Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

পরাক্রম দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

পরাক্রম দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ


নয়াদিল্লি, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫

 

পরাক্রম দিবস হিসেবে উদযাপিত নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ভাষণ দিয়েছেন। এই উপলক্ষে জনসাধারণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শ্রী মোদী বলেছেন, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকীতে সমগ্র দেশবাসী আজ শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁকে স্মরণ করছেন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছরের পরাক্রম দিবসের বর্ণাঢ্য উদযাপন ওড়িশায় তাঁর জন্মস্থলে উদযাপিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে ওড়িশা সরকার এবং সেখানকার মানুষদের তিনি অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশার কটকে এই উপলক্ষে নেতাজীর জীবন ও কর্ম নিয়ে এক বিরাট প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন চিত্রশিল্পী তাঁদের ক্যানভাসে নেতাজীর জীবন সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। নেতাজীর সংগ্রহে থাকা নানা বইও সেখানে প্রদর্শিত হয়েছে। শ্রী মোদী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, নেতাজীর জীবনযাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত এই পরম্পরাগুচ্ছ ‘মেরী যুবা ভারত’ অথবা MY Bharat-এ নতুন শক্তি যোগাবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেতাজীর জীবন ও কর্ম উন্নত ভারত (বিকশিত ভারত)-এর সঙ্কল্প অর্জনে আমাদের সর্বদা অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য ছিল ‘আজাদ হিন্দ’। এই সঙ্কল্প অর্জনে আজাদ হিন্দ-এর লক্ষ্যপথে তিনি তাঁর সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ছিলেন অবিচল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছল পরিবারে নেতাজী জন্ম নিয়েছিলেন। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হন। ব্রিটিশ সরকারের কোনো পদস্থ কর্তার পদে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন অনায়াসে অতিবাহিত করতে পারতেন। যদিও নেতাজী দেশের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে সমস্যাদীর্ণ বিপদসঙ্কুল পথে ভারত সহ বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ান। নেতাজী সহজ, স্বাচ্ছন্দ্যের জীবনে বাঁধা পরেননি কখনও। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিকশিত ভারত গড়ে তুলতে আজ আমাদের সকলকে সেই স্বাচ্ছন্দ্যের পথকে ডিঙিয়ে আসতে হবে। বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা অর্জনে উৎকর্ষের পথ নিয়ে দক্ষতা অর্জনে সকলকে আলোকপাত করার ওপর তিনি জোর দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করতে নেতাজী দেশের প্রত্যেকটি প্রান্তের প্রত্যেক শ্রেণীর বীর নারী ও পুরুষদের যুক্ত করেছিলেন। বিভিন্ন ভাষা-ভাষীর হলেও দেশের স্বাধীনতাই ছিল তাঁদের প্রত্যেকের লক্ষ্য। শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, আজ বিকশিত ভারত-এর জন্য এই ঐক্যবোধই আমাদের কাছে এক পরম শিক্ষা। তিনি বলেন, স্বরাজ-এর জন্য সেই সময় ঐক্যবোধ গড়ে তোলাই ছিল অত্যাবশ্যক, বিকশিত ভারত-এর জন্য এখন যা গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বে ভারতের অগ্রগতির সুগম বাতাবরণের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীকে ভারত কি করে নিজের করে গড়ে তুলছে সারা বিশ্ব সেদিকে চোখ রেখেছে। নেতাজী সুভাষের থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ভারতের ঐক্য গড়ে তোলার গুরুত্বের ওপর জোর দেন তিনি। দেশের ঐক্যকে যারা বিনষ্ট করতে চাইছে এবং দেশকে দুর্বল করতে চাইছে, তাদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সকলকে সতর্ক করে দিয়েছেন।

শ্রী মোদী বলেন, ভারতের ঐতিহ্য নিয়ে নেতাজী সুভাষ ছিলেন গর্বিত। ভারতের সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক ইতিহাসের কথা তিনি প্রায়ই বলতেন যাতে মানুষ তা থেকে অনুপ্রাণিত হন। তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ভারত আজ নিজের গর্বিত ঐতিহ্যপথে উন্নতির দিকে এগিয়ে চলেছে। আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫ বছর উদযাপনে লালকেল্লা থেকে তাঁর ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলনকে এক অবিস্মরণীয় ঐতিহাসিক উপলক্ষ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, নেতাজীর জীবন ও কর্মে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর সরকার ২০১৯-এ দিল্লির লালকেল্লায় নেতাজী সুভাষের উদ্দেশে একটি সংগ্রহালয় গড়ে তুলেছে। সেইসঙ্গে, সে বছরই নেতাজী সুভাষ বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা পুরস্কারের সূচনা করা হয়েছে। ২০২১ সালে তাঁর সরকার নেতাজীর জন্মবার্ষিকীকে ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। শ্রী মোদী বলেন, ইন্ডিয়া গেটের কাছে নেতাজীর এক সুবিশাল মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে, নেতাজীর নামে আন্দামানের দ্বীপেরও নামকরণ করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে আইএনএ সৈন্যদের প্রতি অভিবাদন জানানোকে তাঁর পরম্পরার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের সরকারি সঙ্কল্পের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ১০ বছরে সাধারণ মানুষের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলতে দেশ দ্রুত বিকাশের পথ গ্রহণ করেছে। সেইসঙ্গে, সামরিক শক্তিরও বিকাশ ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেন, বিগত দশকে ২৫ কোটি ভারতবাসীকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে তুলে আনা এক বিরাট সাফল্য। গ্রাম ও শহর – সর্বত্রই আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারতীয় সেনার অভূতপূর্ব শক্তি বৃদ্ধি ঘটেছে এবং বিশ্বমঞ্চে ভারতের ভূমিকা উত্তরোত্তর প্রসারিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আস্থা প্রকাশ করে বলেন, সেদিন আর দূরে নেই যখন ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। তিনি ‘এক লক্ষ্য, এক উদ্দেশ্য’ নিয়ে, নেতাজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, বিকশিত ভারত-এর জন্য প্রত্যেককে নিরন্তর কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান। শ্রী মোদী বলেন, এতেই নেতাজীর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

SC/AB/DM