Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

জাতীয় পঞ্চায়েতি রাজ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় পঞ্চায়েত পুরস্কার-২০২১ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বাংলা অনুবাদ

জাতীয় পঞ্চায়েতি রাজ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় পঞ্চায়েত পুরস্কার-২০২১ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বাংলা অনুবাদ

 


নয়াদিল্লি, ২৪শে এপ্রিল, ২০২১

 

এই অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে উপস্থিত পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমার জি,  রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, কর্ণাটক, হরিয়ানা, অরুণাচল প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীরা, হরিয়ানার উপ মুখ্যমন্ত্রী, বিভিন্ন রাজ্যের পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী, দেশের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে  যুক্ত সমস্ত জনপ্রতিনিধিরা, এবং যেমনটা নরেন্দ্র সিং জি এখনই বলেছেন, এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্যে প্রায় ৫ কোটি মানুষ নাম নিবন্ধন করেছেন। বিভিন্ন গ্রাম থেকে এত বেশি সংখ্যায় এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে  গ্রামোন্নয়নের পথে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাকে আরও শক্তিশালী করবে౼ এরকম সকল ৫ কোটি ভাই-বোনেদের আমার নমস্কার জানাই।
ভাই ও বোনেরা, 
পঞ্চায়েতি রাজ দিবসের এই দিনটি গ্রামীণ ভারতের নবনির্মাণের সংকল্প বাস্তবায়িত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ্য। এই দিনটি আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির যোগদান এবং তাদের অসাধারণ কাজকর্ম দেখার, বোঝার এবং সেগুলির প্রশংসা করারও দিন। 
এবার আমাকে গ্রামোন্নয়নে যে পঞ্চায়েতগুলি প্রশংসনীয় কাজ করেছে, তাদের সম্মানীত করার, পুরস্কৃত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।  আমি আপনাদের সকলকে ‘পঞ্চায়েতি রাজ দিবসের’ অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। সম্প্রতি, বেশ কয়েকটি রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, কয়েকটি রাজ্যে এখনও পঞ্চায়েত নির্বাচন চলছে, তাই আজ আমাদের সঙ্গে  অনেক নতুন প্রতিনিধিও রয়েছেন। আমি এই সমস্ত নতুন জনপ্রতিনিধিদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুরা,
আজ সারা দেশে গ্রামবাসী ও দরিদ্রদের তাঁদের বাড়ির মালিকানা দেওয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, ‘স্বামীত্ব  যোজনা’ চালু করা হয়েছে।গতবছর, যে সব জায়গায় এই প্রকল্প শুরু করা হয়েছিল, সেখানকার অনেক বন্ধুদের সম্পত্তি কার্ডও দেওয়া হয়েছে। সেজন্যেও এই কাজের সঙ্গে যুক্ত এবং  নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে  যারা এই প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তাদেরও আমি অনেক অনেক অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানাই। স্বামীত্ব প্রকল্প গ্রাম এবং দরিদ্রদের আত্মবিশ্বাস, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং উন্নয়নকে নতুন পথ দেখাবে। সেই কারনেও আমি দেশবাসীদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। 
বন্ধুরা, 
এক বছর আগে যখন আমাদের পঞ্চায়েতি রাজ দিবস উপলক্ষে দেখা হয়েছিল, তখন সারা দেশ করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছিল। তখন আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করেছিলাম যে করোনা যাতে গ্রামগুলিতে থাবা বসাতে না পারে সেজন্যে আপনারা নিজেদের ভূমিকা পালন করুন। আপনারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে গ্রামগুলিকে করোনার থেকে বাঁচিয়েছেন এবং গ্রামে গ্রামে সচেতনতা গড়ে তুলতে বড় ভূমিকা পালন করেছেন। এবছরও আমাদের সামনে একই সমস্যা রয়েছে, এবং গতবারের তুলনায় এবারের সমস্যা অনেক বেশি, তাই কোনোমতেই এই সংক্রমণকে গ্রামে পৌছতে দেওয়া যাবেনা। 
গতবছর আপনারা যে পরিশ্রম করেছিলেন, যেভাবে গ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, এবার সেই কাজটাই আপনাদের আরও সক্রিয়ভাবে, আরও অনুশাসনের সঙ্গে, আর বেশি মানুষকে এরসঙ্গে যুক্ত করে কাজ করতে হবে, তাহলেই সাফল্য আসবে। যেহেতু গতবছর আপনারা এই কাজ করেছিলেন, তাই আপনাদের কাছে একবছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সঙ্কটের বিষয়ে অনেক বেশি জ্ঞান রয়েছে, সঙ্কট থেকে বাঁচার অনেক বেশি উপায় জানা আছে। আর সেজন্যেই আমার বিশ্বাস যে আমার দেশবাসী, আমার গ্রামের বাসীন্দারা, গ্রামের নেতারা, গ্রামগুলিকে করোনার সংক্রমণের থেকে রক্ষা করতে সফল হবে এবং সবরকম ব্যবস্থা করতে পারবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে বিভিন্ন সময়ে যে গাইডলাইন জারি করা হয়েছে, তা যেন কঠোরভাবে পালন করা হয়।
এবার তো আমাদের কাছে টিকার সুরক্ষাকবচও রয়েছে। তাই আমাদের সমস্তরকম সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, এবং এটাও নিশ্চিত করতে হবে যাতে সমস্ত গ্রামবাসী টিকার দুটি ডোজই নেয়। ভারত সরকার এখন সমস্ত রাজ্যে  ৪৫ বছরের বেশি বয়স্কদের বিনামূল্যে টিকাকরণ করছে। আর ১লা মে থেকে ১৮ বছরের বেশি নাগরিকদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। আপনাদের সকলের সহযোগিতায় এই টিকাকরণ অভিযান সফল হবে।
বন্ধুরা,
এই কঠিন সময়ে যাতে কোনও পরিবার অভুক্ত না থাকে, দরিদ্রতম ব্যক্তির ঘরেও যাতে উনুন জ্বলে, তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। গতকালই কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনার আওতায় আবারও বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প শুরু করার সিদ্ধান্ত  নিয়েছে। মে-জুন মাসে দেশের প্রত্যেক দরিদ্র  ব্যক্তিকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে। এরফলে, ৮০ কোটিরও বেশি দেশবাসী লভবান হবেন। এরজন্যে কেন্দ্র সরকার ২৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ খরচ করবে।
বন্ধুরা,
এই রেশন দরিদ্রদের জন্যে, দেশের জন্যে। অন্নের প্রতিটি দানা যাতে সেই পরিবারের কাছে পৌঁছয়, তাড়াতাড়ি এবং সঠিক সময়ে পৌঁছয়, সেটা আমাদের সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে। এবং আমার বিশ্বাস যে রাজ্য সরকারগুলি এবং আমাদের পঞ্চায়েতের বন্ধুরা এই কাজে সাহায্য করবে।
বন্ধুরা, 
গ্রাম পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি হিসেবে গণতন্ত্রকে আরও মজবুত করে তুলতে, গ্রামের উন্নয়ন বাস্তবায়িত করতে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া উচিত। আমাদের গ্রামগুলি ভারতের উন্নয়ন এবং আত্মনির্ভরতার মূল কেন্দ্র। মহাত্মা গান্ধী বলতেন, – “আত্মনির্ভর বলতে আমি বুঝি এমন একটি গ্রাম, যা নিজের মৌলিক চাহিদাগুলি আত্মনির্ভরভাবে পুর্ণ করতে পারে। কিন্তু আত্মনির্ভরতা মানে নিজেদের সীমাবদ্ধ করে ফেলা কখনই নয়।“ পূজনীয় বাপুর ভাবনা কতটা স্পষ্ট, অর্থাৎ, আমাদের নতুন সম্ভাবনার খোঁজ করে, নতুন সুযোগের মাধ্যমে গ্রামগুলিকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে হবে।
বন্ধুরা,
গতবছর যে ৬টি রাজ্যে স্বামীত্ব প্রকল্প শুরু করা হয়েছিল, সেখানে একবছরের মধ্যে তাঁর প্রভাবও দেখা গেছে। স্বামীত্ব প্রকল্পর মাধ্যমে, ড্রোন দিয়ে পুরো গ্রামের, সম্পত্তির সমীক্ষা  করা হয়, এবং একটি ডিজিটাল মানচিত্র তৈরি করে যার যে জমি রয়েছে, তাঁকে সেই জমির সম্পত্তি পত্র দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ আগেই ৫ হাজার গ্রামে ৪ লক্ষেরও বেশি জমির মালিকদের ই-সম্পত্তি পত্র দেওয়া হয়েছে। স্বামীত্ব প্রকল্পের ফলে গ্রামগুলিতে নতুন আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে, মানুষ নিজেদের সুরক্ষিত মনে করছেন। 
গ্রামের বাড়ির মানচিত্র, জমির দলিল হাতে চলে এলে অনেক ধরনের ভয় কেটে যায়। এর ফলে গ্রামে জমি-জায়গা সংক্রান্ত বিবাদ অনেক কমে গেছে, কোথাও কোথাও বিবাদ মিটেও গেছে। দলিত-দরিদ্রদের শোষণের সম্ভাবনা বন্ধ হয়েছে, দূর্নীতি বন্ধ হয়েছে। আদালতে মামলা বন্ধ হয়েছে। যারা জমির দলিল পেয়ে গেছেন, তাঁদের ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতেও সুবিধা হয়েছে। 
বন্ধুরা,
স্বামীত্ব প্রকল্পের আরও একটি বিশেষ দিক রয়েছে। এই প্রকল্পে, ড্রোন দিয়ে সমীক্ষার  পরে, প্রতিটি গ্রামের সম্পূর্ণ মানচিত্র, জমির সম্পূর্ণ হিসেব তৈরি করা হয়। এই মানচিত্র পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়মিতভাবে  দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার  সঙ্গে গ্রামে উন্নয়নমূলক কাজ করতে সাহায্য করবে। এবং আমি সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধানদের অনুরোধ করব এই প্রকল্পকে গ্রামের উন্নয়নের স্বার্থে বিবেচনা করে  এগিয়ে নিয়ে যেতে।
এক দিক থেকে  দরিদ্রদের সুরক্ষা, গ্রামের অর্থনীতি এবং গ্রামে পরিকল্পিত উন্নয়ন, এগুলি স্ব-নিধি প্রকল্প নিশ্চিত করতে চলেছে। আমি দেশের সমস্ত রাজ্যগুলিকেও অনুরোধ করব সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে সমঝোতা  স্বাক্ষরের কাজটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্পন্ন করার জন্য। এরজন্যে, বেশ কয়েকটি রাজ্যের ভূমি আইনেও সংশোধন করা দরকার। আমি রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দেব যে, গ্রামের বাড়ির দলিল তৈরির পরে যদি কোনও ব্যক্তি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে চান, তাতে যেন কোনও বাধার সৃষ্টি না হয় সেটা সুনিশ্চিত করতে হবে। আমি ব্যাঙ্কগুলির কাছে আবেদন করব যে তারা সম্পত্তি পত্রের একটি ফরম্যাট তৈরি করুক, যা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্যে গ্রহণযোগ্য হবে। সমস্ত পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে এবং গ্রামবাসীদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
বন্ধুরা,
আমাদের দেশের অগ্রগতি এবং সংস্কৃতির উন্নয়নে আমাদের গ্রামগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সে কারণেই আজ দেশের  প্রতিটি নীতি এবং প্রতিটি উদ্যোগ  গ্রামগুলিকে কেন্দ্র করে এগিয়ে চলেছে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে আধুনিক ভারতের গ্রামগুলি সক্ষম হোক, স্বাবলম্বী হোক। এ জন্য পঞ্চায়েতের ভূমিকা বিস্তার করা হচ্ছে, পঞ্চায়েতগুলিকে নতুন অধিকার দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েতগুলিকে ডিজিটাল করার জন্য, প্রতিটি গ্রামকে ফাইবার নেট দিয়ে যুক্ত করার কাজও দ্রুতগতিতে চলছে।
প্রতিটি ঘরে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিতে ‘জল জীবন মিশনের’ মতো একটি বড় প্রকল্পের দায়িত্ব পঞ্চায়েতগুলিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি নিজেই একটি বিশাল কাজ যা আমরা আপনাদের দায়িত্বে, আপনাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে গেছি। গ্রামে কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে দরিদ্রদের পাকা বাড়ি তৈরি করা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার যে সমস্ত অভিযান চালাচ্ছে তা কেবলমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই এগিয়ে চলেছে।
গ্রামের উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হোক, সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক, এতেও পঞ্চায়েতের ভূমিকা বিস্তার করা হয়েছে। আপনারা নিজের গ্রাম সম্পর্কে চিন্তা করুন, গ্রামের চাহিদা এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নয়নের গতি বাড়ান, এর জন্য দেশও আপনাদের থেকে  অনেককিছু প্রত্যাশা করছে এবং আপনাদের  সুযোগও দিচ্ছে। এমনকি গ্রামের  ব্যয় সম্পর্কিত অনেক ক্ষমতা সরাসরি পঞ্চায়েতগুলিকেই দেওয়া হচ্ছে। ছোট ছোট প্রয়োজনের জন্য আপনাদের যাতে সরকারী দপ্তরগুলিতে একেবারেই না যেতে হয় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। যেমন আজ, এখানে দেওয়া নগদ পুরষ্কারগুলি সরাসরি পঞ্চায়েতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা হবে।
বন্ধুরা,
ভারত সরকার সোয়া দু লক্ষ কোটিরও বেশি টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির হাতে দিয়েছে। এর আগে  কখনও এত বড় অর্থমূল্য পঞ্চায়েতগুলিতে দেওয়া হয়নি। এই অর্থের মাধ্যমে, গ্রামে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে যুক্ত কাজগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ গ্রহণ  এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের জন্য প্রচুর চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু যখন গ্রামের উন্নয়নের জন্য এত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যখন এত কাজ হবে, তখন গ্রামবাসীরাও আশা করবেন যে প্রত্যেক কাজে স্বচ্ছতা যেন বজায় থাকে। আপনাদের কাছে  এই প্রত্যাশা থাকবে এবং তা পূরণ করা আপনাদেরই দায়িত্ব।
এজন্য পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক ‘ই-গ্রাম স্বরাজ’-এর মাধ্যমে অর্থ আদান-প্রদানের অনলাইন ব্যবস্থা করেছে। যে অর্থ প্রদান করা হবে, তা পাবলিক ফিনান্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (পিএফএমএস) মাধ্যমে হবে। একইভাবে ব্যয় স্বচ্ছতা ও দায়িত্ব নিশ্চিত করতে অনলাইন অডিটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি খুশি যে অনেক পঞ্চায়েত এই ব্যবস্থায় যোগদান করেছে। আমি দেশের সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধানদের অনুরোধ করব যে যদি আপনার পঞ্চায়েত এই ব্যবস্থার সঙ্গে এখনও যুক্ত না হয়ে থাকে তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা যুক্ত করুন।
বন্ধুরা,
এই বছর আমরা স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে প্রবেশ করতে চলেছি। আমাদের সামনে অনেক সমস্যা রয়েছে তবুও উন্নয়নের চাকা আমাদের দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আপনারাও নিজেদের গ্রামের উন্নয়নের লক্ষ্যগুলিও স্থির করুন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেগুলি সম্পন্ন করুন। যেমন, গ্রামসভায় আপনারা পরিচ্ছন্নতা, জল সংরক্ষণ, পুষ্টি, টিকা, শিক্ষা সম্পর্কিত অভিযান শুরু করতে পারেন। আপনাদের গ্রামের বাড়িগুলিতে জল সংরক্ষণ নিয়ে লক্ষ্য স্থির করতে পারেন। আপনাদের গ্রামে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর কীভাবে বাড়ানো যায় তার জন্য আপনি লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন। রাসায়নিক সারমুক্ত কৃষিকাজ হোক, রাসায়নিক সার বা কম জলে জন্মানো ভাল ফসলের দিকে গ্রামকে চালিত করা হোক, প্রতি ফোঁটায় বেশি ফসল, কীভাবে এক ফোঁটা জল থেকে ফসল ফলানো যেতে পারে আপনারা সেজন্যে কাজ করতে পারেন।
গ্রামের সমস্ত শিশু এবং বিশেষত গ্রামের মেয়েরা যাতে স্কুলে যায়, কারও মাঝপথে  পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, আপনাদের যৌথভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। গ্রাম পঞ্চায়েত কীভাবে দরিদ্র বাচ্চাদের অনলাইন শিক্ষায় তাদের সহায়তা করতে পারে সে বিষয়ে আপনাদের অবশ্যই চেষ্টা করা উচিত। ‘মিশন অন্ত্যোদয় সমীক্ষা’র আওতায়, গ্রামের যা যা প্রয়োজন এবং তাদের যা সমস্যা রয়েছে তা স্থির করে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সেগুলি দূর করার লক্ষ্য স্থির করা উচিত।
এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতগুলির মন্ত্র হওয়া উচিত – ‘ওষুধও, অনুশাসনও ‘। এবং আমি বিশ্বাস করি করোনার যুদ্ধে প্রথমে ভারতের গ্রামগুলিই বিজয়ী হতে চলেছে, আমার ভারতের নেতৃত্ব বিজয়ী হতে চলেছে, আমার ভারতের গ্রামের দরিদ্রতম নাগরিকেরা, গ্রামের সমস্ত নাগরিক মিলে বিজয়ী হবেন। এবং গ্রামবাসীদের এই সাফল্য দেশ এবং বিশ্বকে পথ দেখাবে.. এর কারন আমার আপনাদের প্রতি ভরসা, বিশ্বাস এবং গতবছরের অভিজ্ঞতা। আমার পুরো বিশ্বাস রয়েছে যে আপনারা তা মেনে চলবেন। এবং অত্যন্ত ভালোবাসার সঙ্গে তা পালন করবেন, এটাও আপনাদের বিশেষত্ব। আপনারা  কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে তাও ভাবেন, কারো যাতে খারাপ না লাগে তাও ভাবেন।
আপনাদের করোনার বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে তাড়াতাড়ি জয়লাভ হোক, আপনাদের গ্রামগুলি করোনামুক্ত হোক, এতে আপনারা সফল হোন, এই বিশ্বাস নিয়েই আমি আবারও একবার আপনাদের সকলের অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ!

CG/JD