ভারতমাতার জয়!
যখনই আমি জাপানে আসি তখন প্রত্যেকবারই দেখি যে আমার উপর আপনাদের ভালোবাসার বর্ষণ ক্রমে বাড়ছে। আপনাদের মধ্যে অনেক বন্ধু এমন আছেন যাঁরা অনেক বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। জাপানের ভাষা, এখানকার বেশভূষা, এখানকার সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস এক প্রকার আপনাদের জীবনেরও অংশ হয়ে উঠেছে আর এরকম অংশ হয়ে ওঠার একটি প্রধান কারণ হল যে ভারতীয়দের চরিত্রে মূলত শিষ্টাচারের সমাবেশ খুব সহজেই ঘটে। কিন্তু পাশাপাশি, জাপানে আপনাদের পরম্পরা, নিজস্ব মূল্যবোধ, আপনাদের জীবনযাপনের প্রতি যে দায়বদ্ধতা রয়েছে সেটাও অত্যন্ত গভীর, আর পানাদের ক্ষেত্রেএই দুটোর মিলন হয়েছে বা সমাবেশ ঘটেছে বলা যায়। সেজন্য স্বাভাবিক রূপেই পরস্পরের প্রতি একটি আত্মীয়তা অনুভব করা অত্যন্ত স্বাভাবিক।
বন্ধুগণ,
আপনারা এখানে রয়েছেন। আপনাদের মধ্যে অনেকেই এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। আমি জানি যে অনেকে এখানে এসে বিবাহবন্ধনেও আবদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু এটাও সত্যি যে অনেক বছর ধরে এখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত থাকার পরও ভারতের প্রতি আপনাদের শ্রদ্ধা, ভারতের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক অটুট রয়েছে। যখনই ভারত থেকে কোনও ভালো খবর আসে, তখন আপনাদের আনন্দের সীমা থাকে না, তাই না? আর কখনও কোনও খারাপ খবর যদি আসে, তখনও আপনারা খুব কষ্ট পান। আমাদের প্রত্যেকের এই বৈশিষ্ট্যও ভারতীয়দের একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য যে আমরা আমাদের কর্মভূমির সঙ্গে শরীর ও মন দিয়ে যুক্ত হয়ে পড়ি, মিলেমিশে যাই, নিজেদের উৎসর্গ করে দিই, কিন্তু মাতৃভূমির সঙ্গে যে শিকড়ের সম্পর্ক, তার সঙ্গেও কখনও দূরত্ব তৈরি হতে দিই না এবং এটাই আমাদের ভারতীয়দের সবচাইতে বড় সামর্থ্য।
বন্ধুগণ,
স্বামী বিবেকানন্দ জি যখন তাঁর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের জন্য শিকাগো যাচ্ছিলেন, তার আগে তিনি জাপানে এসেছিলেন। তখন জাপান তাঁর মনমন্দিরে, তাঁর মন-মস্তিষ্কে একটি গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। জাপানের জনগণের দেশভক্তি, জাপানের জনগণের আত্মবিশ্বাস, জাপানীদের জীবনে অনুশাসনপ্রিয়তা, নিজেকে ও চারপাশকে পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে জাপানীদের সচেতনতা – এই সবকিছু দেখে বিবেকানন্দ জি জাপানীদের প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত ছিলেন। বিশ্বকবি ররীন্দ্রনাথ ঠাকুরও তাঁর একটি বক্তব্যে বলেছিলেন –
“Japan has come out of the immemorial east like a lotus blossoming in easy grace, all the while keeping its firm hold upon the profound depth for which it has sprung.”
অর্থাৎ,”জাপান অনাদি পূর্ব দিগন্ত থেকে উঠে এসেছে সহজ অনুগ্রহে ফুটে থাকা পদ্মের মতো, যে গভীর গভীরতার জন্য এটি প্রস্ফুটিত হয়েছে, তার উপর দেশটি নিজেকে দৃঢ়ভাবে ধরে রেখেছে”।
এর মাধ্যমে তিনি বলতে চেয়েছেন যে জাপান পদ্মফুলের মতো যতটা শক্তভাবে নিজেদের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত, ততটাই সৌন্দর্য দিয়ে দেশটি তার চারপাশের শোভাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। আমাদের এই মহাপুরুষদের জাপান সম্পর্কে এমনই পবিত্র ভাবনা জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের গভীরতাকে স্পষ্ট করে।
বন্ধুগণ,
এবার যখন আমি জাপানে এসেছি, তখন আমাদের উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিককূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। সাত দশক! বন্ধুগণ, আপনারাও এখানে বসবাস করার সময় আমাদের এই সম্পর্কের নিবিড়তাকে হয়তো প্রতিনিয়ত অনুভব করেন। ভারতেও আমরা প্রতি মুহূর্তে এটা অনুভব করি যে ভারত এবং জাপান পরস্পরের ‘ন্যাচারাল পার্টনার’ বা বলা যায়, প্রাকৃতিকভাবেই আমরা পরস্পরের সহযোগী। ভারতের উন্নয়ন যাত্রায় জাপানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আত্মীয়তার, আধ্যাত্মিকতার। জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সহযোগিতার, ঘনিষ্ঠতার। আর এজন্য আমাদের এই সম্পর্কের একটা নিজস্ব সামর্থ্য আছে কারণ, এই সম্পর্কের ভিত্তি হল পারস্পরিক সম্মান আর এই সম্পর্ক বিশ্বের জন্য মিলিত সঙ্কল্প গ্রহণের সম্পর্কও। জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের প্রধান অনুঘটক হলেন গৌতম বুদ্ধ। আর সেজন্য জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ভিত্তি হল বৌদ্ধের বা জ্ঞানের। আমাদের যেমন মহাকাল, তেমনই জাপানে ডাইকোকুটেন। আমাদের যেমন ব্রহ্মা, তেমনই জাপানের রয়েছে বন্টেন। আমাদের যেমন রয়েছে মা সরস্বতী, তেমনই জাপানের রয়েছে বিদ্যাদেবী বেঞ্জাইটেন। আমাদের রয়েছে মহাদেবী লক্ষ্মী আর জাপানের রয়েছে ধনের দেবী কিছিজোটেন। আমাদের রয়েছে সিদ্ধিদাতা গণেশ আর জাপানের রয়েছে ক্যাঙ্গিট্যান। জাপানে ভারতের মতোই জৈন পরম্পরাও রয়েছে আর আমরা উভয় দেশই মেডিটেশন বা ধ্যানকে আত্মার সঙ্গে সাধকের সাক্ষাতের মাধ্যম বলে মানি।
একবিংশ শতাব্দীতেও ভারত আর জাপান এই সাংস্কৃতিক সম্পর্কগুলিকে সম্পূর্ণ দায়বদ্ধতার সঙ্গে পালন করে চলেছে, এগিয়ে নিয়ে চলেছে আর আমি কাশীর সাংসদ হিসেবে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে চাইব যে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিয়া পি(শিনজো আবে) যখন কাশীতে এসেছিলেন, তখন তিনি কাশীবাসীকে একটি অনেক বড় উপহার দিয়েছিলেন। কাশীতে জাপানের সহযোগিতায় নির্মিত রুদ্রাক্ষ ভবন আর আমার পুরনো কর্মভূমি আমেদাবাদে জৈন গার্ডেন এবং কাইজেন অ্যাকাডেমি স্থাপন – এমনই সব উদ্যোগ যা আমাদের সম্পর্ককে আরও অনেক নিবিড়তর করেছে। এখানে আপনারা সবাই জাপানে বসবাস করে এই ঐতিহাসিক বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে তুলছেন, আরও মজবুত করে তুলছেন।
বন্ধুগণ,
আজকের বিশ্বে ভগবান বুদ্ধের ভাবনা নিয়ে, তাঁর প্রদর্শিত পথে চলার প্রয়োজন হয়তো আগের থেকে অনেক বেশি। আজকের বিশ্বের প্রতিটি সমস্যার মোকাবিলায় এটাই সবচাইতে সঠিক পথ। হিংসার বিরুদ্ধে, অরাজকতার বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এবং আবহাওয়া পরিবর্তনের মতো সমস্যার মোকাবিলায় মানবতাকে রক্ষার ক্ষেত্রে ভগবান বুদ্ধের প্রদর্শিত পথই সবচাইতে উত্তম পথ। ভারত অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে আমাদের দেশ ভগবান বুদ্ধের প্রত্যক্ষ আশীর্বাদ পেয়েছে। তাঁর ভাবনা-চিন্তাকে অনুসরণ করে ভারত প্রতিনিয়ত মানবতার সেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। মানবতার সামনে যত ধরনের বড় বড় সমস্যা এসেছে, তা সে যত বড়ই হোক না কেন, ভারত তার সমাধান অবশ্যই খুঁজে বের করতে সক্ষম। করোনা মহামারীর সময় সমগ্র বিশ্বের সামনে যে ১০০ বছরের সবচাইতে বড় মানবতার সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল, সেটাও আমাদের সামনে রয়েছে, আর এই সঙ্কট যখন শুরু হয়েছিল তখন কেউই জানতেন না যে ভবিষ্যতে কী হবে। শুরুতে তো এমনটাই মনে হচ্ছিল যে অমুক দেশে এসেছে, আমাদের এখানে কী! কিন্তু কেউই জানত না যে একে কিভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে বা এর কিভাবে মোকাবিলা করতে হবে, আর এর মোকাবিলায় কোনও টিকাও ছিল না। এর প্রতিষেধক টিকা কবে আবিষ্কার হবে, সে ব্যাপারেও কারোর কোনও ধারনা ছিল না। এমনকি, এই সন্দেহও জেগে উঠেছিল, আদৌ এর কোনও টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হবে কি হবে না। বিশ্বের সর্বত্র চারিদিকে অনিশ্চয়তার আবহ ছিল। সেই কঠিন পরিস্থিতিতেও ভারত বিশ্বের অনেক দেশে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাঠিয়েছে, আর যখন টিকা আবিষ্কার হয়েছে, ভারত নিজেদের চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি টিকা তৈরি করে সেই ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ভ্যাক্সিন নিজেদের কোটি কোটি নাগরিককে যেমন দিয়েছে, তেমনই যত দ্রুত সম্ভব বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে পাঠিয়েছে।
বন্ধুগণ,
নিজেদের দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও উন্নত করার জন্য ভারত অভূতপূর্ব অর্থ বিনিয়োগ করছে। দেশের দূরদুরান্তের এলাকাগুলিতেও স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য দেশে লক্ষ লক্ষ নতুন ওয়েলনেস সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। আপনারা একথা জেনেও অত্যন্ত আনন্দ পাবেন, হয়তো আপনারা একথা জেনেও আনন্দ পাবে যে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ভারতের আশা ওয়ার্কার্স, আশাকর্মী বোনেদের ডায়রেক্টর জেনারেলস গ্লোবাল হেলথ লিডার অ্যাওয়ার্ড দিয়ে সম্মানিত করেছে। ভারতের লক্ষ লক্ষ আশাকর্মী বোনেরা মাতৃত্বকালীন পরিষেবা থেকে শুরু করে টিকাকরণ পর্যন্ত, অপুষ্টি থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পর্যন্ত দেশের স্বাস্থ্য অভিযানকে গতি প্রদানের জন্য গ্রামে গ্রামে অসাধারণ কাজ করছেন। আজ আমি জাপানের মাটি থেকে আমাদের সমস্ত আশাকর্মী বোনেদের এই সাফল্যের জন্য হৃদয় থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই, তাঁদেরকে স্যালুট জানাই।
বন্ধুগণ,
ভারত আজ কিভাবে আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলির মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশ্ববাসীকে সাহায্য করছে; এর আরও একটি বড় উদাহরণ হল পরিবেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে ভারতের উদ্যোগ। আজ ক্লাইমেট চেঞ্জ বা আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্কট বিশ্বের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে। আমরা ভারতেও এই সমস্যাকে অনুভব করেছি আর এই সমস্যার সমাধানের জন্য পথ খোঁজার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে চলেছি। ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণকে ‘নেট জিরো’ করার দায়বদ্ধতাকে বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। আমরা ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্স বা আন্তর্জাতিক সৌর সঙ্ঘের মতো আন্তর্জাতিক উদ্যোগেরও নেতৃত্ব দিচ্ছি। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে সারা পৃথিবীতে নানা রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সমস্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিপর্যয়ের বিপদকে আর এগুলি থেকে উদ্ভূত দূষণের কুপ্রভাবকে জাপানের জনগণের থেকে বেশি করে আর কে বুঝতে পারে! জাপান নিজেদের দেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতাও অনেক বাড়িয়ে নিয়েছে, আর এক্ষেত্রে বিশ্ববাসীকে পথ দেখাচ্ছে। যেভাবে জাপানের জনগণ এই সমস্যাগুলির মোকাবিলা করেছেন, প্রত্যেক সমস্যা থেকে, প্রত্যেক বিপর্যয় থেকে তাঁরা কিছু না কিছু শিখেছেন, সেগুলির সমাধান খুঁজেছেন আর সেই অনুযায়ী নানা ব্যবস্থাও বিকশিত করেছেন। নিজেদের আচার, ব্যবহার, শিষ্টাচারের ক্ষেত্রেও নানা পরিবর্তন এনেছেন। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে মোকাবিলার প্রচেষ্টা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ভারতও এই লক্ষ্যে নিজের সিডিআরআই বা কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার-এ নেতৃত্ব প্রদান করছে।
বন্ধুগণ,
ভারত আজ ‘গ্রিন ফিউচার’ বা পরিবেশ-বান্ধব ভবিষ্যৎ, ‘গ্রিন জব কেরিয়ার রোডম্যাপ’ বা পরিবেশ-বান্ধব কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা রচনার ক্ষেত্রেও অনেক দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। ভারতে ইলেক্ট্রিক মোবিলিটিকে ব্যাপক উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। গ্রিন হাইড্রোজেনকে হাইড্রো কার্বনের বিকল্প করে তোলার জন্য বিশেষ মিশন শুরু করা হয়েছে। বেশি জৈব-জ্বালানি ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট রিসার্চ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা গবেষণা ও পরিকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে অনেক বড় মাত্রায় কাজ চলছে। ভারত বর্তমান দশকের শেষের দিকে তার টোটাল ইনস্টল্ড পাওয়ার ক্যাপাসিটির ৫০ শতাংশ নন-ফসিল ফুয়েলের মাধ্যমে সম্পূর্ণ করার সঙ্কল্প নিয়েছে।
বন্ধুগণ,
বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে ভারতীয়দের এই যে ক্রমবর্ধমান আত্মবিশ্বাস, এই আত্মবিশ্বাসের প্রভাব আজ প্রত্যেক ক্ষেত্রে, প্রত্যেক দিকে, প্রত্যেক পদক্ষেপে পরিস্ফুট হচ্ছে। গ্লোবাল চেন সাপ্লাই যেভাবে বিগত দুই বছরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, গোটা সাপ্লাই চেন এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এটি আজ গোটা বিশ্বের জন্য একটি অনেক বড় সঙ্কট হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য আমরা আত্মনির্ভরতার সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছি আর আমাদের এই আত্মনির্ভরতার সঙ্কল্প যে শুধু ভারতের জন্য কাজে লাগে তা নয়, আমাদের এই আত্মনির্ভরতার সঙ্কল্প একটি স্থায়ী, টেকসই ও বিশ্বস্ত গ্লোবাল সাপ্লাই চেনের জন্যও অনেক বড় ইনভেস্টমেন্ট রূপে প্রতিপন্ন হবে। আজ গোটা বিশ্ব এটা অনুভব করছে যে ভারতে যে গতি ও পরিমাপে কাজ চলছে, ভারত যে গতি ও পরিমাপে কাজ করতে পারে তা অভূতপূর্ব। বিশ্ব আজ এটাও দেখছে যে পরিমাণে ভারত তার ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনস্টিটিউশনাল ক্যাপাসিটি বিল্ডিং-এর ক্ষেত্রে জোর দিচ্ছে, এটাও অভূতপূর্ব। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আমাদের এই ক্যাপাসিটি নির্মাণে জাপান একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। মুম্বাই-আমেদাবাদ হাইস্পিড রেল থেকে শুরু করে দিল্লি-মুম্বাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর নির্মাণ, ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর নির্মাণ – এরকম অনেক’টি বড় বড় প্রকল্প ভারত জাপানের সহযোগিতায় গড়ে তুলছে। এগুলি ভারত-জাপান সম্পর্কের নিবিড়তার অনেক বড় উদাহরণও।
বন্ধুগণ,
ভারতে যে পরিবর্তনগুলি হচ্ছে সেগুলির মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা রয়েছে। আমরা ভারতে একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিস্থাপক, দায়িত্বশীল গণতন্ত্রের পরিচয় সুদৃঢ় করে তুলেছি। একে বিগত আট বছরে আমরা জনগণের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তনের মাধ্যম করে তুলেছি। ভারতের ডেমোক্র্যাটিক প্রসেসের সঙ্গে আজ সমাজের সেই মানুষেরাও যুক্ত হচ্ছেন যাঁরা কখনও গৌরবের সঙ্গে অনুভব করতেন না যে তাঁরাও এই সুন্দর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অঙ্গ। প্রত্যেকবার প্রত্যেক নির্বাচনে রেকর্ড টার্নআউট আর এক্ষেত্রেও …আমাদের এখানে উপস্থিত মা ও বোনেরা শুনে খুব খুশি হবেন, যদি আপনারা ভারতে নির্বাচনে ভোটদানের ক্ষেত্রে মানুষের সংখ্যাকে বিস্তারিত জানেন, তাহলে আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে ভারতে বেশ কিছু নির্বাচনে পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি ভোট দিয়েছেন। এই স্বতঃস্ফূর্ত ভোটদান এটা প্রমাণ করে যে ভারতে গণতন্ত্র দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম সাধারণ নাগরিকদের অধিকারের প্রতি কতটা সজাগ, কতটা সমর্পিত, আর প্রত্যেক নাগরিককে ভারতের গণতন্ত্র কতটা সামর্থ্যবান করে তুলছে।
বন্ধুগণ,
মূল সুবিধাগুলির পাশাপাশি আমরা আধুনিক ভারতের প্রত্যাশাগুলিকেও নতুন উচ্চতা প্রদান করছি, নতুন মাত্রা দিচ্ছি। ভারতে ‘ইনক্লুসিভনেস’ বা অন্তর্ভুক্তিকরণে লিকেজ প্রুফ গভর্ন্যান্স সুনিশ্চিত করা এবং একটি এমন বাস্তবায়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে প্রযুক্তির যথাসম্ভব ব্যবহার বাড়ানো যায়। প্রযুক্তির যথাসম্ভব ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে একটি এমন ব্যবস্থা তৈরি করা যায় এবং সেই ব্যবস্থাকে সম্প্রসারিত করা যায় – যাতে যিনি যে জিনিসের অধিকারী তিনি যেন বাধাহীনভাবে, কোনরকম সুপারিশ ছাড়াই, কোনওরকম দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দিয়েই নিজেদের অধিকার পেতে পারেন, এবং তা বাস্তবায়িত করতে আমরা সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে চেষ্টা করছি। আর আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন যে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের চালু করা প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে তাঁদের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে সরাসরি টাকা জমা করার এই পরম্পরা করোনার এই কঠিন সময়ে গত দুই বছর ধরে ভারতে আরও বিশেষ করে বললে, ভারতের দূরদুরান্তের গ্রামে বসবাসকারী মানুষদের, অরণ্য এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের নাগরিক অধিকারগুলিকে অত্যন্ত সুচারুভাবে রক্ষা করেছে, তাঁদেরকে সাহায্য করেছে।
বন্ধুগণ,
ভারতের ব্যাঙ্কিং সিস্টেম এই কঠিন পরিস্থিতিতেও নিরন্তর চালু ছিল, আর এর একটা বড় কারণ হল ভারতে ডিজিটাল রেভোলিউশন এসেছে। এই ডিজিটাল বিপ্লবের মাধ্যমে ডিজিটাল নেটওয়ার্কের যে শক্তি গড়ে উঠেছে তার সুফল আমরা নিয়মিত ভোগ করছি, আর আপনাদের মতো ভারত হিতৈষী বন্ধুরা একথা জেনে খুশি হবেন যে গোটা বিশ্বে যে ডিজিটাল লেনদেন হয়, যে ক্যাশলেস লেনদেন হয়, এখানে জাপানে তো আপনারা এই প্রযুক্তির সঙ্গে খুব ভালোভাবেই পরিচিত, কিন্তু একথা শুনে আপনারা অত্যন্ত আনন্দিত হবেন, কেউ কেউ আশ্চর্যও হবেন এবং গর্বিত হবেন যে গোটা বিশ্বে যত ডিজিটাল লেনদেন হয় তার ৪০ শতাংশই এখন শুধু ভারতে হয়। করোনা মহামারীর শুরুর দিনগুলিতে যখন সবকিছু বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেই সঙ্কটের সময়েও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এক ক্লিকে বোতাম টিপে একসঙ্গে কোটি কোটি ভারতবাসীর কাছে সহজেই তাঁদের প্রয়োজনীয় অর্থ সাহায্য পৌঁছে দিতে পেরেছিল। আর যাঁদের যাঁদের জন্য এই সাহায্য নির্ধারিত ছিল, শুধু তাঁরাই তা পেয়েছেন, যথাসময়ে পেয়েছেন আর এভাবেই তাঁরা এই সঙ্কটের সঙ্গে লড়াই করার, এই সঙ্কটের সঙ্গে যুঝতে পারার শক্তি পেয়েছেন, সঙ্কটের বিরুদ্ধে যুঝতে পারার সামর্থ্যও পেয়েছেন। ভারতে আজ প্রকৃত অর্থে ‘পিপল লেইড গভর্ন্যান্স’ বা জনগণের নেতৃত্বে প্রশাসন কাজ করছে। গভর্ন্যান্সের এই মডেল তার ডেলিভারি বা রূপায়ণকে দক্ষ করে তুলছে। এটাই গণতন্ত্রের প্রতি ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে ওঠা আস্থার সবচাইতে বড় কারণ।
বন্ধুগণ,
আজ যখন ভারত স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উৎসব পালন করছে, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছে, তখন ভারত আগামী ২৫ বছর সময়ে অর্থাৎ, স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্তির সময় দেশকে আমরা কোথায় পৌঁছে দিতে চাই, কোন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে চাই, বিশ্বে আমাদের পতাকা কোথায় কোথায়, কিভাবে কিভাবে আমাদের পুঁততে হবে আজ ভারতবাসী তার রোডম্যাপ রচনা করার কাজে ব্যস্ত রয়েছে। স্বাধীনতার এই অমৃতকাল নিঃসন্দেহে ভারতের সমৃদ্ধির, সম্পন্নতার একটি অভূতপূর্ব ইতিহাস লিখতে চলেছে বন্ধুগণ। আমি জানি, এই যে সঙ্কল্পগুলি আমরা গ্রহণ করেছি, এই সঙ্কল্পগুলি প্রত্যেকটিই অনেক বড় বড় সঙ্কল্প। কিন্তু বন্ধুগণ, আমি যেভাবে লালিত-পালিত হয়েছি, আমি বংশপরম্পরায় যে শিষ্টাচার পেয়েছি, যে যে মানুষেরা আমাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গড়ে তুলেছেন, তাঁদের এই প্রতিপালনের ফলেও আমার মধ্যে একটি অভ্যাস তৈরি হয়ে গেছে। আমি মাখনের ওপর কাঠি দিয়ে দাগ কেটে মজা পাই না। আমি পাথরের ওপর দাগ কাটতে পছন্দ করি। কিন্তু বন্ধুগণ, এখানে প্রশ্ন মোদীর নয়, মোদীর কী স্বভাব সেটা আমার বক্তব্যের বিষয় নয়, আজ ভারতের ১৩০ কোটি জনগণ, আর এমনকি আমি জাপানে বসে থাকা প্রবাসী ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের চোখেও সেই চমক দেখতে পাচ্ছি, এই আত্মবিশ্বাস ১৩০ কোটি দেশবাসীর আত্মবিশ্বাস, এই সংকল্প ১৩০ কোটি দেশবাসীর সঙ্কল্প, এই স্বপ্ন ১৩০ কোটি মানুষের স্বপ্ন, আর এই ১৩০ কোটি মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার এই বিরাট সামর্থ্য অবশ্যই নতুন পরিণাম নিয়ে আসবে বন্ধুগণ। আমাদের স্বপ্নের ভারত আমরা অবশ্যই গড়ে তুলব। আজ ভারত তার সুপ্রাচীন সভ্যতা, তার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, তার গৌরবময় সংস্থাগুলি, তার হৃত আত্মবিশ্বাসকে পুনরুদ্ধার করছে, আবার ফিরিয়ে আনছে। যে কোনও ভারতীয় আজ বিশ্বের যে কোনও স্থানে দাঁড়িয়ে, বুক ফুলিয়ে, অন্যদের চোখে চোখ রেখে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে ভারতের কথা বলছে। আজ এই পরিবর্তন এসেছে। আজ আমি এখান থেকে যাওয়ার আগে ভারতের মহত্বে প্রভাবিত কিছু মানুষের সঙ্গে দেখা হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে, যাঁরা ভারতের ঐতিহ্য, ভারতের গর্বকে সুউচ্চে তুলে রাখার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁরা আমাকে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে যোগাসন নিয়ে কথা বলছিলেন। তাঁরা প্রত্যেকেই যে যোগাসনে সমর্পিতপ্রাণ। তাঁদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় জাপানে আজ হয়তো এমন কেউই নেই যাঁদের কল্পনায় যোগ নেই। আমাদের আয়ুর্বেদ, আমাদের পারম্পরিক চিকিৎসা পদ্ধতি আর আজকাল তো আমাদের দেশে উৎপন্ন মশলারও চাহিদা সারা পৃথিবীতে ক্রমে বাড়ছে। বিশ্বের অনেক দেশ এখন ভারত থেকে হলুদ আমদানি করছে। শুধু তাই নয় বন্ধুগণ, আমাদের খাদি আবার জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে, ধীরে ধীরে এই খাদি শুধুই নেতাদের কস্টিউমে পরিণত হয়ে থেকে গিয়েছিল, আজ কিন্তু তার প্রকৃত পুনরুজ্জীবন হচ্ছে। খাদি ক্রমে আবার গ্লোবাল হয়ে উঠছে বন্ধুগণ। এভাবেই তো গোটা বিশ্বে ভারতের পরিবর্তিত ভাবধারা গড়ে উঠছে বন্ধুগণ। আজকের ভারত তার নিজস্ব অতীতকে নিয়ে যতটা গর্বিত, ততটাই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর, বিজ্ঞান-নির্ভর, উদ্ভাবন-নির্ভর, মেধা-নির্ভর ভবিষ্যৎ নিয়েও আশান্বিত। জাপানের প্রযুক্তিপ্রিয়তা ও পরিচ্ছন্নতা দেখে প্রভাবিত স্বামী বিবেকানন্দজি একবার বলেছিলেন যে – “আমাদের ভারতের নবীন প্রজন্মের মানুষদের প্রত্যেকেরই তাঁদের জীবনে কমপক্ষে একবার জাপান সফর করা উচিৎ।” আপনারা সবাই যে তাঁর এই বাক্য পড়েই এখানে এসেছেন সেটা আমি মনে করি না, কিন্তু বিবেকানন্দজি ভারতের জনগণকে বলেছিলেন যে ভাই, একবার তো দেখে এসো জাপান কেমন দেশ!
বন্ধুগণ,
সেই সময়ে বিবেকানন্দজি যে কথা বলেছিলেন, আজকের যুগের মতো করে সেই কথাকে, সেই সদ্ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে আমি বলতে চাইব যে জাপানের প্রত্যেক নব যুবক-যুবতী যেন তাঁদের জীবনে কমপক্ষে একবার ভারত সফরে আসেন। আপনারা নিজেদের স্কিলস বা কর্মদক্ষতার মাধ্যমে, আপনাদের প্রতিভার মাধ্যমে, আপনাদের আন্ত্রেপ্রেনিওরশিপের সাফল্যের মাধ্যমে জাপানের এই মহান ভূমির সন্তানদের মন্ত্রমুগ্ধ করে দিয়েছেন। ভারতীয়ত্বের নানা বিচিত্র রঙে, ভারতের নানা সম্ভাবনার সঙ্গেও আপনারা জাপানকে নিয়মিত পরিচয় করাচ্ছেন। ভারতের আস্থা হোক, আধ্যাত্মিকতা হোক কিংবা অ্যাডভেঞ্চার, জাপানের জন্য তো ভারত একটি স্বাভাবিক পর্যটন গন্তব্য। আর সেজন্য ‘ভারত চলো’, ‘ভারত দেখো’, ‘ভারতের সঙ্গে যুক্ত হও’ – এই সঙ্কল্পগুলি নিয়ে জাপানে বসবাসকারী প্রত্যেক প্রবাসী ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের কাছে আমি অনুরোধ জানাই যে, আপনারা সবাই অনুগ্রহ করে আমার এই মিশনের সঙ্গে, এই মনোভাবের সঙ্গে যুক্ত হোন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আপনাদের সার্থক প্রচেষ্টায় ভারত ও জাপানের মধ্যে বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতা স্পর্শ করবে। এই অদ্ভূত স্বাগত অনুষ্ঠানের জন্য আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি দেখছিলাম যে, যখন এখানে আসছিলাম, চারিদিকে সকলের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখছিলাম। আপনারা জয় জয়কার করছিলেন, আর আপনারা নিজেদের মধ্যে যতটা ভারতকে সঞ্জীবিত রাখার চেষ্টা করেন তা কিন্তু বিশ্ববাসী দেখতে পাচ্ছে। আপনাদের এই ভালোবাসা সত্যিই হৃদয়কে স্পর্শ করে। আপনাদের এই ভালোবাসা, এই স্নেহ যেন সব সময় বজায় থাকে। এত বিপুল সংখ্যায় এখানে উপস্থিত হয়েছেন আপনারা আর আমাকে বলা হয়েছে যে, জাপানের শুধু টোকিওবাসী প্রবাসী ভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা নন, বাইরে থেকেও কিছু বন্ধু আজ এসেছেন। আগে আমি যখন এসেছি, নিজেই অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করতাম, কিন্তু এবার যেতে পারিনি। আপনারাই দূরদুরান্ত থেকে চলে এসেছেন। কিন্তু আমার খুব ভালো লাগছে, আপনাদের সকলের সঙ্গে আরও একবার সাক্ষাতের সৌভাগ্য হল। সেজন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। হৃদয় থেকে আপনাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই। ভারতমাতার জয়! ভারতমাতার জয়! অনেক অনেক ধন্যবাদ!
CG/SB/DM/
Grateful to the Indian community in Japan for their warm reception. Addressing a programme in Tokyo. https://t.co/IQrbSvVrns
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2022
स्वामी विवेकानंद जब अपने ऐतिहासिक संबोधन के लिए शिकागो जा रहे थे, तो उससे पहले वो जापान भी आए थे।
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
जापान ने उनके मन-मस्तिष्क पर एक गहरा प्रभाव छोड़ा था: PM @narendramodi
जापान के लोगों की देशभक्ति, जापान के लोगों का आत्मविश्वास, स्वच्छता के लिए जापान के लोगों की जागरूकता, उन्होंने इसकी खुलकर प्रशंसा की थी: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
भारत और जापान natural partners हैं।
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
भारत की विकास यात्रा में जापान की महत्त्वपूर्ण भूमिका रही है।
जापान से हमारा रिश्ता आत्मीयता का है, आध्यात्म का है, सहयोग का है, अपनेपन का है: PM @narendramodi
जापान से हमारा रिश्ता सामर्थ्य का है, सम्मान का है, विश्व के लिए साझे संकल्प का है।
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
जापान से हमारा रिश्ता बुद्ध का है, बोद्ध का है, ज्ञान का है, ध्यान का है: PM @narendramodi
आज की दुनिया को भगवान बुद्ध के विचारों पर, उनके बताए रास्ते पर चलने की बहुत ज़रूरत है।
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
यही रास्ता है जो आज दुनिया की हर चुनौती, चाहे वो हिंसा हो, अराजकता हो, आतंकवाद हो, क्लाइमेट चेंज हो, इन सबसे मानवता को बचाने का यही मार्ग है : PM @narendramodi
जब वैक्सीन्स available हुईं तब भारत ने 'मेड इन इंडिया' वैक्सीन्स अपने करोड़ों नागरिकों को भी लगाईं और दुनिया के 100 से अधिक देशों को भी भेजीं: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
World Health Organisation ने भारत की आशा बहनों को Director Generals- Global Health Leaders Award से सम्मानित किया है।
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
भारत की लाखों आशा बहनें, मैटेरनल केयर से लेकर वैक्सीनेशन तक, पोषण से लेकर स्वच्छता तक, देश के स्वास्थ्य अभियान को गति दे रही हैं: PM @narendramodi
हमारी इस कैपेसिटी के निर्माण में जापान एक अहम भागीदार है।
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
मुंबई-अहमदाबाद हाई स्पीड रेल हो, दिल्ली-मुंबई इंडस्ट्रियल कॉरिडोर हो, dedicated freight corridor हो, ये भारत-जापान के सहयोग के बहुत बड़े उदाहरण हैं: PM @narendramodi
हमने भारत में एक strong और resilient, responsible democracy की पहचान बनाई है।
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
उसको बीते 8 साल में हमने लोगों के जीवन में सकारात्मक बदलाव का माध्यम बनाया है: PM @narendramodi
भारत में आज सही मायने में people led governance काम कर रही है।
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
गवर्नेंस का यही मॉडल, डिलिवरी को efficient बना रहा है।
यही democracy पर निरंतर मज़बूत होते विश्वास का सबसे बड़ा कारण है: PM @narendramodi
आज का भारत अपने अतीत को लेकर जितना गौरवान्वित है, उतना ही tech led, science led, innovation led, talent led future को लेकर भी आशावान है: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
जापान से प्रभावित होकर स्वामी विवेकानंद जी ने कहा था कि हर भारतीय नौजवान को अपने जीवन में कम से कम एक बार जापान की यात्रा ज़रूर करनी चाहिए।
— PMO India (@PMOIndia) May 23, 2022
मैं स्वामी जी की इस सद्भावना को आगे बढ़ाते हुए, मैं चाहूंगा कि जापान का हर युवा अपने जीवन में कम से कम एक बार भारत की यात्रा करे: PM
India and Japan are natural partners. pic.twitter.com/P3AsXBCIek
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2022
The teachings of Lord Buddha are more relevant than ever before. They can help mitigate several global challenges. pic.twitter.com/RTJVn5Z922
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2022
Here is how India is helping fight climate change, create disaster resilient infrastructure and strengthen global prosperity. pic.twitter.com/ZltoCotPzj
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2022
My request to the people of Japan… pic.twitter.com/anZEfPomVK
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2022
बीते 8 वर्षों में हमने एक Strong, Resilient और Responsible Democracy की पहचान बनाई है। भारत की Democratic Process से आज समाज के वैसे लोग भी जुड़ रहे हैं, जो पहले कभी इसका हिस्सा बन ही नहीं पाते थे। pic.twitter.com/gMB47jCnOa
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2022
मैं जानता हूं कि आजादी के इस अमृतकाल में हमने जो संकल्प लिए हैं, वो बहुत बड़े हैं। लेकिन 130 करोड़ भारतीयों में जो उत्साह और आत्मविश्वास आज दिख रहा है, उससे मैं इन संकल्पों की सिद्धि के प्रति आश्वस्त हूं। pic.twitter.com/JOAWBMLUzD
— Narendra Modi (@narendramodi) May 23, 2022