Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রথম “অরুণ জেটলি স্মারক বক্তৃতা” অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ প্রধানমন্ত্রীর


নয়াদিল্লি, ৮ জুলাই, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন দিল্লিতে আজ প্রথম “অরুণ জেটলি স্মারক বক্তৃতা” অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সিঙ্গাপুর সরকারের বর্ষীয়ান মন্ত্রী শ্রী থারমন সানমুগারত্নম ছিলেন এর প্রধান বক্তা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভাষণও দেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই আজ প্রয়াত জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী শিনজো আবে-র সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করেন। শ্রী আবে-র স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি তাঁর জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তাঁর। শ্রী আবে-কে ভারতের বিশ্বস্ত বন্ধু আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী শিনজো আবে-র সময়কালে ভারত-জাপান সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। জাপানের সাহায্যে যে প্রকল্পগুলি হাতে নেওয়া হয়েছে তার মধ্য দিয়েই শ্রী শিনজো আবে আগামী বহু বছর ভারতবাসীর হৃদয়ে থাকবেন বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী গভীরভাবে তাঁর অন্য বন্ধু শ্রী অরুণ জেটলির কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “বিগত দিনের কথা স্মরণ করলে আমার তাঁর সম্পর্কে নানা কথা মনে পড়ে যায়। আমরা সকলেই তাঁর বাগ্মিতার বিষয়ে অবগত রয়েছি। তাঁর ব্যক্তিত্ব ছিল বৈচিত্র্যময়। চরিত্রগতভাবে তিনি ছিলেন সকলের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন।” শ্রী জেটলির স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলেই তাঁর অনুপস্থিতি অনুভব করেন।

সিঙ্গাপুর সরকারের বর্ষীয়ান মন্ত্রী শ্রী থারমন সানমুগারত্নমকে তাঁর “অরুণ জেটলি স্মারক বক্তৃতা” জন্য ধন্যবাদ জানান। শ্রী সানমুগারত্নমের মেধা, বুদ্ধিমত্তা ও গবেষণার প্রশংসা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের আলোচনার বিষয় ‘অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে উন্নয়ন ও উন্নয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তি’, সরকারের উন্নয়ন নীতির মূল ভিত্তি। “সহজ কথায়, আমার কাছে এর মূল ভাবনা ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ ” – বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, এই ভাবনা বর্তমানের নীতি-নির্ধারকদের জন্য চ্যালেঞ্জ ও দ্বিধার সৃষ্টি করে। প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্তর্ভুক্তি ছাড়া সঠিক উন্নয়ন কি সম্ভব? আবার, এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ২০ বছর ধরে সরকার প্রধান হিসেবে আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা বলে, অন্তর্ভুক্তি ছাড়া সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব নয় এবং উন্নয়ন ছাড়াও অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে পৌঁছনো যায় না। এজন্যই তিনি বলেন, “প্রত্যেকের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আমরা উন্নয়নের পথ গ্রহণ করেছি।”

সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষে গত আট বছরে যে গতিতে অন্তর্ভুক্তি হয়েছে তা অতুলনীয়। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ৯ কোটির বেশি মহিলাকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া, ১০ কোটির বেশি গরীব লোককে শৌচাগার দেওয়া, ৪৫ কোটির বেশি জন ধন অ্যাকাউন্ট, দরিদ্রদের জন্য ৩ কোটি পাকা বাড়ির মতো বিষয়গুলি তুলে ধরেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, আয়ুষ্মান প্রকল্পের আওতায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ৫০ কোটিরও বেশি মানুষকে। গত চার বছরে ৩ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন বলেও তিনি জানান। ভারতের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের মানোন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে আয়ুষ্মান ভারত। ২০১৪ সালের আগে দেশে গড়ে ১০ বছরে ৫০টি মেডিকেল কলেজ তৈরি করা হত, কিন্তু গত ৭-৮ বছরে দেশে ২০৯টি নতুন মেডিকেল কলেজ খোলা হয়েছে যা আগের তুলনায় চারগুণেরও বেশি। এছাড়াও, ভারতে গত ৭-৮ বছরে স্নাতক স্তরে মেডিকেলে আসন সংখ্যা ৭৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে বার্ষিক মেডিকেল আসনের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। এগুলি সবই সরকারের অন্তর্ভুক্তি প্রকল্পের ফলে সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫ লক্ষ সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে হকারদের জন্য ‘পিএম স্বনিধি যোজনা’র আওতায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘উড়ান’ প্রকল্পের মাধ্যমে সহজ হচ্ছে আকাশপথে যাতায়াত। ‘হর ঘর জল’ বা প্রতি বাড়িতে জল প্রকল্পের আওতায় ৬ কোটির বেশি নলকূপের মাধ্যমে জলসংযোগের বিষয়টিও উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘স্বামীত্ব’ প্রকল্পের আওতায় দেশের সবচেয়ে বেশি দুর্বল শ্রেণীর মানুষের জন্য সম্পত্তির মালিকানা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮০ লক্ষ ‘প্রপার্টি কার্ড’ জারি করা হয়েছে।

“বর্তমানে ভারত সংস্কারের মাধ্যমে আগামী ২৫ বছরের জন্য পথদিশা তৈরি করছে। বর্তমানকালেই দেশের অধিকাংশ সংস্কারগুলির বাস্তব রূপ দেওয়া হয়েছে। এর আগের সরকার এসব কোনও কাজই করেনি। দেশের স্বার্থে ও জনগণের স্বার্থে আমরা সংস্কারের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিই।” – বলেন প্রধানমন্ত্রী। সংস্কারের জন্য সরকারের দিশার বিস্তৃত বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জনগণের চাহিদার ওপর নির্ভর করেই আমাদের নীতি তৈরি করা হয়। আমরা বেশি করে মানুষের কথা শুনি, তাঁদের চাহিদা বুঝি। সেজন্য কোনও চাপে পড়ে নয়, সংস্কারের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই আমাদের নীতি তৈরি করা হয়।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ন্যূনতম সরকার, সর্বাধিক প্রশাসন’ – এটি বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এই প্রসঙ্গে তিনি করোনার টিকা নির্মাণের জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের প্রসঙ্গটি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। বেসরকারি ক্ষেত্র দুর্দান্ত কাজ করলেও অংশীদার হিসেবে সর্বদাই সঙ্গে ছিল সরকার। বর্তমানে ভারত সারা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বিশ্বস্ত মহাকাশ পরিষেবা প্রদানকারী দেশ। এই ক্ষেত্রেও আমাদের বেসরকারি অংশীদারিত্ব ব্যাপক কাজ করছে। শ্রী মোদী বলেন, বর্তমানে সময় এসেছে যখন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে কাদের বিষয়ে সরকার আরও বেশি করে উৎসাহ দেবে।

দেশে পর্যটনের ক্ষেত্রও ক্রমশ বিকশিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সম্প্রতি দেশের ৭৫টি বিশেষ স্থানে যোগ দিবস উদযাপনের মাধ্যমে জনগণকে অনেক নতুন পর্যটন ক্ষেত্র সম্পর্কে সচেতন করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আজাদি কা অমৃতকাল’ দেশের জন্য নানা নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন সিঙ্গাপুর সরকারের বর্ষীয়ান মন্ত্রী শ্রী থারমন সানমুগারত্নম। এরপর ছিল একটি আলোচনাসভা।

প্রধানমন্ত্রী আজ থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত আয়োজিত কৌটিল্য অর্থনৈতিক কনক্লেভ-এ অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন।

 

PG/PM/DM/