প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগ নীতির একগুচ্ছ সংশোধন প্রস্তাব আজ অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগকে আরও সরল ও উদার করে তুলতেই সংশোধন প্রস্তাবে সম্মতি জানায় মন্ত্রিসভা।সংশোধনগুলি কার্যকর হলে দেশে বাণিজ্যিক কাজকর্মও তুলনামূলকভাবে সহজতর হয়ে উঠবে। এরফলে, সার্বিকভাবে বৃদ্ধি পাবে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের মাত্রাও যা বিনিয়োগ,কর্মসংস্থান এবং আয় ও উপার্জনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ হল দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ প্রচেষ্টায় একটি বড় ধরণের চালিকাশক্তি।দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে ঋণের মুখাপেক্ষী না থেকে বিনিয়োগের ভরসা করেদেশকে যে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, এই নীতিটি হল সেই লক্ষ্যেই এক বিশেষ পদক্ষেপ। সরকারইতিমধ্যেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতিকে আরও বিনিয়োগ-বান্ধব করে তুলেছে। অধিকাংশক্ষেত্রগুলিতেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিচালিত করেতোলা হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে প্রতিরক্ষা, নির্মাণ, বিমা, পেনশন, সম্প্রচারব্যবস্থা, বিভিন্ন আর্থিক পরিষেবা, সম্পদের পুনর্গঠন, অসামরিক বিমান পরিবহণ, ওষুধউৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে আরও বেশি মাত্রায় বিদেশি বিনিয়োগআকর্ষণের জন্য সংস্কার প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সরকার গৃহীতবিভিন্ন পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আসতেও শুরু করেছেউৎসাহব্যঞ্জকভাবে। যেমন, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরেদেশে মোট প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগেরপরিমাণ ছিল ৪৫.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তুলনায়, তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এই মাত্রা ছিল ৩৬.০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আবার, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৫৫.৪৬বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বিদেশি বিনিয়োগ এসে পৌঁছেছে ভারতে। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরেবিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৬০.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সরকার মনে করে যেআরও বেশি মাত্রায় বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের পর্যাপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে এ দেশে। প্রত্যক্ষবিদেশি বিনিয়োগকে আরও সরল ও উদার করে তোলার মাধ্যমেই এই সম্ভাবনার বাস্তবায়ন ঘটতেপারে। এই কারণেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতিতে বেশ কয়েকটি সংশোধন বাস্তবায়নেরপ্রস্তাবটিতে সম্মতি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
যে যে ক্ষেত্রে এইসংশোধন কার্যকর হবে তার মধ্যে রয়েছে – খুচরো ব্যবসা-বাণিজ্য, অসামরিক বিমানপরিবহণ, নির্মাণ প্রচেষ্টা, ওষুধ উৎপাদন ইত্যাদি। একটি মাত্র ব্র্যান্ডের খুচরোব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকে ১০০ শতাংশ স্বয়ংক্রিয়পদ্ধতিচালিত করে তোলা হবে। নির্মাণ প্রচেষ্টাকে উৎসাহ দিতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিচালিতকরা হবে ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকে। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান পরিবহণেররুটগুলিতে ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হবে বিদেশি বিমান পরিবহণসংস্থাগুলিকে। প্রাথমিক বাজারগুলির মাধ্যমে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হবে এফআইআই এবংএফপিআই-গুলিকে। অন্যদিকে, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে চিকিৎসা সংক্রান্ত পদ্ধতি ওযন্ত্রপাতির প্রচলিত সংজ্ঞাটির পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
PG/SKD/DM/