Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

জি-২০ সম্মেলনের পার্শ্ব অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ : পৃথিবীর সংরক্ষণ : সিসিই দৃষ্টিকোণ

জি-২০ সম্মেলনের পার্শ্ব অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ : পৃথিবীর সংরক্ষণ : সিসিই দৃষ্টিকোণ


নয়াদিল্লি, ২২ নভেম্বর, ২০২০

 

মহামান্যবর,

আজ আমরা সবাই আমাদের দেশের নাগরিকদের এবং অর্থনীতিকে বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রভাব থেকে তুলে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যার মোকাবিলাও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই ঠান্ডাঘরে বসে সম্ভব হবে না। সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবাই মিলেমিশে এই লড়াই লড়তে হবে। সেজন্যে প্রকৃতির সঙ্গে সাহচর্য্যের ভাবনায় প্রেরিত হয়ে আমাদের সরকারের দায়বদ্ধতা থেকে ভারত তার উন্নয়ন কর্মগুলি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এমন সব পদ্ধতি মেনে চলছে যা পরিবেশ-বান্ধব।

আমি আপনাদেরকে এই বিষয়গুলি বলতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত যে ভারত শুধুই জলবায়ু সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যসাধনই করেনি, তার থেকেও অনেক এগিয়ে গেছে। ভারত অনেক ক্ষেত্রে অনেক স্থায়ী এবং সুদূরপ্রসারী উপায় অবলম্বন করেছে। আমরা এলইডি আলোকে জনপ্রিয় করে তুলেছি। এর মাধ্যমে প্রতি বছর ৩৮ মিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পেয়েছে। উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে দেশের ৮ কোটি বাড়িতে ধোঁয়ামুক্ত রান্নাঘর চালু করতে পেরেছি। এই উদ্যোগ পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে সর্ববৃহৎ প্রচেষ্টাগুলির অন্যতম।

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার সমাপ্ত করার জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। তাছাড়া আমাদের দেশে অরণ্য আচ্ছাদিত অঞ্চল বিস্তৃতি লাভ করেছে। বাঘ এবং চিতাবাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে অব্যবহৃত জমিগুলিকে কৃষি উপযোগী করে তোলা। আর আমরা সার্কুলার ইকনমিকে উৎসাহ যোগাচ্ছি।

ভারত প্রতিনিয়ত মেট্রো নেটওয়ার্কের মতো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপযোগী বুনিয়াদি পরিকাঠামো বিকশিত করে চলেছে। জলপথ পরিবহণ সহ অন্যান্য বিকল্প ক্ষেত্রে কাজ করা হচ্ছে। এই উপায়গুলি পরিচ্ছন্ন পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমরা ২০২২ সালের আগেই পরিচ্ছন্ন জ্বালানি উৎপাদনে আমাদের ধার্য ১৭৫ গিগাওয়াট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে ফেলতে পারব। এখন আমরা ২০৩০ সালের আগে ৪৫০ গিগাওয়াটের লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করে চলেছি।

 

মহামান্যবর,

আন্তর্জাতিক এবং গোষ্ঠীবদ্ধ বিশ্বে সব থেকে দ্রুত বিকশিত হওয়া সংগঠনগুলির মধ্যে অন্যতম হল আন্তর্জাতিক সৌর জোট (আইএসএ)। ইতিমধ্যেই ৮৮টি দেশ এর সদস্য হয়েছে। এই সমস্ত দেশে সৌর জ্বালানি উৎপাদনের জন্য গবেষণা এবং উন্নয়নকে উৎসাহ জোগানো হচ্ছে। এর পেছনে কোটি কোটি ডলার খরচ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ, আইএসএ কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের ক্ষেত্রে নিজস্ব অবদান রাখবে। আরেকটি উদাহরণ হল, বিপর্যয় প্রতিরোধী বুনিয়াদি বিকাশের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহায়তা।

৮৮টি দেশের মধ্যে ৯টি দেশ জি-২০ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছে, আর চারটি আন্তর্জাতিক সংগঠন আগেই এই আন্তর্জাতিক সৌর জোটে সামিল হয়েছে। জটিল বুনিয়াদি বিকাশকে উৎসাহ জোগানোর জন্য সিডিআরআই আগে থেকেই কাজ করা শুরু করেছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বুনিয়াদি পরিকাঠামোগুলির দিকে ততটা নজর দেওয়া হচ্ছিল না, যতটা দেওয়া উচিৎ ছিল। এর ফলে বিশেষ করে গরীব দেশগুলি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। সেজন্যই এই পারস্পরিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

মহামান্যবর,

এটাই সবচাইতে উপযুক্ত সময় যখন নতুন এবং টেকসই প্রযুক্তির জন্য গবেষণা ও অনুসন্ধানকে উৎসাহ যোগাতে হবে। আমাদের এই সহযোগিতা এবং পারস্পরিক সাহায্যের ভাবনা এ কাজে সহায়ক হবে। আজ বিকাশশীল দেশগুলিকে উন্নততর প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সাহায্য করা হলে সমগ্র বিশ্ব দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে পারে।

 

মহামান্যবর,

সমগ্র মানবতা তখনই সম্পন্ন হয়ে উঠতে পারে যখন প্রত্যেক ব্যক্তি সম্পন্ন হয়ে উঠবে। শ্রমিকদের নিছকই উৎপাদনের উপায় বলে ভাবার পরিবর্তে আমাদের প্রত্যেক শ্রমিকের সম্মানপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার এবং সাহায্যের দিকে নজর দেওয়া উচিৎ। এই উপায়গুলি আমাদের এই গ্রহকে নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে সর্বোত্তম নিশ্চয়তা দিতে পারে।

ধন্যবাদ!

 ***

 

CG/SB/DM