ইটানগর সফর

প্রধানমন্ত্রীর ইটানগর সফর


অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও ত্রিপুরায় একদিনের সফরের অঙ্গ হিসাবে প্রধামন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ইটানগরে যান। তিনি সেখানে গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দরের পাশাপাশি, সিলা সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের শিলান্যাস করেন। দূরদর্শনের অরুণপ্রভা চ্যানেলেরও সূচনা করেন। ইটানগরের ইন্দিরা গান্ধী পার্কে এই রাজ্যের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পেরও সূচনা করেন তিনি।

এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অরুণাচল প্রদেশ হ’ল সূর্যোদয়ের ভূমি। এই রাজ্য ভারতের আস্থার প্রতীক। তিনি আরও বলেন, “আমি আজ এই রাজ্যের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধনের সুযোগ পেয়েছি”। এই রাজ্যে আরও ১৩ হাজার কোটি টাকা মূল্যের একাধিক প্রকল্প রূপায়ণের কাজ চলছে। অরুণাচল প্রদেশ সহ উত্তর-পূর্বের অন্যান্য রাজ্যে উন্নয়নমূলক কাজকর্মের প্রেক্ষিতে তাঁর সরকারের ৫৫ মাসের সঙ্গে বিগত সরকারগুলির ৫৫ বছরের কাজের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষকে কাজকর্মের অগ্রগতির সামগ্রিক তুলনা করতে বলেন।

শ্রী মোদী আরও বলেন, বর্তমানে যে গতিতে কাজ হচ্ছে, অতীতে তা হয়নি। তিনি বলেন, বিগত সরকার অরুণাচলকে কেবল উপেক্ষায় করেছে, আমরা এখানে এর পরিবর্তনের জন্য এসেছি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়ন ঘটলেই নতুন ভারত গড়ে ওঠা সম্ভব। একমাত্র উন্নয়নই বিভিন্ন অঞ্চল ও মানুষকে একত্রিত করে। বিগত ৫৫ মাসে উন্নয়নের নিরীখে তহবিল ঘাটতি হয়নি বলে জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, “আমার সরকার অরুণাচল প্রদেশের জন্য ৪৪ হাজার কোটি টাকার তহবিল বরাদ্দ করেছে, যা বিগত সরকারগুলির বরাদ্দের তুলনায় দ্বিগুণ”।

প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের হোলোঙ্গী-তে গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দর নির্মাণ কাজের শিলান্যাস এবং নবরূপে সজ্জিত তেজু বিমানবন্দরের উদ্বোধন করেন। হোলোঙ্গী বিমানবন্দরে ৪ হাজার ১০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে যে নতুন টার্মিনাল ভবনটি তৈরি করা হচ্ছে, তার নির্মাণের খরচ ধরা হয়েছে ৯৫৫ কোটি টাকা। নির্মাণ কাজ শেষ হলে ব্যস্ততম সময়ে এই টার্মিনাল ভবনের যাত্রী পরিবহণ ক্ষমতা বেড়ে গিয়ে ঘন্টায় ২০০ জন যাত্রীর চলাচল সম্ভব হবে। এই উপলক্ষে শ্রী মোদী বলেন, আজ থেকেই রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটবে। বর্তমানে, ইটানগর যেতে হলে গুয়াহাটি বিমানবন্দরে নেমে সড়কপথে বা হেলিকপ্টারে পৌঁছতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তেজু বিমানবন্দর ৫০ বছর আগে নির্মিত হলেও কোনও সরকারই দেশের বাকি অংশের সঙ্গে এই রাজ্যের মানুষের জন্য যোগাযোগ-সাধনের পরিকল্পনাই করেনি। ছোট এই বিমানবন্দরটির সম্প্রসারণে প্রায় ১২৫ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। রাজ্যের মানুষকে বিমান পরিষেবা দিতে এই বিমানবন্দর প্রস্তুত বলেও তিনি জানান। উড়ান প্রকল্পের মাধ্যমে সুলভে রাজ্যের মানুষ বিমান ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। কেবল বিমানবন্দরই নয়, রাজ্যের মানুষ নতুন রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধা পেতে চলেছেন।

অরুণাচল প্রদেশে শ্রী মোদী সিলা সুড়ঙ্গপথ নির্মাণ কাজের শিলান্যাস করেন। সব মরশুমের উপযোগী এই সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের কাজ শেষ হলে তাওয়াং উপত্যকার সঙ্গে যাতায়াতের সময় ঘণ্টা খানেক হ্রাস পাবে। ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সুড়ঙ্গপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দ্বৈত ব্যবহারের উপযোগী বগিবিল রেল তথা সড়ক সেতু অরুণাচল প্রদেশকে মূল ভূখন্ডের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে। রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে তাঁর সরকার হাজার কোটি টাকার একাধিক প্রকল্প রূপায়ণ করছে। তিনি জানান, বিগত দু’বছরে রাজ্যের ১ হাজার গ্রামকে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ট্র্যান্স অরুণাচল হাইওয়ে নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির রাজধানীকে যুক্ত করার যে কর্মযজ্ঞ চলছে, ইটানগরকে রেলের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যুক্ত করা হয়েছে। নাহার লাগুন থেকে সপ্তাহে দু’বার অরুণাচল এক্সপ্রেস চলাচল করছে। রাজ্যের ৬টি জায়গায় রেল লাইন পাতার জন্য সমীক্ষার কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই তিনটি জায়গায় সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। তাওয়াং-কেও রেল মানচিত্রে নিয়ে আসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

সৌভাগ্য যোজনার আওতায় অরুণাচল প্রদেশের ১০০ শতাংশ পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেবার কথা ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। “আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিচ্ছি। আজ ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১২টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। এই প্রকল্পগুলির ফলে কেবল অরুণাচল প্রদেশই নয়, নিকটবর্তী রাজ্যগুলিও লাভবান হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গতকাল আমি সাধারণ মানুষকে উত্তর-পূর্ব ভারত ভ্রমণের বিভিন্ন ছবি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ হাজারেরও বেশি ছবি ট্যুইটারের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন”। তিনি বলেন, আজ যে প্রকল্পগুলির সূচনা হয়েছে, তা কেবল রাজ্যের মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নই ঘটাবে না, সেই সঙ্গে পর্যটন ব্যবস্থার প্রসার ঘটাবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

প্রধানমন্ত্রী অরুণাচল প্রদেশে ৫০টি স্বাস্থ্য ও রোগী কল্যাণ কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করেন। এ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার স্বাস্থ্য ও রোগী কল্যাণ কেন্দ্র গড়ে তুলছে। এই ধরণের কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান বৃদ্ধি পাবে। প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা শুরু হওয়ার ১৫০ দিনের মধ্যে প্রায় ১১ লক্ষ দরিদ্র মানুষ লাভবান হয়েছেন।

বাজেট ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৫ একরের কম জমি রয়েছে, এমন কৃষকরা বার্ষিক তিন কিস্তিতে ৬ হাজার টাকা পাবেন। রাজ্যে জৈব চাষাবাদ পদ্ধতিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে তাঁর সরকার অরুণাচল প্রদেশ সরকারকে সবরকম সহায়তা দেবে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

এরপর, প্রধানমন্ত্রী ইটানগরের ইন্দিরা গান্ধী পার্কে দূরদর্শনের ২৪তম অরুণপ্রভা চ্যানেলের সূচনা করেন। তিনি বলেন, এই চ্যানেলের মাধ্যমে রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলের খবরও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। রাজ্যের জোটে-তে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়ার স্থায়ী ভবনেরও শিলান্যাস করেন।

“অরুণাচল প্রদেশ ভারতের গর্ব। এই রাজ্য ভারতের প্রবেশদ্বার। আমি আপনাদের সকলকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, আমরা কেবল এই রাজ্যের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই নয়, সেই সঙ্গে রাজ্যটিকে দ্রুত উন্নয়নের সরণীতে নিয়ে আসতেও অঙ্গীকারবদ্ধ” – একথা বলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণ শেষ করেন।

CG/BD/SB