Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

দেশের ৭৫টি জেলায় ৭৫টি ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিট জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশের ৭৫টি জেলায় ৭৫টি ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিট জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন প্রধানমন্ত্রী


““দূরদুরান্তের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে সাধারণ মানুষের দুয়ারে ব্যাঙ্ক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টিকে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি””

“আর্থিক এবং ডিজিটাল অংশীদারিত্বের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হয়েছে অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার এক নতুন দিগন্ত”

“দেশের প্রতি ১ লক্ষ বয়স্ক নাগরিকদের জন্য ব্যাঙ্কের যতগুলি শাখা এখানে কাজ করছে, ততগুলি শাখা বোধহয় চিন, জার্মানি ও দক্ষিণ আফ্রিকাতেও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর”

“আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার কর্তৃপক্ষ ভারতের ডিজিটাল ব্যাঙ্ক পরিকাঠামোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ”

“ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তোলার লক্ষ্যে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছে, ভারতই হল তার পথিকৃৎ”

“ব্যাঙ্ক আজ আর শুধুমাত্র আর্থিক লেনদেনের একটি মাধ্যমমাত্র নয়, একইসঙ্গে তা হয়ে উঠেছে সুপ্রশাসন এবং উন্নততর পরিষেবারও মাধ্যম’”

“জন ধন যোজনার মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সূচনা যেমন হয়েছে, ঠিক তেমনভাবেই ফিনটেক-এর সাহায্যে আমরা সম্ভব করে তুলব অর্থনৈতিক বিপ্লবকে”

“জন ধন অ্যাকাউন্ট দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির পথ প্রশস্ত করেছে”

“যে কোনো দেশের অর্থনীতি তখনই দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারে যখন তার ব্যাঙ্ক ব্যবস্থাও হয়ে ওঠে যথেষ্ট শক্তিশালী”

এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ৭৫টি জেলায় ৭৫টি ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিট জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এর ফলে একদিকে যেমন আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি আরও জোরদার হয়ে উঠবে, অন্যদিকে তেমনই নাগরিকরাও এক নতুন ধরনের ব্যাঙ্ক পরিষেবার সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। তিনি বলেন, ন্যূনতম পরিকাঠামোর মাধ্যমে সর্বাধিক মাত্রায় ব্যাঙ্ক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াই হল সরকারের লক্ষ্য। কাগজ-কলম ছাড়া শুধুমাত্র ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যেই পৌঁছে দেওয়া হবে এই বিশেষ সুযোগ। দেশের গ্রাম বা ছোট শহরে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁরা এখন থেকে খুব সহজেই টাকা পাঠানোর সাথে সাথে ঋণ গ্রহণের জন্য আবেদনও জানাতে পারবেন ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিটের মাধ্যমে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তুলতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিটের সূচনা সেই লক্ষ্যেই এক বড় ধরনের পদক্ষেপ বলে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

শ্রী মোদী বলেন, দেশের সাধারণ নাগরিকদের ক্ষমতায়নই তাঁর সরকারের একটি অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। আপামর জনসাধারণের সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করেই রচিত হয়েছে বিভিন্ন সরকারি নীতি। একদিকে ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার সংস্কার এবং অন্যদিকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি – এই দুটি বিষয়কে সামনে রেখে দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ তাঁর সরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাঙ্ক পরিষেবার সুযোগ গ্রহণের জন্য সাধারণ মানুষকে এখন আর ব্যাঙ্কের কাছে যাওয়ার আর প্রয়োজন নেই, বরং ব্যাঙ্কই তার সমস্ত পরিষেবা নিয়ে হাজির দরিদ্র মানুষের দ্বারপ্রান্তে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে ব্যাঙ্কের ব্যবধান কমিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু আক্ষরিক অর্থেই নয়, মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও এই দূরত্ব বা ব্যবধান কমিয়ে আনা হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে ব্যাঙ্ক পরিষেবার সুযোগ পৌঁছে দিতে তাঁর সরকার যে কৃতসঙ্কল্প, একথাও আজ দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ডাকঘরগুলির বিশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইন্ডিয়া পোস্ট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে সাধারণ নাগরিকদের কাছে। দেশের প্রতি ১ লক্ষ বয়স্ক নাগরিকদের জন্য ব্যাঙ্কের যতগুলি শাখা এখানে কাজ করছে, ততগুলি শাখা বোধহয় চিন, জার্মানি ও দক্ষিণ আফ্রিকাতেও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কর্মসূচির সূচনাকালের সমস্ত নেতিবাচক মানসিকতা ও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠে প্রকল্পটি যেভাবে সফল হয়ে উঠেছে তারও দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই ন্যূনতম প্রিমিয়ামে বিমার সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে অ্যাকাউন্ট গ্রহীতাদের কাছে। প্রত্যক্ষ সুফল হস্তান্তরের সুযোগ ছাড়াও কোনরকম গ্যারান্টি ছাড়া ঋণের আবেদন জানানোর পথও এখন তাঁদের জন্য উন্মুক্ত। আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার কর্তৃপক্ষ ভারতের ডিজিটাল ব্যাঙ্ক পরিকাঠামোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের দরিদ্র, কৃষক-শ্রমিক এবং সাধারণ মানুষ নির্দ্বিধায় নতুন নতুন প্রযুক্তিকে যেভাবে সাদরে গ্রহণ করেছেন, এই সাফল্যের জন্য কৃতিত্বের তাঁরাও সমান অংশীদার।

শ্রী মোদী বলেন, ইউপিআই হল লেনদেন সংক্রান্ত এমন একটি প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা যা ভারতে অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে নতুন নতুন সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছে। আর্থিক এবং ডিজিটাল অংশীদারিত্বের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হয়েছে অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার এক নতুন দিগন্ত। ৭০ কোটি ‘রুপে কার্ড’ এখন পৌঁছে গেছে ব্যাঙ্ক গ্রহীতাদের কাছে। এই কার্ডটি সম্পূর্ণভাবে ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে চালু করা হয়েছে। ক্রমে এটি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে বিশ্বের প্রায় সবক’টি দেশেরই লেনদেন ব্যবস্থায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিবিটি-র মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করার কাজে সচেষ্ট তাঁর সরকার। এক সময় দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ তাঁদের হাতে পৌঁছে যাওয়ার আগেই অনেক ক্ষেত্রেই অদৃশ্য হয়ে যেত মাঝপথ থেকে। কিন্তু ডিবিটি চালু হওয়ার পর থেকে সুফলভোগীদের জন্য চিহ্নিত আর্থিক সহায়তা পৌঁছে যাচ্ছে যোগ্য ব্যক্তিটির কাছেই। ভারতের এই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বিশ্বব্যাঙ্ক মন্তব্য করেছে যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তোলার লক্ষ্যে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছে, ভারতই হল তার পথিকৃৎ।

শ্রী মোদী বলেন, ভারতের সমস্ত নীতি ও অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার মূলে রয়েছে ‘ফিনটেক’-এর সঠিক প্রয়োগ। দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎকে আরও শক্তিশালী করে তোলার পেছনে অনুঘটকের কাজ করে যাবে এই ব্যবস্থাটি। জন ধন যোজনার মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সূচনা যেমন হয়েছে, ঠিক তেমনভাবেই ফিনটেক-এর সাহায্যে আমরা সম্ভব করে তুলব অর্থনৈতিক বিপ্লবকে।

প্রসঙ্গত, ডিজিটাল কারেন্সি চালু করার কথাও ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই ব্যবস্থা অনেক ব্যয়সাশ্রয়ী কারণ, কাগজ ও কালির এখানে কোনো প্রয়োজন পড়ে না। এইভাবে ডিজিটাল অর্থনীতির সাহায্যে আমরা এগিয়ে চলেছি এক আত্মনির্ভর ভারত গঠনের পথে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাঙ্ক আজ আর শুধুমাত্র আর্থিক লেনদেনের একটি মাধ্যমমাত্র নয়, একইসঙ্গে তা হয়ে উঠেছে সুপ্রশাসন এবং উন্নততর পরিষেবারও মাধ্যম। দেশের বেসরকারি ক্ষেত্র এবং ক্ষুদ্র শিল্প সংস্থাগুলির কাছে সম্ভাবনার নতুন নতুন দ্বার আজ উন্মোচিত হচ্ছে প্রযুক্তির সহায়তায়। ডিজিটাল প্রযুক্তির বলে ভারতীয় অর্থনীতি এখন আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এর ফলে একইসঙ্গে লাভবান হচ্ছে স্টার্ট-আপ সংস্থা এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ও ‘স্বনির্ভর ভারত’ গঠন কর্মসূচি। তিনি বলেন, যে কোনো দেশের অর্থনীতি তখনই দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারে যখন তার ব্যাঙ্ক ব্যবস্থাও হয়ে ওঠে যথেষ্ট শক্তিশালী। গত আট বছরে ফোন ব্যাঙ্কিং-এর যুগকে পেছনে ফেলে দেশ আজ প্রবেশ করেছে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং-এর যুগে। ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিটের সূচনার মধ্য দিয়েই ব্যাঙ্ক ব্যবস্থায় আরও একটি নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।