Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

‘ডিজিটাল ভারত’ কর্মসূচির সুফল গ্রহীতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাপচারিতা


জীবনের সর্বস্তরের জনসাধারণের, বিশেষত গ্রামীণ নাগরিকদের ডিজিটাল ক্ষমতায়নের লক্ষ্যেই ডিজিটাল ভারত অভিযানের সূচনা এবং তা সম্ভব করে তুলতে এক সার্বিক নীতি অনুসরণের মাধ্যমে কাজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এজন্য ফাইবার অপটিক ব্যবস্থায় গ্রামগুলির মধ্যে সংযোগ স্থাপন, নাগরিকদের ডিজিটাল পন্থা-পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষিত করে তোলা, মোবাইলের সাহায্যে পরিষেবা প্রদান এবং বৈদ্যুতিন উৎপাদন ব্যবস্থার মতো কর্মসূচির কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।

ভিডিও সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশনের সুফলভোগীদের সঙ্গে আলাপচারিতার এক অনুষ্ঠানে আজ একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছিল ৫০ লক্ষেরও বেশি সুফল গ্রহীতাকে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র, এনআইসি সেন্টার, জাতীয় জ্ঞান ব্যবস্থা সম্পর্কিত নেটওয়ার্ক, বিপিও, মোবাইল নির্মাণকারী সংস্থা এবং Mygov-এর প্রতিনিধিরা।

প্রযুক্তি প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন যে, ডিজিটাল ব্যবস্থায় জীবনযাত্রা এখন সহজতর হয়ে উঠছে। সরকারের উদ্দেশ্যই হ’ল প্রযুক্তির সুযোগ-সুবিধাকে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ভীম অ্যাপ, রেল টিকিটের অনলাইন সংরক্ষণ এবং বৈদ্যুতিন পদ্ধতিতে পেনশন ও বৃত্তির অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা পড়ার ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের ওপর বোঝা এখন অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।

সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্রগুলির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, দেশের এই কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে গ্রামীণ ভারতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ডিজিটাল পরিষেবা। গ্রাম পর্যায়ে শিল্পোদ্যোগীদের উৎসাহদান ছাড়াও ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এই কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে। গ্রাম ভারতে বর্তমানে সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্রগুলির সংখ্যা হ’ল মোট ২ লক্ষ ৯২ হাজার। অন্যদিকে, ২ লক্ষ ১৫ হাজার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি ও অন্যান্য পরিষেবার যোগান দিয়ে যাচ্ছে এই কেন্দ্রগুলি।

শ্রী মোদী বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের কাজ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মধ্যসত্ত্বভোগী বা দালালদের উৎখাত করা সম্ভব হয়েছে। গত চার বছরে দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এরফলে, ভারতীয় অর্থনীতি এখন অনেকটাই স্বচ্ছ ও প্রযুক্তি-নির্ভর হয়ে উঠেছে।

গ্রামীণ ডিজিটাল সাক্ষরতা অভিযান প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন যে, এই কর্মসূচি ইতিমধ্যেই ১ কোটি ২৫ লক্ষ মানুষকে ডিজিটাল দিক দিয়ে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে তুলেছে। এদের মধ্যে ৭০ শতাংশই তপশিলি জাতি/তপশিলি উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ। ২০ ঘন্টার প্রাথমিক কম্প্যুটার প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের ৬ কোটি মানুষকে ডিজিটাল পদ্ধতি সম্পর্কে দক্ষ করে তোলাই হ’ল এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।

প্রধানমন্ত্রীর মতে, ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচি বিপিও ক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন এনেছে। এতদিন পর্যন্ত বিপিও-র প্রসার সীমাবদ্ধ ছিল শুধুমাত্র বড় বড় শহরগুলিতে। কিন্তু বর্তমানে তা পৌঁছে গেছে ছোট ছোট শহর সহ গ্রামগঞ্জেও। এর ফলে, কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগও গড়ে উঠেছে। ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচির আওতায় যে ভারত বিপিও প্রসার কর্মসূচি এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য এক পৃথক বিপিও প্রসার কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে, তা দেশের গ্রামাঞ্চল সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। দেশের সর্বত্র বিপিও ইউনিট গড়ে ওঠায় তরুণ ও যুবকরা এখন তাঁদের ঘর-বাড়ির নিকটবর্তী অঞ্চলেই কাজ করার সুযোগ লাভ করছেন।

বৈদ্যুতিন উৎপাদন শিল্পের কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতাকালে শ্রী মোদী বলেন যে, গত চার বছরে বৈদ্যুতিন হার্ডওয়্যার উৎপাদনের ক্ষেত্রে দেশ এখন অনেকটাই এগিয়ে গেছে। বৈদ্যুতিন উৎপাদনের প্রসারে সরকার চালু করেছে বৈদ্যুতিন উৎপাদন গুচ্ছ (ইএমসি) কর্মসূচি। এর আওতায় ২৩ ইএমসি চালু করা হচ্ছে দেশের ১৫টি রাজ্যে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ৬ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী ইউনিটের সংখ্যা ছিল মাত্র ২টি। তুলনায়, ভারতে বর্তমানে রয়েছে মোবাইল উৎপাদনকারী ১২০টির মতো সংস্থা। এই ইউনিটগুলির মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটেছে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার নাগরিকের।

এক বলিষ্ঠ ডিজিটাল ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে জাতীয় জ্ঞান ব্যবস্থা সম্পর্কিত নেটওয়ার্ক (এনকেএন)-এর গুরুত্বের বিষয়টিও এদিন স্থান পায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি বলেন, এনকেএন-এর মাধ্যমে পরস্পর সংযুক্তি ঘটেছে দেশের প্রায় ১৭০০টি প্রধান প্রধান শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে। এরফলে, ৫ কোটি ছাত্রছাত্রী, গবেষক, শিক্ষাবিদ এবং সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী মঞ্চ।

Mygov মঞ্চটি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যাঁরা আগ্রহ দেখিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গেও আলোচনা ও মতবিনিময় করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার মাত্র দু’মাসের মধ্যেই নাগরিক-কেন্দ্রিক এই মঞ্চটি গড়ে তোলা হয়। এই মঞ্চে বর্তমানে যুক্ত রয়েছেন ৬০ লক্ষেরও বেশি মানুষ। এক নতুন ভারত গঠনের লক্ষ্যে তাঁরা তাঁদের প্রস্তাব, পরামর্শ ও মতামত পেশ করছেন এই মঞ্চের মাধ্যমে। ডিজিটাল ভারত কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, শিল্পোদ্যোগ এবং ক্ষমতায়ন সম্ভব হয়ে উঠছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

ডিজিটাল ভারত কর্মসূচি কিভাবে তাঁদের জীবনযাত্রায় এক বিশেষ পরিবর্তন এনে দিয়েছে, সে সম্পর্কে কর্মসূচির সুফল গ্রহীতারা অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁরা জানান যে, সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ ও বিভিন্ন পরিষেবার সুবিধা তাঁদের জীবনযাত্রাকে এখন আরও অনেক সহজ করে তুলেছে।

CG/SKD/SB……