Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারত গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা; ২০ লক্ষ কোটি টাকার সর্বাত্মক প্যাকেজ


 
 
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। মহামারীর বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে যারা প্রাণ দিয়েছেন, তিনি তাঁদের স্মরণ করেন। শ্রী মোদী বলেন, অভূতপূর্ব কোভিড-১৯ এর কারণে যে সঙ্কট দেখা দিয়েছে, সেই যুদ্ধে আমাদের কেবল নিজেকে রক্ষা করলেই হবে না, আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
আত্ম-নির্ভর ভারত
প্রাক কোভিড এবং কোভিড পরবর্তী ভারতের বিষয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীর ভারতের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে আমাদের স্বনির্ভর হয়ে উঠতে হবে। এই সঙ্কটের ফলে যে সুযোগ এসেছে, সেই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) কিট এবং এন ৯৫ মাস্ক দৈনিক  ২ লক্ষটি করে তৈরি হচ্ছে, এক সময়ে যা তৈরির পরিমাণ ছিল অত্যন্ত নগণ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বায়নের এই পৃথিবীতে আত্মনির্ভরতার সংজ্ঞা বদলে গেছে। তিনি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা করে বলেন, দেশ যখন স্বনির্ভরতার কথা বলে, তা আত্ম-কেন্দ্রিকতার থেকে আলাদা। সারা বিশ্বকে একটি পরিবার হিসেবে ভাবাই ভারতীয় সংস্কৃতি, ভারতের প্রগতির অংশীদার হবে গোটা বিশ্ব। তিনি বলেন, সারা বিশ্ব মনে করে সমগ্র মানবজাতির উন্নয়নে ভারতের প্রচুর অবদান থাকবে।
কচ্ছের ভূমিকম্পের পর সেখানের বিপর্যয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দৃঢ় সংকল্পের কারণে ওই এলাকার পুনর্গঠন সম্ভব হয়েছিল। সেই একই ধরণের সঙ্কল্পের মাধ্যমেই দেশকে আত্মনির্ভর করে তুলতে হবে। 
শ্রী মোদী বলেন, আত্মনির্ভর ভারত দাঁড়িয়ে থাকবে পাঁচটি স্তম্ভের উপর। এগুলি হল – ১, অর্থনীতি , যা  ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনই আনবে না, প্রয়োজনীয় উচ্চতায়ও পৌঁছাবে। ২। পরিকাঠামো যা হবে ভারতের পরিচয়। ৩। ব্যবস্থা- একবিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থাপনা। ৪। প্রাণবন্ত জনসাধারণ – যা হবে আত্মনির্ভর ভারতের শক্তির উৎস।.৫। চাহিদা- আমাদের যে চাহিদা রয়েছে তা সরবরাহ শৃঙ্খলের পূর্ণ ক্ষমতার মাধ্যমে পূরণ করা হবে। তিনি সরবরাহ শৃঙ্খলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আরো শক্তিশালী করে তোলার উপর জোর দেন যাতে সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়। 

আত্মনির্ভর ভারত অভিযান
আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী একটি বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন কোভিড সঙ্কটের মোকাবিলায় সরকারের আগের ঘোষণা ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তার সঙ্গে এই প্যাকেজ যুক্ত করলে মোট আর্থিক পরিমাণ দাঁড়াবে ২০ লক্ষ কোটি টাকা যা দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের প্রায় ১০%। আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্যাকেজে ভূমি, শ্রমিক, ঋণ ও আইনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। কুটির শিল্প, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত , শিল্প সংস্থা সহ সকলের চাহিদাই এখান থেকে পূর্ণ করা হবে। তিনি বলেন আগামী কাল থেকে পর পর কয়েক দিন, অর্থমন্ত্রী এই প্যাকেজের বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন। 
বিগত ছয় বছরে ‘জেএএম’ ত্রয়ী সহ অন্যান্য সংস্কারের ইতিবাচক দিকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  দেশকে আত্মনির্ভর করে তোলার জন্য বেশ কিছু ক্ষেত্রে দৃঢ় সংস্কার গ্রহণ করতে হবে, যার মাধ্যমে কোভিডের মত সঙ্কট থেকে ভবিষ্যতে বেরিয়ে  আসা সম্ভব হবে। এই সংস্কারগুলির মধ্যে রয়েছে, কৃষি, যুক্তিসঙ্গত কর ব্যবস্থা, সহজ ও স্পষ্ট আইন, যোগ্য মানব সম্পদ এবং দৃঢ় আর্থিক ব্যবস্থা। এই সংস্কারগুলি ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে, বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করবে এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’কে আরো শক্তিশালী করে তুলবে। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মনির্ভরতার মাধ্যমে দেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সরবরাহ শৃঙ্খলে কঠোর প্রতিযোগিতার মোকাবিলা করতে পারবে। আর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল দেশকে এই প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করতে হবে। এই প্যাকেজ তৈরির সময় এই সব বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষমতাই বাড়বে না, গুনমান বজায় রাখার বিষয়টিকেও নিশ্চিত করা যাবে।
দেশের দরিদ্র মানুষ, শ্রমিক, পরিযায়ী শ্রমিক সহ বিভিন্ন শ্রেণীর অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংগঠিত এবং অসংগঠিত౼ উভয় ক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের এই প্যাকেজের মাধ্যমে ক্ষমতায়ন হবে। 
তিনি বলেন, এই সঙ্কট আমাদের স্থানীয় স্তরে উৎপাদন, স্থানীয় বাজার ও স্থানীয় সরবরাহ শৃঙ্খলের উপযোগিতার বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছে। সঙ্কটের এই সময়ে আমাদের সমস্ত চাহিদা স্থানীয় পর্যায়ে মেটানো গেছে। তিনি বলেন,  এখন সময় এসেছে স্থানীয় পণ্যগুলির ব্যবহার বাড়িয়ে সেগুলিকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে সাহায্য করা। 
কোভিডের সঙ্গে জীবন যাপন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক বিশেষজ্ঞ এবং বৈজ্ঞানিকেরা বলছেন, এই ভাইরাস দীর্ঘদিন ধরে আমাদের জীবন যাত্রার অংশ হয়ে থাকবে। কিন্তু এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে আমাদের জীবন যাতে এই ভাইরাসের সঙ্গে আবর্তিত না হয় সেটিকেও নিশ্চিত করতে হবে। জনসাধারণকে তাঁদের লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যেতে হবে আর সেই সঙ্গে মাস্ক পরে, ‘দুই গজ দূরে থেকে’ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
লকডাউনের চতুর্থ পর্যায়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন এবারের লকডাউন হবে আগের গুলির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। রাজ্যগুলির থেকে পাওয়া পরামর্শর উপর ভিত্তি করে নতুন নিয়ম তৈরি হবে , যে বিষয়ে ১৮ই মের আগেই জানানো হবে।

CG/CB