Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

চণ্ডীগড়ের ক্যাপিটাল কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

চণ্ডীগড়ের ক্যাপিটাল কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

চণ্ডীগড়ের ক্যাপিটাল কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ


এই সময়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ এই যোগ অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। বিশ্বের সকল দেশের মানুষ নিজের নিজের সময় ও সুবিধা অনুসারে এই যোগ অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের উদ্যোগে সারা বিশ্বে আজ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপিত হচ্ছে। ভারতের অনুরোধে গত বছর থেকে এই দিনটি সারা পৃথিবীতে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস রূপে ঘোষণা করা হয়েছে এবং বিশ্ববাসী অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে এই দিনে সম্মিলিতভাবে যোগাভ্যাসের মাধ্যমে দিনটিকে উদযাপন করছেন। ২১ জুন তারিখটিকেই এজন্য বেছে নেওয়া হয়েছে, তার কারণ, বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চলে আজকের তারিখেই দিন সবচেয়ে বড় হয়। অন্যভাবে বলা যায়, অপেক্ষাকৃতভাবে সূর্যের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব কম বলেই এই আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপনের দিনটি বেছে নেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রসঙ্ঘ এরকম অনেক আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন করে। আমি প্রত্যেক দিবসের নাম উল্লেখ করছি না। কিন্তু রাষ্ট্রসঙ্ঘ আয়োজিত বেশ কিছু দিবস পালন সারা পৃথিবীতে একটি জনআন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বের প্রত্যেক প্রান্তে সেগুলি স্বীকৃত হয়েছে এবং জনসমর্থন পেয়েছে। কিন্তু, মাত্র এক বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস যে স্বীকৃতি এবং জনসমর্থন পেয়েছে, সম্ভবত, তার সমকক্ষ আর কোনও দিবস হয়ে ওঠেনি।

রাষ্ট্রসঙ্ঘ অনেক আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। বিশ্ব ক্যান্সার দিবস, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস, বিশ্ব বয়স দিবস– এরকম অনেক শারীরিক, মানসিক, সামাজিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গোটা বিশ্বে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও জনআন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। এগুলির মধ্যে সবার পরে শুরু হয়েও আন্তর্জাতিক যোগ দিবস এত বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠার কারণ হল, আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে বংশপরম্পরায় পাওয়া ঐতিহ্যের শক্তি। এই ঐতিহ্যের পরিচয় কি? সে সম্পর্কে আমি আপনাদের দু-চার কথা বলব।

আমার মতে, যোগাসন জীবনকে এক রকমঅনুশাসনবদ্ধ করে। কখনও মানুষ একে ভালো করে না বুঝতে পেরে ভাবেন, এ থেকে কী পাব, এসব করে কী হবে? এর সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনও যোগাযোগ নেই। আমি বলি, যোগ কোনও কিছু পাওয়ার জন্য করতে হবে না। যোগ হল, আমরা কী ছাড়তে পারব, সমাজকে কী দিতে পারব, কোন কোন বিষয় থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারব – তার অভ্যাস। যোগ প্রাপ্তির পথ দেখায় না, মুক্তির পথ দেখায়।

সকল সম্প্রদায়, ধর্ম, ভক্তি, পূজা-পাঠের মাধ্যমে মানুষ মৃত্যুর পর ইহলোক থেকে বেরিয়ে পরলোকে গেলে কী পাবেন, সে বিষয়ে জোর দেয়। আপনারা যদি এই ধরনের পূজা পদ্ধতি অনুসরণ করেন, এভাবে ঈশ্বরের সাধন-ভজন করেন, তা হলে মৃত্যুর পর আপনাদের এ ধরনের প্রাপ্তি হবে। যোগ পরলোকের জন্য নয়। মৃত্যুর পর কী পাওয়া যাবে, তার পথ যোগ দেখায় না। সেজন্য আমি যোগকে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বলে মনে করি না। যোগ ইহলোকে আপনার মনে কিভাবে শান্তি পাবেন, শরীর কিভাবে সুস্থ থাকবে, সমাজ কিভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকবে, ঐক্যসূত্র কী হবে – সেই শক্তি দেয়। যোগ পরলোকের বিজ্ঞান নয়, ইহলোকের বিজ্ঞান।

শরীর, মন, বুদ্ধি ও আত্মা সমবেতভাবে পরস্পরের পরিপূরক হয়ে কী করে কাজ করবে, তার প্রশিক্ষণের পদ্ধতি হল যোগ। আমরা যদি নিজের ভেতরে তাকাই, তা হলে দেখব, আমি সচল কিংবা স্থবির, চটপটে কিংবা অলস, ক্লান্ত কিংবা উজ্জীবিত – সবসময়ে ভাল করে বুঝতে পারি না। উদ্দেশ্যহীনভাবে কোথাও গিয়ে বসে পড়ি, কিন্তু মন স্থির থাকে না। মন সবসময়ে চারপাশে ঘুরতে থাকে। এখানে বসে বসে অমৃতসরের কথা মনে পড়লেই সেখানে চলে যাবেন। আনন্দপুর সাহিব কিংবা মুম্বাই-এর কথা মনে পড়লে সেখানে চলে যাবেন। কোনও বন্ধুর কথা মনে পড়লে তাঁর কাছে চলে যাবেন। আমাদের শরীর স্থির থাকলেও মন অস্থির হয়। এই মনকে কিভাবে স্থির করে শরীরকে জঙ্গম করা যায় – যোগ আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়। অর্থাৎ, যোগের মাধ্যমে আমাদের অভ্যন্তরীণ প্রকৃতিগত পরিবর্তন আসতে পারে। একসঙ্গে মনের স্থিরতা এবং শরীরের গতিশীলতার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উভয়ের মধ্যে একটি ভারসাম্য গড়ে তুলে যোগাভ্যাস ঈশ্বরপ্রদত্ত শরীরকে নিজেদের সংকল্পপূর্তির সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম করে গড়ে তুলতে পারে।

সেজন্য যোগ আস্তিকের ক্ষেত্রে যত গুরুত্বপূর্ণ নাস্তিকের জন্যও ততটাই কার্যকরি। জিরো বাজেটে পৃথিবীর কোথাও স্বাস্থ্য বিমা হয় না। কিন্তু যোগ জিরো বাজেটে স্বাস্থ্য বিমা করে দিতে পারে। যোগের ক্ষেত্রে ধনী, গরিব, বিদ্বান, মূর্খের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। স্থান, কাল, পাত্র, লিঙ্গ, বয়স নির্বিশেষে যে কেউ সহজেই যোগাভ্যাস করতে পারেন। কোনও কিছুর প্রয়োজন নেই, কারও কাছে হাত পাততে হয় না। শুধু হাত ছড়ানোর জায়গা পেলেই একজন যোগাভ্যাস শুরু করে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে পারেন। ভারতের মতো গরিব দেশে কিংবা বিশ্বের আরও গরিব দেশগুলিতে, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ‘প্রিভেন্টিভ হেলথ্‌ কেয়ার’-এর জন্য নির্ধারিত বাজেটে অনেক সাশ্রয় করতে পারে এই যোগাভ্যাস।

যোগকে জীবনের সঙ্গে যুক্ত করা জরুরি। আপনারা অনেকেই আজ তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য টিভির সামনে বসে পড়েছেন। যাঁরা এই অনুষ্ঠান দেখছেন, সারা পৃথিবীর সকল প্রান্তের দর্শকদের আমি অনুরোধ জানাই, আপনারা নিজের জন্য, নিজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য, নিজেকে ভালোভাবে জানতে, নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আর সময় নষ্ট করবেন না। যোগকে আপনার জীবনে প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করুন। যেভাবে আজ মোবাইল ফোন আপনাদের জীবনে অংশ হয়ে উঠেছে, তেমনই আপনারা যোগাভ্যাসকে দৈনন্দিন জীবনের অভ্যাসে পরিণত করুন। এটা কোনও কঠিন কাজ নয়, অত্যন্ত সরলভাবে আপনারা এই অভ্যাসগুলি আয়ত্ত করতে পারবেন।

কখনও আমরা যোগাভ্যাস নিয়ে অনেক আলাপ-আলোচন করি। এই আলোচনায় প্রভাবিত হয়ে ব্রাজিলের এক ধর্মবন্ধু যোগী সন্ন্যাসী হয়ে পড়েছেন। তাঁর মতে, মোট ১ হাজার ৮টি যোগাসন রয়েছে। তিনি দীর্ঘ অভ্যাসের পর এর মধ্যে ৯০৮টি যোগাসনের ক্রিয়া ক্যামেরাবন্দী করতে পেরেছেন। তাঁর মতো অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যোগকে নিজেদের প্রতিষ্ঠার বিষয় করে তুলেছেন। যে মহাপুরুষ মুনি-ঋষিরা আমাদের এই বিজ্ঞান দিয়ে গেছেন, আমাদের উচিৎ উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া এই ঐতিহ্যকে মানব কল্যাণের স্বার্থে বিশ্বের সর্বত্র পৌঁছে দেওয়া। এভাবে আমরা নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারব। গোটা বিশ্বে যোগ শিক্ষা প্রসারের জন্য ভারত যোগ শিক্ষক পাঠাতে সক্ষম হবে।

সম্প্রতি ভারত সরকার উৎকর্ষ পরীক্ষার জন্য গঠিত ‘কোয়ালিটি কাউন্সিল’-এর মাধ্যমে যোগ প্রশিক্ষণ কিভাবে হবে, প্রশিক্ষকরা কেমন হবেন, তার কিছু মানক নিয়ম-নীতি রচনা করেছে। ভারত সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সারা পৃথিবীতে যোগের প্রোটোকল, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ইত্যাদি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি, আমাদের দেশে সকল প্রান্তে যোগ শিক্ষার জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এরজন্য প্রয়োজনে নতুন নতুন মাধ্যমের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন, আজকাল বড় বড় শহরে স্ত্রী্রোগ ও প্রসূতি বিদ্যায় পারদর্শী চিকিৎসকরা গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য যোগ প্রশিক্ষকদের কাছে পাঠান। কারণ, যোগাসনই একজন গর্ভবতীকে মহিলাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারে। আমার একথা বলার উদ্দেশ্য হল – সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সুস্থ জীবনধারণের প্রয়োজনে যোগকে সংশোধন করে পরিবর্তনও আনা সম্ভব।

এখন আমরা সকলের আগের থেকে অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। এমনকি নিজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে পারি না, অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ তো দূরের কথানিজেকে নিয়ে বাঁচার সময়ই আমাদের নেই। যোগ আমাদের এই বিচ্ছিন্নতা থেকে মুক্তি দেবে। সবার আগে নিজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করলে আমরা প্রত্যেকে শারীরিক, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক চেতনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারব। শারীরিক সুস্থতা এবং আধ্যাত্মিক অনুভূতির পথ খুঁজে পাব। সমাজের সঙ্গে প্রতিনিয়ত মিথস্ক্রিয়ার ভারসাম্য রক্ষার শিক্ষা দেয় এই যোগ। কোনও রকম বিবাদের মধ্যে না গিয়ে কিভাবে মানুষের উপকার করা যায়, সেবা করা যায় – যোগ সেই পথ দেখায়। পরলোকের জন্য রয়েছে সম্প্রদায়, ধর্ম, ঐতিহ্য, গুরু মহারাজ – অনেক কিছু। কিন্তু, ইহলোকে নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশের সকল জীবিত ও জড় পদার্থের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করার সর্বোত্তম পথ হল নিয়মিত যোগাভ্যাস। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা সকলেই এপথে পা বাড়াব।

যোগ আজ সারা পৃথিবীতে একটি বড় বাণিজ্যের বিষয়ও হয়ে উঠছে। সারা পৃথিবীতে এটি একটি পেশা রূপেও বিকশিত হচ্ছে। সারা পৃথিবীতে যোগ শিক্ষকের চাহিদা বাড়ছে। নতুন প্রজন্মের যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়ছে। আজ যোগের নামে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে।বিশ্বের অনেক দেশে বেশ কিছু টিভি চ্যানেল ১০০ শতাংশ যোগাসন সম্প্রচার করে থাকে। প্রতিদিন সারা পৃথিবীতে এই বাণিজ্য গুণিতক হারে বাড়ছে।

আজ আমরা সকল ধরনের যোগাসন করি। আমি যোগের সঙ্গে যুক্ত সকল শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিদের এই সার্বজনিক মঞ্চ থেকে একটি অনুরোধ জানাতে চাই যে, আগামী বছর আমরা যখন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করব, তার আগে আমরা যোগের জন্য যা যা করি সব নিয়মিত পালন করব। কিন্তু একটি বিষয়কে আমাদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে,সেটি হল – মধুমেহ। যোগের দুনিয়ায় যত বড় বড় জ্ঞানী ব্যক্তিরা রয়েছেন, আপনাদের সকলের জ্ঞানকে একত্রিত করে ভারত তথা গোটা বিশ্বে ক্রমবর্ধমান মেধুমেহ রোগীদের কল্যাণে কিছু করতে পারেন কি না, সে চেষ্টা করুন। বর্তমানে যোগের মাধ্যমে মধুমেহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় কি না জানি না, কিন্তু নিয়মিত যোগাভ্যাসের মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের মধুমেহ হলে কোন কোন যোগাসন করলে লাভ হবে সে সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে আপনারা এগিয়ে আসুন, এই যোগাসনগুলি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলুন।এভাবে সাফল্য পেলে আগামী বছর আমরা অন্য আরেকটি রোগ নিয়ে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার কথা ভাবতে পারি। এমনি আমরা সকল রোগের নিরাময়ই করে যাব, পাশাপাশি প্রতি বছর একটি করে রোগকে ধরে নিয়ে সেটির মূলোৎপাটনের জন্য জন-আন্দোলন গড়ে তুলতে পারি।

দ্বিতীয়ত, যোগ শুধুই রোগ নিরাময়ের উপায় নয়, যোগ সুস্বাস্থ্যকে নিশ্চিত করে। শুধু সুস্থ থাকা নয়, ভালো থাকাকে সুনিশ্চিত করে। জীবনের সার্বিক উন্নয়নে সর্বোত্তম উপায় হল যোগ।

আজ আমরা দ্বিতীয় বছর আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপনের সুযোগ পেয়েছি। ভারত বিশ্বকে এই অমূল্য ঐতিহ্যের উপহার দিয়েছে। বিশ্ববাসী যে যাঁর নিজের মতো করে এই ঐতিহ্যকে স্বীকার করে নিয়েছে। এই অবকাশে আমি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আজ দুটি পুরস্কারের কথা ঘোষণা করছি। আগামী বছর ২১ জুন তারিখে তৃতীয় আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনের প্রাক্কালে ভারত এই দুটি পুরস্কার ঘোষণা করবে আর আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে প্রাপকদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যাঁরা যোগের প্রসারে ভালো কাজ করবেন, তাঁদের জন্য একটি পুরস্কার আর, দেশের মধ্যে যাঁরা যোগের প্রসারে ভালো কাজ করবেন তাঁদের জন্য আরেকটি পুরস্কার।

এই পুরস্কারের জন্য কোনও ব্যক্তিকে বেছে নেওয়া হতে পারে কিংবা কোনও সংস্থাকে। এজন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি হবে, তাঁরাই এই পুরস্কারের জন্য নিয়ম তৈরি করবেন, পুরস্কারপ্রাপক বেছে নেওয়ার পদ্ধতি গড়ে তুলবেন, বিচারকও তাঁরাই বেছে নেবেন। সারা পৃথিবীতে যে পুরস্কারগুলির গুরুত্ব বেশি, সেগুলির সমকক্ষ হয়ে উঠবে এই পুরস্কার। ভারত সরকার চায় যে, দেশে ও বিদেশে যাঁরাই যোগের প্রচার ও প্রসারে উল্লেখযোগ্য কাজ করছেন, তাঁদেরকে সম্মানিত করা হোক। ধীরে ধীরে আমরা জাতীয় স্তর থেকে এই পুরস্কার প্রদানের প্রক্রিয়াকে কিভাবে রাজ্য এবং জেলাস্তরে নিয়ে যেতে পারি, সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।

আমি আরেকবার ভারতের এই মহান ঐতিহ্যকে সম্মানিত ও স্বীকার করে নেওয়ার জন্য আমাদের এই মহান পরম্পরার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় বিশ্বের সকল দেশের মানুষকে অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আপামর ভারতবাসীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সারা পৃথিবীর সকল প্রান্তে যে যোগগুরুরা রাত-দিন এক করে কাজ করে চলেছেন, তাঁদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। যোগে সমর্পিত সকল প্রজন্মের মানুষকে আমার শ্রদ্ধা জানাই। যাঁরা এই ঐতিহ্যকে বজায় রেখেছেন এবং আজও পূর্ণ সমর্পণের মাধ্যমে যোগের প্রচার ও প্রসারে নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেছেন, তাঁদেরকে আমার শ্রদ্ধা জানাই। আসুন, এই জিরো বাজেটের স্বাস্থ্য বিমাকে আমরা সকলে সমবেতভাবে নতুন শক্তি প্রদান করি, নতুন প্রেরণা যোগাই।

আজ চণ্ডীগড়ে এই যোগ অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সকলকে শ্রদ্ধা জানাই। একটু আগেই আমি বাদল সাহেবকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে এখানে এর থেকে ভালো কোনও অনুষ্ঠান কি হয়েছে? আমি অনেক বছর আগে এখানে এসেছিলাম। প্রায় ৫-৭ বছর চণ্ডীগড়ে ছিলাম। আমি এখানকার পরিবেশ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত। সেজন্য আজকের এই অনুষ্ঠানের জন্য চণ্ডীগড়ের নাম ওঠাতে আমি বলেছিলাম, এর থেকে ভালো স্থান আর হতে পারে না। আজ এখানে এই অনুষ্ঠানের সাফল্য দেখে আমি খুব আনন্দিত হয়েছি। যোগকে ভালোবেসে হাজার হাজার মানুষ এখানে এসেছেন। এত মানুষকে সমবেতভাবে যোগাসন করতে দেখে আমি খুব আনন্দিত হয়েছি। আজ আপনাদের সঙ্গে সারা পৃথিবী যুক্ত হয়েছে, যা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। আমি আরেকবার এই মহান ঐতিহ্যকে প্রণাম জানিয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

PG/SB/SB/S