নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ডঃ ভিজু রাতাংসি,
নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক পিটার এমবিথি,
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেটের সদস্যবৃন্দ,
বিশিষ্ট অধ্যাপকবৃন্দ,
আমার প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা
জাম্বো!হাবারি গানি (হ্যালো, ভালো আছেন তো?)
উৎসাহ-উদ্দীপনাময়এই পরিবেশে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি খুব খুশি।
সত্যি কথাবলতে কি কেনিয়ার শ্রেষ্ঠ এবং উজ্জ্বলতম ব্যক্তিত্বের মাঝে এইভাবে উপস্থিত থাকারঘটনা আমার কাছে খুবই আনন্দদায়ক।
এই দেশেরগর্ব হলেন আপনারাই। আপনারাই আফ্রিকার আগামীদিনের প্রতিনিধি। আপনাদের আশা,আকাঙ্ক্ষা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা শুধুমাত্র এই দেশের দিক নির্ণয় করবে না, কিংবা অদৃষ্টকেইএক নতুন রূপ দেবে না।
একইসঙ্গে এইমহাদেশের ভবিষ্যতকে সমৃদ্ধ করে তোলার কাজেও নেতৃত্ব দেবেন আপনারা। কেনিয়ার পরবর্তীপ্রজন্মের কাছে আমি ভারতের ৮০ কোটি যুবশক্তির উষ্ণ ও আন্তরিক মৈত্রীর বার্তা বহনকরে এনেছি।
আমার পক্ষথেকেও একই বার্তা রইল আপনাদের কাছে।
দেখুনবন্ধুরা, জাতি গঠনের প্রশ্নে কিংবা কেনিয়ার মতো বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্করক্ষার ক্ষেত্রে আমার মনে-প্রাণে রয়েছে সেই আবেগ ও অনুভূতি যা লক্ষ্য করা যায় যেকোন ২০ বছরের তরুণের মধ্যে।
প্রিয়ছাত্রছাত্রী,
নাইরোবিবিশ্ববিদ্যালয়ের এক গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে। এর খ্যাতিও কারোর অজানা নয়। শুধুমাত্রআফ্রিকাতেই নয়, সমগ্র বিশ্বেই পরিচিতি রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টির।
যখনই আমিআপনাদের তরুণ, আগ্রহী ও বুদ্ধিদীপ্ত চোখমুখের দেখা পাই তখনই আমি তার কারণটিওনিশ্চিতভাবেই অনুধাবন করতে পারি। রাজনৈতিক নেতা, প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী,সমাজকর্মী এবং শিল্পীদের বহু প্রজন্মই শিক্ষার এই পীঠস্থান থেকে সাফল্যের সঙ্গেউত্তীর্ণ হয়েছেন।
এর ফলে,আপনাদের দেশের নাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। কেনিয়ার আগামী প্রজন্মগুলিও এইঐতিহ্যের উত্তরসূরী । দুটি বিকাশশীল রাষ্ট্র হিসেবে ভারত ও কেনিয়ার ইতিহাস ও অভিজ্ঞতারসার্বিকধারাবাহিকতা পড়ানো হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।
কিছুক্ষণআগে প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশের সময় মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি আমি।আজ থেকে ঠিক ৬০ বছর আগে তাঁর মূর্তির আবরণ উন্মোচিত হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। মহাত্মাগান্ধীর সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ এই দুই মহান জাতির মৈত্রী বন্ধনের একপ্রাচীন ঘটনা।
জাতীয়বিকাশের লক্ষ্যে এক বলিষ্ঠ শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আমাদের দু’দেশের সমাজই যেভীষণভাবে আগ্রহী তাও প্রতিফলিত হয়েছে এই ঘটনার মধ্য দিয়ে।
এক প্রাচীনভারতীয় উক্তির কথা এখানে স্মরণ করা যেতে পারে :
ব্যয়েক্রাতে ইবা নিতং, বিদ্ব্যা ধনং সর্ব ধন প্রধানম
এর অর্থ, যেসম্পদ দান সত্ত্বেও বৃদ্ধি পেতে পারে তা হল জ্ঞান। যে কোন সম্পদের তুলনায় তা হলসবচেয়ে মূল্যবান ।
স্বাহেলিতেওআপনাদের একটি প্রবাদ রয়েছে বলে আমি শুনেছি :
“পিসা, কামামাতুমিজি ইয়াকে, হুইশা; কুজিফানজা, কামা মাতুমিজি ইয়াকে, হুয়ংএজেকা” ।
এর সারমর্ম,অর্থ যদি তুমি ব্যবহার করতে থাক একদিন না একদিন তা শেষ হবেই। কিন্তু জ্ঞান ওশিক্ষাকে তুমি যদি প্রয়োগ করো তা কিন্তু ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
বন্ধুগণ,
একটিপ্রাচীন মহাদেশের এক নবীন জাতি হল কেনিয়া। কিন্তু নবীন রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও অনেকক্ষেত্রেই প্রথম হওয়ার গর্ব ও কৃতিত্ব আপনাদের রয়েছে।
কেনিয়ারবিশিষ্ট পরিবেশ-কর্মী ওয়াংগারি মাথাই হলেন প্রথম আফ্রিকান মহিলা যিনি নোবেল শান্তিপুরস্কার অর্জন করেছিলেন।
তিনি ছিলেনএকদা এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্রী।
লুপিটোনিয়োংগো আফ্রিকার নাগরিকদের মধ্যে প্রথম অস্কার পুরস্কার জয়ের সম্মান অর্জনকরেছিলেন। তিনিও ছিলেন কেনিয়ার বংশোদ্ভূত।
আমরা সকলেইজানি যে কেনিয়ার দৌড়বীররা পৃথিবীর ম্যারাথন রেসগুলিতে সবসময় এগিয়ে থাকে।
কেনিয়ারপরিবেশ শুধুমাত্র বিগ ফাইভের জন্যই বিখ্যাত নয়, একইসঙ্গে যথোপযুক্ত প্রযুক্তি ওউদ্ভাবনের মাধ্যমে বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও এই দেশে রয়েছে এক অনুকূলপরিবেশ ো পরিস্থিতি ।
কেনিয়া হলপূর্ব আফ্রিকা অঞ্চলের এক গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক তথা পরিবহণ ঘাঁটি। কেনিয়াতেইউদ্ভাবিত হয়েছিল এম-পেসা ২০০৭ সালে।
এই ঘটনাসমগ্র পৃথিবীকে চমকে দিয়েছিল। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক পরিষেবা বিশ্বে ছড়িয়েদেওয়ার ক্ষেত্রে পথিকৃত ছিল এই উদ্ভাবনটি।
তাই এরব্যবহার শুধু কেনিয়াতেই নয়, প্রসারিত হয়েছে সমগ্র বিশ্বে।আর্থিক সঙ্গতির দিক থেকে যাঁরাএখনও প্রান্তিক সীমায় বাস করেন এম-পেসার মাধ্যমে তাঁরা ক্ষমতায়নের স্বাদ পাচ্ছেনএবং সমাজের মূলস্রোতে মিশে যাওয়ার অধিকারও লাভ করছেন।
ভারতেওআমাদের চিন্তাভাবনা চলছে এই পথেই।
প্রিয়ছাত্রছাত্রীবৃন্দ,
ভারত ওকেনিয়া – এই দুটি দেশে গণতন্ত্র উত্তরোত্তর বিকশিত হয়ে চলেছে। এই দুটি বিকাশশীলদেশ তাঁদের নাগরিকদের শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার কাজে সতত সচেষ্ট রয়েছে।
আমাদের এইসম্পর্ক কিন্তু বহুদিনের।
বহু শতাব্দীধরেই শিল্প, বাণিজ্য, সংস্কৃতি, মননশীলতা, আদর্শ ও ঐতিহ্য মেলবন্ধন ঘটিয়েছেদু’দেশের সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে।
এইপ্রচেষ্টায় ভারত মহাসাগরের জলরাশি দু’দেশের জনগণের মধ্যে গড়ে তুলেছে সম্পর্কের একবিশেষ সেতু।
আমি শুনেছি,কেনিয়ায় ৪২টি উপজাতি বাস করেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের এখানে ৪৩তম জনগোষ্ঠী হিসেবেই গণ্যকরা হয়।
আপনাদেরসমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থার মতো ভারতেও রয়েছে তার সুপ্রাচীন উজ্জ্বলবৈচিত্র্যের উৎসব পালনের ঐতিহ্য।
সত্যি কথাবলতে কি, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সমদৃষ্টির পাশাপাশি আধুনিক ভারতের মূল পরিচিতি হলসেটাই।
বন্ধুগণ,
গতকালসন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট কেনিয়াট্টার সঙ্গে আমি এখানকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকদেরসঙ্গে এক স্মরণীয় মুহূর্ত কাটিয়ে এসেছি। বহু দশক আগে থেকেই কেনিয়াকে তাঁরা তাঁদেরনিজেদের দেশ বলে মনে করেন।
কেনিয়ারপ্রতি তাঁদের ভালবাসা ও আনুগত্যের কোন তুলনা নেই। আমাদের দু’দেশের সম্পর্ককে এগিয়েনিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা এক সফল অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে চলেছেন ।
এইভাবে দুটিদেশের জনসাধারণের মধ্যে সম্পর্কের যে মজবুত ভিত তৈরি হয়েছে তারইআলোকে আমাদেরবর্তমান অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতিকে পালন করে যেতে হবে।
বন্ধুগণ,
একথা আমাদেরকখনই বিস্মৃত হলে চলবে না যে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন ভারত ওআফ্রিকা এই দুটি দেশে। এ বিষয়ে অন্যান্যরা যাই বলুন না কেন, বা যেভাবেই আমাদের এইদাবিকে নস্যাৎ করে দেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, পরস্পর সংযুক্ত এই বিশ্ব সংসারেআমরা কিন্তু সংখ্যায় মোটেই কম নই।
এক স্থায়ীঅংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই আমরা :
• যে সম্পর্ক অতীতের বিধি-নিয়ম কিংবা শাসনের ওপর নির্ভর করবে না।
• এই সম্পর্ক জনসাধারণের ক্ষমতায়নের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে।
• এই সম্পর্কের মধ্য দিয়ে আমরা পরস্পরের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিভাগ করে নেব।
• এই সম্পর্ক একবিংশ শতাব্দীর সুযোগ ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেযাবে।
• সমাজে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে যাবতীয় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলাওসম্ভব হয়ে উঠবে এই সম্পর্কের মধ্য দিয়ে; এবং
• সর্বোপরিআমাদের এই সম্পর্ক এক বৃহত্তর সাধারণ কল্যাণ সম্ভব করে তুলবেসংশ্লিষ্ট অঞ্চল এবং পৃথিবীর অন্যান্য বিকাশশীল দেশগুলির জন্য।
একবিংশশতাব্দীতে সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত-কেনিয়াঅংশীদারিত্বআমাদেরবরাবরই এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে থাকবে।
বন্ধুগণ,
আফ্রিকার যেদেশগুলি এখন অর্থনীতির দিক থেকে ক্রমশ বিকাশের পথে এগিয়ে চলেছে, তাদের মধ্যেসবচেয়ে বেশি কৃতিত্বের অধিকারী হল কেনিয়া ।
এই দেশেররয়েছে এক বলিষ্ঠ ঐতিহ্য।
রয়েছেঅফুরন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনা।
ভারতমহাসাগরের অপর প্রান্তে ভারতে ঘটতে চলেছে এক বিরাট অর্থনৈতিক বিপ্লব। বিকাশেরবার্ষিক হার সেখানে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গেছে ৭.৬ শতাংশে।
চ্যালেঞ্জেরগভীরতা ও ব্যাপ্তির কথা চিন্তা করলে অর্থনৈতিক বিকাশের হার আরও উচ্চে নিয়ে যাওয়াছাড়া আমাদের সামনে আর কোন বিকল্প রাস্তা নেই।
এর মাধ্যমেদুটি দেশের সামনেই একত্রে কাজ করার সুযোগ ও সম্ভাবনা আজ উপস্থিত। শুধুমাত্ররাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনীতি, সমাজ ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একত্রে কাজ করারযথেষ্ট সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের পরস্পরের ।
আরও বেশকিছু ক্ষেত্রে এই ধরনের সুযোগ উপস্থিত আমাদের এই দুটি দেশের কাছে।
দু’দেশেরমধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে আগের থেকে অনেক বেশি মাত্রায় । বেশ কিছুসংখ্যক ভারতীয় সংস্থা বর্তমানে কাজ করছে কেনিয়ায়। এর ফলে, এই দেশের সঙ্গেবিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আরও উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হয়েউঠেছে। এছাড়া, এর প্রসারও ঘটেছে নানাভাবে।
এরফলশ্রুতিতে দুটি দেশেই শিক্ষিত ও তরুণদের মধ্যে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগওসৃষ্টি হচ্ছে। দুটি দেশের মধ্যে পণ্য ও মূলধনের যোগান বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেবিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎপাদন ও নির্মাণ প্রকল্পগুলিতেও একসঙ্গে কাজ করার উপায় উদ্ভাবনকরতে হবে আমাদের।
একথা শুধুভারত ও কেনিয়ার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। একই কথা প্রযোজ্য আফ্রিকা সহ অন্যান্যঅঞ্চলের ক্ষেত্রেও।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও পরিচর্যার বিষয়টি প্রথমেই মনে পড়ে যায়।
এক্ষেত্রেভারতের অভিজ্ঞতা, প্রয়োজনীয় দক্ষতা, ক্ষমতা ও প্রাতিষ্ঠানিক উপায় ও পদ্ধতি গড়েতুলতে পারে কেনিয়া। চিকিৎসার বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে আমাদের কর্মতৎপরতা কেনিয়ারযুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণীয় বলে মনে করবে বলেই আমার বিশ্বাস।
ওষুধপত্রের যোগানেরক্ষেত্রেও আমাদের দু’দেশের মধ্যে যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে তাকে আমরা আরওপ্রসারিত করে তুলতে পারি ওষুধ উৎপাদনের মধ্য দিয়ে। আমার বিশ্বাস, স্বাস্থ্যব্যবস্থার ক্ষেত্রে কেনিয়ার চাহিদা ও প্রয়োজন মেটানোর কাজে তা অবশ্যই সফল হবে।
শুধু তাইনয়, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন চাহিদা পূরণও সম্ভব হয়ে উঠবেআমাদের এই সহযোগিতার সম্পর্কের মাধ্যমে। এক কথায় বলা যায়, কেনিয়ার যুবসমাজই স্থিরকরবে দেশের ভবিষ্যৎ।
আপনারা হয়তোএকথা শুনে আরও বেশি করে আগ্রহী হয়ে উঠবেন যে ভারতের অদৃষ্ট নির্দেশ করতে চলেছেনদেশের ৮০ কোটির মতো যুবশক্তি।
এইযুবশক্তির জন্য সারা দেশেই আমরা সূচনা করেছি এক বিশেষ অভিযানের। এর ফলে, তরুণ ওযুবসমাজের জন্য ৫০ লক্ষের মতো কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে আগামী ২০২২ সালেরমধ্যে।
তবে,যুবশক্তিকে সুদক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলে আমাদের এই সাফল্য অধরাই থেকেযাবে।
তাই, ‘স্কিলইন্ডিয়া’ এবং ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগসৃষ্টির বিষয়টি এক নতুন দিকে মোড় নিতে চলেছে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন নতুন নতুনকর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসার সম্ভব হবে, অন্যদিকে তেমনই ব্যক্তিগত উদ্যোগে শিল্পস্থাপনের প্রচেষ্টাও বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে।
এই সমস্তকাজে কেনিয়ার মিত্রস্থানীয় তরুণ ও যুবশক্তির সঙ্গে আমাদের দক্ষতা, ক্ষমতা ওঅভিজ্ঞতা বিনিময়ে ভারত প্রস্তুত।
শিক্ষা সহবিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিকতার প্রসারে ইতিমধ্যেই এক ঘনিষ্ঠসহযোগিতার কাজ শুরু করে দিয়েছি আমরা।
কিন্তুশুধুমাত্র এখানেই থেমে থাকলে চলবে না।
আমাদের এইকর্মপ্রচেষ্টাকে টেলিযোগাযোগ, কৃষি, জ্বালানি শক্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তির মতোবিভিন্ন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে দিতে হবে।
এইক্ষেত্রগুলি আমাদের অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার ও আধুনিকীকরণ সম্ভব করে তোলা ছাড়াও দক্ষযুবশক্তির জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি করবে।
আমাদেরমিলিত উন্নয়ন প্রচেষ্টা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সফল হয়ে উঠবে বলেইআমারস্থির বিশ্বাস।
ব্যয়সাশ্রয়ীপ্রযুক্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও আমাদের দক্ষতা ও ক্ষমতা কম কিছু নয়।
এম-পেসারমধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে দেশীয় প্রযুক্তির সাহায্যে একটি বিশেষচিন্তাভাবনা কিভাবে দ্রুত ও কার্যকরভাবে সমাজের অবহেলিত মানুষকেও ক্ষমতায়নের স্বাদদেওয়ার কাজে সফল হতে পারে।
অর্থনৈতিকবিকাশ এবং অংশীদারিত্বের সম্পর্কের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশকে অক্ষুণ্ণ রাখারগুরুদায়িত্বও রয়েছে আমাদের।
মাতাবসুন্ধরার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রম আমাদের দুটি দেশেরই এক সাধারণ মূল্যবোধ।
নোবেলপুরস্কার বিজয়ী ওয়াংগারি মাথাই খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন এই বিষয়টি।
তিনিবলেছেন, “উন্নয়নের প্রসার ঘটাতে হবে এমনভাবে যাতে পরিবেশ কোনভাবেই বিনষ্ট না হয়।”
প্রকৃতিরসঙ্গে সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে সহাবস্থান আমাদের দুটি দেশেরই এক সাধারণ মূল্যবোধ।আমাদের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ‘সবুজ আফ্রিকা’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এটিহয়ে উঠতে পারে এক আদর্শ মঞ্চ।
আর এইঅংশীদারিত্বের মধ্য দিয়েই প্রসারিত হবে নতুন নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ ও সম্ভাবনা।
পরিবেশেরসুরক্ষার কাজে অঙ্গীকারইআমাদের উৎসাহিত করেছে আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা গড়ে তোলারচিন্তাভাবনাকে।
শক্তিরপুনর্নবীকরণযোগ্য স্থায়ী উৎস হিসেবে সৌরশক্তি আহরণ আমাদের এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্যও উদ্দেশ্য।
১২০টিরওবেশি দেশের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই সমঝোতা গড়ে তোলার কাজে আমাদের সঙ্গীও হয়েছেকেনিয়া।
সুপ্রাচীনকালথেকেই ভারতে যোগ সাধনা ও যোগাভ্যাসের ঐতিহ্য আজও সমানভাব প্রাসঙ্গিক প্রকৃতিরসঙ্গে মৈত্রীপূর্ণ সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে ।
একথা জেনেআমি আনন্দিত যে গত ২১ জুন কেনিয়ার ৭ হাজারেরও বেশিমানুষ বিশেষ উৎসাহের সঙ্গেনাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে পালন করেন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস।
বন্ধুগণ,
অর্থনৈতিকলক্ষ্য পূরণের দিকে দৃপ্ত পদক্ষেপেএগিয়ে চলার বিষয়টিকে আমরা বিশেষ অগ্রাধিকারদিয়েছি।
কিন্তুসেইসঙ্গে, জনসাধারণের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টিও আমরা উপেক্ষা করতে পারি না।
আমাদেরঅর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সামাজিক বিকাশের অর্থ আমাদের কাছে অনেক কিছু। কিন্তু আমাদেরসমাজ যদি সুরক্ষিত না থাকে এবং জনসাধারণ যদি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন, তাহলেবিকাশ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্য অপূর্ণই থেকে যাবে।
গত বছরদিল্লিতে প্রেসিডেন্ট উহুরু বলেছিলেন যে সন্ত্রাসবাদ হল “এমনই এক অশুভ শক্তি যারকোন সীমা নেই, ধর্ম নেই, বর্ণ নেই, মূল্যবোধও নেই।”
প্রকৃতঅর্থেই আমরা বর্তমানে বাস করি এমন এক বিশ্বে যেখানে হিংসা ও ঘৃণার সমর্থকরা আমাদেরসমাজ ব্যবস্থার মূল নীতিটিকেই দুর্বল করে দিতে চাইছে।
কেনিয়ারতরুণ ও প্রাণচঞ্চল নাগরিক তথা সমগ্র আফ্রিকা সমাজের সদস্য হিসেবে আপনাদের সকলকেইসতর্ক থাকতে হবে চরম মতবাদের প্রচার ও প্রসারের বিরুদ্ধে।
সেইসঙ্গেনিন্দা করতে হবে তাদের যারা সন্ত্রাসবাদীদের হাতে রাজনৈতিক অস্ত্র তুলে দিচ্ছেকিংবা তাদের কোন না কোনভাবে আশ্রয়দান করছে।
সন্ত্রাসবাদীদেরমতাদর্শের বিরুদ্ধে এক নতুন আদর্শ ও নীতি গড়ে তুলতে পারে আজকের তরুণরাই।
ছাত্রছাত্রীবৃন্দ,
নৌ-বাণিজ্যেরসঙ্গে যুক্ত দুটি দেশ এবং ভারত মহাসাগর রিম অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হিসেবে আমাদেরউচিত সমুদ্রপথে যাবতীয় আক্রমণ ও হামলার আশঙ্কা দূর করার জন্য প্রহরার কাজকে আরওজোরদার করে তোলা।
সেইসঙ্গেআমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে জলপথে আক্রমণ ও হামলা যেন কোনভাবেই আমাদের বাণিজ্যিকপ্রচেষ্টা কিংবা সমুদ্রপথের যাত্রীদের কোনভাবেই ক্ষতিসাধন করতে না পারে। আমাদেরনিশ্চিত করতে হবে সকলের জন্যই নৌ-চলাচলের স্বাধীনতা।
কেনিয়া সফরেআসার আগে আমি সফর করে এসেছি মোজাম্বিক, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তানজানিয়া – এই তিনটিদেশ।
ভারতের সঙ্গেআফ্রিকার পূর্ব উপকূলের ঘনিষ্ঠ নৌ-সম্পর্ক হল সহস্রাব্দ প্রাচীন।
কিন্তু সেই পূর্বউপকূলও আজ নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবিত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
তাই জলপথেউপকূলরেখা বরাবর আরও গভীরভাবে কর্মতৎপর হয়ে উঠতে হবে আমাদের এই দুটি দেশকে।
প্রিয় ছাত্রছাত্রীবৃন্দ,
বর্তমান যুগহল পরস্পর নির্ভরশীলতার যুগ।
আমরা বাসকরছি এমনই এক বিশ্বে যেখানে সুযোগ ও সম্ভাবনা বৃদ্ধির পাশাপাশি চ্যালেঞ্জগুলিরপ্রকৃতি ও চরিত্রও হয়ে উঠছে ক্রমশ জটিল। তাই, আগামী পৃথিবী গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতেহবে আপনাদেরই।
এই দেশেরভবিষ্যতের রূপকারও হলেন আপনারাই।
এক সুরক্ষিতও সমৃদ্ধ কেনিয়া এবং শক্তিশালী আফ্রিকা গড়ে উঠবে আপনাদের হাতেই।
কারোরইক্ষমতা নেই আপনাদের কাছ থেকে এই শক্তি ছিনিয়ে নেওয়ার।
উচ্চাশারঅনুসরণে এগিয়ে যাওয়ার সময় আপনাদেরঅবশ্যই স্মরণে রাখতে হবে যে জাতি গঠনের কাজ হল একনিরন্তর প্রক্রিয়া।
তাই,আপনাদের কর্মপ্রচেষ্টা অন্যদের নেতৃত্ব দিক :
• উচ্চাশাকে আরও ঊর্ধ্বে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে;
• আরও বড় আকারের স্বপ্ন দেখার এবং আরও অনেক অনেক কিছু করার কাজে।
আপনাদেরনীতি ও আদর্শই হল “ইউনিট্যাট এট লাবোর”, অর্থাৎ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর পরিশ্রম করো,শ্রমের ফসল ঘরে উঠবে তোমাদেরই।
নিজেদেরঅদৃষ্টকে গড়ে তোলার কাজে আপনারা যখন এগিয়ে যাবেন, তখন দেখবেন আপনাদের পাশেই রয়েছেএক বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য বন্ধু ভারত।
একজনঅংশীদারী হিসেবে ভারত :
• আপনাদের সাফল্যে উল্লসিত হবে;
• সর্বদাই সাহায্যের হাত প্রসারিত করবে আপনাদের দিকে;
• এবং আপনাদের প্রয়োজনের মুহূর্তে সর্বদাই পাশে থাকবে আপনাদের।
আপনাদেরসামনে এইভাবে বক্তব্য পেশ করাএক বিশেষ সুযোগ বলেই আমি মনে করি।
আমিবিশেষভাবে কৃতজ্ঞ নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়, এখানকার অধ্যাপকমণ্ডলী এবং কেনিয়ারউজ্জ্বল ভবিষ্যতের কাণ্ডারী এখানকার ছাত্রছাত্রীদের কাছে আমাকে এই সুযোগদানেরজন্য।
আসান্তেসানা, ধন্যবাদ।
অনেক অনেকধন্যবাদ।
PG/SKD/DM/S…
I am happy to be here in energy filled surroundings: PM @narendramodi begins his address at the University https://t.co/KtrH9I7q2j
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
To you, the passionate gen-next of Kenya, I bring the warm friendship of over 800 million youth of India: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
I paid tributes to Mahatma Gandhi whose statue at this University was unveiled exactly 60 years ago: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
PM paying tributes to Mahatma Gandhi at @uonbi. pic.twitter.com/jARhNaYcAD
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
Kenya's climate provides the right eco-system for appropriate technology and innovation led growth: PM @narendramodi at @uonbi
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
Kenya's M-Pesa took the world by storm. It pioneered and led the growth of mobile money services globally: PM at @uonbi
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
PM @narendramodi India and Africa ties. @uonbi pic.twitter.com/cv83iLOxUR
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
A lasting India-Africa partnership...PM @narendramodi at @uonbi. pic.twitter.com/yZvq1avyUj
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
Among the rising African economies, Kenya has been one of the strongest performers: PM @narendramodi at the @uonbi https://t.co/KtrH9I7q2j
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
With significant presence of Indian companies in Kenya, our investment partnership is robust, diverse and vibrant: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
A steady march towards our economic goals is indeed a priority.
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
But, we also cannot ignore the safety of our people: PM @narendramodi
PM @narendramodi calls for a world free from terror and hate, in his speech at @uonbi. pic.twitter.com/4mCBY7JCtx
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
Aspire high, dream big and do more, says PM @narendramodi at @uonbi. pic.twitter.com/xti2qPnSfS
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
India: a trusted and reliable partner. @uonbi pic.twitter.com/jEopno0IB6
— PMO India (@PMOIndia) July 11, 2016
Spent time at @uonbi, a glorious institution with a formidable reputation. Interacted with some of the brightest & best minds of Kenya.
— Narendra Modi (@narendramodi) July 11, 2016
Spoke on the rich legacy of Kenya, accomplishments of Kenyans in various fields & how Kenya has a right ecosystem for innovation-led growth.
— Narendra Modi (@narendramodi) July 11, 2016
Told youth at @uonbi- a safe, prosperous Kenya & a strong Africa is your destiny. Let no one take it away from you. https://t.co/T8QXzWy12Q
— Narendra Modi (@narendramodi) July 11, 2016