Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

জাতির উদ্দেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত ২’০, (১৫তম পর্ব) অনুষ্ঠানের বাংলা অনুবাদ


আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, নমস্কার | সাধারনভাবে এই সময়টা উৎসবের | বিভিন্ন জায়গায় মেলা হয় | ধার্মিক পূজার্চনা হয় | এই করোনা সংকটেও মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা তো আছে, উৎসাহও আছে , কিন্তু আমাদের মনকে ছুঁয়ে যাওয়ার মত শৃঙ্খলাও আছে | দেখতে গেলে অনেক দিক থেকে নাগরিকদের মধ্যে দায়িত্ববোধও আছে | সাধারণ মানুষ নিজের প্রতি খেয়াল রাখার পাশাপাশি অন্যের জন্যও ভাবছেন, দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন | দেশে অনুষ্ঠিত প্রতিটি আয়োজনে যেরকম সংযম ও সহযোগিতা এবার দেখা যাচ্ছে, তা সত্যিই অভূতপূর্ব ! গনেশোৎসবও অনলাইনে উদযাপিত হচ্ছে | বেশিরভাগ জায়গাতে তো এবার পরিবেশবান্ধব গনেশজীর মূর্তি বসানো হয় |

বন্ধুগণ, আমরা যদি খুব নিবিড়ভাবে দেখি   তাহলে একবার অবশ্যই আমাদের ভাবনাতে এই কথাটা আসবে যে, আমাদের উৎসবের পর্ব এবং পরিবেশ––এই দুইয়ের মধ্যে এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে | একদিকে যেমন আমাদের উৎসবের আয়োজন পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গে সহবাসের বার্তা রয়েছে অন্যদিকে আমাদের অনেক উৎসবের পর্ব আয়োজিতই হয় প্রকৃতির সুরক্ষার জন্য | যেমন বিহারের পশ্চিম চম্পারনে বহু শতাব্দী ধরে চলে আসা থারু আদিবাসী সমাজের মানুষ ৬০ ঘন্টার লকডাউন অথবা তাঁদের ভাষায় যদি বলি ‘৬০ ঘন্টার বর্ণা’(বরণ)উদযাপন করে থাকেন| প্রকৃতির সুরক্ষায় থারু সমাজ বর্ণাকে নিজেদের ঐতিহ্যের অংশ করে তুলেছেন এবং তা বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে | এই সময়টাতে তাঁরা এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে আসেন না বা নিজেদের ঘর থেকেও বেরোনও না | কেননা তাঁরা বিশ্বাস করেন যে, এই সময় কেউ যদি গ্রামে আসেন বা গ্রাম থেকে যান তাহলে মানুষের যাতায়াতের ফলে গাছপালার ক্ষতি হতে পারে | বর্নার শুরুতে আদিবাসী ভাই-বোনেরা রীতিমত পূজার্চনা করে থাকেন এবং এই পর্বের সমাপ্তিতেও আদিবাসী সমাজের গান-বাজনা-নৃত্যের মধ্য দিয়ে জমজমাট অনুষ্ঠান হয়ে থাকে|

বন্ধুগণ, এই সময়ে ওণাম উৎসব মহা ধুমধামে উদযাপিত হচ্ছে | এই উৎসব চিঙ্গম মাসে হয় | এই সময় সাধারণ মানুষ কিছু না কিছু নতুন কিনে থাকেন | ঘর সাজান| পুক্কলম তৈরী করেন | ওণাম-সাদিয়ার আনন্দে মেতে ওঠেন | নানারকমের খেলা এবং প্রতিযোগিতারও আয়োজন হয়ে থাকে |ওণাম উদযাপনের ঢেউ তো আজ দূর-সুদূরের বিদেশেও লেগেছে | আমেরিকা হোক, ইউরোপ হোক বা উপসাগরীয় দেশ, সর্বত্র সোল্লাসে ওণাম উদযাপনের ছবি আপনি পেয়ে যাবেন | ও একটি আন্তর্জাতিক উৎসব হয়ে উঠছে |

বন্ধুগণ, ওণাম আমাদের কৃষির সঙ্গে যুক্ত উৎসব | এটা আমাদের গ্রামীন অর্থব্যবস্থার জন্যও এক নতুন সূচনার সময় বটে| কৃষকদের শক্তিতেই আমাদের জীবন, আমাদের সমাজ গতিশীল থাকে | আমাদের উৎসব কৃষকদের পরিশ্রমেই বর্ণময় হয়ে ওঠে | আমাদের অন্নদাতা, কৃষকদের জীবনদায়ী শক্তিকে বেদেও খুবই গৌরবময় ভাবে প্রনাম জানানো হয়েছে |
ঋকবেদে মন্ত্র আছে –

অন্নানং পতয়ে নমঃ , ক্ষেত্রানাম পতয়ে নমঃ | অর্থ্যাৎ অন্নদাতাকে প্রণাম | কৃষককে প্রণাম | আমাদের কৃষকেরা কঠিন করোনা পরিস্থিতিতেও নিজেদের শক্তি প্রমান করেছেন | আমাদের দেশে এইবছর গত বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি খরিফ ফসল বোনা হয়েছে | ধান প্রায় ১০ শতাংশ , ডাল প্রায় ৫ শতাংশ , মোটা দানাশস্য কোয়ার্স সিরিল্স প্রায় ৩ শতাংশ তেলবীজ প্রায় ১৩ শতাংশ , কার্পাস প্রায় ৩ শতাংশ বেশি রোপন করা হয়েছে | আমি এজন্য দেশের কৃষকদের অভিনন্দন জানাচ্ছি, তাঁদের পরিশ্রমকে প্রনাম জানাচ্ছি |

আমার প্রিয় দেশবাসীগণ,

এই করোনার সময়ে দেশ অনেক দিক থেকেই একসঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে | কিন্তু একইসঙ্গে মনে এই প্রশ্নও উঠে আসছে যে, এত লম্বা সময় ঘরে বন্দী থাকার কারণে আমার ছোট ছোট শিশুরা-বন্ধুরা কিভাবে সময় কাটাচ্ছে | আর সে ব্যাপারেই আমি গান্ধীনগরের চিলড্রেন ইউনিভার্সিটি, যা নাকি পৃথিবীর বুকে এক অন্যধরণের প্রায়োগিক নিদর্শন, ভারত সরকারের মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রক, শিক্ষা মন্ত্রক, সুক্ষ , লঘু এবং মাঝারি শিল্প উদ্যোগ মন্ত্রক সবাই মিলে আমরা শিশুদের জন্য কি করতে পারি সে ব্যাপারে বিচার বিশ্লেষণ করা হয়েছে | আমার জন্য তা খুবই সুখের বিষয় ছিল| লাভজনক ছিল | একদিক থেকে আমার জন্যও তা কিছু নতুন জেনে নেওয়া, নতুন কিছু শিখে নেওয়ার অবকাশ ছিল |

বন্ধুগণ , আমাদের ভাবনা চিন্তার বিষয় ছিল খেলনা, বিশেষ করে ভারতীয় খেলনা | আমরা মাথা ঘামিয়েছি শিশুদের জন্য নতুন নতুন খেলনা কী করে পাওয়া যেতে পারে! ভারত কিভাবে খেলনা উৎপাদনের ক্ষেত্রে অনেক বড় হাব হয়ে উঠতে পারে | এমনিতে আমি ‘মন কি বাত’ শুনতে থাকা শিশুদের মা-বাবাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি , কেন না এমনও হতে পারে , হয়তো ‘মন কি বাত’ শোনার পর খেলনার জন্য নতুন নতুন চাহিদা বা  বায়নাক্কা শোনার এক নতুন কাজ এসে জুটবে |
বন্ধুগণ, খেলনা একদিকে যেমন সক্রিয়তা বাড়ানোর ব্যাপার হয় , তেমনি খেলনা আমাদের ইচ্ছের ডানা মেলারও অবকাশ বটে | খেলনা শুধু মনই ফুরফুরে করে না , খেলনা মন তৈরী করে, উদ্দেশ্য গড়ে দেয় | আমি কোথায় যেন পড়েছিলাম যে, খেলনা নিয়ে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, বেস্ট টয়, সেরা খেলনা সেটাই হয়, যা নাকি ইনকমপ্লিট , অসম্পূর্ণ | এমন খেলনা যা অর্ধেক গড়া হয়েছে, শিশুরা খেলতে খেলতে তা সম্পূর্ণ করবে |   গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, যখন তিনি ছোট ছিলেন, নিজের কল্পনা মিশিয়ে ঘরের জিনিস দিয়েই নিজের বন্ধুদের সঙ্গে মিলে খেলা আর খেলনা তৈরী করতেন | কিন্তু একদিন শৈশবের সেই দুষ্টু-মিষ্টি সময়ের ঘরে বড়দের দখলদারির অনুপ্রবেশ ঘটলো | এমন হলো তাঁদের এক বন্ধু এক বড় আর সুন্দর দেখতে বিদেশী খেলনা নিয়ে হাজির | খেলনা নিয়ে ব্যস্ত বন্ধুদের সবাই খেলার চেয়ে সেই খেলনার দিকেই বেশি আকর্ষন বোধ করলো | সবার মনোযোগের কেন্দ্রে এখন আর খেলা নয়, খেলনা| যে শিশুরা কাল পর্যন্ত সবার সঙ্গে খেলত , সবার সঙ্গে থাকত , মিলেমিশে যেত , খেলায় ডুবে থাকত , তারা এখন দূরে দূরে থাকে | একদিক থেক অন্য শিশুদের সঙ্গে এক ভেদাভেদ যেন মনের ভেতর তৈরী হয়ে গেল | দামী খেলনার মধ্যে তো গড়ে তোলার মতো কিচ্ছু ছিল না | শেখার মতো কিছু ছিল না | মানে এক আকর্ষনীয় খেলনা এসে এক শিশুর উৎকর্ষকে যেন কোথাও দাবিয়ে দিলো, লুকিয়ে ফেললো, অচেতন করে দিলো | এই খেলনা তো ধন সম্পত্তি আর সামান্য বড় বড় ভাব দেখিয়ে ওই শিশুর সৃষ্টিশীল মন, সৃজনশীল ভাবনা বেড়ে ওঠা, পরিপক্ক হয়ে ওঠাকে আটকে দিল | খেলনা তো এলো , কিন্তু খেলা শেষ হয়ে গেল আর শিশুর বিকাশও হারিয়ে গেলো | এজন্যই গুরুদেব বলতেন, খেলনা এমন হতে হবে যা নাকি শিশুর শৈশবকে বের করে আনে | তার সৃজনশীলতাকে সামনে নিয়ে আসে |শিশুদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে খেলনার যে প্রভাব , সেটা নিয়ে জাতীয় শিক্ষা নীতিতে ব্যাপক নজর দেওয়া হয়েছে | খেলতে খেলতে শেখা, খেলনা বানাতে শেখা, যেখানে খেলনা বানানো হয় সেখানে দেখতে যাওয়া, এই সমস্ত কিছুকে পাঠক্রমের অঙ্গ করা হয়েছে|

বন্ধুগণ, আমাদের দেশে স্থানীয় খেলনার এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে| অনেক প্রতিভাবান ও দক্ষ কারিগর রয়েছেন , যাঁরা ভালো খেলনা তৈরিতে নিপুন |ভারতের কিছু জায়গা টয় ক্লাস্টার মানে খেলনার কেন্দ্রস্থল হিসেবেও গড়ে উঠছে | যেমন কর্ণাটকের রামনগরমে চন্নাপটনা, অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণাতে কন্ডাপল্লি, তামিলনাডুর তাঞ্জোর, আসামের ধুবরী , উত্তরপ্রদেশের বারানসী –এমন অনেক জায়গা রয়েছে , কত নাম গুনে বলা যেতে পারে | আপনারা জেনে অবাক হবেন , যে, গ্লোবাল টয় ইন্ডাস্ট্রির ৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ব্যবসা রয়েছে | ৭ লক্ষ কোটি টাকার এত বড় ব্যবসা অথচ এতে ভারতের অংশিদারিত্ব খুবই কম |

এবার আপনারাই ভাবুন , যে দেশের হাতে এত বড় উত্তরাধিকার, ঐতিহ্য, বৈচিত্র্য রয়েছে, যুবসম্পদ রয়েছে, খেলনার বিপননে আমাদের এতটা কম অংশিদারিত্ব, ভালো লাগবে কি ? একদমই না! এটা শোনার পর তো আপনাদের আরও ভালো লাগবে না | দেখুন বন্ধুগণ, টয় ইন্ডাস্ট্রি অনেক ব্যাপক | কুটির শিল্প হোক, ছোট ও লঘু শিল্প হোক, এমএসএমই হোক, এর পাশাপাশি  বড় এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগও এর আওতায় আছে | একে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের সম্মিলিতভাবে পরিশ্রম করতে হবে | এখন যেরকম অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের শ্রী সি.বি. রাজু আছেন | তাঁর গ্রামের এতি-কম্পকা টয় একসময় খুব চলতো | সেগুলির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সেগুলি কাঠের তৈরী | আরেক কথা হচ্ছে, এগুলির কোনভাবে কোনরকম অ্যাঙ্গেল বা কোণ থাকত না | এই খেলনাগুলি সবদিক থেকে গোলাকৃতি | ফলে সেগুলি দিয়ে শিশুদের কোনভাবেই আঘাত পাওয়ার ভয় থাকত না | সি.বি রাজু এখন এই খেলনা তৈরির জন্য গ্রামের কারিগরদের নিয়ে একদিক থেকে মুভমেন্ট বা আন্দোলন শুরু করে দিয়েছেন |উন্নততর গুনমানের এতি-কম্পকা টয় তৈরী করে সি.বি. রাজু স্থানীয় খেলনার হারানো গৌরবকে ফের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন| খেলনা নিয়ে আমরা দু’টো কাজ করতে পারি – নিজেদের গৌরবময় অতীতকে নিজেদের জীবনে আবার নিয়ে আসতে পারি| আবার নিজেদের স্বর্ণালী ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করে তুলতে পারি | আমি আমার স্টার্ট আপ বন্ধুদের , আমাদের নতুন উদ্যোগীদের বলছি, টিম আপ ফর টয়স …আসুন সবাই মিলে খেলনা তৈরী করি | এখন আমাদের সবার লোকাল খেলনার জন্য ভোকাল হওয়ার সময় | আসুন আমাদের যুব অংশের জন্য কোনো নতুন ধরনের , ভালো গুণমানের খেলনা তৈরী করি | খেলনা সেরকম হোক, যা থাকলে শৈশব জেগে ওঠে, বর্ণময় হয় | এমন খেলনা তৈরী করি, যা নাকি পরিবেশবান্ধবও বটে |

বন্ধুরা, এই ভাবেই, এখন কম্পিউটার আর স্মার্টফোনের এই জমানায় কম্পিউটার গেমস এর বিরাট ট্রেন্ড বা প্রবণতা রয়েছে  এই খেলাগুলি বাচ্চারাও খেলে, বড়রাও খেলেন। কিন্তু এতে যত গেমস আছে, সেগুলির থিমস বা বিষয়বস্তু বেশিরভাগ বিদেশেরই হয়ে থাকে। আমাদের দেশে এত ধ্যানধারনা আছে, এত প্রত্যয়ী বিষয় রয়েছে, দারুণ সমৃদ্ধ আমাদের ইতিহাস। আমরা কি সেগুলির ভিত্তিতে গেমস বানাতে পারি না? আমি দেশের তরুণ প্রতিভাদের বলছি, আপনারা ভারতেও গেমস বানান, আর, ভারতের গেমস বানান। প্রবাদে বলা হয়, -লেট দি গেমস বিগিন! তো আসুন, খেলা শুরু করে দিই!
বন্ধুরা, আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে ভার্চুয়াল গেমস হোক, টয়স হোক, সেক্টর হোক, সবাই, খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন আর এটা একটা সুযোগও। আজ থেকে একশো বছর আগে, প্রথম অসহযোগ আন্দোলন যখন শুরু হয়েছিল, তখন গান্ধীজি লিখেছিলেন, “অসহযোগ আন্দোলন হল দেশবাসীর আত্মসম্মান আর নিজের শক্তি অনুভব করানোর একটা প্রচেষ্টা।”   ।

আজ, আমরা যখন দেশকে আত্মনির্ভর বানানোর প্রচেষ্টা করছি, তো, আমাদের, পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাকে এগিয়ে নিতে হবে, প্রত্যেক ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হতে হবে। অসহযোগ আন্দোলন রূপে যে বীজ বপন করা হয়েছিল, তাকে, এখন, আত্মনির্ভর ভারতের বটবৃক্ষতে পরিবর্তিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

আমার প্রিয় দেশবাসী, ভারতীয়দের ইনোভেশন বা উদ্ভাবন আর সলিউশন বা সমাধান সূত্র প্রদানের ক্ষমতা প্রত্যেকে স্বীকার করেন, সহায়তা পেলে এই শক্তিই অসীম হয়ে যায়। এই মাসের শুরুতেই, দেশের যুবকদের সামনে, একটি অ্যাপ ইনোভেশন চাল্লেঞ্জ রাখা হয়েছিল। এই আত্মনির্ভর ভারত অ্যাপ ইনোভেশন চাল্লেঞ্জ-এ আমাদের তরুণরা বিপুল সংখ্যায় অংশ নিয়েছেন। প্রায় ৭ হাজার এন্ট্রিজ এসেছিল, তার মধ্যে, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অ্যাপস টায়ার টু আর টায়ার থ্রী শহরের যুববন্ধুরা বানিয়েছেন। এটা আত্মনির্ভর ভারতের জন্য, দেশের জন্য খুবই শুভ সংকেত। আত্মনির্ভর অ্যাপ ইনোভেশন চাল্লেঞ্জ-এর ফলাফল দেখে আপনি নিশ্চিত প্রভাবিত হবেন। অনেক বিচার বিশ্লেষণের পর,আলাদা আলাদা ক্যাটাগরি বা পর্যায়ে প্রায় দু’ ডজন অ্যাপ-কে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আপনারা এই অ্যাপগুলি সম্পর্কে জানুন, এগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। হতে পারে, আপনিও এমন কিছু বানাতে উৎসাহিত হয়ে যাবেন। এর মধ্যে একটি অ্যাপ হল কুটুর কিডস লার্নিং অ্যাপ | এটি শিশুদের জন্য এমন একটি ইন্টারেক্টিভ অ্যাপ, যেটি গান এবং গল্পের মাধ্যমে শিশুদের গণিত ও বিজ্ঞানের অনেক কিছু শিখতে সাহায্য করবে। এতে একটিভিটিসও আছে, খেলাও আছে। এইভাবে একটি মাইক্রো ব্লগিং প্লাটফর্ম এর অ্যাপও তৈরী হয়েছে। এর নাম হল কু – KOO কু। এতে নিজের মাতৃভাষায় টেক্সট, ভিডিও আর অডিও-র মাধ্যমে কথা বলতে পারবেন, মতামত বিনিময় করতে পারবেন। এই রকমই চিঙ্গারি অ্যাপ-ও তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে। একটি অ্যাপ আছে, আস্ক সরকার। এখানে চ্যাট বোট-এর মাধ্যমে আপনি মতামত বিনিময় করতে পারবেন আর যে কোনও সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে জ্ঞাতব্য তথ্য  পেতে পারেন, তাও টেক্সট, ভিডিও আর অডিও-তিন ভাবেই। এটি আপনাদের খুব সাহায্য করতে পারে। আরও একটি  অ্যাপ আছে স্টেপ সেট গো| এটি ফিটনেস অ্যাপ| আপনি কতটা হাঁটলেন, কতটা ক্যালোরিজ পুড়লো, সেই সব হিসাব এই অ্যাপটি রাখে, আর আপনাকে ফিট  রাখার জন্য উদ্দীপ্ত-ও করে। আমি কয়েকটি উদাহরণই দিলাম। কিছু আরও অ্যাপ তো এই চ্যালেঞ্জ-টা জিতেছে। অনেকগুলি বিজনেস অ্যাপ আছে, গেমস-এর অ্যাপ আছে, যেমন ইজ ইকুয়াল টু, বুকস এন্ড এক্সপেন্স , জোহো, ওয়ার্কপ্লেস, এফটিসি ট্যালেন্ট |  আপনারা এগুলির সম্পর্কে নেট-এ সার্চ করুন, আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন। আপনিও এগিয়ে আসুন, কিছু উদ্ভাবন করুন, কিছু রূপায়ন করুন। আপনার প্রচেষ্টা, আজকের ছোটো ছোটো স্টার্ট-আপস , কাল বড় বড় কোম্পানিতে পরিণত হবে, আর বিশ্বে ভারতের পরিচিতি গড়ে উঠবে। আর, আপনারা একথা ভুলবেন না যে, আজ বিশ্বে যেসব বড় বড় কোম্পানি দেখা যায়, এইগুলিও, কখনও স্টার্ট আপ কোম্পানিই ছিল।
প্রিয় দেশবাসী, আমাদের এখানকার শিশুরা, আমাদের ছাত্রছাত্রীরা, যাতে নিজেদের পূর্ণ ক্ষমতা দেখতে পারেন, নিজেদের যোগ্যতা দেখাতে পারেন, তার পিছনে বিরাট বড় ভূমিকা থাকে পুষ্টিরও। সারা দেশে সেপ্টেম্বর মাসটি পুষ্টির মাস, নিউট্রিশন মান্থ হিসাবে পালিত হবে। নেশন আর নিউট্রিশন এর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের এখানে একটি প্রবাদ আছে “যথা অন্নম, তথা মন্ত্রম”

অর্থাৎ, যেমন অন্নের ব্যবস্থা হয়, তেমনই আমাদের মানসিক আর বৌদ্ধিক বিকাশও হয় । বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, গর্ভে থাকার সময় আর শৈশবে শিশু যতটা পুষ্টির সুযোগ পাবে, ততই ভাল তার মানসিক বিকাশ হবে এবং সে সুস্থ থাকবে। শিশুদের পুষ্টির জন্য ততটাই জরুরি মায়ের সম্পুর্ণ পুষ্টির সুযোগ পাওয়া , আর পুষ্টি বা নিউট্রিশন-এর অর্থ কেবল এটাই নয় যে, আপনি কি খাচ্ছেন, কতটা খাচ্ছেন, কতবার খাচ্ছেন। এর অর্থ হল, আপনার শরীর কতটা প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর পদার্থ পাচ্ছে, নিউট্রিয়েন্ট  পাচ্ছে। কতটা আয়রন,ক্যালসিয়াম পাচ্ছে বা পাচ্ছে না, সোডিয়াম  পাচ্ছে কি না, এইগুলি পুষ্টির খুব গুরুত্বপূর্ণ দিক| পুষ্টির এই আন্দোলনে জন অংশিদারিত্ব খুব জরুরি। জনতার অংশগ্রহণেই একে সফল করতে হবে। গত কিছু বছরে, এই লক্ষ্যে, দেশে, অনেক প্রযাস নেওয়া হয়েছে। বিশেষকরে আমাদের গ্রামে একে জন-অংশীদারির মাধ্যমে আন্দোলনে পরিণত করা হচ্ছে। পুষ্টি সপ্তাহ হোক, পুষ্টির মাস হোক, বেশি বেশি করে সচেতনতা তৈরির করা হচ্ছে। স্কুলগুলিকে যুক্ত করা হয়েছে। বাচ্চাদের জন্য প্রতিযগিতা হোক, তাতে সচেতনতা বাড়ে, এর জন্য লাগাতার প্রচেষ্টা জারি আছে। যেমন ক্লাস-এ একজন ক্লাস মনিটর হয়, রিপোর্ট কার্ড এর জায়গায় নিউট্রিশন কার্ড-ও বানানো হোক, এই রকম ব্যবস্থা চালু  করা হচ্ছে। পুষ্টির মাস – পুষ্টি মাস-এর সময়ে মাই গভ পোর্টালে  একটি ফুড এন্ড নিউট্রিশন কুইজ এর  আয়োজন করা হচ্ছে আর তার সঙ্গে মিম কম্পিটিশন-ও হবে। আপনি নিজেও অংশগ্রহন  করুন আর অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন।
বন্ধুরা, আপনাদের হয়তো গুজরাটে সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের স্টাচু অব ইউনিটি দেখতে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে, আর কোভিডের পর যখন খুলবে আর আপনার যাওয়ার সুযোগ হবে, তো, দেখবেন সেখানে একটি বিশেষ ধরণের নিউট্রিশন পার্ক বানানো হয়েছে।খেলার মধ্যে দিয়েও পুষ্টির শিক্ষা আমোদ-প্রমোদের মধ্যে ওখানে অবশ্যই দেখতে পাবেন।
সাথীরা, ভারত এক বিরাট দেশ, খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রেও এর অনেক রকম বৈচিত্র্য আছে। আমাদের দেশে আলাদা আলাদা ছয়টি ঋতু আছে, আলাদা আলাদা এলাকায় সেখানকার জলবায়ুর হিসাবে আলাদা আলাদা সামগ্রী উৎপন্ন হয়।সেই কারণে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে, সেখানকার জলবায়ু , সেখানকার স্থানীয় খাওয়াদাওয়া আর সেখানে উৎপন্ন হওয়া অন্ন, ফল, সবজির হিসাবে একটি পুষ্টিকর, খাদ্যতালিকা পরিকল্পনা তৈরি হবে। এখন যেমন – মিলেটস – মোটাদানার শষ্য – যেমন বাজরা, জোয়ার, এগুলি খুব উপযোগী পুষ্টিকর খাদ্য। একটি ‘ভারতীয় কৃষি কোষ’ তৈরি করা হচ্ছে, যাতে প্রত্যেক জেলায় কোন কোন ধরণের ফসল হয়, সেগুলির পুষ্টি মূল্য  কতটা, তার সম্পূর্ণ তথ্যাবলি থাকবে। এটি আপনাদের সকলের জন্য বিরাট বড় উপযোগী একটি আকরগ্রন্থ হতে পারে। আসুন, পুষ্টির মাসে পুষ্টিকর খাদ্য সুস্থ থাকার জন্য আমাদের সবাইকে প্রেরণা দিক।
প্রিয় দেশবাসী, বিগত দিনগুলিতে, যখন আমরা স্বাধীনতা দিবস পালন করছিলাম, তখন একটি আকর্ষনীয় খবরের দিকে আমার নজর গিয়েছে। খবরটি আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সাহসী চরিত্রের। একজন সোফি আরেকজন বিদা। সোফি আর বিদা ভারতীয় সেনা-র দুটি কুকুর, ডগস, আর তাদের চিফ অব আর্মি স্টাফ কমেন্ডেশন কার্ড সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে। সোফি আর বিদাকে এই সম্মান এইজন্য দেওয়া হয়েছে, কারণ তারা, নিজেদের দেশের রক্ষার কাজ করতে গিয়ে নিজেদের কর্তব্য দারুণ দারুণভাবে পালন করেছে। আমাদের সেনাদের মধ্যে, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে, এমন কত বাহাদুর কুকুর রয়েছে, ডগস  আছে, যারা দেশের জন্য বাঁচে, দেশের জন্য নিজেদের জীবন বিসর্জন দেয়। কতগুলি বোমা বিফোরণ, কতগুলি জঙ্গি হামলার ষড়যন্ত্র আটকানোর ক্ষেত্রে এমন কুকুরগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিছুদিন আগে দেশের নিরাপত্তায় কুকুরদের ভূমিকা সস্পর্কে বেশ বিস্তারিতভাবে জানার সুযোগ হল। অনেক কাহিনীও শুনলাম। একটি কুকুর বলরাম ২০০৬ সালে অমরনাথ যাত্রার রাস্তায়, বিরাট পরিমাণে, গোলাবারুদের সন্ধান এনে দেয়। ২০০২ সালে সেনা কুকুর ভাবনা  আই ই ডি-র সন্ধান দিয়েছিল। আই ই ডি উদ্ধারের সময় জঙ্গিরা বিস্ফোরণ ঘটায় আর কুকুরটি শহিদ হয়ে যায়। দু-তিন বছর আগে, ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে সি আর পি এফ এর স্নাইফার ডগ ক্র্যাকারও আই ই ডি বিস্ফোরণে শহিদ হয়ে যায়। কিছুদিন আগে হয়তো টিভি-তে খুব বেদনাদায়ক একটি দৃশ্য দেখেছেন, যাতে বিড পুলিশ তাদের সাথী কুকুর রকিকে পূর্ণ সম্মানের সঙ্গে শেষ বিদায় জানাচ্ছেন। রকি ৩০০-র বেশি মামলার সমাধানে পুলিশকে সাহায্য করেছে। কুকুরদের বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আর উদ্ধার অভিযানে বিরাট ভূমিকা রয়েছে। ভারতে তো জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী  – এনদি আর এফ-এ এমন ডজন ডজন কুকুরকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে | কোথাও ভূমিকম্প হলে, বাড়ি ভেঙে পড়লে, ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে জীবিত ব্যক্তিদের সন্ধান করে উদ্ধারে কুকুরেরা দারুণ দক্ষ!

বন্ধুরা, আমাকে বলা হয়েছে, ভারতীয় প্রজাতির কুকুর খুব ভাল গুণমানের, খুবই সক্ষম। ভারতীয় প্রজাতির মুধোল হাউন্ড আছে, হিমাচলি হাউন্ড আছে, এগুলি খুবই ভাল প্রজাতির। রাজাপলায়ম, কন্নী, চিপ্পিপরাই আর কোম্বাইও দারুণ ভাল ভারতীয় প্রজাতির। এগুলি পালনে খরচও কম হয়, আর ভারতীয় পরিবেশের সঙ্গে মানিয়েও নেয়। এখন আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি ভারতীয় প্রজাতির কুকুরকে নিজেদের সুরক্ষা দলে অন্তর্ভুক্ত করছে। গত কিছু সময়ে সিআইএসএফ, এনএসজি  মুধোল হাউন্ড কুকুরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ডগ স্কোয়াড-এ অন্তর্ভুক্ত করেছে, সিআরপিএফ কোম্বাই প্রজাতির কুকুর–কে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পর্ষদ আই সি এ আর –ও ভারতীয় প্রজাতির কুকুর-এর উপরে গবেষনা করছে। উদ্দেশ্য হল, ভারতীয় প্রজাতিকে কিভাবে আরও দক্ষ বানানো যায়, আরও উপযোগী করে তোলা যায়। আপনি ইন্টারনেট-এ এদের নামে সার্চ করুন, এদের সম্পর্কে জানুন, আপনারা এদের সৌন্দর্য, এদের গুণাবলী দেখে স্তম্ভিত হয়ে যাবেন। এর পর, যখনই আপনারা, কুকুর পালনও শিখবেন, আপনারা অবশ্যই এগুলির মধ্যে থেকে ভারতীয় প্রজাতির কুকুর ঘরে নিয়ে আসুন। আত্মনির্ভর ভারত, যখন জন-মনের মন্ত্র হয়েই যাচ্ছে, তখন যে কোনও ক্ষেত্রেই বা আমরা এর থেকে কি করে পি পিছনে পরে থাকতে পারি।

আমার প্রিয় দেশবাসী, কিছুদিন পরেই, পাঁচই সেপ্টেম্বর আমরা শিক্ষক দিবস পালন করবো। আমরা সবাই যখন আমাদের জীবনের সফলতাগুলি নিজেদের জীবন যাত্রায় খতিয়ে দেখি, তখন আমাদের কোনও না কোনও শিক্ষকের কথা অবশ্যই মনে পড়ে যায়। দ্রুত পরিবর্তনশীল সময় আর করোনার সঙ্কটকালে আমাদের শিক্ষকদের সামনেও সময়ের সঙ্গে পরিবর্তনের একটি চ্যালেঞ্জ এসেছে। আমার আনন্দ হচ্ছে যে, আমাদের শিক্ষকরা কেবল সেই চ্যালেঞ্জকে স্বীকারই করেননি, বরং, তাকে সুযোগে বদলে নিয়েছেন। পড়ার কৌশলের কিভাবে বেশি করে উপযোগ করা যায়, নতুন পদ্ধতিকে কিভাবে রূপায়ণ করা যায়, কিভাবে ছাত্রদের সহায়তা করা যায়, এগুলি আমাদের শিক্ষকরা সহজেই আত্মস্থ করেছেন এবং নিজেদের ছাত্র-ছাত্রী-দেরও শিখিয়েছেন। আজ, দেশে, প্রত্যেক জায়গায় কিছু না কিছু উদ্ভাবন হচ্ছে। শিক্ষক আর ছাত্ররা মিলে কিছু না কিছু নতুন করছেন। আমার আস্থা আছে, যেভাবে দেশে  জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে বিরাট এক নতুন পরিবর্তন আসছে, আমাদের শিক্ষকরা তার লাভ ছাত্রদের কাছে পৌঁছানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

সাথীরা, বিশেষকরে আমার শিক্ষক সাথীরা, ২০২২-এ আমাদের দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালন করবে। স্বাধীনতার আগে বহু বছর যাবৎ আমাদের দেশে স্বাধীনতার লড়াইয়ের এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এই সময়ে দেশের এমন কোনও প্রান্ত ছিল না, যেখানে স্বাধীনতার সংগ্রামীরা নিজেদের প্রাণ বলিদান করেননি।, নিজদের সর্বস্ব ত্যাগ করেননি। এটা খুবই জরুরি যে আজকের প্রজন্ম, আমাদের শিক্ষার্থী, স্বাধীনতার যুদ্ধে আমাদের দেশের নায়কদের সম্পর্কে জানুন, তাকে ততটাই অনুভব করুন। নিজেদের জেলায়, নিজের এলাকায়, স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় কি হয়েছিল, কে শহিদ হয়েছিলেন, কে কত বছর দেশের জন্য কারাগারে ছিলেন। এইসব কথা আমাদের শিক্ষার্থীরা জানলে তাঁদের ব্যক্তিত্বেও এদের প্রভাব দেখা যায়, তার জন্য অনেক কাজ করা যেতে পারে, যাতে আমাদের শিক্ষকদের বিরাট বড় দায়িত্ব আছে। যেমন, আপনি যে জেলায় আছেন, সেখানে শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলা এই স্বাধীনতার সংগ্রামে কি কি ঘটনা ঘটেছে? এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দিয়ে গবেষনা করানো যেতে পারে। সেগুলি স্কুল থেকে হাতে লেখা পত্রিকা হিসাবে প্রকাশিত হতে পারে। আপনার শহরে স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত স্থানগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে যেতে পারেন। কোনও স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে নিজেদের এলাকার ৭৫ জন নায়কের উপরে কবিতা লিখবেন, নাটক লিখবেন। আপনার প্রচেষ্টা দেশের হাজার হাজার লাখ লাখ অকথিত বা অজানা বীর-দের সামনে নিয়ে আসবে, যাঁরা দেশের জন্য জীবন ধারণ করেছেন, দেশের জন্য শেষ হয়ে গিয়েছেন, যাঁদের নাম সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ভুলে গিয়েছে, এমন মহান ব্যক্তিদের যদি আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছরে সামনে নিয়ে আসি, তাহলে তাঁদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি হবে। আর, ৫ সেপ্টেম্বর তো শিক্ষক দিবস পালন করছি, তাই আমি আমার শিক্ষক সাথীদের অবশ্যই অনুরোধ করবো যে, তারজন্য একটা পরিবেশ তৈরি করে সবাইকে যুক্ত করুন আর সকলে মিলে তাতে লেগে পড়ুন।

আমার প্রিয় দেশবাসী, দেশ আজ বিকাশের পথে চলেছে। এর সাফল্য তখনই সুখদায়ক হবে যখন প্রত্যেক দেশবাসী তাতে অংশ নেবেন, এই যাত্রার যাত্রী হবেন, এই পথের পথিক হবেন। সেইজন্য এটা জরুরি যে, প্রত্যেক দেশবাসী সুস্থ থাকুন, সুখী থাকুন, আর আমরা সকলে মিলে করোনাকে সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত করি। করোনা তখনই হারবে যখন আপনি নিরাপদ থাকবেন, যখন আপনারা “দো গজ কি দূরি, মাস্ক জরুরি’, এই শপথকে পরিপূর্ণভাবে  পালন করবেন। আপনারা সুস্থ থাকুন, সুখী থাকুন, এই শুভকামনার সঙ্গে পরের বারের মনের কথায় আবার মিলিত হওয়ার আকাঙ্খায়।

অনেক অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।

CG/CB