Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

‘পিএন পানিকর অধ্যয়ন দিবস – অধ্যয়ন মাস’-এর সূচনা উপলক্ষে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর

s20170617107706


পঠনপাঠনের মাস -এরসূচনা উপলক্ষে আজ এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। এর উদ্যোগ আয়োজনের জন্য আমার অভিনন্দন পি এন পানিকর ফাইন্ডেশনকে। পাঠ করার অভ্যাসের থেকে বেশি আনন্দ অন্য আরকিছুতেই পাওয়া যায় না। আবার, জ্ঞানের থেকে বড় শক্তি আর কিছুই হতে পারে না।

বন্ধুগণ।

সাক্ষরতারদিক থেকে কেরল শুধুমাত্র পথিকৃৎই নয়, সমগ্র জাতির প্রেরণার উৎসও।

দেশের প্রথম১০০ শতাংশ ‘সাক্ষর নগরী’ এবং ১০০ শতাংশ ‘সাক্ষর জেলা’ অবস্থিত কেরলেই । প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও ১০০ শতাংশসাফল্য অর্জন করেছে এই রাজ্যটি। দেশের বেশ কয়েকটি প্রাচীনতম স্কুল, কলেজ ওগ্রন্থাগার অবস্থিত কেরলে ।

তবে,সরকারের একার পক্ষে এই সাফল্য অর্জন করা কখনই সম্ভব হত না যদি না এর পেছনে সক্রিয়ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন নাগরিক এবং সেইসঙ্গে সামাজিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলি।জনসাধারণের অংশগ্রহণের দিক থেকে কেরল এক্ষেত্রে এক বিশেষ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।প্রয়াত শ্রী পি এন পানিকর এবং তাঁর ফাউন্ডেশনের আমি একজন গুণগ্রাহী। কেরলেগ্রন্থাগার ও পাঠাগারের এক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পেছনেও বিশেষ চালিকাশক্তি ছিলেনশ্রী পি এন পানিকর। ১৯৪৫ সালে ৪৭টি গ্রামীণ পাঠাগারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এই কাজসম্ভব করে তুলেছিলেন কেরল গ্রন্থশালা সঙ্ঘের মাধ্যমে।

আমি বিশ্বাসকরি যে অধ্যয়ন বা পাঠ করার অভ্যাস এবং জ্ঞানের পিপাসা শুধুমাত্র কর্মজগতের মধ্যেইসীমাবদ্ধ নয়। একইসঙ্গে তা সামাজিক দায়িত্ববোধ ও দায়িত্বশীলতা এবং জাতি তথা মানবতারপ্রতি সেবার অভ্যাস গড়ে তোলে। দেশের ঐক্য ও সংহতির প্রতি সম্ভ্রমবোধের পাশাপাশি,শান্তির বার্তারও তা প্রসার ঘটায়।

কথিত আছে যেএকজন সাক্ষর নারী দুটি পরিবারকে শিক্ষিত করে তুলতে পারেন। কেরল এক্ষেত্রেনিঃসন্দেহে এক বিশেষ যোগ্যতার অধিকারী।

পি এন পানিকরফাউন্ডেশন যে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সুশীল সমাজের বিভিন্নসংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে পঠনপাঠন তথা অধ্যয়নের অভ্যাস গড়ে তোলার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণকরেছে, সেকথাও আমার অজানা নয়।

তাদেরলক্ষ্য হল, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ৩০ কোটি অনগ্রসর মানুষকে এই ব্যবস্থার আওতায়নিয়ে আসা। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হল উন্নতি ও সমৃদ্ধির একটি মাধ্যম হিসেবেপঠনপাঠনের অভ্যাসকে গড়ে তোলা।

পড়াশোনারঅভ্যাস থাকলে তা মানুষের চিন্তার জগতের আরও প্রসার ঘটায় । দেশের শিক্ষিত জনসংখ্যা ভারতকে পৌঁছেদিতে পারে বিশ্ব উৎকর্ষের এক বিশেষ স্থানে ।

গুজরাটেরমুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সমান উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে আমি সূচনা করেছিলাম ‘ভঞ্চেগুজরাট’ নামে এই ধরনের একটি আন্দোলনের। এর অর্থ হল ‘গুজরাটে পঠনপাঠনের অভ্যাস’।জনসাধারণকে পঠনপাঠনের কাজে আগ্রহী করে তুলতে একটি সরকারি গ্রন্থাগারও আমি পরিদর্শনকরেছিলাম। আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল বিশেষতঃ, রাজ্যের তরুণ প্রজন্ম। আমি নাগরিকদেরকাছে আবেদন জানিয়েছিলাম, তাঁদের গ্রামে একটি করে ‘গ্রন্থ-মন্দির’ গড়ে তোলার জন্য।মাত্র ৫০ বা ১০০টি বই নিয়েই এই কাজ শুরু করা যেতে পারে।

কাউকে উপহারহিসেবে পুষ্পস্তবক না দিয়ে একটি বই উপহার দেওয়ার জন্য আমি আবেদন জানিয়েছিলামসাধারণ মানুষের কাছে। কারণ, আমি জানি যে এই ধরনের প্রচেষ্টা অনেক কিছুই সম্ভব করেতুলতে পারে।

বন্ধুগণ!

আমরা লক্ষ্যকরেছি যে উপনিষদের সময়কাল থেকে শুরু করে সকল যুগেই শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রম লাভ করেএসেছেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারীরা। বর্তমানে আমরা বাস করছি তথ্যের যুগে। তাই আজওজ্ঞানই হল আমাদের আলোর দিশারী।

নয়াদিল্লিরইন্ডিয়ান পাবলিক লাইব্রেরি মুভমেন্টের সঙ্গে সহযোগিতাক্রমে ১৮টি সাধারণগ্রন্থাগারকে সঙ্গে নিয়ে ডিজিটাল পাঠাগার গড়ে তোলার এক বড় ধরনের কাজে এগিয়ে এসেছেপানিকর ফাউন্ডেশন।

এই ধরনেরইপঠনপাঠন তথা পাঠাগার আন্দোলন আমি দেখতে চাই সারা দেশেই। শুধুমাত্র জনসাধারণকেসাক্ষর করে তোলার মাধ্যমেই আন্দোলনের কাজ সীমাবদ্ধ থাকবে না। আর্থ-সামাজিক রূপান্তরঘটানোর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্যও তাকে চেষ্টা করে যেতে হবে। এইভাবেই,জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ভিত্তিকে অনুসরণ করে গড়ে উঠবে উন্নততর সমাজের বিশেষ কাঠামোটি।

আমি একথাজেনে খুবই আনন্দিত যে ১৯ জুন তারিখটিকে রাজ্য সরকার ‘অধ্যয়ন দিবস’ রূপে ঘোষণাকরেছে। এই কাজটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে স্পষ্টতই বিভিন্ন ধরনের প্রচেষ্টা চালানোহবে।

ফাউন্ডেশনেরকর্মপ্রচেষ্টায় সাহায্য ও সমর্থন নিয়ে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকারও। গত দু’বছরেএজন্য ফাউন্ডেশনকে দেওয়া হয়েছে ১.২০ কোটি টাকা।

বর্তমানেফাউন্ডেশন ডিজিটাল সাক্ষরতার ওপর বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে একথাও আমার কাছে খুবইআনন্দের বিষয়। কারণ আমি মনে করি যে এর বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে এই মুহূর্তে।

বন্ধুগণ!

জনসাধারণেরশক্তি বা ক্ষমতায় আমি বিশ্বাসী। কারণ আমি মনে করি যে এক উন্নততর সমাজ তথা দেশ গড়েতোলার যথেষ্ট ক্ষমতা নিহিত রয়েছে তাঁদের এই শক্তির মধ্যে।

আজ এখানেশ্রোতা ও দর্শকদের মধ্যে উপস্থিত নবীন প্রজন্মের প্রত্যেককেই আমি আর্জি জানাবপঠনপাঠনের অভ্যাস গড়ে তোলার সঙ্কল্প গ্রহণের জন্য। প্রত্যেক মানুষকেই এই কাজেউদ্বুদ্ধ করার অঙ্গীকার গ্রহণ করতে হবে।

আর এইভাবেইআমরা সকলে মিলে আমাদের ভারতকে আবার গড়ে তুলতে পারব জ্ঞান ও প্রজ্ঞার এক বিশেষ পীঠস্থানহিসেবে। ধন্যবাদ!

PG/SKD/DM