Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

নবম ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলন ২০১৯ – এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

নবম ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলন ২০১৯ – এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

নবম ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলন ২০১৯ – এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

নবম ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলন ২০১৯ – এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


বিভিন্ন দেশের মাননীয় মন্ত্রী ও ভদ্র মহোদয়গণ, অংশীদার দেশ, কর্পোরেট জগতের প্রতিনিধিবৃন্দ, আমন্ত্রিত ও অংশগ্রহণকারী অতিথিগণ, মঞ্চে উপবিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বন্ধুগণ, ভদ্র মহোদয় ও ভদ্র মহোদয়াগণ!

নবম ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলনে আপনাদের স্বাগত জানাতে পেরে আমি আননিদত।

আপনারা দেখতে পাচ্ছেন যে, এই সম্মেলন প্রকৃতপক্ষেই এক গ্লোবাল ইভেন্টে পরিণত হয়েছে। এখানে সকলের সমান গুরুত্ব রয়েছে। সম্মেলনে প্রবীণ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যেমন উপস্থিত রয়েছেন, তেমনই সিইও এবং কর্পোরেট জগতের ব্যক্তিত্বরাও রয়েছেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নীতি-প্রণেতাদের উপস্থিতি এই সম্মেলনকে এক পৃথক মাত্রা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তরুণ শিল্পোদ্যোগীদের কাছে এই সম্মেলন সম্পদ বৃদ্ধির এক উৎস হয়ে উঠেছে।

ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলন আমাদের শিল্পোদ্যোগীদের আস্থা বাড়াতে অবদান যুগিয়েছে। দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, এই সম্মেলন বিশ্বের সেরা পন্থা-পদ্ধতিগুলি গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও সাহায্য করেছে।

এক গঠনমূলক, ফলপ্রসূ ও সন্তোষজনক শীর্ষ সম্মেলনের ব্যাপারে আমি আপনাদের সকলকে শুভ কামনা জানাই। গুজরাটে এখন ঘুড়ি উৎসব বা উত্তরায়ন চলছে। সম্মেলনের ব্যস্ততার মাঝেও আমি আশা করব, আপনারা সময় বের করে এই উৎসবে সামিল হবেন এবং এর আনন্দ উপভোগ করবেন।

এবারের ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলনে অংশীদার ১৫টি দেশকে আমি বিশেষভাবে স্বাগত ও ধন্যবাদ জানাই। আমি ১১টি অংশীদার দেশ, অন্যান্য দেশ, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান, যারা সম্মেলন উপলক্ষে সেমিনারের আয়োজন করেছেন, তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই। এটা খুবই গর্বের বিষয় যে, ৮টি ভারতীয় রাজ্য এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে তাদের বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরছে।

ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলন গুজরাটে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল বাতাবরণকে তুলে ধরে। একই ধরণের অনুকূল পরিবেশ ভারতেও রয়েছে। এই সম্মেলন গত কয়েক বছর ধরে গুজরাটে বাণিজ্যিক বাতাবরণকে আরও ধারালো করে তুলেছে। বিগত ৮টি সফল শীর্ষ সম্মেলন থেকে একথা পরিষ্কার বোঝা যায়।

বিভিন্ন বিষয়ের ওপর একাধিক সভা-সম্মেলন আয়জন করা হয়েছে। এই বিষয়গুলি ভারতীয় সমাজ ও অর্থনীতির পাশাপাশি, সমগ্র বিশ্ব সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রেও সমান গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণ-স্বরূপ আমি আগামীকাল আফ্রিকা দিবস উদযাপন এবং আগামী ২০ তারিখ গ্লোবাল কনক্লেভ অফ ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার্স – এর কথা উল্লেখ করতে চাই।

বন্ধুগণ, আমরা মহান ব্যক্তিদের সমাবেশে সমবেত হয়েছি। একাধিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান ছাড়াও বহু বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দের উপস্থিতিতে আমরা সম্মানিত। এক সঙ্গে এত বিশিষ্ট মানুষের সমবেত হওয়ার বিষয়টি জাতীয় রাজধানীর মধ্যেই নয়, রাজ্য রাজধানীগুলিতেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসারিত কয়েছে।

অধিকাংশ উদীয়মান অর্থনীতির মতো ভারতেও মূল চ্যালেঞ্জ হ’ল সমান্তরাল বিকাশ হার বজায় রাখা। উন্নয়নের নিরিখে যে অঞ্চল ও সম্প্রদায়গুলি পিছিয়ে রয়েছে, সেখানে উন্নয়নের সুফল আমাদের সমান্তরালভাবে পৌঁছে দিতে হবে। একই সঙ্গে, জীবনযাপনের মানোন্নয়ন, পরিষেবার গুণমান ও উন্নত পরিকাঠামোর চাহিদাও পূরণ করতে হবে। ভারতে আমাদের সাফল্যগুলির বিষয়ে আমরা সচেতন রয়েছি। কারণ, এই সাফল্য বিশ্বের এক-ষষ্ঠাংশ মানুষকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে।

বন্ধুগণ, আপনারা যাঁরা নিয়মিত ভারত সফর করেন, তাঁরা এখানে পরিবর্তনের বিষয়টি উপলব্ধি করেন। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণ – উভয় দিক থেকেই এই পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিগত চার বছরে আমার সরকার সুপ্রশাসন বৃদ্ধি করার এবং সরকারি হস্তক্ষেপ কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। আমার সরকারের মন্ত্রই হ’ল – সংস্কার, কর্মসম্পাদন, রূপান্তর এবং আরও বেশি সংস্কার।

আমরা বেশ কয়েকটি কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্যে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির ফলে আমাদের অর্থনীতি ও দেশ আরও মজবুত হয়েছে।

আমরা যে সংস্কারমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, তার ফলে আমরা বিশ্বের অন্যতম প্রধান দ্রুত বিকাশশীল দেশ হয়ে উঠেছি। বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের মতো অগ্রণী আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি, বিশ্বখ্যাত মুডিস্‌ – এর মতো রেটিং সংস্থাগুলি ভারতের আর্থিক অগ্রগতিতে আস্থা প্রকাশ করেছে।

আমরা সেই সমস্ত বাধা-বিপত্তিগুলি দূর করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি, যেগুলি পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সংস্কার ও বিনিয়ন্ত্রণের গতি-প্রকৃতি অব্যাহত রাখব।

বন্ধুগণ, ভারতে এখন ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আগে এরকম পরিবেশ-পরিস্থিতি ছিল না। আমরা দ্রুত ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলছি।

বিগত চার বছরে বিশ্ব ব্যাঙ্কের অনুকূল ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বিশ্ব ক্রমতালিকায় ভারত ৬৫ ধাপ উঠে এসেছে। আমরা ২০১৪-র ১৪২ থেকে এখন ৭৭তম স্থানে পৌঁছেছি। এ সত্ত্বেও আমরা সন্তুষ্ট নই। আগামী বছর আমরা প্রথম ৫০ – এ পৌঁছতে আমি আমার দলকে কঠোর পরিশ্রম করার নির্দেশ দিয়েছি।

কর ব্যবস্থার সরলীকরণ ও সমগ্র প্রক্রিয়াকে আরও সুদৃঢ় করতে ঐতিহাসিক পণ্য ও পরিষেবা কর সহ একাধিক ব্যবস্থার রূপায়ণের ফলে লেনদেন খরচ কমেছে এবং কর ব্যবস্থা আরও কার্যকর হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল প্রক্রিয়া, অনলাইন লেনদেন ও একক অনুমোদন ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য দ্রুত অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের দিক থেকে আমরা এখন এক উদার দেশে পরিণত হয়েছি। আমাদের অর্থনীতির অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এখন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশের বেশি লগ্নিতে সরাসরি অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আমাদের অর্থনীতিকে এক উচ্চগতির পথে চালিত করেছে। বিগত চার বছরে আমরা ২৬৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছি, যা বিগত ১৮ বছরের বিনিয়োগের ৪৫ শতাংশ।

রাষ্ট্রসংঘের এক সংস্থার তালিকাতেও আমরা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম ১০ – এ রয়েছি। আমাদের দেশে উৎপাদন পরিবেশে প্রতিযোগিতার বাতাবরণ রয়েছে। প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর সহ ডিজিটাল উপায়ে লেনদেন দেশে পুরোদমে রূপায়িত হচ্ছে। নতুন শিল্প সংস্থা স্থাপনের দিক থেকে অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমরা বিশ্বের অন্যতম। প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রেও একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়গুলিকে বিবেচনায় রেখে আমি সুস্পষ্টভাবে একথা বলতে পারি যে, আমাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনের সুযোগ-সুবিধা বিপুল।

আমাদের দেশে জ্ঞান ও প্রাণশক্তিতে ভরপুর সুদক্ষ পেশাদার রয়েছে। এছাড়াও আমাদের রয়েছে, বিশ্বমানের কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা এবং এক সুদৃঢ় গবেষণা ও উন্নয়ন পরিকাঠামো। গড় আয়ে বৃদ্ধি, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ক্রয় ক্ষমাত বাড়ছে। সঙ্গত কারণেই অগ্রগতি হচ্ছে এবং দেশীয় বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিগত দুই বছরে আমরা কর্পোরেট ক্ষেত্রগুলির জন্য কর হার কমিয়েছি। নতুন লগ্নির পাশাপাশি, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগগুলির জন্য কর বোঝা ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। মেধাসত্ত্ব অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে আমরা এক নতুন মানদন্ড উদ্ভাবন করেছি। ট্রেডমার্ক ব্যবস্থাতেও আমরা দ্রুত অগ্রগতি করছি। ঋণ পরিশোধে অক্ষমতা ও দেউলিয়াবিধির ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিনের আইনি ও আর্থিক সমস্যা অনেকাংশে দূর হয়েছে।

আমাদের যুবসম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে উৎপাদন ক্ষেত্রের প্রসারে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগে ডিজিটাল ইন্ডিয়া ও স্কিল ইন্ডিয়ার মতো কর্মসূচিগুলি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা নিয়েছে। এখন আমাদের উদ্দেশ্য হ’ল – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পন্থা-পদ্ধতিগুলিকে অনুসরণ করে ভারতকে উৎপাদন ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত করা।

পরিচ্ছন্ন শক্তি ও পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়ন। নিখুঁত উৎপাদন ও পরিবেশের ওপর বিরূপহীন। এগুলি সবই আমাদের অঙ্গীকার। জলবায়ু পরিবর্তনগত প্রভাব হ্রাস করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করতে আমরা দায়বদ্ধ। শক্তি উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বে আমরা পঞ্চম বৃহত্তম পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদক দেশ। এছাড়াও, বায়ুশক্তি উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বে আমাদের স্থান চতুর্থ এবং সৌরশক্তিতে আমরা বিশ্বে পঞ্চম।

সড়ক, বন্দর, রেল, বিমানবন্দর, টেলিযোগাযোগ, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ও শক্তি ক্ষেত্র সহ পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে আমরা আগ্রহী। এছাড়াও, আমরা সামাজিক, শিল্প ও কৃষি পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগ করছি। উদ্দেশ্য – সাধারণ মানুষের আয় ও জীবনযাপনের মান বৃদ্ধি। এই প্রথমবার ভারত, অন্য দেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। প্রচুর সংখ্যায় এলইডুই বাল্ব বিতরণ করা হয়েছে। এর ফলে, বিপুল শক্তি সাশ্রয় হয়েছে। নজির বিহীন গতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী লাইন স্থাপন করা হয়েছে। সড়ক নির্মাণের গতি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দেশের প্রধান বন্দরগুলির পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়েছে। গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিধি বেড়ে হয়েছে ৯০ শতাংশ। নতুন রেল লাইন স্থাপন, গেজ রূপান্তরণ, রেল লাইন ডবল করা ও রেল লাইনে বৈদ্যুতিকীকরণের গতি দ্বিগুণ হয়েছে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে আমাদের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব ব্যবস্থাকে আরও বিনিয়োগ-বান্ধব করা হয়েছে। আমার সরকারের পুরো মেয়াদকালে গড় জাতীয় আয় ৭.৩ শতাংশে রয়েছে। ১৯৯১ সালের পর এই প্রথম কোনও কেন্দ্রীয় সরকারের মেয়াদে গড় জাতীয় আয় ৭.৩ – এ বজায় রয়েছে। একই সময়ে ১৯৯১ সালের পর আর কোনও কেন্দ্রীয় সরকারের আমলে মুদ্রাস্ফীতির হার সর্বনিম্ন ৪.৬ শতাংশে পৌঁছয়নি। এই হার এমন সময়ে অর্জিত হয়েছে, যখন ভারত উদারীকরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

আমরা বিশ্বাস করি, উন্নয়নের সুফল সহজ ও সুদক্ষ উপায়ে অবশ্যই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছবে। এ প্রসঙ্গে উদাহরণ-স্বরূপ বলতে পারি, এখন প্রতিটি পরিবারে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আমরা ছোট শিল্প সংস্থাগুলিকে কোনও রকম বন্ধক ছাড়াই ঋণ সহায়তা দিচ্ছি। এখন দেশের প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। প্রায় প্রতিটি পরিবারই বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে। অসংখ্য মানুষ যাঁদের রান্নার গ্যাস ক্রয়ের ক্ষমতা ছিল না, তাঁদের গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। শহর ও গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র অনাময়তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি পরিবারের জন্য শৌচাগারের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে, শৌচাগারের সদ্ব্যবহারেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

ভদ্র মহোদয় ও মহোদয়াগণ, ২০১৭-তে পর্যটনের আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসাবে ভারতের অগ্রগতি ছিল লক্ষ্যণীয়। ২০১৬-তে পর্যটন ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি হয়েছে ১৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে বিশ্বে পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশ হার ছিল ৭ শতাংশের মতো। বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রেও আমাদের অগ্রগতি দ্রুত হারে হচ্ছে। বিগত চার বছরে বিমানের টিকিট ক্রয়ে দুই অঙ্কের অগ্রগতি হয়েছে।

আধুনিক ও প্রতিযোগিতামুখী যে নতুন ভারতের উত্থান হচ্ছে, সেখানে সব মানুষের প্রতি গুরুত্ব ও পরিষেবার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এই অগ্রাধিকারের অন্যতম একটি দৃষ্টান্ত হ’ল চিকিৎসা বিমা প্রকল্প, যা আয়ুষ্মান ভারত নামে সুপরিচিত। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। উপকৃত মানুষের এই সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর মিলিত জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। এই কর্মসূচির ফলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, চিকিৎসার সাজসরঞ্জাম ও উপকরণ তথা স্বাস্থ্য পরিচর্যা পরিষেবার ক্ষেত্রে ব্যাপক বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা তৈরি হবে।

আমি আরও কয়েকটি বিষয়ের কথা উদাহরণ-স্বরূপ উল্লেখ করতে চাই। দেশের ৫০টি শহর মেট্রো রেল পরিষেবা চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। আমাদের ৫ কোটি গৃহ নির্মাণ করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই সড়ক, রেল ও জলপথ ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্যগুলি দ্রুত ও পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে অর্জনের জন্য আমাদের প্রয়োজন বিশ্ব মানের প্রযুক্তি।

বন্ধুগণ, ভারত এখন ব্যাপক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন দেশ হয়ে উঠেছে। এ এক এমন দেশ, যেখানে আপনাদের জন্য রয়েছে – গণতন্ত্র, জনসংখ্যাগত সুযোগ-সুবিধা ও চাহিদা। আপনাদের মধ্যে যাঁরা ইতিমধ্যেই ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের আমি আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, মানবিক মূল্যবোধ এবং মজবুত আইনি সংস্থান আপনাদের বিনিয়োগে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদান করবে। বিনিয়োগের অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তুলতে আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি। উদ্দেশ্য – নিজেদের বাতাবরণকে আরও প্রতিযোগিতামুখী করে তোলা।

আপনাদের মধ্যে যাঁরা ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত নন, তাঁদেরকে আমি এদেশে আসার এবং সুযোগ-সুবিধাগুলি খুঁজে বের করতে প্রেরণা দিই। এদেশে এসে বিনিয়োগের এটাই সেরা সময়। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সর্বোপরি, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, আপনাদের যাত্রাপথে আমি সর্বদাই পাশে থাকব।

ধন্যবাদ। আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।

CG/BD/SB……18_January_2019……(1,550)…..(Release ID :1560454)