নয়াদিল্লি, ১২ এপ্রিল, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের জন্য জোরালো সওয়াল করেছেন। তিনি আস্থা ব্যক্ত করেন যে, ভারতের সক্ষমতাকে সমগ্র বিশ্ব শীঘ্রই স্বীকৃতি দেবে। শ্রী মোদী প্যারিসে এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গত দু’দিনে ফ্রান্সে তাঁর বিভিন্ন কর্মসূচির এবং প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্পণের কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই স্মৃতিসৌধে যেতে পেরে তিনি গর্বিত হয়েছেন কারণ, প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সময় আত্মবলিদানকারী সাহসী ভারতীয় সেনানীদের কথা এই স্মৃতিসৌধ স্মরণ করায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্বকে আত্মবলিদানের এই মানসিকতাকে স্বীকৃতি জানাতে হবে, যা ভারতের কাছে অভিনব। তিনি বলেন, সাহসী এই সৈনিকরা না কেবল নিজের দেশের রক্ষায় সেই সঙ্গে ফ্রান্সের জন্যও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রক্ষা ক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়ে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্মৃতিসৌধে এসে তিনি এই বার্তাই দিতে চান যে, গোটা পৃথিবী যেন ভারত সম্বন্ধে ধারণা পাল্টায় কারণ, ভারত এমন এক দেশ যে অন্যদের জন্যও আত্ম বিসর্জন দিতে পারে। শ্রী মোদী বলেন, “ভারত কখনও অন্য দেশকে আক্রমণ করেনি এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তি রক্ষা অভিযানে বিপুল অবদান রেখেছে। তথাপি, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ জোটেনি। তিনি বলেন, “সেই সব দিন আজ অতীত, যখন স্থায়ী সদস্যপদের জন্য ভারত মিনতি করতো”। ভারত আজ তার অধিকারের দাবি করে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন যে, বুদ্ধ ও গান্ধীর দেশ ভারতে নৈতিকতার গুরুত্ব অনেক। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘ এ বছর তার ৭০তম প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের বিষয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করবে। প্রধানমন্ত্রী আনন্দ প্রকাশ করেন যে, রি-ইউনিয়ন আইল্যান্ড ও গুয়াডালোপ সহ বিশ্বের বিভিন্ন অংশের দ্বীপ অঞ্চলগুলিতে ফরাসী ভাষায় অনুদিত হয়ে তাঁর ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে। তিনি জানান, এই দ্বীপগুলিতে প্রায় আড়াই লক্ষ ভারতীয় বসবাস করেন। ফ্রান্সে ভারতের বংশোদ্ভূত এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁদের অতীত ভারতের যোগসূত্র সম্বন্ধে এখন কোনও ধারণাই নেই। তিনি বলেন, ভারত এখনও এদের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে কারণ, এদের ডি.এন.এ. অভিন্ন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দশ মাস পুরানো তাঁর সরকারের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে তিনি যথেষ্ট আত্মপ্রত্যয়ী যে, সমস্ত ভারতীয়দের আশা-আকাঙ্খা পূর্ণ হবে। শ্রী মোদী নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা, রান্নার গ্যাসে প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তর, কয়লা ব্লক নিলামের মতো উদ্যোগগুলির সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি সম্পর্কে ফ্রান্স ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছে। তাঁর সরকারের সমস্ত নীতির উদ্দেশ্যই হল, ভারতের যুব সম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তিনি বলেন, জনসংখ্যাগত বৈচিত্র্যই ভারতের সব থেকে বড় শক্তি।