Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

জল জীবন মিশনের আওতায় হর ঘর জল উৎসব নিয়ে ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

জল জীবন মিশনের আওতায় হর ঘর জল উৎসব নিয়ে  ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লি,  ১৯ আগস্ট, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এক ভিডিও বার্তায় জল জীবন মিশনের আওতায় হর ঘর জল উৎসব নিয়ে বক্তব্য রাখেন। গোয়ার পানাজিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। জন্মাষ্টমীর আজ পুন্য লগ্নে প্রধানমন্ত্রী শ্রীকৃষ্ণ ভক্তদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

অমৃতকালে ভারত তিনটি মাইল ফলকের সুউচ্চ লক্ষ্য অর্জনে আজ যে সমর্থ হয়েছে তা নিয়ে প্রত্যেক ভারতীয়ের গর্বের কথা প্রথমে প্রধানমন্ত্রী ভাগ করে নেন। তিনি বলেন, “প্রথমত দেশের ১০ কোটি গ্রামীণ ঘর-বাড়িকে নলবাহিত পরিশ্রুত জলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক ঘরে জল পৌঁছে দেওয়ার সরকারের কর্মসূচির এটা বড় সাফল্য। ‘সবকা প্রয়াস’এর এ এক উজ্জ্বল নমুনা।” দ্বিতীয়ত প্রত্যেক ঘরে জল সংযোগ ঘটানোয় দেশের মধ্যে প্রথম হর ঘর জলের প্রত্যয়িত রাজ্যের শিরোপা পাওয়ায় তিনি গোয়াকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দাদরা নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ প্রথম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে এই সাফল্য অর্জন করেছে বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী এই নিয়ে জনসাধারণ, সরকার এবং স্থানীয় স্বসরকারি প্রতিষ্ঠানকে তাদের উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আরও অনেক রাজ্য খুব শীঘ্রই এই তালিকাভুক্ত হবে।

তৃতীয় সাফল্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ১ লক্ষ গ্রাম উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত অতিরিক্ত সুবিধা সম্পন্ন গ্রামের প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। কেবলমাত্র কয়েক বছর আগে দেশকে যেখানে উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল তখন তার পরবর্তী লক্ষ্যই ছিল উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত ছাড়াও অতিরিক্ত সুবিধা সম্পন্ন গ্রামের শিরোপা অর্জন। যা হল তাদের গণ শৌচালয় থাকবে, বর্জ্য প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা থাকবে, নিকাশী জল ব্যবস্থাপনা এবং গোবর্ধন প্রকল্প থাকবে।

সারা বিশ্ব জলের সুরক্ষা সংক্রান্ত যে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলের প্রার্দুভাব উন্নত ভারত- বিকশিত ভারত গড়ে তোলার সংকল্প সম্পাদনের ক্ষেত্রে এক বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দেখা দিতে পারে। তিনি বলেন, “গত ৮ বছর ধরে আমাদের সরকার জল সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রকল্প নিয়ে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।” স্বার্থপর, স্বল্পমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গী গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা দেশ গড়ার জন্য যে কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় কেবলমাত্র একটা সরকার গড়তে সেই প্রচেষ্টার প্রয়োজন নেই একথা সত্যি। আমরা দেশ গড়ার কাজে ব্রতী হয়েছি। এ জন্যই বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় আমরা কাজ করে চলেছি। যারা দেশের মঙ্গল নিয়ে ভাবেন না, দেশের বর্তমান এবং ভবিষ্যকে বিনষ্ট করতে তারা দ্বিধান্বিত নন। এই সমস্ত মানুষরা মুখে বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু জলের ব্যাপারে বৃহৎ দৃষ্টিভঙ্গীকে সামনে রেখে তারা কাজ করেন না।

জল সুরক্ষার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য বহুমুখী উদ্যোগের প্রয়োজন। যেমন ‘বর্ষার জলকে ধরে রাখা’, অটল ভূ-জল প্রকল্প, প্রত্যেক জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর, নদী সংযোগ এবং জল জীবন মিশন। তিনি বলেন, ৭৫টি যে রামসর জলাভূমি এলাকা রয়েছে গত ৮ বছরে ৫০টি এতে যুক্ত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অমৃতকালের এর থেকে ভালো সূচনা আর হতে পারে না।” স্বাধীনতার পর গত সাত দশকে যেখানে কেবল ৩ কোটি গৃহ এই সুবিধা পেয়েছিল সেখানে গত ৩ বছরে ৭ কোটি গ্রামীণ গৃহ এই সুবিধার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, “দেশে ১৬ কোটি গ্রামীণ গৃহ রয়েছে। জলের জন্য যাদের বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। গ্রামের বৃহৎ এই জনসংখ্যাকে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের এই লড়ায়ের জন্য ছেড়ে দিতে পারি না। কেবলমাত্র এই কারনেই লালকেল্লা থেকে আমি ঘোষণা করেছিলাম প্রত্যেক ঘরকে পাইপ বাহিত পরিশ্রুত জলের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা এই অভিযানে ব্যয় হয়েছে। গত ১০০ বছরে সব থেকে বড় মহামারী সত্ত্বেও এই অভিযানের গতি শ্লথ হয়নি। এই নিরলস প্রয়াসের ফল হল গত সাত দশক ধরে যা হয়নি কেবলমাত্র ৩ বছরে তার দ্বিগুণ কাজ করা সম্ভব হয়েছে। মানব কেন্দ্রিক উন্নয়নের এ হল এক উজ্জ্বল নমুনা এ বছর আমি লালকেল্লা থেকে যার উল্লেখ করলাম।”

আগামী প্রজন্ম এবং মহিলাদের জন্য হর ঘরের সুবিধার ওপর আলোকপাত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জল সংক্রান্ত এই সমস্যার মূল কষ্টের শিকার যে মহিলারা সরকারি প্রচেষ্টার মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছেন তারাই। জল ব্যবস্থাপনায় মহিলাদের জীবনযাত্রার স্বাচ্ছন্দ্যের উন্নতির দিকে তাকিয়ে এক্ষেত্রে তাদেরকেই মূল ভূমিকা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “জল জীবন অভিযান কেবল একটি সরকারি প্রকল্প নয়, এটি এমন একটি প্রকল্প যা সম্প্রদায় দ্বারা সম্প্রদায়ের স্বার্থে পরিচালিত।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জল জীবন মিশনের ক্ষেত্রে সাফল্যের চারটি স্তম্ভ হল এর ভিত্তি যেগুলি হল জন-ভাগিদারি, অংশীদারি অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা এবং সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার। এই অভিযানের অভূতপূর্ব সাফল্যের পিছনে স্থানীয় মানুষ, গ্রামসভা এবং স্থানীয় প্রশাসনের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্ণায়ক ভূমিকা নিয়েছে। জল পরীক্ষার কাজে স্থানীয় মহিলাদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে এবং তাদের ‘জল সমিতি’র সদস্য করা হচ্ছে। অংশীদারি অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং যাবতীয় মন্ত্রকের স্বদিচ্ছা চোখে পরার মতো। এর পাশাপাশি গত ৭ দশকে যা হয়নি গত ৭ বছরে তার থেকে বেশি সাফল্য অর্জন রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার দিকটিও সূচিত করে। সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারকে সূচিত করতে এমজিএনআরইজিএ-র মতো প্রকল্পের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পাইপ বাহিত পরিশ্রুত জল সকলের কাছে পৌঁছনোর মধ্যে দিয়ে যে কোনো রকম বৈষ্যমকে নির্মূল করা সম্ভব।

এ ব্যাপারে প্রযুক্তিগত ব্যবহারের ক্ষেত্রে জল সম্পদের জিও ট্যাগিং এবং জলের সরবরাহ ও মান নির্নয়ের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট নির্ভর সমাধান সূত্রের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনশক্তি, মহিলা শক্তি এবং প্রযুক্তিগত শক্তি জল জীবন মিশনকে এক বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে।

 

PG/AB/NS