Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

দক্ষিণ ভারতে তিনটি নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

দক্ষিণ ভারতে তিনটি নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী


নতুন দিল্লি, ৩১ আগস্ট ২০২৪

বন্দে ভারত ট্রেনগুলি ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণের এক নতুন ভাবমূর্তি হয়ে উঠেছে। দেশের প্রতিটি শহর এবং প্রায় প্রতিটি রুটেই বন্দে ভারত ট্রেন চালুর দাবি উঠেছে। কারণ, উচ্চগতি সম্পন্ন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস মানুষের মনে এক নতুন আস্থা ও আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। বাণিজ্যিক কাজকর্ম, কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসার এবং আশা ও স্বপ্নের বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হয়েছে এই ট্রেনগুলির মাধ্যমে। বর্তমানে সারা দেশে চালু হয়েছে ১০২টি বন্দে ভারত রেল পরিষেবা। এই ট্রেনগুলিতে যাতায়াতের সুযোগ পেয়েছেন ৩ কোটিরও বেশি যাত্রী। যাত্রী সংখ্যার এই হার বন্দে ভারত ট্রেনের সাফল্যকেই শুধুমাত্র সূচিত করে না, একই সঙ্গে তা নতুন ভারতের আশা-আকাঙ্খা ও স্বপ্নের প্রতীকও বটে। 

আজ এক ভিডিও কনফারেন্সের মঞ্চে তিনটি নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের যাত্রা সঙ্কেত দেওয়ার সময় এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মিরাট – লক্ষ্ণৌ, মাদুরাই – বেঙ্গালুরু এবং চেন্নাই – নাগেরকয়েল রুটগুলিতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এখন থেকে যাতায়াত করবে। ফলে, রেলপথে উন্নততর সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসার ঘটবে উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলিতে। 

অনুষ্ঠানে ভাষণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন যে, এই তিনটি বন্দে ভারত ট্রেন চালু হওয়ার ফলে ভারতের উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত উন্নয়নের যাত্রাপথে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। দেশবাসী এখন বিকশিত ভারতের স্বপ্নকে সফল করে তুলতে একটু একটু করে এগিয়ে চলেছেন। এরই সঙ্গে তালমিলিয়ে বন্দে ভারত ট্রেনগুলি পর্যায়ক্রমে চালু করার মাধ্যমে আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের এক মহা যজ্ঞের কাজও শুরু হয়েছে। 

শ্রী মোদী বলেন, বন্দে ভারত ট্রেনগুলির মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির মধ্যে শুধুমাত্র উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাই গড়ে উঠেনি, একই সঙ্গে তা ছোট ছোট শহরগুলিতে পৌঁছে যাওয়ার কাজেও সাহায্য করেছে। নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের সূচনা হওয়ার ফলে মন্দির নগরী মাদুরাই এখন যুক্ত হচ্ছে বেঙ্গালুরুর মতো একটি প্রযুক্তি নগরীর সঙ্গে। অন্যদিকে, চেন্নাই – নাগেরকয়েল রুটে চলাচলকারী বন্দে ভারত দেশের শিক্ষার্থী, কৃষিজীবী মানুষ এবং তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের প্রভূত উপকারসাধন করবে। শুধু তাই নয়, উচ্চগতির বন্দে ভারত ট্রেনগুলির মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন স্থানের মধ্যে পর্যটনের আরও প্রসার ঘটতে চলেছে।

বিকশিত ভারত-এর লক্ষ্য পূরণে দেশের দক্ষিণের রাজ্যগুলির উন্নয়ন একটি অন্যতম পূর্বশর্ত বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মেধা ও সহায়সম্পদের প্রাচুর্য এবং অফুরন্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে। তাই, এই অঞ্চলের উন্নয়নে সরকার বরাবরই অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। 

উন্নয়নের পথে ভারতীয় রেলের যাত্রা সরকারি অঙ্গীকার পূরণের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলির জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষ বাজেট সংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কর্ণাটকের মতো প্রযুক্তির এক বিশেষ পীঠস্থানকে বর্তমানে যুক্ত করেছে ৮টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য অংশের মতো দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেও রেলপথগুলিকে আরও উন্নত করে তোলা হচ্ছে। একই সঙ্গে তার বৈদ্যুতিকরণের কাজও অবাধ গতিতে এগিয়ে চলেছে। এরই সঙ্গে তালমিলিয়ে আধুনিকীকরণ হচ্ছে রেলস্টেশনগুলিরও। এর ফলে, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও সহজ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাণিজ্যিক কাজকর্মেরও বিশেষ প্রসার ঘটছে। 

মিরাট – লক্ষ্ণৌ রুটে নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের সূচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিরাট সহ পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ হল বৈপ্লবিক কর্মপ্রচেষ্টার এক বিশেষ অঞ্চল। বর্তমানে সেখানে ঘটে চলেছে উন্নয়নের লক্ষ্যে এক নতুন বিপ্লব। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি পরিকল্পনারও অবতারণা করেন তিনি। 

শ্রী মোদী বলেন, আধুনিক রেল পরিকাঠামো হল বিকশিত ভারতের যাত্রাপথে এক বলিষ্ঠ স্তম্ভ বিশেষ। পরিকাঠামো উন্নয়নে এবছরের বাজেটে সংস্থান রাখা হয়েছে আড়াই লক্ষ কোটি টাকা। ভারতীয় রেলের পুরানো পরিকাঠামোর পরিবর্তে উচ্চ প্রযুক্তির পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলছে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে তালমিলিয়ে সম্প্রসারণ ঘটছে অমৃত ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিরও। স্লিপার যুক্ত বন্দে ভারত-এর যে খুব শীঘ্রই সূচনা হতে চলেছে একথাও ঘোষণা করেন তিনি। প্রসঙ্গত তিনি উল্লেখ করেন যে সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে নমো ভারত ট্রেনও চালু করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৩০০টিরও বেশি রেলস্টেশনকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। কয়েকটি স্টেশনকে আবার রূপ দেওয়া হচ্ছে বিমান বন্দরের মতো। এমনকি, ছোটখাটো স্টেশনগুলিতেও অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ নতুন রূপ দেওয়ার কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর মতে রেল, সড়ক ও জলপথে যোগাযোগ পরিকাঠামোর প্রসারের মধ্য দিয়ে দেশ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলে তাঁর ধারণা। কারণ, দরিদ্র থেকে মধ্যবিত্ত সকল স্তরের নাগরিকদের তাতে প্রভূত কল্যাণসাধন হবে। ক্ষমতায়নের দিক থেকে তারাও এখন কোনো মতে অবহেলিত নয়।  

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতের বহু দশকের রেল সমস্যার অবসান ঘটিয়ে সরকার ভারতীয় রেলের উন্নয়নের কাজে সামিল হয়েছে। তবে, উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের এখনও অনেকটা পথই অতিক্রম করতে হবে। 

আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রীমতী আনন্দী বেন প্যাটেল, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল শ্রী আর এন রবি এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁরা সকলেই উপস্থিত ছিলেন ভিডিও কনফারেন্সের মঞ্চে। 

PG/SKD/AS