Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

জনজাতীয় গৌরব দিবস মহাসম্মেলনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের সূচনা করেছেন

জনজাতীয় গৌরব দিবস মহাসম্মেলনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের সূচনা করেছেন


নয়াদিল্লি, ১৫ নভেম্বর, ২০২১

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জনজাতীয় গৌরব দিবস মহাসম্মেলনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কল্যাণে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের সূচনা করেছেন। তিনি মধ্যপ্রদেশে ‘রেশন আপকে গ্রাম’ কর্মসূচিরও সূচনা করেন। সেই সঙ্গে, তিনি মধ্যপ্রদেশ সিকল সেল মিশনের শুভারম্ভ করেন। সারা দেশে ৫০টি একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ের শিলান্যাস করেন তিনি। এই উপলক্ষে মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য মাধবরাও সিন্ধিয়া, শ্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল, শ্রী ফগগন সিং কুলস্তে এবং ডঃ এল মরুগণ উপস্থিত ছিলেন। 

এক জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আজ প্রথম জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপন করছে। স্বাধীনতার পর এই প্রথম দেশে এত ব্যাপকভাবে আদিবাসী সমাজের শিল্প-কৃষ্টি, স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁদের অবদান এবং দেশ গঠনে তাঁদের ভূমিকা সম্মান ও গর্বের সঙ্গে স্মরণ করা হচ্ছে বলেও শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। আদিবাসী সমাজের সঙ্গে তাঁর সুদীর্ঘ যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সমৃদ্ধ আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারার প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সঙ্গীত ও নৃত্য সহ আদিবাসী সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্র থেকে শেখার অনেক সুযোগ রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আদিবাসী বীর পুরুষ ও মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রেরণাদায়ক কাহিনী জনসমক্ষে নিয়ে আসা এবং তা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আমাদের কর্তব্য। বর্বর দাসত্বের সময় আদিবাসীদের বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে বহু লড়াই চালাতে হয়েছে। খাসি-গারো আন্দোলন, মিজো আন্দোলন, কোল আন্দোলন প্রভৃতি তার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। গোন্দ মহারানী বীর দুর্গাবতীর অসীম সাহসিকতাই হোক বা রানী কমলাপতির আত্মোৎসর্গ – এরকম অবদান দেশ কখনই ভুলবে না। দুঃসাহসী ভিল সম্প্রদায়ের মানুষের সহায়তা ছাড়া বীর মহারানা প্রতাপের লড়াই কল্পনাই করা যায় না। এই ভিল সম্প্রদায়ের মানুষ মহারানা প্রতাপের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালিয়েছিলেন ও নিজেদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের সঙ্গে আগামী প্রজন্মের যোগসূত্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শিবশাহির বাবাসাহেব পুরন্দরের কথা স্মরণ করেন। শিবশাহির বাবাসাহেব পুরন্দরে আজ সকালেই প্রয়াত হয়েছেন। প্রখ্যাত এই ঐতিহাসিকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের যে সমস্ত আদর্শ বাবাসাহেব পুরন্দরে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেছিলেন, তা আজও আমাদের নিরন্তর প্রেরণা যোগায়। ‘বাবাসাহেব পুরন্দরেজীর প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা’। 

শ্রী মোদী বলেন, আজ আমরা যখন দেশ গঠনে জাতীয় মঞ্চে আদিবাসী সমাজের অবদান নিয়ে আলোচনা করি, তখন কিছু মানুষ আশ্চর্য হন। এ ধরনের মানুষ এখনও জানেন না যে, ভারতের সংস্কৃতি শক্তিশালী করতে আদিবাসী সমাজের ভূমিকা কতখানি। অবশ্য, এর পেছনে কারণ হ’ল আদিবাসী সমাজের অবদানকে কখনও জনসমক্ষে তুলে ধরাই হয়নি বা যদিও তুলে ধরা হয়েছে, তথাপি তা সীমিত আকারে। আর এটা হয়েছে কারণ, স্বাধীনতার পর যাঁরা দশকের পর দশক শাসন ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা কেবল স্বার্থ চরিতার্থ করার রাজনীতিতেই গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বাকি অংশে যে গতিতে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে, আজ আদিবাসী অঞ্চলেও দরিদ্র মানুষের জন্য গৃহ, শৌচাগার, নিখরচায় বিদ্যুৎ ও রান্নার গ্যাস সংযোগ, বিদ্যালয়, সড়ক ও বিনামূল্যে একই চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের যাবতীয় কল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলিতে উন্নয়নে আগ্রহী জেলা, যেখানে আদিবাসী মানুষের আধিক্য রয়েছে, তার প্রতি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। দেশের আদিবাসী অঞ্চলগুলিকে সম্পদ-সমৃদ্ধ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা আগে ক্ষমতায় ছিল, তারা এই অঞ্চলগুলিতে শোষণের নীতি অনুসরণ করেছে। কিন্তু, আমরা সম্পদ-সমৃদ্ধ এই অঞ্চলগুলিতে সদ্ব্যবহারের নীতি গ্রহণ করেছি। শ্রী মোদী বলেন, অরণ্য আইনে পরিবর্তন করে বনজ সম্পদ আদিবাসী সমাজের কাছে সহজলভ্য করে তোলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি পদ্ম পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আদিবাসী সমাজের প্রাপকরা যখন পুরস্কারের জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছেছেন, তখন অনেকেই আশ্চর্য হয়েছেন। আদিবাসী ও গ্রামীণ সমাজের কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে চলা পদ্ম পুরস্কার জয়ীরা দেশের প্রকৃত হীরে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আজ আদিবাসী শিল্পীদের উৎপাদিত সামগ্রী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বিপণন করা হচ্ছে। এখন ৯০টিরও বেশি বনজ সামগ্রীতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়া হচ্ছে। আগে কেবল ৮টি বা ১০টি সামগ্রী ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হ’ত। আদিবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলিতে ১৫০টিরও বেশি মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৩৭ হাজারেরও বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে ২ হাজার ৫০০ বন ধন বিকাশ কেন্দ্রের যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে। এর ফলে, ৭ লক্ষ মানুষ কাজের সুযোগ পেয়েছেন। এমনকি, ২০ লক্ষ জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে। আদিবাসী যুবাদের দক্ষতা বিকাশ ও শিক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। দেশে গত ৭ বছরে ৯টি নতুন আদিবাসী গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে মাতৃভাষায় অগ্রাধিকারের ফলে আদিবাসী ছাত্রছাত্রীরাও উপকৃত হবেন বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। 

 

CG/BD/SB