নয়াদিল্লি, ১৬ নভেম্বর, ২০২০
নমস্কার!
এই অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে উপস্থিত গচ্ছাধিপতি জৈনাচার্য শ্রী বিজয় নিত্যানন্দ সুরিশ্বরজি, আচার্য শ্রী বিজয় চিদানন্দ সুরিজি, আচার্য শ্রী জয়ানন্দ সুরিজি, এই মহোৎসবের পথপ্রদর্শক মুণি শ্রী মোক্ষানন্দ বিজয়জি, শ্রী অশোক জৈনজি, শ্রী সুধীর মেহতাজি, শ্রী রাজ কুমারজি, শ্রী ঘিসুলালজি এবং আচার্য শ্রী বিজয় বল্লভ সুরিজির সমস্ত অনুগামী বন্ধুগণ। আপনাদের সবাইকে যুগদ্রষ্টা, বিশ্ববন্দিত বিভূতি, কলিকাল কল্পতরু, পাঞ্জাব কেশরী আচার্য শ্রী বিজয় বল্লভ সুরিশ্বরজির ১৫০তম মহামহোৎসবের সমাপন উৎসবের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
এই নতুন বছর আধ্যাত্মিক আলোকবর্তিকার বছর, প্রেরণাদায়ী বছর। এটা আমার সৌভাগ্য যে এই আয়োজনে সামিল হয়ে আপনাদের সকলের আশীর্বাদ পাওয়ার সুযোগ হয়েছে। সার্ধ শতবর্ষ জন্ম মহোৎসবের মাধ্যমে একদিকে ভগবান শ্রী মহাবীর স্বামীর অহিংসা, অনেকান্ত এবং অপরিগ্রহের মতো সিদ্ধান্তগুলির প্রচার ও প্রসার করা হচ্ছে, পাশাপাশি গুরু বল্লভের বার্তাকেও প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এই সুন্দর আয়োজনের জন্য আমি গচ্ছাধিপতি আচার্য শ্রীমদ বিজয় নিত্যানন্দ সুরিশ্বরজি মহারাজকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাতে চাই। আপনার দর্শন, আশীর্বাদ এবং সান্নিধ্য পাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল ভদোদরা এবং ছোট উদয়পুরের কম্বাট গ্রামেও। আজ আরেকবার আপনাদের সামনে উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। এটাকে আমি জীবনের একটি পূণ্য কাজ বলে মনে করি। সন্তজন আচার্য শ্রীমদ বিজয় নিত্যানন্দ সুরিশ্বরজি মহারাজ বলতেন, “গুজরাটের মাটি আমাদের দুই বল্লভ দিয়েছে।” একটু আগেই এ বিষয়ে কথা হচ্ছিল। রাজনীতির ক্ষেত্রে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, আর আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে জৈনাচার্য বিজয় বল্লভ সুরিশ্বরজি মহারাজ। এমনিতে এই দুই মহারাজের মধ্যে আমি একটা মিল দেখতে পাই। উভয়েই ভারতের ঐক্য এবং সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য নিজের জীবন সমর্পণ করে দিয়েছেন। আমার সৌভাগ্য যে দেশ আমাকে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ উদ্বোধনের সুযোগ দিয়েছে। আর আজ জৈনাচার্য বিজয় বল্লভজির ‘স্ট্যাচু অফ পিস’-এর আবরণ উন্মোচনের সৌভাগ্যও আমার হচ্ছে।
সাধুগণ, ভারত সর্বদাই গোটা বিশ্বকে, মানবতাকে শান্তি, অহিংসা এবং বন্ধুত্বের পথ দেখিয়েছে। এটা এমন বার্তা যার প্রেরণা সারা পৃথিবী ভারত থেকে পেয়েছে। এই পথ প্রদর্শনের জন্য বিশ্ব আজ আরেকবার ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই ‘স্ট্যাচু অফ পিস’ বিশ্বে শান্তি, অহিংসা এবং সেবার একটি প্রেরণাস্থল হয়ে উঠবে।
বন্ধুগণ,
আচার্য বিজয় বল্লভজি বলতেন, “ধর্ম কোনও পাড় বাঁধানো সরোবর নয়, এটি একটি প্রবহমান ধারা যা সকলকে সমানভাবে অনুভব করায়।” তাঁর এই বার্তা আজ গোটা বিশ্বের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। তাঁর জীবনের যে বিস্তার ছিল তাতে তাঁর সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত পঠনপাঠনের প্রয়োজন রয়েছে, তাঁর জীবন দর্শনকে অনুভব করার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি একজন দার্শনিক ছিলেন এবং একজন সমাজ সংস্কারকও ছিলেন। তিনি যেমন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন, তেমনই একজন জন-সেবকও ছিলেন। তিনি তুলসীদাস, আনন্দঘন এবং মীরার মতো পরমাত্মার ভক্ত কবিও ছিলেন। পাশাপাশি, তিনি আধুনিক ভারতের স্বপ্নদ্রষ্টাও ছিলেন। এহেন ব্যক্তির বার্তা, তাঁর শিক্ষা এবং তাঁর জীবনের কথা যেন আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছেও পৌঁছয় এটা দেখা অত্যন্ত দরকার।
বন্ধুগণ,
আপনারা যদি ভারতের ইতিহাসের দিকে তাকান তাহলে অনুভব করবেন, যখনই ভারতে অভ্যন্তরীণ আলোকের প্রয়োজন হয়েছে, তখনই সন্ন্যাসী পরম্পরা থেকে কোনও না কোন সূর্যোদয় হয়েছে, কোনও না কোন বড় সন্ন্যাসী প্রত্যেক সময়েই আমাদের দেশে উদীত হয়েছেন যাঁরা সেই সময়ে সমাজকে পথ দেখিয়েছেন। আচার্য বিজয় বল্লভজি এমনই একজন সন্ন্যাসী ছিলেন। পরাধীন ভারতে তিনি দেশের গ্রামে গ্রামে, শহরে শহরে পদযাত্রা করেছেন, দেশের অস্মিতাকে জাগিয়ে তোলার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। আজ যখন আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তির দিকে এগিয়ে চলেছি, স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি দিককে বিশ্বের সামনে কোনও না কোনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যা আমাদের চোখে দেখা এবং কানে শোনা। সেই দিকটাই বিশ্ব দেখেছে। কিন্তু আমাদের সব সময় এটা মনে রাখতে হবে যে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি ছিল ভক্তি আন্দোলন। ভক্তি আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের সাধু, মহন্ত, ঋষি, মুনি, আচার্য, ভগবন্তরা ভারতের কোণায় কোণায় সেই সাধারণ মানুষের মনে সেই চেতনা জাগিয়ে তুলেছিলেন। একটি এমন ভিত্তি তৈরি করেছিলেন, যে ভিত্তি পরবর্তীকালে স্বাধীনতার আন্দোলনকে অনেক বড় শক্তি জুগিয়েছিল। আর সেই ভিত্তি প্রস্তুতকারী দেশের অসংখ্য সন্ন্যাসীর অন্যতম ছিলেন আমাদের বল্লভগুরু। গুরু বল্লভের এক্ষেত্রে বড় অবদান ছিল। তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু আজ একবিংশ শতাব্দীর আচার্যদের কাছে, সন্ন্যাসী ভগবন্তের কাছে, কথক ঠাকুরদের কাছে একটি অনুরোধ রাখতে চাই, যেভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি ভক্তি আন্দোলন দিয়ে শুরু হয়েছিল, ভক্তি আন্দোলন যেভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনকে শক্তি জুগিয়েছিল, ঠিক তেমনভাবেই আজ আপনারা আত্মনির্ভর ভারতের ভিত্তি প্রস্তুত করার জন্য এগিয়ে আসুন। আজকের সন্ন্যাসী, মহন্ত ও আচার্যরা যেখানেই যাবেন, যেখানেই বক্তব্য রাখবেন, আপনাদের শিষ্য হোক কিংবা অনুগামী সন্ন্যাসীদের সঙ্গে কথা বলবেন, আপনাদের মুখ থেকে যেন লাগাতার দেশের প্রত্যেক মানুষের জন্য এই বার্তা প্রচারিত হয় যে আমাদের আত্মনির্ভর ভারত গঠনের জন্য ‘ভোকাল ফর লোকাল’ হতে হবে। যত বেশি করে আমাদের কথক ঠাকুর, আচার্য, ভগবন্ত ও সন্ন্যাসীরা তাঁদের পক্ষ থেকে এই বক্তব্য প্রচার করবেন, স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী সময়ে আপনাদের পূর্বসূরীরা যেভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন, আপনারাও সেভাবে আত্মনির্ভর ভারতের ভিত্তি প্রস্তুত করতে পারবেন। আজ দেশের সমস্ত সাধু, সন্ন্যাসী, মহাপুরুষদের চরণে আমি এই সবিনয় নিবেদন রাখছি। দেশের প্রধান সেবক রূপে আমি আপনাদের কাছে এই নিবেদন রাখছি, আসুন আমরা এভাবে এগিয়ে যাই। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যেভাবে মহাপুরুষদের থেকে প্রেরণা গ্রহণ করতেন, পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য, মোরারজিভাই দেশাইয়ের মতো অনেক অনেক বড় বড় জননেতা বল্লভভাইয়ের কাছে পথ প্রদর্শনের জন্য যেতেন। তাঁরা স্বাধীনতার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, স্বাধীন ভারত কেমন হবে তার রূপরেখা তৈরি করেছিলেন। স্বদেশী এবং আত্মনির্ভর ভারতের জন্য তাঁরাও বিশেষভাবে বলে গেছেন। তাঁরা সারা জীবন খাদি পরিধান করেছেন, স্বদেশী পণ্য ব্যবহার করেছেন এবং স্বদেশীর সঙ্কল্প গ্রহণ করেছেন। এই সন্ন্যাসীদের ভাবনাচিন্তা কিভাবে অমর এবং চিরঞ্জীবী হয়ে ওঠে, আচার্য বিজয় বল্লভজির প্রচেষ্টা এর সাক্ষাৎ উদাহরণ। দেশের জন্য স্বপ্ন তিনি স্বাধীনতার আগে দেখেছিলেন, সেই ভাবনা আজ আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের মাধ্যমে সিদ্ধির দিকে এগিয়ে চলেছে।
বন্ধুগণ,
মহাপুরুষদের, সাধুদের ভাবনা-চিন্তা এজন্য অমর হয় কারণ তাঁরা যা বলেন তা তাঁরা নিজেদের জীবনেও প্রয়োগ করেন, যেমনটি বলেন তাঁরা সেইভাবে বাঁচেন। আচার্য বিজয় বল্লভজি বলতেন, “সাধু-মহাত্মাদের কর্তব্য শুধুই নিজের আত্মার কল্যাণ করাতেই শেষ হয়ে যায় না … তাঁর এটাও কর্তব্য যে তিনি অজ্ঞানতা, কলহ, বেকারি, বৈষম্য, অন্ধ বিশ্বাস, আলস্য-ব্যসন এবং কুসংস্কারের মাধ্যমে সমাজের হাজার হাজার পীড়াগ্রস্থ মানুষকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সর্বদা চেষ্টা করবেন।” তাঁর এই সামাজিক দর্শন থেকে প্রেরণা নিয়ে আজ তাঁর পরম্পরার অনেক যুবক-যুবতী সমাজ সেবার জন্য এগিয়ে আসছেন, সেবার সঙ্কল্প নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
সাধুগণ,
আপনারা সবাই এটা খুব ভালোভাবেই জানেন যে সেবা, শিক্ষা এবং আত্মনির্ভরতার মাধ্যমে আচার্যজি অসংখ্য মানুষের প্রাণপুরুষ ছিলেন। পরাধীন ভারতে সমস্ত ধরনের সমস্যা থাকা সত্ত্বেও, সমস্ত ধরনের প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে শিক্ষা প্রচার করেছেন। নানা জায়গায় গুরুকুল, বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। তিনি দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন, “বাড়িতে বাড়িতে বিদ্যার দ্বীপ জ্বালো।” কিন্তু তিনি এটা বুঝতেন যে ইংরেজদের গড়ে তোলা শিক্ষা ব্যবস্থা ভারতের স্বাধীনতা এবং প্রগতির সহায়ক হয়ে উঠতে পারে না। সেজন্য তিনি যে গুরুকুল, বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়গুলি স্থাপন করেছিলেন সেগুলিকে ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ভারতীয় বিদ্যা সাধনার রং-এ রাঙিয়ে তুলেছিলেন। যেমনটি মহাত্মা গান্ধী গুজরাট বিদ্যাপীঠের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তেমনই স্বপ্ন গুরু বিজয় বল্লভও দেখেছিলেন। আচার্য বিজয় বল্লভজি এরকমভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তোলার অভিযান শুরু করেছিলেন। তিনি পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশের মতো অনেক রাজ্যে ভারতীয় শিষ্টাচারসম্পন্ন অনেক ক’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। আজ তাঁর আশীর্বাদে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি দেশবাসীর সেবা করে যাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আচার্যজির এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি আজ এক একটি তপোবনের মতো ভারতীয় মূল্যবোধের পাঠশালা হয়ে দেশের সেবা করছে। ১০০ বছরেরও বেশি সময়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির যাত্রাপথে অসংখ্য প্রতিভাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রী এই প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে বেরিয়ে জীবনে সফল হয়েছেন। অনেক শিল্পপতি, বিচারপতি, চিকিৎসক এবং ইঞ্জিনিয়ার এই প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে বেরিয়ে দেশ গঠনে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল স্ত্রী শিক্ষা, নারী শিক্ষা। স্ত্রী শিক্ষার ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানগুলি যে অবদান রেখেছে সেজন্য দেশবাসী আজ এই প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে ঋণী। সেই কঠিন সময়ে তিনি স্ত্রী শিক্ষার অলোক নিরঞ্জন করেছেন। অনেক বালিকাশ্রম স্থাপন করেছেন এবং মহিলাদের মূলধারার সঙ্গে যুক্ত করেছেন। জৈন সন্ন্যাসীনীদের মাধ্যমে জৈন সভায় প্রবচন পাঠের একটি নতুন পরম্পরা চালু করেছিলেন বিজয় বল্লভজি। তাঁর এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে এই বার্তা গিয়েছিল যে মহিলাদেরকে সমাজে এবং শিক্ষায় সমান মর্যাদা দিতে হবে। বৈষম্যমূলক ভাবনা এবং প্রথাগুলিকে বিনাশ করতে হবে। আজ যদি আপনারা ভালোভাবে লক্ষ্য করেন, তাহলে দেখবেন দেশে এই লক্ষ্যে কত পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান সরকার তিন তালাকের মতো কূপ্রথার বিরুদ্ধে দেশে আইন প্রণয়ন করেছে। মহিলাদের জন্য এমন এমন ক্ষেত্র খুলে দেওয়া হচ্ছে যেখানে এতদিন পর্যন্ত তাঁদের কাজ করা নিষেধ ছিল। এখন দেশের মেয়েরা সেনাবাহিনীতে তাঁদের শৌর্য প্রদর্শনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি বিকল্প পাচ্ছেন। পাশাপাশি, এখন দেশে নতুন ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ চালু হতে চলেছে। এই শিক্ষানীতিকে ভারতীয় পরিবেশে আধুনিক করে তোলার পাশাপাশি, মহিলাদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ গড়ে তুলবে।
বন্ধুগণ,
আচার্য বিজয় বল্লভজি বলতেন, “দেশের কর্তব্যগুলিকে উপেক্ষা করলে চলবে না। সেগুলিকে পালন করতে হবে।” তিনি নিজের জীবনেও ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ মন্ত্র নিয়ে অনুগামীদের সেই শিক্ষা দিয়ে গেছেন। মানবতার এই স্বত্ত্ব নিয়ে চলার পথে তিনি জাতি, ধর্ম, পন্থা এবং সম্প্রদায়ের সীমা থেকে বেরিয়ে সকলের জন্য উন্নয়নের কাজ করেছেন। তিনি সমাজের সক্ষম অংশকে প্রেরণা যুগিয়েছেন যাতে তাঁরা উন্নয়নের শেষ সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষের সেবা করেন। যে কথা মহাত্মা গান্ধী বলতেন তা গুরু বল্লভজি নিজে করে দেখাতেন। তিনি দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম, সমাজের প্রান্তিকতম ব্যক্তিদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতেন। তাঁর এই প্রেরণার প্রভাব আপনারা এবং আমরা এখন সারা দেশে দেখতে পাচ্ছি। তাঁরই প্রেরণায় দেশের অনেক শহরে গরীবদের জন্য গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে, হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে, গরীবদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ সারা দেশে ‘আত্মবল্লভ’ নামক অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গরীব শিশুদের ভবিষ্যতের উপযোগী করে গড়ে তোলার দায়িত্ব পালন করছে। মা ও বোনেদের জীবনযাপনকে সহজ করে তুলতে এবং নির্ধন, অসুস্থ মানুষদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে সাহায্য করছে।
বন্ধুগণ,
আচার্য বিজয় বল্লভজির জীবন প্রত্যেক জীবের জন্য দয়া, করুণা এবং প্রেমে সম্পৃক্ত ছিল। সেজন্য তাঁর আশীর্বাদে আজ জীবের দয়ার জন্য পাখি হাসপাতাল এবং অনেক গো-শালা সারা দেশে চালু হয়েছে। এটা কোনও সাধারণ প্রতিষ্ঠান নয়। এটি ভারতীয় ভাবনার প্রতিষ্ঠান। ভারত এবং ভারতীয় মূল্যবোধের পরিচয় তুলে ধরা প্রতিষ্ঠান।
বন্ধুগণ,
আজ দেশ আচার্য বিজয় বল্লভজির সেই মানবিক মূল্যবোধগুলি অনুসরণ করে সেই সাধারণ মানুষকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে যাঁদের জন্য তিনি নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন। করোনা মহামারীর এই কঠিন সময়েও আমাদের সেবাভাব, আমাদের ঐক্যবদ্ধতার জন্য একটি বড় পরীক্ষা ছিল। কিন্তু আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে দেশ এই পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে। দেশ গরীব কল্যাণের ভাবনাকে শুধুই জীবিত করে তোলেনি, গোটা বিশ্বের সামনে একটি উদাহরণ রূপে পেশ করেছে।
বন্ধুগণ,
আচার্য বিজয় বল্লভ সুরিশ্বরজি বলতেন, “সকল প্রাণীর সেবা করাই প্রত্যেক ভারতবাসীর ধর্ম।” আজ তাঁর এই বাণীকে আমাদের নিজস্ব মন্ত্র হিসেবে আপন করে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের নিজেদের সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আগে এটা ভাবতে হবে, এর মাধ্যমে দেশের কী লাভ হবে, দেশের গরীবদের কল্যাণ কিভাবে হবে? আমি এই বক্তব্যের গোড়াতেই যেমন বলেছিলাম, ‘ভোকাল ফর লোকাল’ – এই ভাবনার একটি অনেক বড় মাধ্যম। আর সন্ন্যাসীদেরকেই এই অভিযানের নেতৃত্ব দিতে হবে। শ্রদ্ধেয় সন্ন্যাসী, মুনি, মহন্তগণ, – এই মন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই হবে। এবার দীপাবলি এবং সমস্ত উৎসবের সময় যেভাবে দেশবাসী স্থানীয় অর্থনীতির উত্থানের অনুকূল কাজ করেছেন, যেভাবে এই অভিযানকে সমর্থন জানিয়েছেন, তা প্রকৃতই দেশবাসীকে নতুন প্রাণশক্তি জোগাবে। এই ভাবনাকে, এই প্রচেষ্টাকে আমাদের ভবিষ্যতেও বজায় রাখতে হবে। আসুন, আচার্য বিজয় বল্লভজির এই সার্ধশত জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমরা সবাই সঙ্কল্প গ্রহণ করি, তিনি যে কাজগুলি নিজের জীবনে শুরু করেছিলেন, সেই সকল কাজ আমরা সম্পূর্ণ ঐকান্তিকতার সঙ্গে, সম্পূর্ণ সমর্পণ ভাব নিয়ে মিলেমিশে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমরা সবাই মিলেমিশে ভারতকে শুধু অর্থনীতি নয়, দার্শনিক ক্ষেত্রেও, ভাবনা-চিন্তার ক্ষেত্রেও আত্মনির্ভর করে তুলবো। এই সঙ্কল্প নিয়ে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। আপনারা সবাই সুস্থ থাকুন, সুখী থাকুন। সমস্ত আচার্য,ভগবন্ত ও সন্ন্যাসীদের প্রণাম জানিয়ে, আজ এখানে যে সমস্ত সাধু, গুরু, মহারাজকে দেখতে পাচ্ছি, তাঁদের সবাইকে প্রণাম জানাই। আজ এই পবিত্র অনুষ্ঠানে আপনাদের সবার মাঝে আসার সুযোগ পেয়েছি এটা আমার সৌভাগ্য। আমি আরেকবার সমস্ত সাধু, মহন্ত ও আচার্যদের প্রণাম জানিয়ে আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
***
CG/SB/DM
मेरा सौभाग्य है कि मुझे देश ने सरदार वल्लभ भाई पटेल की विश्व की सबसे ऊंची ‘स्टेचू ऑफ यूनिटी’ के लोकार्पण का अवसर दिया था,
— PMO India (@PMOIndia) November 16, 2020
और आज जैनाचार्य विजय वल्लभ जी की भी ‘स्टेचू ऑफ पीस’ के अनावरण का सौभाग्य मुझे मिल रहा है: PM
भारत ने हमेशा पूरे विश्व को, मानवता को, शांति, अहिंसा और बंधुत्व का मार्ग दिखाया है।
— PMO India (@PMOIndia) November 16, 2020
ये वो संदेश हैं जिनकी प्रेरणा विश्व को भारत से मिलती है।
इसी मार्गदर्शन के लिए दुनिया आज एक बार फिर भारत की ओर देख रही है: PM
भारत का इतिहास आप देखें तो आप महसूस करेंगे, जब भी भारत को आंतरिक प्रकाश की जरूरत हुई है, संत परंपरा से कोई न कोई सूर्य उदय हुआ है।
— PMO India (@PMOIndia) November 16, 2020
कोई न कोई बड़ा संत हर कालखंड में हमारे देश में रहा है, जिसने उस कालखंड को देखते हुए समाज को दिशा दी है।
आचार्य विजय वल्लभ जी ऐसे ही संत थे: PM
एक तरह से आचार्य विजयवल्लभ जी ने शिक्षा के क्षेत्र में भारत को आत्मनिर्भर बनाने का अभियान शुरू किया था।
— PMO India (@PMOIndia) November 16, 2020
उन्होंने पंजाब, राजस्थान, गुजरात, महाराष्ट्र उत्तर प्रदेश जैसे कई राज्यों में भारतीय संस्कारों वाले बहुत से शिक्षण संस्थाओं की आधारशिला रखी: PM
आचार्य जी के ये शिक्षण संस्थान आज एक उपवन की तरह हैं।
— PMO India (@PMOIndia) November 16, 2020
सौ सालों से अधिक की इस यात्रा में कितने ही प्रतिभाशाली युवा इन संस्थानों से निकले हैं।
कितने ही उद्योगपतियों, न्यायाधीशों, डॉक्टर्स, और इंजीनियर्स ने इन संस्थानों से निकलकर देश के लिए अभूतपूर्व योगदान किया है: PM
स्त्री शिक्षा के क्षेत्र में इन संस्थानों ने जो योगदान दिया है, देश आज उसका ऋणि है।
— PMO India (@PMOIndia) November 16, 2020
उन्होंने उस कठिन समय में भी स्त्री शिक्षा की अलख जगाई।
अनेक बालिकाश्रम स्थापित करवाए, और महिलाओं को मुख्यधारा से जोड़ा: PM
आचार्य विजयवल्लभ जी का जीवन हर जीव के लिए दया, करुणा और प्रेम से ओत-प्रोत था।
— PMO India (@PMOIndia) November 16, 2020
उनके आशीर्वाद से आज जीवदया के लिए पक्षी हॉस्पिटल और अनेक गौशालाएं देश में चल रहीं हैं।
ये कोई सामान्य संस्थान नहीं हैं। ये भारत की भावना के अनुष्ठान हैं।
ये भारत और भारतीय मूल्यों की पहचान हैं: PM
जिस प्रकार आजादी के आंदोलन की पीठिका भक्ति आंदोलन से शुरू हुई, वैसे ही आत्मनिर्भर भारत की पीठिका हमारे संत-महंत-आचार्य तैयार कर सकते हैं।
— Narendra Modi (@narendramodi) November 16, 2020
हर व्यक्ति तक वोकल फॉर लोकल का संदेश पहुंचते रहना चाहिए। मैं संतों-महापुरुषों से विनम्र निवेदन करता हूं कि आइए, हम इसके लिए आगे बढ़ें। pic.twitter.com/2i0YuLvWgU
भारत ने हमेशा पूरे विश्व और मानवता को शांति, अहिंसा एवं बंधुत्व का मार्ग दिखाया है। इसी मार्गदर्शन के लिए दुनिया आज एक बार फिर भारत की ओर देख रही है।
— Narendra Modi (@narendramodi) November 16, 2020
मुझे विश्वास है कि यह ‘स्टैच्यू ऑफ पीस’ विश्व में शांति, अहिंसा और सेवा का एक प्रेरणास्रोत बनेगी। pic.twitter.com/dEp88LbAyf
सेवा, शिक्षा और आत्मनिर्भरता, ये विषय आचार्य विजयवल्लभ जी के हृदय के सबसे करीब थे।
— Narendra Modi (@narendramodi) November 16, 2020
उनके इसी सामाजिक दर्शन से प्रेरित होकर आज उनकी परंपरा से कितने ही युवा समाजसेवा के लिए जुड़ रहे हैं, सेवा का संकल्प ले रहे हैं। pic.twitter.com/hvVSYMPy47
कोरोना महामारी का कठिन समय हमारे सेवाभाव और हमारी एकजुटता के लिए कसौटी की तरह रहा है, लेकिन मुझे संतोष है कि देश इस कसौटी पर खरा उतर रहा है।
— Narendra Modi (@narendramodi) November 16, 2020
देश ने गरीब कल्याण की भावना को न केवल जीवंत रखा, बल्कि दुनिया के सामने एक उदाहरण भी पेश किया है। pic.twitter.com/D8YaWVn9eu