Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

দেশের জেলা বিচার ব্যবস্থার ২ দিনের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশের জেলা বিচার ব্যবস্থার ২ দিনের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী


নতুন দিল্লি, ৩১ আগস্ট ২০২৪

নয়া দিল্লির ভারত মণ্ডপে আজ দেশের জেলাগুলির বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কিত এক জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি ভারতীয় শীর্ষ আদালতের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি স্মারক ডাক টিকিট ও স্মারক মুদ্রাও প্রকাশ করেন। সুপ্রিমকোর্ট আয়োজিত দু-দিনের এই সম্মেলনে ৫টি পৃথক অধিবেশনে জেলা বিচার ব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও মত বিনিময় অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে পরিকাঠামো ও মানবসম্পদ, সকলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক আদালত কক্ষ, বিচার বিভাগীয় নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগীয় কল্যাণ, বিভিন্ন মামলার ব্যবস্থাপনা ও বিচার বিভাগীয় প্রশিক্ষণ। 

এদিন প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ভারতীয় শীর্ষ আদালতের ৭৫ বছরের যাত্রাপথকে ভারতীয় সংবিধানের এক যাত্রাপথ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, সংবিধানের মূল্যকে তুলে ধরতে এবং গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে যেতে এ হল এক সূচক বিশেষ। 

শ্রী মোদী বলেন, দেশবাসী কখনই সুপ্রিমকোর্ট অথবা বিচার ব্যবস্থার ওপর অবিশ্বাস ও অনাস্থার মনোভাব ব্যক্ত করেনি। তাই, শীর্ষ আদালতের ৭৫ বছর পূর্তি হল গণতন্ত্রের জননী রূপে ভারতেরই এক গৌরবজনক অধ্যায়। ‘সত্যমেব জয়তে’ এই সাংস্কৃতিক উচ্চারণের মধ্য দিয়ে দেশের গণতন্ত্র ও বিচার ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিচার ব্যবস্থা হল গণতন্ত্রের অভিভাবক স্বরূপ। ন্যায় ও সত্য প্রচেষ্টার লক্ষ্যে দেশের শীর্ষ আদালত যে ভাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছে তাতে স্বাধীনতা-উত্তরকালে দেশের বিচার ব্যবস্থার শক্তি ও বলিষ্ঠতা প্রমাণিত হয়েছে। নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের ওপর আঘাত ও আক্রমণকে প্রতিহত করতে সর্বদাই এগিয়ে এসেছে সুপ্রিমকোর্ট। দেশের নিরাপত্তা যখনই একটি প্রশ্ন চিহ্নের মুখোমুখি হয়েছে, শীর্ষ আদালত তখনই তা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে। এই ৭৫ বছরের যাত্রাপথে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের অবদানই তাই অভিনন্দন যোগ্য। 

ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে আরও সুষ্ঠু ও সাবলীল করে তুলতে দেশের আদালতগুলিকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলা হচ্ছে। 

উন্নত ভারত তথা এক নতুন ভারত যে ১৪০ কোটি নাগরিকের এক বিশেষ স্বপ্ন একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, স্বাধীনতার এই অমৃতকালে সেই স্বপ্ন আরও মূর্ত হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ‘নতুন ভারত’ কথাটির অর্থই হল এক আধুনিক ভারত গঠন। এই লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার ক্ষেত্রে দেশের বিচার ব্যবস্থা হল একটি বিশেষ শক্তিশালী স্তম্ভ। 

শ্রী মোদী বলেন, মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে সহজতর করে তোলার ক্ষেত্রে একটি অন্যতম পূর্বশর্ত হল খুব সহজেই বিচার ব্যবস্থার নাগাল পাওয়া। দেশের জেলা আদালতগুলিকে যদি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও পরিকাঠামো দিয়ে গড়ে তোলা যায় তবেই তা বাস্তবায়িত হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন যে, দেশের জেলা আদালগুলিতে বর্তমানে সাড়ে চার কোটির মতো মামলা এখনও অমীমাংসিত অবস্থায় রয়েছে। তাই, বিচার ব্যবস্থায় বিলম্ব ও দীর্ঘসূত্রিতার অবসান ঘটাতে নানা ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। বিচার ব্যবস্থার পরিকাঠামোর উন্নয়নে ইতিমধ্যে ব্যয়িত হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। গত ১০ বছরে দেশের জেলা আদালতগুলির জন্য সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি আদালত কক্ষ এবং ১১ হাজার বাসস্থান নির্মাণ করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত ই-আদালতগুলির গুরুত্বও এদিন তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রযুক্তিগত ব্যবস্থায় এর মাধ্যমে গতি সঞ্চারিত হয়েছে। ফলে, বিচার প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ই-আদালত প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের কাজ অনুমোদিত হয় ২০২৩ সালে। কৃত্রিম মেধাশক্তি এবং অপটিক্যাল প্রযুক্তি যুক্ত করা হচ্ছে বিচার ব্যবস্থার পরিকাঠামোর সঙ্গে। উচ্চ তথা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি পুলিশ, ফরেন্সিক, জেল এবং আদালতগুলির কাজে গতি বৃদ্ধি করবে। ভারতে এমন এক বিচার ব্যবস্থা আমরা গড়ে তুলতে চলেছি যা হয়ে উঠবে সম্পূর্ণ ভাবে ভবিষ্যতের উপযোগী। প্রসঙ্গত বিচার ব্যবস্থার কাজকে দ্রুততার সঙ্গে সম্পূর্ণ করার জন্য দেশের আইন ও পুলিশ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপরও বিশেষ জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের নতুন বিচার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার আকারে এই ব্যবস্থার এক নতুন ভাবমূর্তি গড়ে তোলা হচ্ছে। কারণ, সরকারের লক্ষ্যই হল ‘দেশের নাগরিকরা সর্ব প্রথম, মর্যাদা রক্ষা সর্ব প্রথম এবং ন্যায় তথা বিচার ব্যবস্থা সর্ব প্রথম’- এই মন্ত্রকে সম্বল করে সরকার বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্রতী হয়েছে। ন্যায় সংহিতার চিন্তা-ভাবনার পিছনে যে দৃষ্টিভঙ্গী কাজ করেছে তা হল, নাগরিকদের সুরক্ষা প্রদান, তাঁদের শাস্তিবিধান নয়। তবে, নারী ও শিশুদের ওপর সংগঠিত অপরাধ সহ যেকোন ধরনের ঘৃণ্য ও নৃশংস অপরাধের বিচার আধুনিক বিচার ব্যবস্থাতে সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম এবং ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। 

আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বি. আর. গাভাই, কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্ব প্রাপ্ত) শ্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল, ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল শ্রী আর ভেঙ্কট রামানি, সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শ্রী কপিল সিব্বাল এবং বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান শ্রী মনন কুমার মিশ্র।

PG/SKD/AS