Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

পণ্ডিত মদন মোহন মালব্যর ১৬২তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর রচনা সংগ্রহ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী

পণ্ডিত মদন মোহন মালব্যর ১৬২তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর রচনা সংগ্রহ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী


নয়াদিল্লি, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ 

মহামনা পণ্ডিত মদন মোহন মালব্যর ১৬২তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর রচনা সংগ্রহের প্রথম ১১টি খন্ড প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আজ প্রধানমন্ত্রী বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা পণ্ডিত মালব্যর প্রতি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। 

বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণ শুরু করেন। এই দিনটি পণ্ডিত মালব্য এবং দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন হওয়ায় এবং ভারত ও ভারতীয়ত্বের ধারণার প্রতি শ্রদ্ধাশীলদের কাছে এক বিশেষ তাৎপর্য বহন করে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এ প্রসঙ্গে সুপ্রশাসন দিবসের প্রসঙ্গটি উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। 

পণ্ডিত মদন মোহন মালব্যের এই রচনা সংগ্রহ আগামী দিনের গবেষকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এক আকর বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এই লেখাগুলির মাধ্যমে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়, কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে মালব্যজীর কথাবার্তা এবং ব্রিটিশ নেতৃত্বের প্রতি তাঁর মনোভাব বুঝতে সহায়ক হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। যে খন্ডটিতে মহামানার দিনলিপি রয়েছে তার মাধ্যমে পাঠক সমাজ, দেশ ও আধ্যাত্মিক চেতনার এক অপূর্ব সমন্বয়ের সাক্ষী হতে পারবেন বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। এই রচনা সংগ্রহ প্রকাশে উদ্যোগের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক মহামানা মালব্য মিশন এবং শ্রী রামবাহাদুর রাই-কে অকুন্ঠ সাধুবাদ জানান। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামানার চিন্তনে আধুনিকতা ও সনাতন সংস্কৃতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছিল। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রাখার পাশাপাশি, আধ্যাত্মিক চেতনার দিকটিতেও তিনি সমান গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এই বিষয়গুলি তাঁর রচনা সংগ্রহের মাধ্যমে পাঠক জানতে পারবেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। পণ্ডিত মালব্যকে ভারতরত্নে ভূষিত করতে পেরে তাঁর সরকার নিজেকে সম্মানিত মনে করে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। 

অমৃতকালে দেশ দাসত্বের মনোভাব পরিত্যাগ করে এগিয়ে চলেছে এবং এই প্রচেষ্টার মধ্যে মালব্যজীর দর্শনের প্রতিফলন রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে মালব্যজীর অবদানের প্রসঙ্গও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর স্বনির্বন্ধ প্রচেষ্টায় বিভিন্ন ভারতীয় ভাষা মর্যাদার আসনে বসেছে। দেবনাগরী হরফ ব্যবহারে প্রসার ঘটেছে। দেশের নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে মালব্যজীর দর্শন পথপ্রদর্শক হিসেবে থেকেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। 

বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি হরিদ্বারের ঋষিকূল ব্রহ্মাশ্রম, প্রয়াগরাজের ভারতী ভবন পুস্তকালয়, সনাতন ধর্ম মহাবিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের সূচনা মালব্যজীর হাত ধরেই হয়েছিল। বর্তমান সরকারও একের পর এক নতুন প্রতিষ্ঠান এবং মন্ত্রক গড়ে তুলছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সমাবায় মন্ত্রক, আয়ুষ মন্ত্রক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চিরাচরিত ঔষধ কেন্দ্র, মিলেট গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রভৃতির উল্লেখ করেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। উঠে আসে বিশ্ব জৈব জ্বালানী জোট, আন্তর্জাতিক সৌর জোট, প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিরোধী ব্যবস্থাপনা, দক্ষিণ বিশ্বের জন্য ‘দক্ষিণ’, ভারত – মধ্যপ্রাচ্য – পূর্ব ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডর, মহাকাশ এবং সমুদ্র পরিসরে বিভিন্ন কর্মসূচির প্রসঙ্গ। এসবের সুবাদে শুধুমাত্র একবিংশ শতকের ভারতই নয়, একবিংশ শতকের বিশ্বও সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুঁজে পাবে বলেও প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। 

মহামনা ও অটলজীর আদর্শগত সহাবস্থানের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারের সহায়তা ছাড়াও যদি কোনও মানুষ ইতিবাচক অবদান রাখতে চান, সেক্ষেত্রে মহামনার ব্যক্তিত্ব তাঁর কাছে অনুসরণীয় হয়ে উঠবে। সুপ্রশাসনের অর্থ হ’ল সেবা, ক্ষমতার প্রদর্শন নয় – সেকথা মাথায় রেখেই তাঁর সরকার সাধারণ পরিষেবা পেতে মানুষের হয়রানি ঠেকাতে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এক্ষেত্রে বিকশিত সংকল্প যাত্রার অঙ্গ হিসেবে ‘মোদী কি গ্যারান্টি’ যানের মাধ্যমে মাত্র ৪০ দিনের মধ্যে কোটি কোটি প্রাপকের হাতে আয়ুষ্মান কার্ড পৌঁছে দেওয়ার উদাহরণ দেন প্রধানমন্ত্রী। 

সুপ্রশাসনে সততা ও স্বচ্ছতা আবশ্যিক শর্ত বলে পুনরায় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কল্যাণমূলক বিভিন্ন প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হলেও বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তিতে দুর্নীতির ছোঁয়া লাগেনি। দরিদ্রদের নিখরচায় রেশন দেওয়ার ক্ষেত্রে ৪ লক্ষ কোটি টাকা, পাকা বাড়ির জন্য ৪ লক্ষ কোটি টাকা এবং প্রতিটি বাড়িতে নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৩ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। করদাতাদের প্রদত্ত প্রতিটি পয়সা উন্নয়নের এবং জাতীয় স্বার্থে কাজে লাগলে তবেই সুপ্রশাসনের আদর্শ রূপায়িত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী। এসবের সুবাদেই ১৩.৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। সুপ্রশাসনে সংবেদনশীলতার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা কর্মসূচির জেরে পিছিয়ে থাকা ১১০টি জেলার আমূল ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বিকাশে গুরতুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে ভাইব্রেন্ট ভিলেজ কর্মসূচি। সরকারের কল্যাণমূলক উদ্যোগের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কোভিড অতিমারীর সময় ত্রাণ ব্যবস্থাপনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ও মানবিক নানা পদক্ষেপের কথা বলেন। 

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামনা এবং অটলজীর আদর্শের কষ্টি পাথরে নিজেকে বারবার যাচাই করে নিয়ে স্বাধীনতার অমৃতকালে নতুনভাবে জেগে উঠবে ভারত। এই মহাযজ্ঞে দেশের প্রতিটি নাগরিকের অবদান প্রার্থনীয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর, কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, মহামানা মালব্য মিশনের সম্পাদক শ্রী প্রভূনারায়ণ শ্রীবাস্তব, পণ্ডিত মদন মোহন মালব্য রচনা সংগ্রহের প্রধান সম্পাদক শ্রী রামবাহাদুর রাই প্রমুখ। 

PG/AC/SB