Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

দেশ ১০০ কোটি টিকার ডোজ দেওয়ার মাইল ফলকে পৌঁছানোয় জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লী,  ২২  অক্টোবর, ২০২১

 

    প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশ ১০০ কোটি টিকার ডোজ দেওয়ার মাইলফলক অর্জন করা উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন।
    তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ১০০ কোটি টিকার ডোজ দেওয়াকে একটি কঠিন কাজ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি এই সাফল্যকে ১৩০ কোটি দেশবাসীর উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। এই সাফল্য ভারতের এবং প্রত্যেক দেশবাসীর। শ্রী মোদী বলেন ১০০ কোটি টিকাকরণ শুধুমাত্র একটি সংখ্যা নয়, এটি দেশের শক্তির প্রতিফলন। দেশের নতুন ইতিহাস এর মধ্য দিয়ে রচিত হয়েছে। কঠিন লক্ষ্যও কিভাবে অর্জন করা যায়, সেটি নতুন ভারত সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন আজ অনেকেই বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের টিকাকরণ অভিযানের তুলনা করছেন। যে গতিতে ভারত ১০০ কোটি টিকা দিয়েছে, তা সর্বত্র প্রশংসিত হচ্ছে। তবে এই প্রসঙ্গে তিনি এই টিকাকরণ অভিযানের শুরুর কথাটি আবারও উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন উন্নত দেশগুলির বহুদিন ধরে গবেষণা ও টিকা তৈরির অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভারত এইসব দেশের টিকার ওপর মূলত নির্ভরশীল ছিল। এ কারণে যখন শতাব্দীর সবথেকে বড় মহামারীর সমস্যা মানবজাতির সামনে এলো তখন ভারত কিভাবে তা মোকাবিলা করবে সেই প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ভারত কোথা থেকে টাকা পাবে, কতো দেশের কাছ থেকে কি পরিমাণ টিকা কিনবে এইসব প্রশ্ন উঠেছিল। ভারত কখন টিকা পাবে? ভারতের মানুষ টিকা কি পাবেন না পাবেন না? এই মহামারীর সংক্রমণ আটকাতে ভারত কি যথেষ্ট পরিমাণ মানুষকে টিকা দিতে পারবে? ১০০ কোটি টিকার ডোজ দেওয়ার মধ্য দিয়ে এই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন ভারত তার নাগরিকদের ১০০ কোটি টিকার ডোজই শুধু দেয়নি সেগুলি বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের ওষুধের ভান্ডার হিসেবে ভারতের পরিচিতি আরও শক্তিশালী হয়েছে।
    করোনা মহামারীর শুরুতে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করা খুব কষ্টকর হবে। এতো বিধিনিষেধ এবং এতো শৃঙ্খলা মেনে চলা সম্ভব হবে কি না সেই প্রশ্নও উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের জন্য গণতন্ত্রের অর্থ হল সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলা। ‘বিনামূল্যে টিকা এবং প্রত্যেকের জন্য টিকা’ এই বার্তা দিয়ে ভারতে টিকাকরণ অভিযানের সূচনা হয়। ধনী-দরিদ্র, গ্রাম-শহর সর্বত্র একইভাবে টিকা দেওয়া হয়েছে। সারা দেশ যে মন্ত্র অনুসরণ করেছে তা হল,  অসুখের যদি কোনো বৈষম্য না থাকে তাহলে টিকাকরণেও কোনো বৈষম্য থাকবেনা। আর তাই এই টিকাকরণ অভিযানে ভিআইপি সংস্কৃতি যাতে না থাকে সেটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের বেশিরভাগ মানুষ টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেবেন না এরকম কথাও উঠেছিল। আজ পৃথিবীর বড় বড় উন্নয়নশীল দেশগুলিতে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধা একটি বড় সমস্যা। কিন্তু ভারতের জনসাধারণ ১০০ কোটি টিকার ডোজ নিয়ে সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। সকলের উদ্যোগে এই অভিযানকে বাস্তবায়িত করা হয়েছে। আর তার অভূতপূর্ব ফল পাওয়া গেছে। দেশে মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথমেই জন-অংশীদারিত্বকে সরকার নিশ্চিত করেছে।  
    শ্রী মোদী বলেন, বিজ্ঞানের গর্ভে ভারতের সম্পূর্ণ টিকাকরণ অভিযান জন্ম নিয়েছে। বিজ্ঞান সম্মতভাবে তা বেড়ে উঠেছে এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চর্তুদিকে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতের সম্পূর্ণ টিকাকরণ অভিযান বিজ্ঞানের থেকে সৃষ্ট, বিজ্ঞানের দ্বারা পরিচালিত এবং বিজ্ঞান সম্মত। এটি আমাদের সকলের কাছে অত্যন্ত গর্বের। তিনি বলেন, টিকা তৈরির আগে এবং যতক্ষণ না টিকা দেওয়ার অভিযান শুরু হয়েছে সেই সময় পর্যন্ত বিজ্ঞান সম্মতভাবে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করা হয়। টিকার উৎপাদন বাড়ানোও একটি চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল। এরপর বিভিন্ন রাজ্যকে টিকা দেওয়া এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্দিষ্ট সময়ে টিকা পৌঁছে দেওয়া আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। কিন্তু বিজ্ঞান সম্মতভাবে নতুন উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে দেশ এইসব সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে। অভূতপূর্ব গতিতে সম্পদের যোগান বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভারতের তৈরি কোউইন প্ল্যাটফর্ম সাধারণ মানুষকে এই অভিযানে যেমন সাহায্য করেছে একইভাবে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছেও কাজটি সহজ হয়েছে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন দেশ-বিদেশের অনেক বিশেষজ্ঞ এবং সংস্থা ভারতের অর্থনীতির বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী। আজ ভারতীয় সংস্থাগুলিতে রেকর্ড পরিমাণ বিনিয়োগ যেমন হচ্ছে পাশাপাশি এদেশের যুব সম্প্রদায়ের জন্য নতুন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। স্টার্টআপ এবং ইউনিকর্নগুলিতে রেকর্ড পরিমাণ বিনিয়োগ হয়েছে। আবাসন ক্ষেত্রে নতুন উৎসাহ দেখা দিয়েছে। বিগত কয়েক মাস ধরে নানা সংস্কার এবং উদ্যোগের ফলে ভারতের অর্থনীতির দ্রুত বৃদ্ধি নিশ্চিত হচ্ছে। আমাদের অর্থনীতিকে কৃষিক্ষেত্র মহামারীর সময়েও শক্তিশালী করে রেখেছে। এখন রেকর্ড পরিমাণে খাদ্যশস্য সংগ্রহ হয়েছে। কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানো হয়েছে।  
    প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণকে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের তৈরি যেকোন ছোট জিনিস যেগুলি একজন ভারতীয় কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে উৎপাদন করেছেন সেগুলি সকলে যেন কেনেন। সকলের উদ্যোগেই এটি সম্ভব। স্বচ্ছ ভারত অভিযান যেমন ভাবে গণ আন্দোলনে পরিণত হয়েছে একইভাবে ভারতে এবং ভারতীয়দের তৈরি সামগ্রী বিক্রির মধ্য দিয়ে ভোকাল ফর লোকালের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ জানে কিভাবে বড় লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে তা অর্জন করতে হয়। তবে এর জন্য আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। একটি মোড়ক কতটা সুন্দর, একটি রক্ষা কবচ কতটা আধুনিক সেটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। যদি একটি রক্ষা কবচ সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করে, যুদ্ধক্ষেত্রে যদি অস্ত্রকে ফেলে না আসতে হয় তাহলে সেটি কার্যকর। একইভাবে শ্রী মোদী বলেছেন আমাদের অসতর্ক হলে চলবে না। আমরা সতর্কভাবে সবাই যাতে উৎসব পালন করি তিনি তারজন্য সকলকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

CG/CB/NS