নয়া দিল্লি: ১৫ ডিসেম্বর: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা শুক্রবার চামড়া ও জুতোর ক্ষেত্রেকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিশেষ প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে| এই প্রকল্পের মধ্যেরয়েছে ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ সাল এই তিন বছরের মধ্যে ২৬০০ কোটি টাকা অনুমোদিতব্যয়ের কেন্দ্রীয় প্রকল্প “ইন্ডিয়ান ফুটওয়্যার, লেদার এন্ড অ্যাসেসরিজ ডেভেলপমেন্টপ্রোগ্রাম”|
বিশেষ প্রভাব:
এই প্রকল্প চামড়ার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটাবে এবং বিনিয়োগের সুবিধাসৃষ্টি করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেবে ও উত্পাদন বাড়াবে| করের ক্ষেত্রে বর্ধিতসহায়তা বড় মাপের বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করবে এবং এই ক্ষেত্রের মরসুমি চরিত্রেরদৃষ্টিভঙ্গিতে শ্রম আইনকে সংস্কার করবে|
জুতো, চামড়া ও আনুষঙ্গিক ক্ষেত্রে এই বিশেষ প্যাকেজের জন্য আগামী তিন বছরেনতুন করে ৩.২৪ লক্ষ কাজের সুযোগ তৈরি হবে এবং এর ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ফলশ্রুতিতেওআরও ২ লক্ষ কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে|
ইন্ডিয়ান ফুটওয়্যার, লেদার এন্ড অ্যাসেসরিজডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম-এর বিবরণ:
১) মানব – সম্পদ উন্নয়ন (এইচ.আর.ডি.) উপ-প্রকল্প: এইচ.আর.ডি. উপ-প্রকল্প কাজেরসুযোগ সৃষ্টির নিরিখে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেকারদের জন্য প্রতি জনে১৫,০০০ টাকা করে এবং নিযুক্ত শ্রমিকদের জন্য প্রতি জনে ৫,০০০ টাকা করে এবংপ্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিজনে ২ লক্ষ টাকা করে প্রদানের জন্য প্রস্তাবকরেছে| দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সহায়তা গ্রহনের জন্য প্রশিক্ষিতব্যক্তিদের ৭৫% প্লেসমেন্ট বাধ্যতামূলক| এই উপ-প্রকল্পের অধীনে ৪.৩২ লক্ষ বেকারদেরপ্রশিক্ষিত বা দক্ষ করার এবং বর্তমানের ৭৫,০০০ শ্রমিকের দক্ষতার মানোন্নয়নে এবং ১৫০জন মাস্টার প্রশিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়ছে| আগামী তিন বছরেএর জন্য প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৬ কোটি টাকা|
২) চামড়া ক্ষেত্রের সুসংহত উন্নয়ন (আই.ডি.এল.এস.)উপ-প্রকল্প: নতুনকেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি লঘু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের (এম.এস.এম.ই.) ক্ষেত্রেনতুন প্ল্যান্ট বা যন্ত্রপাতির জন্য ৩০ শতাংশ হারে এবং বর্তমান কেন্দ্রেরআধুনিকীকরণ ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য ২০ শতাংশ হারে বিনিয়োগ অনুদান/ভর্তুকিরসুযোগ দিয়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি সহ বিনিয়োগ ও নির্মাণে সহযোগিতা করার জন্যপ্রস্তাব করেছে আই.ডি.এল.এস. উপ-প্রকল্প| এই উপ-প্রকল্পের অধীনে আগামী তিন বছরে৪২৫ কোটি টাকা ব্যয়ের মাধ্যমে ১০০০ টি চামড়া, জুতো ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জামেরকেন্দ্রকে সহায়তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে|
৩) প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার উপ-প্রকল্প: এই উপ-প্রকল্পের অধীনে ফুটওয়্যারডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটকে (এফ.ডি.ডি.আই.) সহায়তা প্রদানের জন্যপ্রস্তাব করা হয়েছে| যাতে বর্তমানের কিছু এফ.ডি.ডি.আই.-কে ‘সর্বোত্কৃষ্ট কেন্দ্রে’রুপান্তরিত করা যায় এবং আগামী তিন বছরে ১৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মেগা লেদারক্লাস্টারের পাশাপাশি তিনটি নতুন সম্পূর্ণ সজ্জিত দক্ষতা কেন্দ্র স্থাপন করা যায়|
৪) মেগা লেদার, ফুটওয়্যার এন্ড এসেসরিজ ক্লাস্টার(এম.এল.এফ.সি.) উপ-প্রকল্প: এই উপ-প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে মেগা লেদার, ফুটওয়্যার এন্ড এসেসরিজক্লাস্টার গঠন করে এই ক্ষেত্রকে পরিকাঠামো সহায়তা প্রদান করা| আগামী তিন বছরেরমধ্যে তিন-চারটি নতুন এম.এল.এফ.সি.-কে সহায়তা করার জন্য ৩৬০ কোটি টাকার প্রস্তাবকরা হয়েছে|
৫) চামড়া প্রযুক্তি, উদ্ভাবনা এবং পরিবেশগত সমস্যাউপ-প্রকল্প: এইউপ-প্রকল্পের অধীনে কমন এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টগুলোর (সি.ই.টি.পি.)উন্নয়ন বা স্থাপনের জন্য প্রকল্পের ৭০ শতাংশ হারে সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব করাহয়েছে| এই প্রকল্পে আগামী তিন বছরের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮২ কোটি টাকা|
৬) চামড়া, জুতো ও এসেসরিজের ভারতীয় ব্র্যান্ডেরউত্সাহ প্রদানের উপ-প্রকল্প: এই প্রকল্পের অধীনে ব্র্যান্ডের প্রচারের জন্য অনুমোদিত যোগ্যকেন্দ্রগুলোকে সহায়তা করা হবে| এক্ষেত্রে তিন বছরের জন্য প্রতিটি ব্র্যান্ডেরক্ষেত্রে প্রতিবছর সরকারি সহায়তা সর্বমোট প্রকল্পের ৫০ শতাংশ হারে এবং উর্দ্ধসীমা৩ কোটি টাকা করা করার প্রস্তাব করা হয়েছে| এর জন্য তিন বছরে দশটি ভারতীয়ব্র্যান্ডকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচার করার জন্য ৯০ কোটি টাকার প্রস্তাব করাহয়েছে|
৭) চামড়া, জুতো এবং এসেসরিজ ক্ষেত্রের জন্য অতিরিক্তকর্মসংস্থান সহায়তার উপ-প্রকল্প: এই প্রকল্পের অধীনে চামড়া, জুতো এবং এসেসরিজের ক্ষেত্রে নতুন করে কাজে যোগদিতে আসা কর্মীর কর্মচারী ভবিষ্যনিধির জন্য কর্ম প্রদানকারীর ৩.৬৭ শতাংশ অবদানেরপ্রস্তাব করা হয়েছে| যেসব কর্মচারীর বেতন পনেরো হাজার টাকা পর্যন্ত, তাদেরক্ষেত্রে এই উপ-প্রকল্প কার্যকর হবে| এর মধ্য দিয়ে এই ক্ষেত্রে প্রায় দুই লক্ষকর্মসংস্থান সৃষ্টি করার জন্য ১০০ কোটি টাকার প্রস্তাব রাখা হয়েছে|
এই বিশেষ প্রকল্পে শ্রম আইনকে সরলীকরণ করা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্যসহায়তারও পদক্ষেপ রয়েছে:
১) আয়কর আইনের 80JJAA ধারায় সুযোগ বৃদ্ধি: এই ধারায় বর্তমানে কোনো ভারতীয়কোম্পানির একজন নতুন শ্রমিককে বছরে ন্যূনতম ২৪০ দিন কাজের সুযোগ দিয়ে তিন বছরেঅতিরিক্ত মজুরি প্রদানের লক্ষ্যে যে ছাড়ের সুযোগ রয়েছে, তা চামড়া, জুতো ওএসেসরিজের ক্ষেত্রের মরসুমি চরিত্রের বিষয়টি বিবেচনা করে আরও ১৫০ দিন আরও শিথিলকরা হবে|
২) নির্দিষ্ট মেয়াদের কর্মসংস্থানের সূচনা: আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আরও বেশিবিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার জন্য শিল্প কর্মসংস্থান (স্থায়ী নির্দেশ) আইন, ১৯৪৬ এর ১৫নং ধারার (১) নং উপধারার অধীনে নির্দিষ্ট মেয়াদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে শ্রমিকসংক্রান্ত সমস্যাকে সমাধানের প্রস্তাব করা হয়েছে|
A.D.