নয়াদিল্লি, ৩ এপ্রিল, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ব্যাঙ্ককে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেটংটার্ন শিনাওয়াত্রার সঙ্গে দেখা করেছেন। গভর্মেন্ট হাউসে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছলে শ্রী শিনাওয়াত্রা তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান, প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। দুই নেতার এটি দ্বিতীয় বৈঠক। এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবরে ভিয়েনটিয়ানে আশিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তাঁদের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল।
দুই নেতা ভারত – থাইল্যান্ড দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্পূর্ণ পরিসর নিয়ে আলোচনা করেছেন। রাজনৈতিক আদানপ্রদান, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব, কৌশলগত সংযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং নাগরিক সংযোগ আরও মজবুত করার পন্থা-পদ্ধতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়। তাঁরা সংযোগ, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, স্টার্টআপ, উদ্ভাবন, ডিজিটাল ক্ষেত্র, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পর্যটন সংক্রান্ত সহযোগিতা আরও নিবিড় করার প্রয়োজনীতা উল্লেখ করেন। মানব ও মাদক পাচার এবং সাইবার অপরাধের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠিত অপরাধ মোকাবিলায় সহযোগিতা আরও বাড়ানোর কথা বলেন তাঁরা। বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়েও দুই নেতা মতবিনিময় করেন। বিমস্টেক, আশিয়ান, মেকং গঙ্গা সহযোগিতা সহ বিভিন্ন মঞ্চে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও নিবিড় করার বিষয়টিও তাঁদের আলোচনায় উঠে আসে।
দুই নেতার উপস্থিতিতে ভারত-থাইল্যান্ড কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়ে যৌথ ঘোষণাপত্র বিনিময় করা হয়। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের সাক্ষীও থাকেন তাঁরা। যেসব ক্ষেত্রে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে সেগুলি হল- হস্তচালিত তাঁত ও হস্তশিল্প, ডিজিটাল প্রযুক্তি, এমএসএমই এবং সামুদ্রিক ঐতিহ্য। দুই নেতা ভারত-থাইল্যান্ড বাণিজ্যদূত পর্যায়ের আলোচনাকে স্বাগত জানান। এর মধ্য দিয়ে নাগরিক সংযোগও বৃদ্ধি পাবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষ্যে থাই সরকার রামায়ণের অষ্টাদশ শতকের দেওয়াল চিত্র সম্বলিত একটি ডাক টিকিট প্রকাশ করে। দুই দেশের ঘনিষ্ট সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় যোগসূত্রের উল্লেখ করে থাই প্রধানমন্ত্রী শিনাওয়াত্রা, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে পালি ভাষায় লেখা বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ ত্রিপিটকের একটি বিশেষ সংস্করণ উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রী গুজরাট থেকে খনন করা ভগবান বুদ্ধের স্মৃতিজড়িত সামগ্রী থাইল্যান্ডে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। গতবছর ভগবান বুদ্ধ ও তাঁর দুই শিষ্যের স্মৃতিবিজড়িত সামগ্রী ভারত থেকে থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়েছিল। ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ তাতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন।
ভারত ও থাইল্যান্ড সমুদ্র প্রতিবেশী, তাদের মধ্যে রামায়ণ ও বৌদ্ধ ধর্মের সংযোগ সহ গভীর সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও ধর্মীয় যোগসূত্র রয়েছে। থাইল্যাণ্ডের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আমাদের ‘পুবে সক্রিয়’ নীতি, আশিয়ানের সঙ্গে সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব, মহাসাগর ভিশন এবং ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
SC/ SD /AG