আমার প্রিয় দেশবাসী, অন্যান্যবার ‘মন কি বাত’-এ আমি কত রকমের বিষয় নিয়ে হাজির হই, কিন্তু আজ দেশ এবং দুনিয়ার মনে একটিই এবং শুধু মাত্র একটিই কথা — করোনা মহামারী থেকে তৈরি হওয়া ভয়ঙ্কর সংকট। এই সময়ে আমার অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলা উচিত হবে না। গুরুত্বপূর্ণ কথা অনেক বলা যাবে, কিন্তু আজ আমার মন চাইছে এই মহামারী নিয়েই কিছু বলি। তবে সবার আগে আমি আমার সমস্ত দেশবাসীর কাছে মাপ চেয়ে নিচ্ছি। আমার মন বলছে, আমার কিছু সিদ্ধান্তের জন্য যে আপনাদের প্রচণ্ড অসুবিধার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, সেজন্য আপনারা আমাকে নিশ্চয়ই মার্জনা করে দেবেন। বিশেষ করে আমার গরীব ভাই-বোনেরা নিশ্চয়ই ভাবছেন যে এ কেমন প্রধানমন্ত্রী, যে আমাদের এই রকম মুস্কিলে ফেলে দিল! তাঁদের কাছেও আমি বিশেষভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। হয়ত অনেকে আমার ওপর বিরক্তও হয়েছেন যে সবাইকে ঘরে বন্ধ করে রেখেছে, এ কেমন ব্যাপার!
আমি আপনাদের অসুবিধে — আপনাদের সমস্যা বুঝতে পারছি, কিন্তু ভারতের মত ১৩০ কোটি জনসংখ্যার একটি দেশে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অন্য আর কোনো রাস্তা ছিল না। করোনার সঙ্গে যুদ্ধ হল জীবন আর মৃত্যুর যুদ্ধ, আর এই যুদ্ধ আমাদের জিততেই হবে। আর সেজন্যেই কঠিন হওয়া জরুরি। কারুর ইচ্ছে করে না এত কঠোর পদক্ষেপ নিতে, কিন্তু গোটা দুনিয়ার অবস্থা দেখার পর মনে হয় এছাড়া গত্যন্তর ছিল না। আপনাদের এবং আপনাদের পরিবারগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। আমি আবার একবার আপনাদের যাবতীয় অসুবিধার জন্য মাপ চাইছি। বন্ধুগণ, কথায় আছে — ‘এবংএবংবিকারঃ, অপিতরুনহাসাধ্যতেসুখং’, অর্থাৎ রোগ এবং তার প্রকোপের ব্যাপারে শুরুতেই ব্যবস্থা নিতে হয়, কারণ পরে যখন তা আয়ত্বের বাইরে চলে যায় তখন প্রতিকার করাই মুশকিল হয়ে যায়। আজ গোটা ভারত, প্রত্যেক ভারতবাসী তা-ই করছেন। ভাই-বোন, মা এবং প্রবীণেরা, করোনা ভাইরাস সারা দুনিয়াকে বন্দি করে দিয়েছে। সে জ্ঞান, বিজ্ঞান, ধনী, দরিদ্র, দুর্বল, শক্তিমান — সকলকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। একে কোনো রাষ্ট্রসীমায় বাঁধা যায় না, কোনো এলাকা বা আবহাওয়ারও এ তোয়াক্কা করে না। এই ভাইরাস মানুষকে শুধু মারা নয়, একেবারে শেষ করে দেবার জেদ ধরে বসে আছে, আর সেই জন্যেই সব্বাইকে, পুরো মানবজাতিকে একজোট হয়ে এই ভাইরাসকে খতম করার সংকল্প নিতে হবে। কিছু মানুষের মনে হচ্ছে, ‘লকডাউন’ পালন করে তাঁরা অন্যের উপকার করছেন। এরকম ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করা ঠিক নয়। এই লকডাউন আপনাদের নিজেদের বাঁচার জন্যে। আপনাদের নিজেকে বাঁচতে হবে, নিজের পরিবারকে বাঁচাতে হবে। এখন আগামী বেশ কিছু দিন পর্যন্ত আপনাদের এই ধৈর্য দেখাতে হবে, লক্ষণরেখাটি মেনে চলতে হবে। সাথীরা, আমি জানি, আইন কেউ ভাঙতে চান না, নিয়মকেও ভাঙতে চান না, তবু কিছু লোক যে তা করছেন তার কারণ হল, তাঁরা পরিস্থিতির গুরুত্বটাই এখনও বুঝতে পারছেন না। এঁদের একথাই বলব যে, লকডাউনের নিয়ম যদি ভাঙেন তাহলে করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচা মুশকিল হয়ে যাবে। সারা পৃথিবীতে কিছু লোক, যাঁরা এই রকম ভুল করেছিলেন, তাঁরা আজ পস্তাচ্ছেন। বন্ধুরা, কথিত আছে – ‘আরোগ্যমপরমভাগ্যম / স্বাস্থ্যংসর্বার্থসাধনম’ অর্থাৎ আরোগ্যই সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য, এবং স্বাস্থ্যই দুনিয়ার সমস্ত সুখের সাধন। নিয়ম যাঁরা ভাঙছেন তাঁরা আসলে নিজেদের জীবন নিয়েই ছেলেখেলা করছেন।
বন্ধুগণ, এই লড়াইয়ে এমনও অনেক যোদ্ধা আছেন যাঁরা ঘরে নয়, ঘরের বাইরে থেকে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করছেন যাঁরা আমাদের ফ্রন্টলাইন সোলজার্স-সামনের সারির যোদ্ধা। এর মধ্যে বিশেষ করে আমাদের সেই সব ভাইবোনেরা রয়েছেন যাঁরা নার্সিংয়ের কাজ করেন, রয়েছেন ডাক্তার এবং প্যারামেডিকেল কর্মীরা। সেই সব বন্ধুরা যাঁরা করোনাকে পরাজিত করেছেন, তাঁদের থেকে আমাদের প্রেরণা নিতে হবে। গত কয়েক দিনে আমি এই রকম কিছু মানুষের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি, তাঁদের উৎসাহ দিয়েছি এবং তাঁদের সঙ্গে কথা বলে আমার নিজেরও উৎসাহ বেড়ে গেছে। আমি তাঁদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। এবারের ‘মন কি বাত’-এ আমি সেই সব বন্ধুদের অনুভব, তাঁদের কথাবার্তার কিছু অংশ আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। প্রথমে আমাদের মধ্যে আসবেন শ্রী রামগম্পা তেজা-জী। যিনি একজন তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কর্মরত। আসুন, তাঁর কথা শুনি।
রামগম্পা তেজা : নমস্কার।
মোদিজি : কে, রাম বলছেন?
রামগম্পা : হ্যাঁ, আমি রাম বলছি।
মোদিজী : হ্যাঁ, রাম, নমস্কার।
রামগম্পা : নমস্কার, নমস্কার।
মোদিজী : আমি শুনেছি, আপনি করোনা সংক্রমণের এই গভীর বিপদ কাটিয়ে উঠেছেন।
রামগম্পা : হ্যাঁ।
মোদিজী : আমি আপনার সঙ্গে কিছু কথা বলতে চাই। আপনি এই বিপদ কাটিয়ে উঠেছেন এ ব্যাপারে আপনার অভিজ্ঞতার কথা কিছু বলুন।
রামগম্পা : আমি আই-টি সেক্টরের একজন কর্মী। কাজের প্রয়োজনে আমাকে দুবাইতে একটি মিটিংয়ে যেতে হয়েছিল। সেখানে আমার অজান্তেই এই সংক্রমণ ঘটে যায়। দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে জ্বর এবং বাকি সব উপসর্গ দেখা দেয়। পাঁচ-ছয় দিন বাদে ডাক্তারেরা যখন করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করলেন তখন সেটা পজিটিভ এল। তখন আমি হায়দ্রাবাদে গান্ধী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হই এবং চোদ্দদিন বাদে ঠিক হয়ে যাওয়ার পর আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সকলে একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিল।
মোদিজী : অর্থাৎ যখন আপনার সংক্রমণ ধরা পড়ে?
রামগম্পা : হ্যাঁ।
মোদিজী : এই ভাইরাসটি যে খুব মারাত্মক সেটা তাঁদের আগেই জানা ছিল নিশ্চয়ই।
রামগম্পা : হ্যাঁ।
মোদিজী : রোগ ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার একদম প্রথম প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
রামগম্পা : প্রথমে তো খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। শুরুতে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে রোগটা আমার হয়েছে, কী করেই বা হল। কারণ, ভারতে তখন দু-তিনজনের সংক্রমণ হয়েছে। তাঁদের বিষয়ে কিছু জানতাম না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আমাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। ওখানে প্রথম দু-তিন দিন এমনিই কেটে যায়। কিন্তু ওখানকার ডাক্তার এবং নার্স যাঁরা আছেন আমার সঙ্গে তাঁরা খুব ভালো ব্যবহার করেছিলেন। প্রত্যেক দিন আমাকে ফোন করে কথা বলতেন এবং ভরসা দিতেন যে কিছু হবে না, আপনি ঠিক হয়ে যাবেন। দিনে দু-তিনবার ডাক্তার এবং নার্সরা আমার সঙ্গে কথা বলতেন। প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম বটে কিন্তু তারপরে মনে হত এতসব ভালোমানুষের সঙ্গে আছি, এক্ষেত্রে কী করা উচিত সেটা তাঁরা জানেন কাজেই আমি নিশ্চয়ই ভালো হয়ে যাব। এই রকমই মনে হয়েছিল।
মোদিজী : পরিবারের বাকি লোকদের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল?
রামগম্পা : যখন আমি হাসপাতালে ভর্তি হলাম, প্রথমে তো সকলে খুব চাপের মধ্যে ছিল, সবার অতিরিক্ত খেয়াল দেবার কারণে একটু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু হ্যাঁ, সবার আগে ওদের পরীক্ষা করাই। সকলেই নেগেটিভ আসে যেটা খুব বড় আশীর্বাদ ছিল আমার ও আমার পরিবারের জন্য, আমার আশেপাশের মানুষদের জন্য। তারপর তো প্রতিদিন অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ডাক্তাররা আমাকে ও আমার পরিবারকে এই কথা-ই জানান।
মোদিজী : আপনি কী কী সাবধানতা অবলম্বন করেন? আপনার পরিবার কী কী বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখে?
রামগম্পা : প্রথম যখন জানতে পারি তখন আমি কোয়ারান্টাইনে এ ছিলাম। তারপর আরও চোদ্দ দিন ডাক্তাররা আমায় নিজের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেয়। তারা বলে নিজের ঘরে হাউস কোয়ারান্টাইনে থাকতে। সুতরাং ফেরার পর আমি নিজের বাড়িতেই আছি। নিজের ঘরেই থাকি বেশীরভাগ, সবসময় মাস্ক পড়ে থাকি। খাওয়ার সময় হাত ধোয়া ভীষণ জরুরি, সেই সব খেয়াল রাখি।
মোদিজী : ঠিক আছে রাম, আপনি সুস্থ হয়ে এসেছেন, আপনাকে ও আপনার পরিবারকে আমার শুভ কামনা রইল।
রামগম্পা : ধন্যবাদ
মোদিজী : কিন্তু আমি চাই আপনার অভিজ্ঞতা।
রাম : হ্যাঁ।
মোদিজী : আপনি তো তথ্যপ্রযুক্তির পেশার সাথে যুক্ত?
রাম : হ্যাঁ
মোদিজী : আমি চাই আপনি অডিও বানিয়ে সবার সাথে শেয়ার করুন, স্যোসাল মিডিয়াতে ভাইরাল করুন। এর ফলে মানুষ ভয় পাবেনা, খুব সহজেই জানতে পারবে কি করনীয়।
রাম : হ্যাঁ, আমি বাইরে আসা ইস্তক দেখছি লোকে কোয়ারান্টাইন মানে জেল যাওয়ার মত ভাবছে। কিন্তু ব্যাপারটা সেরকম নয়। সবার জানা দরকার সরকারী নজরদারীতে আলাদা থাকাটা তাদের জন্য, তাদের পরিবারের জন্য। আমি সবাইকে বলতে চাই, পরীক্ষা করান, কোয়ারান্টাইনকে ভয় পাবেন না। কোনো লজ্জা থাকা উচিত নয় আলাদা নজরদারীতে থাকার বিষয়টার উপর।
মোদিজী : ঠিক আছে রাম, অনেক অনেক শুভ কামনা আপনাকে।
রাম : ধন্যবাদ!
মোদিজী : ধন্যবাদ ভাই, অনেক ধন্যবাদ!
বন্ধুরা, করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ার পর রাম ডাক্তারের প্রত্যেকটা নির্দেশ পালন করেন এবং তার ফলস্বরূপ সে এখন সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছে। আমাদের সঙ্গে এখন আর এক বন্ধু আছেন যিনি করোনাকে পরাজিত করেছেন। এঁর গোটা পরিবার সংকটাপন্ন হয়ে গিয়েছিল। তাঁর তরুন ছেলে ফেঁসে গিয়েছিল। আসুন, কথা বলি আগ্রার শ্রী অশোক কপুরের সঙ্গে।
মোদিজী : অশোকজি, নমস্কার
অশোক কাপুর : নমস্কার। আমার সৌভাগ্য যে আপনার সাথে কথা বলতে পারছি।
মোদিজী : আমারও সৌভাগ্য। আপনার পুরো পরিবার এই সংকটে পড়েছিল?
অশোক কাপুর : আজ্ঞে হ্যাঁ।
মোদিজী : আমি জানতে চাই আপনি এই সংক্রমণের ব্যাপারে জানতে পারলেন কিভাবে? ঠিক কি হয়েছিল? হাসপাতালে কি হয়েছিল? আপনার কথা শুনে যদি এমন কিছু জানতে পারি যা দেশের কাজে আসবে আমি তাই করব।
আশোক কাপুর : নিশ্চয়ই। আমার দুই ছেলে। ওরা ইতালি গিয়েছিল। ওখানে জুতো শিল্প মেলায় ছিল। আমরা জুতোর কারবার করি, কারখানা আছে জুতো তৈরির। ওরা ইতালি গিয়েছিল, মেলায়। আমার জামাইও গিয়েছিল। ও দিল্লিতে থাকে। ওর একটু অসুবিধা হচ্ছিল বলে ও রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল যায়। ওখানে ওকে পজিটিভ বলে আর সাফদারজাং পাঠিয়ে দেয়। আমাদের কাছে ফোন আসে যে আপনারাও ওঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন সুতরাং আপনারাও পরীক্ষা করান। তাই আমার দুই ছেলে পরীক্ষা করাতে চলে যায় আগ্রা জেলা হাসপাতালে। সেখানে ওদের বলে গোটা পরিবারকে নিয়ে আসতে। আমরা সবাই যাই।
মোদিজী : আচ্ছা
অশোক কাপুর : পরের দিন ওঁরা আমাদের ছয়জনকে মানে আমার দুই ছেলে, আমি — আমার বয়স তিয়াত্তর বছর, আমার স্ত্রী, এক বউমা ও ষোলো বছরের নাতি — সকলকে পজিটিভ বলে আর জানায় যে আমাদের দিল্লি যেতে হবে।
মোদিজী : হে ভগবান!
অশোক কাপুর : কিন্তু স্যার, আমরা ভয় পাইনি। ভাবলাম, মন্দের ভাল, অন্তত জানতে তো পেরেছি। আমরা দিল্লির সাফদারজাং হাসপাতালে চলে যাই। আগ্রা থেকেই আমাদের পাঠানো হয়। ওরা আমাদের বিনামূল্যে দুটো অ্যাম্বুলেন্সে পাঠায়। আমরা খুব কৃতজ্ঞ আগ্রার ডাক্তারদের কাছে, এখানকার প্রশাসনের কাছে। এঁরা আমাদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে।
মোদিজী : আপনারা অ্যাম্বুলেন্সে আসেন?
অশোক কাপুর : হ্যাঁ অ্যাম্বুলেন্সেই এসেছি। ভালোই ছিলাম, বসেছিলাম, যেরকম অ্যাম্বুলেন্সে বসা যায় আর কি। ওঁরা আমাদের দুটো অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন, সঙ্গে ডাক্তারও দিয়েছিলেন, আর আমাদের সাফদারজং হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। সাফদারজং হাসপাতালে ডাক্তাররা গেটে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা আমাদেরকে নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে নিয়ে গেলেন। আমাদের ছয়জনকে আলাদা আলাদা রুম দেওয়া হল। রুমগুলো ভালোই ছিল, সব ব্যবস্থাই ছিল। আমরা চৌদ্দ দিন হাসপাতালে একান্তেই কাটিয়েছি। ডাক্তারদের কথা বলতে গেলে এটুকুই বলবো যে তাঁরা আমাদের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করেন, আমাদের ভালোভাবে চিকিৎসা করেন। আসলে তাঁরা সেই বিশেষ পোশাকটি পড়তেন তো তাই বোঝা যেত না কে ডাক্তার, কে ওয়ার্ড বয়, বা কে নার্স। তাঁরা যা যা বলতেন, আমরা শুনতাম। তাই আমাদের কারও ১ শতাংশও কোন সমস্যা হয়নি।
মোদিজী : মনে হচ্ছে আপনার আত্মবিশ্বাসও বেশ দৃঢ়।
অশোক কাপুর : হ্যাঁ, আমি একদম সুস্থ আছি। আমিতো আমার হাঁটুর অপারেশনও করিয়েছি, তার পরেও আমি একদম ভালো আছি।
মোদিজী : না, কিন্তু যখন আপনার পরিবারকে এত বড় সংকটের মোকাবিলা করতে হলো, যার মধ্যে একটি ষোলো বছরের বাচ্চাও ছিল…
অশোক কাপুর : মহাশয় ওর পরীক্ষা ছিল। আই-সি-এস-সি’র পরীক্ষা। আমরা ওকে পরীক্ষা দিতে দিইনি। আমি বললাম পরে দেখা যাবে। প্রাণ থাকলে তবেই পরবর্তীতে এরকম অনেক পরীক্ষা দিতে পারবে। এই নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই।
মোদিজী : হ্যাঁ একদম ঠিক বলেছেন। আপনার অভিজ্ঞতা দিয়ে আপনি আপনার পরিবারকে ভরসা জুগিয়েছেন, তাদের আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়েছেন।
অশোক কাপুর : হ্যাঁ, সেই কঠিন সময়ে আমাদের পরিবারের প্রত্যেকে একে অপরের মনোবল বাড়াতাম। আমাদের দেখা হতো না ঠিকই, কিন্তু ফোনে আমরা কথা বলে নিতাম। আর আমাদের সম্পূর্ণ দেখভাল, যতটা সম্ভব, ততটা ডাক্তাররা করেছেন। তার জন্য আমরা ওঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। হাসপাতালের কর্মীরা, নার্সরা, আমাদের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন।
মোদিজী : আমার পক্ষ থেকে আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
অশোক কাপুর : অনেক ধন্যবাদ। আপনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাওয়ায় আমি আপ্লুত।
মোদিজী : আমরাও
অশোক কাপুর : এর পরেও বলব মহাশয় যদি আমাদেরকে কোন ব্যাপারে প্রয়োজন হয়, তা সে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য কোথাও যাওয়াই হোক, বা অন্য কোন কাজে, আমাদেরকে বলবেন, আমরা সব সময়ই প্রস্তুত।
মোদিজী : আপনারা আপনাদের মত করে আগ্রাতেই সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারেন। ক্ষুধার্ত কাউকে দেখলে তাকে খাবার দিতে পারেন। গরিব মানুষের কথা চিন্তা করুন আর কি কি নিয়ম পালন করা উচিত তা লোকজনকে বোঝান। লোকেদের জানান যে কীভাবে নিয়ম পালন করেই, নিয়মের মধ্যে থেকেই আপনি এবং আপনার পরিবার এই সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়েছেন। তাঁদের বোঝান যে নিয়ম পালন করলেই দেশ এই সংকটের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
অশোক কাপুর : মহাশয়, আমরা আমাদের ভিডিও বানিয়ে বিভিন্ন চ্যানেলে দিয়েছি।
মোদিজী : আচ্ছা।
অশোক কাপুর : চ্যানেলে ইতিমধ্যে সেগুলো দেখিয়েছে যাতে সচেতনতা বৃদ্ধি হয়।
মোদিজী : সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে এ বিষয়ে আরও বেশি প্রচার করতে হবে।
অশোক কাপুর : আমরা যে কলোনিতে থাকি তা বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। আমি সবাইকে বলে দিয়েছি যে আমরা ফিরে এসেছি বলে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। কারও যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তাহলে গিয়ে যেন পরীক্ষা করায়। যাঁরা যাঁরা আমাদের সংস্পর্শে আসবেন তাঁরা যেন পরীক্ষা অবশ্যই করান। ঈশ্বরের কৃপায় সবাই যেন ভাল থাকেন।
মোদিজী : আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
অশোক কাপুর : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। আমার তো এটা ভেবেই খুব আনন্দ হচ্ছে যে আপনার সঙ্গে কথা হয়ে গেল। আপনাকে একবার দেখেছিলাম আমেদাবাদে, এখন আপনার সঙ্গে কথাও হয়ে গেল। আমাদের বাড়ি মণি নগরে।
মোদিজী : আচ্ছা আচ্ছা।
অশোক কাপুর : আপনাকে সেখানে দেখেছিলাম একবার, আমার দাদা সেখানে থাকেন।
মোদিজী : আচ্ছা, এখন আপনারা সপরিবারে আগ্রায় থাকেন?
অশোক কাপুর : হ্যাঁ আমরা আগ্রাতে থাকি ।আমার আরও দুই ভাই মণি নগর এবং আমেদাবাদে থাকেন।
মোদিজী : আচ্ছা আচ্ছা বেশ।
অশোক কাপুর : সেটা তো আপনার নির্বাচনক্ষেত্র ছিল, যখন আপনি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
মোদিজী : হ্যাঁ আমি সেই অঞ্চলেরই বিধায়ক ছিলাম।
অশোক কাপুর : হ্যাঁ, মহাশয় আমি একবার সেখানেই ছিলাম যখন আপনার প্রচার চলছিল। খুব ভালো লাগলো আপনার সঙ্গে কথা বলতে পেরে।
মোদিজী : অনেক ধন্যবাদ, অনেক শুভেচ্ছা।
অশোক কাপুর : অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বন্ধুরা, আমরা অশোকবাবু এবং তাঁর পরিবারের দীর্ঘায়ু কামনা করি। যেমন তিনি বললেন যে আতঙ্কিত না হয়ে, নির্ভয়ে যথাসময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা, সময় মতো ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করেই আমরা এই মহামারীটিকে পরাস্ত করতে পারি। বন্ধুরা, আমরা কীভাবে চিকিত্সার মাধ্যমে এই মহামারীটির মোকাবিলা করছি তার অভিজ্ঞতা জানতে, আমি এমন কয়েকজন ডাক্তারের সঙ্গেও কথা বললাম যারা এই যুদ্ধে প্রথম সারির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁদের রোজনামচা এখন এই রোগীদেরকে ঘিরেই। আসুন দিল্লি থেকে ডাঃ নীতেশ গুপ্তের সঙ্গে আমরা কথা বলি।
মোদিজী : নমস্কার ডাক্তারবাবু।
ডাঃ নীতিশ গুপ্তা: নমস্কার স্যার।
মোদিজী : নমস্কার নীতিশ-জী, আপনি তো বাহিনীতে একেবারে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। আমি জানতে চাইছি যে হাসপাতালে আপনার বাকি সাথীদের মনোবল কেমন আছে?
ডাঃ নীতিশ গুপ্তা: সবারই মনোবল তুঙ্গে আছে। আপনার আশীর্বাদ সবার সঙ্গে আছে। হাসপাতালগুলিকে আপনি যেভাবে সাহায্য করছেন, যে জিনিসটা আমরা চাইছি, সেটাই আপনি যোগান করছেন, যেভাবে সেনাবাহিনী সীমান্তে লড়াই করে, আমরাও ঠিক সেভাবে কাজে লেগে রয়েছি এবং আমাদের কেবলমাত্র একটাই কর্তব্য, রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠানো।
মোদিজী : আপনি একদম ঠিক বলেছেন, এটা সত্যিই একটা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি এবং আপনারাই সীমান্ত সামলাচ্ছেন।
ডাঃ নীতেশ গুপ্তা : হ্যাঁ সার।
মোদিজী : আপনাদের তো রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের কাউন্সেলিংও করতে হচ্ছে…
ডা নীতেশ গুপ্তা : হ্যাঁ সার, ওটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। কারণ রোগীরা যখন প্রথম জানতে পারেন তাঁদের কী হয়েছে তখন তাঁরা ভীষণ ভয় পেয়ে যান। ভাবেন এটা কী হচ্ছে আমার সঙ্গে…ওঁদের বোঝাতে হয় যে এটা কিছু না, আগামী ১৪ দিনে আপনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন। এখনো পর্যন্ত আমরা এরকম ১৬জন রোগীকে বাড়ী পাঠাতে সক্ষম হয়েছি।
মোদিজী : তাহলে এটা বলুন যে সব মিলিয়ে আপনাদের সামনে কী-কী সমস্যা আসছে, ভীত ব্যক্তিদের কী নিয়ে সবচেয়ে সংশয় হচ্ছে?
ডাঃ নীতেশ গুপ্তা : ওঁরা এটাই ভাবেন যে সামনে কী হবে? এবার ওঁদের কী হবে? আসলে ওঁরা দেখেছেন যে বাইরের দেশে এত লোক মারা যাচ্ছেন, তো ওঁরা ভাবেন ওঁদের সঙ্গেও এই পরিণতিই হবে। তখন আমাদের ওদেরকে বোঝাতে হয় যে আপনার এই সমস্যা এই দিনে ঠিক হবে। আপনার কেসটি ভীষণ অল্প, সাধারণ সর্দি–কাশীর কেসগুলো ঠিক এরকমই হয়। তাই ওঁরা যেরকম ৫–৭দিনে সেরে ওঠেন, আপনারাও উঠবেন। তারপর আমরা আপনাদের টেস্ট করব, সেটা নেগেটিভ এলে আপনাকে আমরা বাড়ী পাঠাতে পারব। এই জন্যই বার–বার, তিন–চার ঘন্টা অন্তর–অন্তর
#MannKiBaat begins with an important message by PM @narendramodi. pic.twitter.com/ZmrgbPpNN6
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
The battle against COVID-19 is tough and it did require some tough decisions.
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
It is important to keep the people of India safe. #IndiaFightsCorona pic.twitter.com/iYuj4PJNAr
Together, India will defeat COVID-19.
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
The Lockdown will keep you as well as your families safe. #MannKiBaat pic.twitter.com/OoSIRtz05r
Please remain indoors. #MannKiBaat pic.twitter.com/DasCoeLFgM
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
In times such as these, precautions are most important. #MannKiBaat pic.twitter.com/KWsp6JU47Z
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
India salutes those at the forefront of fighting COVID-19. #MannKiBaat pic.twitter.com/EVGRqBUvvX
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
PM @narendramodi interacts with Ram from Hyderabad who recovers from COVID-19. #MannKiBaat https://t.co/bBE5JIdIiB
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
On my return from Dubai I felt feverish.
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
The tests revealed I was COVID-19 positive.
Doctors and nurses were very kind to me.
I first and foremost told my family to get tested: Ram #MannKiBaat
On getting to know I was COVID-19 positive I immediately went into quarantine. Even after recovery, I prefer to stay alone for a few days. I wash my hands regularly now: Ram #MannKiBaat
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
PM @narendramodi now interacts with Ashok Ji from Agra. Do hear their interaction. #MannKiBaat https://t.co/bBE5JIdIiB
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
I am very thankful to the authorities and staff in Agra. I am equally grateful to the hospital authorities in Delhi.
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
The doctors were prompt.
We had good rooms during our treatment: Ashok Ji tells PM @narendramodi #MannKiBaat
Now, PM @narendramodi is interacting with Dr. Gupta from Safdarjung Hospital. #MannKiBaat https://t.co/bBE5JIdIiB
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
Dr. Borse shares his experiences with PM @narendramodi. #MannKiBaat https://t.co/bBE5JIdIiB
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
PM @narendramodi salutes hardworking nurses who are working 24/7 to create a healthier India. #MannKiBaat pic.twitter.com/sXzGT4bwSB
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
India honours our Daily Life Heroes.
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
They are doing so much so that we can lead our lives normally. #MannKiBaat pic.twitter.com/FxjasZ7pdv
Hearing of some things that are making me sad.
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
Social distance does not mean emotional distance. #MannKiBaat pic.twitter.com/Apmo70g14u
Many have gone into quarantine despite having no symptoms. I applaud them for their spirit of responsibility. #MannKiBaat pic.twitter.com/76MtOes1Cj
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
People from all over the India are sharing their experiences about what they are doing during this Lockdown period. #MannKiBaat pic.twitter.com/KoLKz3j9YB
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
Let us boost emotional distancing in this time of social distancing. #MannKiBaat pic.twitter.com/siKcZVWV8d
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
Together, India will defeat COVID-19. #MannKiBaat pic.twitter.com/hJUppMJvT0
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
Caring for each and every Indian, especially the poorest of the poor. #MannKiBaat pic.twitter.com/IOMoDuYkve
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020
Stay home today, for a better and healthier tomorrow. #MannKiBaat pic.twitter.com/jn9mlkxPxZ
— PMO India (@PMOIndia) March 29, 2020