Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

গুজরাটে মা উমিয়া ধাম উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

গুজরাটে মা উমিয়া ধাম উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নমস্কার,

আপনারা কেমন আছেন?

আমার এখানে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। যদি সেটি হতো তাহলে আপনাদের সকলের সঙ্গে দেখা হতো। কিন্তু সময়ের স্বল্পতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে প্রযুক্তির সাহায্যে আজ এই পবিত্র অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি নিজেকে অত্যন্ত ভাগ্যবান বলে মনে করছি। আমি মনে করি এই প্রকল্পটি নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই বৃহৎ সেবা মন্দির প্রকল্প সকলের উদ্যোগে করা হবে।

লালকেল্লার প্রাকার থেকে আমি বলেছিলাম সবকা প্রয়াস- সকলের প্রয়াস। মা উমিয়া ধামের উন্নয়ন প্রকল্পে আপনারা সকলে একযোগে কাজ করবেন। মা উমিয়া সেবা সঙ্কুল আধ্যাত্মিকতা, ধর্মীয় এবং সর্বোপরি সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটিই তো আসল পথ। আমাদের এখানে বলা হয় ‘কর্মের মধ্য দিয়ে নর, নারায়ণ হয়ে ওঠেন।’ আমাদের এখানে এও বলা হয় জনসেবার মাধ্যমে বিশ্বকে সেবা করা হয়। আমরা প্রতিটি প্রাণীর মধ্যে ঈশ্বরকে দেখতে পাই। আর তাই আগামী প্রজন্মকে প্রস্তুত করার জন্য যে পরিকল্পনা করা হয়েছে যেখানে সমাজের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আমি শুনলাম আপনারা ‘মা উমিয়া শরণম মম’ মন্ত্রটি ৫১ কোটি বার উচ্চারণ করবেন এবং লিখবেন। এটি শক্তির উৎস হয়ে উঠবে। মা উমিয়ার আরাধনার জন্য আপনারা আপনাদের চারপাশের মানুষদের সেবা করার জন্য ব্রতী হয়েছেন। মা উমিয়া ধাম উন্নয়ন প্রকল্প একটি বৃহৎ উদ্যোগ যেটি আগামী প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে। আর তাই আপনারা প্রত্যেকে প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।

কিন্তু যখন আপনারা যুব সম্প্রদায়কে এতো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন আমি সেইসময় আর একটি জিনিসের কথা উল্লেখ করবো। বর্তমান যুগে দক্ষতার বিকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  আপনারা দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচীর সঙ্গে নিজেদেরকে এবং আপনাদের সংগঠনকে যুক্ত করুন। এই বিষয়টি নিয়ে আপনারা ভাবনা-চিন্তা করুন। এখন দক্ষতার গুরুত্ব আরও বেড়েছে। অতীতে পরিবারগুলি এমন ধারায় চলতো যেখানে পরবর্তী প্রজন্মকে আগের প্রজন্ম ঐতিহ্য এবং দক্ষতা সম্পর্কে বলতো। এখন সামাজিক পরিস্থিতির প্রচুর পরিবর্তন হয়েছে। আর তাই আমাদের এই কাজটির জন্য নতুন একটি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। দেশ আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উদযাপন করছে। একটা সময়ে আপনারা আমাকে গুজরাটে সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। তারপর আপনারা দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ দেন। আমি এই পরিস্থিতিতে আজাদি কা অমৃত মহোৎসব সম্পর্কে আমার বক্তব্য আপনাদের আরও একবার মনে করিয়ে দিতে চাই।  আমরা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে দেশ ও সমাজ গঠনের জন্য কিছু ভূমিকা রাখবো সেই সিদ্ধান্ত নিতে চাই। এটা সত্যি যে যখনই আপনাদের কাছে আমি এসেছি আমরা নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। বিভিন্ন বিষয়ে আমি আপনাদের সহযোগিতা চেয়েছি। আর আপনারা সেই সহযোগিতার হাতও আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমার মনে আছে যখন আমি বেটি বাঁচাও কর্মসূচির সূচনা করেছিলাম সেইসময় আমি উনঝায় এসেছিলাম এবং আপনাদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে কথাবার্তা হয়। তখন আমি জানতে পেরেছিলাম মা উমিয়া ধামের উনঝায় কন্যা সন্তানের জন্মগ্রহণের হার যথেষ্ট কমে গেছে যা আমাদের সকলের কাছে অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেইসময় আমি আপনাদের সকলের কাছে প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলাম যে এই অবস্থার আমরা সকলে মিলে পরিবর্তন ঘটাবো। আজ আমি আবারও এখানে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। সেদিনের সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য আপনাদের সকলকে অনেক ধন্যবাদ। এই অঞ্চলে ধীরে ধীরে কন্যা সন্তানের জন্মের হার স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। এখন কন্যা সন্তানের ও পুত্র সন্তানের জন্মের হার প্রায় সমান হয়ে এসেছে। আপনারা সকলেই বুঝতে পেরেছিলেন সমাজের জন্য এটি করা অত্যন্ত জরুরি। আর আপনারা সেটি করেওছেন।

একইভাবে আমার মনে পড়ছে আমরা যখন সুজলম সুফলম প্রকল্পে নর্মদা নদীর জল সরবরাহ শুরু করেছি সেইসময় আমি উত্তর গুজরাট, সৌরাষ্ট্র অঞ্চ্লের বাসিন্দা  এবং মা উমিয়ার ভক্তবৃন্দকে অনুরোধ করেছিলাম যে যদিও এই অঞ্চলে জল এসে পৌঁছেছে কিন্তু আপনাদের জলের প্রয়োজনীয়তা বিষয়টি উপলব্দি করতে হবে। বাকি অঞ্চলের মানুষদের জন্য জলই জীবন কথাটি শুধুমাত্র একটি শ্লোগান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু আমরা সকলে জানি জল ছাড়া বেঁচে থাকা কতটা কঠিন। দেরিতে বৃষ্টি হওয়ার কারণে বিভিন্ন দিন এমনকি বছর জুড়ে জলের সংকট আমরা অনুভব করেছি। আর তাই আমরা জল সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উত্তর গুজরাটে ড্রিপ ইরিগেশন সিস্টেমে কাজ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। আপনাদের সকলে সেটি সানন্দে গ্রহণ করেছেন। ড্রিপ ইরিগেশন সিস্টেম বহু জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে যেমন জল সংরক্ষণ হচ্ছে আবার ভালো ফসলও উৎপাদিত হচ্ছে।

একইভাবে আমরা এখন আমাদের মাটি মার জন্য উদ্বিগ্ন। দেশের মধ্যে গুজরাটই হল প্রথম রাজ্য যেখানে সয়েল হেল্থ কার্ড শুরু হয়। পরবর্তীকালে এই ব্যবস্থা গোটা দেশে কার্যকর করা হয়েছে। আজ আমাদের মাতৃসম মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এই মাটি হল সমস্ত জীবের জীবনের উৎস। আমরা মাটির স্বাস্থ্য সয়েল হেল্থ কার্ড ব্যবস্থার মাধ্যমে পরীক্ষা করি। এর সাহায্যে মাটির মধ্যে কোনো গুণমানের ঘাটতি রয়েছে কিনা, মাটির স্বাস্থ্যহানি হয়েছে কিনা কিংবা মাটির জন্য কি করা প্রয়োজন সেগুলির বিষয়ে জানতে পারি। আমরা এগুলি সব করেছি ঠিকই অথচ আমাদের লোভ এতো বেশি যে আমরা আরও বেশি করে ফসল ফলানো, দ্রুত ফসল ফলানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আর তাই আমরা নানা ধরণের রাসায়নিক পদার্থ, সার এবং ওষুধ কোনোকিছু ভাবনা-চিন্তা না করেই মাটির মধ্যে দিয়েছি। এহেন পরিস্থিতিতে আজ আমি আপনাদের কাছে একটি অনুরোধ করবো। আমরা যখন মা উমিয়ার আরাধনা করবো তখন যাতে মাটি মাকেও ভুলে না যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করবো। মা উমিয়ার সন্তানদের মাতৃসম ভূমিকে  ভুলে যাওয়ার কোনো অধিকার নেই। মাটি মা  আমাদের জীবন এবং মা উমিয়া আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনের পথ প্রদর্শক। আর তাই আমি আপনাদের সকলকে অনুরোধ করছি মা উমিয়ার উপস্থিতিতে আমরা একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। উত্তর গুজরাটে জৈব চাষ শুরু করা যাক। জৈব চাষকে জিরো বাজেটের কৃষিকাজ বলে বর্ণনা করা হয়। আমরা অনেকেই হয়তো ভাবছি মোদীজি তো কৃষিকাজের ব্যাপারে কিছু বোঝেন না, অথচ দ্যাখো উনি উপদেশ দিয়ে যাচ্ছেন। ঠিক আছে, আপনাদের যদি মনে হয় আমার অনুরোধটা যথাযথ নয় তাহলে আমি আপনাদের একটি পরামর্শ দিচ্ছি। আপনার যদি ২ একর চাষের জমি থাকে তাহলে এর মধ্যে ১ একর জমিতে জৈব চাষ করুন আর বাকি জমিতে যেভাবে চাষবাস করে আসছেন সেটিই করুন। এই পদ্ধতি আরও এক বছর মেনে চলুন। যদি দেখেন এতে আপনাদের লাভ হচ্ছে তাহলে আপনারা পুরো ২ একর জমিতেই জৈব চাষ করুন। এর ফলে আপনাদের অর্থের সাশ্রয় হবে আর আমাদের মাতৃসম ভূমিও পুনরুজ্জীবিত হবে। আমাদের মাটি নতুন জীবন পাবে। এর মধ্য দিয়ে  আগামী প্রজন্মের জন্য আপনারা একটি পবিত্র কাজ করবেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বিজ্ঞান সম্মতভাবে এগুলি প্রমাণিত। আগামী ১৬ই ডিসেম্বর আমূল ডেয়ারির একটি অনুষ্ঠানে আমি বক্তব্য রাখবো। সেখানেও জৈব চাষের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আমি আরও একবার আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করবো জৈব চাষের বিষয়টি একটু বোঝার চেষ্টা করুন। এই পদ্ধতিকে অনুসরণ করুন। মা উমিয়ার আর্শিবাদে ভবিষ্যতেও এই ধারা বজায় রাখুন। আমরা এখন ‘সবকা প্রয়াস’ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছি। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাসের পর এখন সবকা প্রয়াস।

একইভাবে আপনারা নিশ্চয় খেয়াল করেছেন বনস্কান্থায় কৃষিকাজের ধরণ বদলে গেছে। সেখানে নতুন নতুন ফসল ফলানো হচ্ছে। কচ্ছ জেলার কথা ভাবুন। আজ কচ্ছ জেলায় উৎপাদিত ফল বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে। আমরা এখানেও এটি করতে পারি। আমরা এই বিষয় নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করি। আর তাই আমি আবারও আপনাদেরকে বলবো মা উমিয়ার সেবার জন্য আপনারা এতো কিছু করছেন, আসলে মা উমিয়ার আরাধনার মধ্য দিয়ে আমরা স্বর্গীয় সুখ পাই। কিন্তু আপনারা যদি মন থেকে মা উমিয়াকে আরাধনা করেন সেক্ষেত্রে এই পৃথিবীকে নিয়ে আপনাদের ভাবনা-চিন্তা করা প্রয়োজন। আমি দৃঢ় বিশ্বাস করি যে মা উমিয়ার আর্শিবাদে বর্তমান প্রজন্ম তাঁদের জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারবেন। নতুন উদ্যোগ এবং প্রকল্প, যেগুলি আজ শুরু করা হয়েছে সেগুলি গুজরাটের উন্নয়নে এবং দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

যখন দেশ আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উদযাপন করছে সেইসময় মা উমিয়ার মন্দির তৈরি করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সকলকে একসঙ্গে নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আরও একবার আপনাদের প্রত্যেককে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। যখন আমরা ব্যক্তিগতভাবে স্বাক্ষাতের সুযোগ পাবো তখন আমরা এই কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবো। আপনাদের সকলের সঙ্গে আবারও দেখা হবে।

জয় উমিয়া মা

(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি গুজরাটি ভাষায় দিয়েছেন)

 

CG/CB/NS