Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

জার্মান চ্যান্সেলর ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল-এর সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি

জার্মান চ্যান্সেলর ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল-এর সঙ্গে 
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি

জার্মান চ্যান্সেলর ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল-এর সঙ্গে 
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি

জার্মান চ্যান্সেলর ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল-এর সঙ্গে 
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি

জার্মান চ্যান্সেলর ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল-এর সঙ্গে 
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি

জার্মান চ্যান্সেলর ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল-এর সঙ্গে 
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি

জার্মান চ্যান্সেলর ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল-এর সঙ্গে 
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি

জার্মান চ্যান্সেলর ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল-এর সঙ্গে 
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি

জার্মান চ্যান্সেলর ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল-এর সঙ্গে 
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি


চ্যান্সেলর মার্কেল,

জার্মানির প্রতিনিধিদল,

আমার সহকর্মীবৃন্দ,

প্রচার মাধ্যমের সদস্যবৃন্দ,

চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল এবং তাঁর বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দকে ভারতে স্বাগত জানাতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

জার্মানির ২৫তম পুনর্মিলন বার্ষিকীতে ভারতের জনসাধারণের পক্ষ থেকে আমি ঐ দেশকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই গুরুত্বপূর্ণ এক সন্ধিক্ষণে দেশে এবং বিদেশে আপনাদের সাফল্যের দৃষ্টান্তগুলির দিকে সগর্বেই আপনারা একবার ফিরে তাকাতে পারেন। চ্যান্সেলর মার্কেল, ইউরোপ তথা সমগ্র বিশ্বের কঠিন মুহূর্তে আপনার নেতৃত্ব আশ্বাস ও আত্মবিশ্বাসের বার্তা বহন করে নিয়ে আসে।

নিজের দেশে নানা কর্মব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও আপনি ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে আপনি কতটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন এবং সরকারি পর্যায়ে পারস্পরিক মতবিনিময়কে আপনি কতটা অর্থবহ বলে মনে করেন, আপনার প্রতিনিধিদলের কথাবার্তার মধ্যেই তার প্রতিফলন ঘটেছে। আপনার অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

আন্তঃসরকারি পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা তথা মতবিনিময় সত্যিই অভিনবত্বের দাবি রাখে। শুধু তাই নয়, তা আমাদের সম্পর্ককে সবদিক দিয়েই এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এর বাইরেও যা আমাদের উপরি পাওনা তা হল – গত এক বছরে আমরা দু’পক্ষই আমাদের সম্পর্ককে গভীরতর করে তুলেছি। ভারতের অর্থনৈতিক পটপরিবর্তনের যে দর্শন তার বাস্তবায়নে আমরা জার্মানিকে এক স্বাভাবিক অংশীদার বলেই মনে করি। জার্মানির শক্তি এবং ভারতের অগ্রাধিকার ভাবনার মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। আমাদের পরস্পরের প্রতি শুভেচ্ছাও তারই সূচক।

আমাদের লক্ষ্য অর্থনৈতিক মৈত্রী-বন্ধনের সম্পর্ক গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে, আমি বিশ্বাস করি যে, এই পৃথিবীতে একদিকে রয়েছে সীমাহীন চ্যালেঞ্জ এবং অন্যদিকে রয়েছে অফুরন্ত সুযোগ। তাই, শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবতাবাদের মধ্য দিয়ে এক নিরন্তর উন্নয়নের এক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভারত ও জার্মানি দুটি দেশই পরস্পরের বলিষ্ঠ অংশীদার হয়ে উঠতে পারে। পারস্পরিক বন্ধনের এক সমৃদ্ধ ইতিহাসের আমরা সাক্ষী। আমাদের সম্পর্কের মধ্য দিয়ে আমরা পরস্পরের মূল্যবোধ ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি ভাগ করে নিতে পারি। একইভাবে বিশ্বের প্রতি দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও আমরা পরস্পরের সমান অংশীদার।

আজ আমরা প্রায় তিন ঘন্টা ধরে পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। আমাদের আলাপ-আলোচনা আমরা এখানে এবং আগামীকাল বেঙ্গালুরুতেও চালিয়ে যাবো। এই আলাপ-আলোচনা এবং তার ফলাফলে আমি খুবই সন্তুষ্ট।

আমাদের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে জার্মানি যেভাবে সাড়া দিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে উৎসাহব্যঞ্জক। নির্মাণ শিল্প, পরিকাঠামো ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে অধিকতর বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য ও প্রযুক্তি সহযোগিতার প্রসার সম্পর্কে আমরা খুবই আশাবাদী। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জার্মানির দক্ষতা এবং তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতের পারদর্শিতা আগামী প্রজন্মের শিল্প সম্ভাবনার উপযোগী আরও দক্ষ, ব্যয়সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ-বান্ধব বাতাবরণ গড়ে তুলতে পারে।

ভারতে ১ হাজার ৬০০টি জার্মান সংস্থা বর্তমানে কাজ করে চলেছে এবং সংখ্যা উত্তরোত্তর আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই, ভারতে এক আন্তর্জাতিক কর্মীগোষ্ঠী গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই দুটি দেশ পরস্পরের সহযোগী হয়ে উঠতে পারে।

‘স্মার্ট সিটি’, ‘গঙ্গা শোধন’ এবং ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ ক্ষেত্রে জার্মানির সাহায্য ও সহযোগিতা এক বাস্তব সত্য হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তি থেকে শুরু করে কলা – সমস্ত ধরণের পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতা আজ আর নিছক ধারণার মধ্যে আবদ্ধ নেই।

বিশুদ্ধ জ্বালানি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারের জন্য জার্মানির নেতৃত্বকে আমি বিশেষভাবে প্রশংসা করি। এটি হল এমন একটি ক্ষেত্র, যেখানে আমাদের দুটি দেশের দৃষ্টিভঙ্গীর সমন্বয় লক্ষ্য করা গেছে। এক্ষেত্রে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতাও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। জলবায়ু এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী ভারত-জার্মানি সহযোগিতা গড়ে তুলতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা একমত হয়েছি, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় একটি সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও। ভারতের ‘গ্রিন এনার্জি করিডর’ গড়ে তুলতে জার্মানি ১ বিলিয়ন ইউরোর যে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাকে আমি যথেষ্ট মূল্যবান বলেই মনে করি। ভারতের সৌরশক্তি প্রকল্প ক্ষেত্রে ১ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি নতুন সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে জার্মানি। তাও ভারতের পক্ষে যথেষ্ট মূল্যবান বলে আমার বিশ্বাস। বিশুদ্ধ ও পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি তথা জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে গবেষণার ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও গভীরতর করে তুলতে আমরা আগ্রহী। পৃথিবীর উষ্ণায়ন রোধে আমাদের মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গীরও পরিবর্তন প্রয়োজন।

প্যারিসে COP21-এর আশাজনক ফলাফলের দিকে আমরা তাকিয়ে রয়েছি। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির কল্যাণে উন্নয়নের ধারাকে এক নতুন খাতে বইয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিশ্বের ক্ষমতা ও অঙ্গীকারকে তা আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

প্রতিরক্ষার জন্য সাজসরঞ্জাম নির্মাণ, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবসা-বাণিজ্য, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং আতঙ্ক ও সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার ক্ষেত্রেও আমাদের অংশীদারিত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আমাদের সম্পর্কের প্রসারে এগুলি হল নিরাপত্তার দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থায় ভারতের সদস্যপদকে জোরালো ভাষায় সমর্থনের জন্য আমি জার্মানিকে স্বাগত জানাই। নিউইয়র্কে জি-৪ শীর্ষ বৈঠকে আলোচনার সূত্রে রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশেষত, নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রশ্নে চ্যান্সেলর এবং আমি দু’জনেই অঙ্গীকারবদ্ধ।

সংশ্লিষ্ট অঞ্চল সম্পর্কে আমাদের রয়েছে এক সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গী। পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজক পরিস্থিতি ও ইউরোপের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা তথা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করে তোলার কাজে রয়েছে আমাদের দুটি দেশের সমান দায়িত্ব। আফগানিস্তানের শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে জার্মানির মূল্যবান সহযোগিতার জন্য আমি চ্যান্সেলর’কে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।

পরিশেষে, দশম শতাব্দীতে জম্মু ও কাশ্মীরের দুর্গা প্রতিমার মহিষাসুরমর্দিনী অবতারের যে প্রতিমূর্তি আমরা তাঁর কাছ থেকে ফেরৎ পেয়েছি সেজন্য চ্যান্সেলর মার্কেল’কে আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। তিনি হলেন, অশুভের বিরুদ্ধে শুভর জয়লাভের এক বিশেষ প্রতীক।

আমাদের আলোচনার ফলশ্রুতিতে যে বিষয়টি সুপরিস্ফূট হয়ে উঠেছে, তা হল ভারত-জার্মানি অংশীদারিত্ব সমগ্র বিশ্বের মঙ্গলের লক্ষ্যে এক শুভ পদক্ষেপ।

একটি চারাকে জলসিঞ্চনের মাধ্যমে বড় করে তুলতে হয় – এই কথাটি আমাদের দু’দেশের সংস্কৃতি ও মৈত্রী সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। আজ আমাদের এই বৈঠক ছিল একদিক থেকে অনন্য এবং আমি আশাবাদী যে আমাদের মৈত্রী সম্পর্কের বৃক্ষটিও অচিরে ফলদায়ী হয়ে উঠবে।

ধন্যবাদ।

PG/SKD/SB/S