Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

গ্লোবাল পাতিদার বিজনেস সামিটের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

গ্লোবাল পাতিদার বিজনেস সামিটের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী


নতুন দিল্লি,  ২৯ এপ্রিল, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে সরদারধাম আয়োজিত গ্লোবাল পাতিদার বিজনেস সামিটের উদ্বোধন করেছেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য এবং শিল্পপতিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুরাট বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম বিকাশশীল শহরগুলির একটি হয়ে উঠেছে। সর্দার প্যাটেলের কথার সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ ভারতের অনেক কিছু আছে। আমাদের কেবল নিজেদের আত্মবিশ্বাস এবং আত্মনির্ভরতার চেতনাকে শক্তিশালী করতে হবে। এই আত্মবিশ্বাস তখনই আসবে, যখন উন্নয়নে প্রত্যেকের অংশগ্রহণ থাকবে, প্রত্যেকের প্রয়াস থাকবে।

দেশে উদ্যোগ সৃষ্টির প্রবণতা ক্রমশ বাড়তে থাকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার তার নীতি এবং কাজের মধ্য দিয়ে ক্রমাগত এমন পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে গেছে, যাতে সাধারণ পরিবারের যুবক-যুবতীরাও উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে এবং উদ্যোক্তা হয়ে গর্ববোধ করতে পারে। যারা কোনদিনও ব্যবসা করার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি, মুদ্রা যোজনার মত প্রকল্পগুলি তাদের ব্যবসায়ে নামার শক্তি যোগাচ্ছে। একই ভাবে, আগে ইউনিকর্নকে অবাস্তব বলে ভাবা হত, কিন্তু আজ স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া উদ্ভাবন ও প্রতিভাকে উৎসাহ দিয়ে এর বাস্তবায়ন সম্ভব করে তুলেছে। উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহদান প্রকল্প প্রথাগত ক্ষেত্রগুলিতে নতুন শক্তির সঞ্চার করছে এবং নতুন ক্ষেত্রগুলিতে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। অতিমারীর চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্র দ্রুত গতিতে বিকাশ লাভ করেছে। বিপুল আর্থিক সহায়তায় এই ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ জীবিকাকে সুরক্ষিত রাখা গেছে এবং এখন এই ক্ষেত্র কর্মসংস্থানের বহু নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে। পিএম-স্বনিধি প্রকল্পে পথ বিক্রেতাদের ব্যাঙ্কিং ও অর্থ যোগানের আওতায় এনে তাদের বিকাশে সাহায্য করা হয়েছে। সম্প্রতি এই প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতীয় অগ্রগতিতে প্রতিটি ছোট ও বড় ব্যবসার অবদান রয়েছে এবং সবকা প্রয়াসের এই চেতনা অমৃত কালে নতুন ভারতের শক্তি হয়ে উঠছে”। এবারের সম্মেলনে এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার কর্মসূচি থাকায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

গুজরাটিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাতিদার সম্প্রদায়ের উচিত অভিজ্ঞ ও তরুণ সদস্যদের সমন্বয়ে ছোট ছোট দল তৈরি করা, যারা জাতীয় স্বার্থের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করবে এবং নিজেদের ভাবনা-চিন্তা লিপিবদ্ধ করবে। এই দলগুলি বিশ্বের যে কোন ভাল কাজ অথবা সরকারের বিভিন্ন নীতি নিয়েও আলোচনা ও বিশ্লেষণ করতে পারে। আর্থিক প্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণের মত বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণ করে সেই সব ক্ষেত্রে সরকার ও শিক্ষামহল কিভাবে সাহায্য করতে পারে, তার সুপারিশও করা যেতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেন। একই ভাবে জাতীয় শিক্ষা নীতির সর্বোত্তম রূপায়ন কিভাবে হতে পারে এবং এর প্রতিটি স্তরে কী ধরণের সরকারি সহায়তা প্রয়োজন, তা নিয়েও দলগুলি পরামর্শ দিতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। 

প্রধানমন্ত্রী কৃষি ক্ষেত্রের আধুনিকীকরণ এবং কৃষিতে বিনিয়োগ আনার পন্থা-পদ্ধতি অন্বেষণের কথাও বলেন। গুজরাটের জমির চরিত্র ভাল করে খতিয়ে দেখে সেখানে কৃষির নতুন পদ্ধতি এবং নতুন ফসল ফলানোর উপায় নিয়ে দলগুলিকে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি কয়েক দশক আগে গুজরাটে হওয়া দুগ্ধ আন্দোলনের কথা বলেন, যা গুজরাটের কৃষকদের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কৃষি ভিত্তিক শিল্পের প্রসারের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এরফলে, একদিকে যেমন ভোজ্য তেল আমদানির পরিমাণ কমবে, তেমনি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সম্ভাবনা বাড়বে। কৃষক উৎপাদক সংস্থা গঠনের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরণের সংস্থা যত বেশি গড়ে উঠবে, তত বেশি সুযোগ তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রাকৃতিক কৃষির প্রসারের ওপরেও গুরুত্ব দেন। কৃষি ক্ষেত্রের উদ্বৃত্ত জমিতে সৌর প্যানেল বসানো যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি চালু হওয়া অমৃত সরোবর অভিযানে সকলকে সামিল হওয়ার ডাক দেন তিনি। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া আয়ুর্বেদ শীর্ষ সম্মেলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভেষজ ও আয়ুষ ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দিকে নজর রাখা যেতে পারে। 

প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য গঠনের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গীর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কেবল বড় শহরেই নয়, ছোট শহরগুলিতেও শিল্প গড়ে তোলা যেতে পারে। এই প্রসঙ্গে তিনি জ্যোতিগ্রাম যোজনার উদাহরণ দেন। এই যোজনায় গ্রামে গ্রামে শিল্প গড়ে তোলার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। একই ভাবে ছোট শহর এবং মফস্বলগুলিতেও শিল্প স্থাপন করা যেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

পাতিদার সম্প্রদায়ের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যে ‘মিশন ২০২৬’-এর আওতায় সরদারধাম, গ্লোবাল পাতিদার বিজনেস সামিটের আয়োজন করেছে। প্রতি দু-বছর অন্তর এই সামিটের আয়োজন করা হয়। ২০১৮ সালে প্রথম এবং ২০২০ সালে দ্বিতীয় সম্মেলনের আয়োজন গান্ধীনগরে করা হয়েছিল। বর্তমান শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে সুরাটে। এবারের সম্মেলনের মূল ভাবনা – ‘আত্মনির্ভর সম্প্রদায় থেকে আত্মনির্ভর গুজরাট এবং ভারত’। এই সম্মেলনের লক্ষ্য সম্প্রদায়ের মধ্যেকার ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় উদ্যোগগুলিকে একত্রিত করা, নতুন উদ্যোগগুলির পরিচর্যা করা এবং সেগুলিকে সমর্থন করা এবং শিক্ষিত যুব সম্প্রদায়ের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের কাজে সহায়তা করা। ২৯শে এপ্রিল থেকে পয়লা মে পর্যন্ত চলা তিন দিনের এই সম্মেলনে সরকারের শিল্প নীতি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্র, স্টার্টআপ, উদ্ভাবন সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। 

 

CG/SD/AS/