Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

দেশে কোভিড-১৯ মহামারীজনিত পরিস্থিতি ও টিকাকরণ কর্মসূচি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রী

দেশে কোভিড-১৯ মহামারীজনিত পরিস্থিতি ও টিকাকরণ কর্মসূচি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রী


নতুন দিল্লি, ৪ এপ্রিল, ২০২১

 


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে দেশে কোভিড-১৯ মহামারীজনিত পরিস্থিতি ও টিকাকরণ কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় ব্যাপক সামাজিক জনসচেতনতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনভাগিদারী ও জন-আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই প্রেক্ষিতে তিনি পঞ্চমুখী কৌশল অবলম্বন করার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় ওই কৌশলের অঙ্গ হিসেবে টেস্টিং, ট্রেসিং, ট্রিটমেন্ট, কোভিড আদর্শ-আচরণ ও টিকাকরণে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিতে হবে।

কোভিড আদর্শ আচরণ অনুসরণের জন্য ১০০ শতাংশ মাস্কের ব্যবহার, প্রকাশ্যস্থানে ও কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে আগামী ৬-১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে বলেও তিনি জানান।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আগামীদিনগুলিতে কোভিড আদর্শ-আচরণ মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে এবং সেই সঙ্গে হাসপাতালে রোগী শয্যা, নমুনা পরীক্ষা এবং সময়মতো চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান সুনিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ক্ষেত্রে মানোন্নয়ন, অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটরের পর্যাপ্ত যোগান সহ ক্লিনিক্যাল বা চিকিৎসা সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ আরও কার্যকর করে মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস করতে গুরুত্ব দিতে হবে। এমনকি, যাদের বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে তাদের প্রতিও সমান অগ্রাধিকার দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি পাঞ্জাব ও ছত্তিশগড়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাগাতার বৃদ্ধি পাওয়ার দরুন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুস্পষ্টভাবে করোনায় আক্রান্তদের খুঁজে বের করতে স্বেচ্ছাসেবকদের আরও বেশি অংশগ্রহনের পাশাপাশি সংক্রমিত এলাকাগুলির রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা দ্রুত কার্যকর করার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধে সমস্ত রাজ্যকে নিষেধাজ্ঞামূলক ব্যবস্থা সহ কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এই পর্যালোচনা বৈঠকে ১০টি রাজ্যে কোভিড-১৯-এ আক্রান্তের ঘটনা ও মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায়, এ সম্পর্কিত একটি বিস্তারিত বিবরণী পেশ করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, এই রাজ্যগুলিতে কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার ৯১ শতাংশের বেশি। বৈঠকে জানানো হয়, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব ও ছত্তিশগড়ের পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। আজ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে গত ২ সপ্তাহে সারা দেশে আক্রান্তের ৫৭ শতাংশ ঘটনা ঘটেছে। এমনকি, এই রাজ্যটিতে গত ১৪ দিনে মৃত্যু হার ৪৭ শতাংশ। পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭,৯১৩ হয়েছে, যা গতবারের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার তুলনায় দ্বিগুণ। পাঞ্জাবেও গত ১৪ দিনে আক্রান্তের হার ৪.৫ শতাংশ। এমনকি এই রাজ্যটিতে মৃত্যুর হার ১৬.৩ শতাংশ, যা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের কারণ। একইভাবে, ছত্তিশগড়ে গত ২ সপ্তাহে আক্রান্তের হার, দেশে মোট আক্রান্তের ৪.৩ শতাংশ। এছাড়াও, এই রাজ্যটিতে আলোচ্য সময়ে সারা দেশে কোভিডে মোট মৃত্যুর ৭ শতাংশ ঘটনাই ঘটেছে। সারা দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের ৯১.৪ শতাংশই ১০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের। এমনকি, দেশে মোট মৃত্যুর ৯০.৯ শতাংশ ঘটনাই ঘটেছে এই ১০টি রাজ্যে।

যে রাজ্যগুলিতে আক্রান্তের ঘটনা লক্ষ্যণীয় হারে বেড়েছে তার পেছনে রয়েছে কোভিড আদর্শ আচরণ মেনে না চলার মত কারণ। এই রাজ্যগুলিতে মাস্কের ব্যবহার, ২ গজ দূরত্ব বজায় রাখার মত আচরণগুলি উপেক্ষা করা হয়েছে। এছাড়াও, আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলি কার্যকর করার ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

কয়েকটি রাজ্যে নতুন প্রজাতির ভাইরাসের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা এখনও সুস্পষ্ট নয়। তবে, সংক্রমণ প্রতিরোধে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলি একই রয়েছে।

আজকের এই উচ্চপর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠকে কোভিড-১৯ টিকাকরণ অভিযানের অগ্রগতি সম্পর্কেও সংক্ষিপ্ত বিবরণী পেশ করা হয়। বৈঠকে বলা হয়, টিকাকরণ অভিযান বিভিন্ন শ্রেণীর বয়সের মানুষের মধ্যে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে এবং অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে টিকাকরণের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, দৈনিক টিকাকরণের ক্ষেত্রে যাবতীয় তথ্য ও বিশ্লেষণ রাজ্য ও কেন্দ্রগুলির সঙ্গে বিনিময় করতে হবে যাতে, টিকাকরণ ক্ষেত্রে কোন ঘাটতি থাকলে তা দ্রুত দূর করা যায়।

বৈঠকে কোভিড টিকার উৎপাদন এবং ট্রায়ালে থাকা টিকাগুলির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। টিকা উৎপাদক সংস্থাগুলি তাদের উৎপাদন ক্রমাগত বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী সংস্থার সঙ্গেও টিকার উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আলোচনা চলছে। দেশে টিকার ক্রমবর্ধামান চাহিদা মেটাতে যাবতীয় প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়। ভারতের ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ বা সমগ্র বিশ্বই এক পরিবার – এই আদর্শ অনুসরণ করে অন্যান্য দেশগুলির প্রকৃত কোভিড টিকার চাহিদা মেটানো হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়ে বলেন, যে রাজ্য ও জেলাগুলিতে আক্রান্তের ঘটনা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে সেখানে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় গত ১৫ মাসে যে প্রয়াস নেওয়া হয়েছে, তা যেন কোন ভাবেই উপেক্ষিত না হয়।

উচ্চ পর্যায়ের এই পর্যালোচনা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রধান সচিব, ক্যাবিনেট সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, টিকাকরণ সংক্রান্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত গোষ্ঠীর চেয়ারপারশন, স্বাস্থ্য সচিব, ফার্মাসিউটিক্যাল দপ্তরের সচিব, জৈব প্রযুক্তি দপ্তরের সচিব, আয়ুষ সচিব, ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পর্ষদের মহানির্দেশক, ভারত সরকারে মুখ্য বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা, নীতি আয়োগের সদস্য সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

CG/BD/AS