বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ এবং তার সুসংহত মোকাবিলার পন্থা পদ্ধতি নিয়ে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। অভূতপূর্ব এই সম্মেলন, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হয় । এর আগে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে এই বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করেন। এই বৈঠকের আগে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির অর্থমন্ত্রীদের এবং প্রধান ব্যাঙ্ক গর্ভনরদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকেও কোভিড-১৯-এর ফলে সম্ভাব্য আর্থিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে জি-২০ নেতৃবৃন্দ মহামারী ঠেকাতে এবং জনসাধারণকে রক্ষা করতে সম্ভাব্য সবরকমের পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। ওষুধ সরবরাহ, পরীক্ষাগারের যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা, ওষুধ এবং টীকা সহ হু-র নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগকে নেতৃবৃন্দ সমর্থন করেন।
এই মহামারীর ফলে আর্থিক ও সামাজিক সঙ্কট কমাতে নেতৃবৃন্দ তাঁদের অঙ্গীকার পুর্নব্যক্ত করেন। বিশ্বজুড়ে বিকাশ, বাজারের স্থিতাবস্থা, অধিকতর সহনশীল হওয়ার বিষয়েও তাঁরা তাঁদের অঙ্গীকারের কথা জানান। কোভিড-১৯-এর মোকাবিলায় জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার দেবে বলে জানিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে কোভিড-১৯ তহবিলে নেতৃবৃন্দ স্বেচ্ছায় অর্থ দেবার অঙ্গীকারও করেছেন।
জি-২০-র এই অভূতপূর্ব অধিবেশনটি ডাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবের রাজাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি এই মহামারীর ফলে সামাজিক ও আর্থিক সঙ্কটের বিষয়ে সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, বিশ্বে মোট আক্রান্তর ৯০ শতাংশ এবং মৃতদের ৮৮ শতাংশই জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশের নাগরিক । পৃথিবীর মোট জন সংখ্যার ৬০ শতাংশ এবং মোট অভ্যন্তরীণ উতপাদনের ৮০ শতাংশ এই জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির আওতাভুক্ত।
বিশ্বের সমৃদ্ধি এবং সহযোগিতার কেন্দ্রে থাকবে মানবজাতি । প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণা এবং উন্নয়নের সুফল সকলের মধ্যে পৌঁছে দেবার উপর জোর দেন । এছাড়াও স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন, সংকট ব্যবস্থাপনার নতুন নীতি নির্দেশিকাগুলিকে কার্যকর করা, বিশ্বজুড়ে সঙ্কট মোকাবিলায় তথ্যের আদান-প্রদান বাড়ানো, হু-র মত আন্তর্জাতিক সংস্হাকে শক্তিশালী করার কথাও শ্রী মোদী বৈঠকে বলেছেন। কোভিড-১৯-এর ফলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জনগোষ্ঠী সহ সকলের অর্থনৈতিক সমস্যা দুর করার বিষয়ও তিনি উল্লেখ করেন।
বিশ্বায়নের নতুন যুগে মানবজাতির কল্যাণে একযোগে কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত নেতৃবৃন্দর উদ্দেশে আহ্বান জানান এবং বহুস্তরীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে মানবতার স্বার্থরক্ষার উপর গুরুত্ব দেন।
জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনের শেষে মহামারীর প্রতিরোধ , বিশ্বঅর্থনীতি রক্ষা, ব্যবসা বানিজ্যর ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিঘ্ন না ঘটার মত বিষয়গুলি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেতৃবৃন্দ সুসংহত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
CG/CB/