Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

গুজরাটের রাজকোটে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনাকালে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

গুজরাটের রাজকোটে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনাকালে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


রাজকোটবাসী কেমন আছেন?

আপনারা এখন খুশি তো?

এই তো মাত্র কয়েকদিন আগেই আপনারা চমৎকার নবরাত্রি উৎসবের আয়োজন করেছিলেন। দু’বছর পরে এটি উদযাপনের সুযোগ পেলেন আপনারা। এখন বলুন, দীপাবলীর জন্য আপনাদের প্রস্তুতিপর্ব কেমন চলছে? রাজকোট তো এখন দেখছি বেশ উৎসবের মেজাজেই রয়েছে। নবরাত্রি, বিজয়া দশমী এবং গরবা উৎসব যে সবেমাত্র শেষ হয়েছে, একথা এখন কেউই কল্পনা করতে পারবেন না। এতসব করেও আপনারা আবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ধনতেরাসের জন্য এবং প্রস্তুত হচ্ছেন দীপাবলী উৎসব উদযাপনের জন্য। নতুন বছরটিও তো প্রায় এসে গেল। ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখন চরম ব্যস্ততা। এই সময় আমাকে আশীর্বাদ ও ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে তোলার জন্য রাজকোটবাসীকে আমি অভিবাদন জানাই। দীপাবলী হল আমাদের কাছে এমন একটি উৎসব যার মধ্য দিয়ে সারা বছর ধরে কাজ করে যাওয়ার প্রেরণা আমরা লাভ করি। আর, নববর্ষ হল এক নতুন সঙ্কল্প গ্রহণের মুহূর্ত, স্থিরসঙ্কল্প হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময়। দীপাবলীর উপহার হিসেবে আমি এমন কয়েকটি প্রকল্প আজ এখানে উপস্থিত করছি যেগুলির নির্মাণ কাজ রাজকোট সহ সমগ্র সৌরাষ্ট্রেই সম্পূর্ণ হয়েছে। আবার রয়েছে এমন কিছু কিছু প্রকল্প যেগুলির আজ শিলান্যাস করা হল। কোনো প্রকল্পের শিলান্যাসের অর্থ হল আরও নতুন কিছু সঙ্কল্পের ভিত্তিভূমি অর্থাৎ, ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। শিল্প, সড়ক সংযোগ, জল সরবরাহ সম্পর্কিত এই প্রকল্পগুলি রাজকোটকে যেমন আরও শক্তিশালী করে তুলবে, নাগরিক জীবনও তেমনই হয়ে উঠবে অনেকটাই সহজতর।

দেশের ছয়টি স্থানে বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গৃহ নির্মাণের একটি নতুন অভিযানের সূচনা হয়েছিল। এই স্থানগুলির মধ্যে রাজকোট হল অন্যতম। নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগে ১,১৪৪টি বাড়ি এখানে নির্মিত হয়েছে। করোনা সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে যে গতি ও প্রযুক্তির সাথে এগুলি সম্পন্ন হয়েছে তা একথাই প্রমাণ করে যে সুপ্রশাসন, অঙ্গীকার এবং সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণে সচেষ্ট হলে তবেই তা সম্পূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

আমি আজ বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাব সেই সমস্ত মা-বোনেদের যাঁরা নতুন প্রযুক্তিতে নির্মিত এই সুন্দর সুন্দর বাড়িগুলির মালিকানা লাভ করেছেন। আমরা প্রার্থনা করি, দেবী লক্ষ্মী যেন আপনাদের বাড়িগুলিতে অবস্থান করেন। মা-বোনেদের মুখে যে খুশির ভাব আমি ফুটে উঠতে দেখেছি তা আমাদের মনে সন্তোষ এনে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ এক সরকারের দ্বারাই এই ধরনের ভালো কাজ করা সম্ভব।

বিগত একুশ বছরে আমরা অনেক স্বপ্নই দেখেছি এবং তার বাস্তবায়নে পদক্ষেপও গ্রহণ করেছি। এখন তার সুফল আমরা প্রত্যক্ষ করতে পারছি। রাজকোটেই আমার প্রথম বিদ্যালয় জীবন শুরু হয়। মহাত্মা গান্ধী ছিলেন এমনই একজন ভাগ্যবান ব্যক্তি যিনি জন্মগ্রহণ করেন পোরবন্দরে এবং স্কুলশিক্ষা লাভ করেন রাজকোটে। সেই অর্থে ভাগ্যবান আমিও কারণ, আমার জন্ম উত্তর গুজরাটে এবং আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় রাজকোট থেকেই। এক সময় এই শহরটির আশীর্বাদধন্য হয়ে উঠেছিলেন স্বয়ং গান্ধীজি এবং বর্তমানে তিনিই হলেন আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। গত দুটি দশক ধরেই আপনাদের আশীর্বাদ বর্ষিত হয়েছে আমার ওপর। সেইসঙ্গে আমার দায় ও দায়িত্বশীলতাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুণ। রাজকোটবাসীর আশীর্বাদের ক্ষমতা এতটাই!

আপনাদের আশীর্বাদ নিয়েই আমি যাত্রা শুরু করেছিলাম এবং আমার সেই যাত্রাপথে গুজরাটের উন্নয়নের সুযোগ আমার কাছে উপস্থিত হয়েছিল। সেইসঙ্গে, সারা দেশকে এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার দায়িত্বও এসে বর্তায় আমার ওপর। রাজকোটের এই ঋণ আমি জীবনে কোনদিনই পরিশোধ করতে পারব না। আমি আপনাদের সকলের কাছেই ঋণী। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত। তাই নতমস্তকে উৎসর্গের মনোভাব নিয়ে এই প্রকল্পগুলি আপনাদের জন্য তুলে ধরছি।

রাজকোট থেকে আমি যে শিক্ষালাভ করেছিলাম তার মূল কথাই ছিল, দেশের জন্য যেন কিছু করতে পারি। নবরাত্রি উৎসব উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খেলোয়াড়রা সমবেত হয়েছেন দেশের এক বৃহত্তম ক্রীড়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখানে সমবেত হয়ে বিস্মিত হয়েছেন রাজকোট তথা গুজরাটের এই উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করে।

বিজেপি সরকার গঠিত হওয়ার পর এখানে আইন-শৃঙ্খলা ও শান্তি পরিস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমাজের সকল স্তরের মানুষ আজ দাগী অপরাধী, মাফিয়া ও সন্ত্রাসবাদীদের কবলমুক্ত। শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্য আজ নিশ্চিত হয়েছে এখানে। ফলে, আজকের শিশুদের ভবিষ্যৎ যেমন উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, তাদের অভিভাবকদের মনেও স্বস্তির ভাব ফিরে এসেছে। এই কারণে আমি আজ শুধু খুশি নই, সেইসঙ্গে গর্বিতও বটে।

এই ধরনের উন্নয়ন প্রচেষ্টার সঙ্গে আমরা যুক্ত রয়েছি নিরন্তরভাবেই। গত কয়েক দশক ধরেই প্রতিনিয়ত আমরা চেষ্টা করে এসেছি যাতে এক দক্ষ গুজরাটের ভাবমূর্তি আমরা গড়ে তুলতে পারি। এজন্য পরিস্থিতিকে সবদিক দিয়েই অনুকূল করে তুলতে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। গুজরাট তাই বর্তমানে এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে।

এক উন্নত ভারত গঠনের লক্ষ্যে গুজরাটের উন্নয়নকে আমাদের কর্মযজ্ঞের এক বিশেষ মঞ্চ রূপেই আমরা গ্রহণ করেছি। এক সমৃদ্ধ গুজরাটই এক সমৃদ্ধ ভারত গড়ে তুলতে পারে। ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’ অভিযানের সূচনাকালে সারা বিশ্বের কাছে আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম বিনিয়োগ প্রচেষ্টার জন্য। ‘কৃষি মহোৎসব’-এরও আমরা আয়োজন করেছি। গুজরাটে অনুষ্ঠিত হয় ‘গরীব কল্যাণ মেলা’ও। এর লক্ষ্য হল দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়ন। আমরা লক্ষ্য করেছি যে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের যখন ক্ষমতায়ন ঘটে, তখন সমাজের গুরুত্বও বৃদ্ধি পায় অনেকখানি। যদি কারোর মাথার ওপর একটি পাকা আচ্ছাদন থাকে, তাহলে সে এক সম্ভ্রমপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে। প্রতিটি মানুষেরই মনে রয়েছে একটি আপন বাসস্থানের একান্ত ইচ্ছা।

দরিদ্র ও সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ যাতে নিজেদের একটি করে বাড়ি গড়ে তুলতে পারেন, সেজন্য বেশ কয়েকটি সরকারি কর্মসূচিরও সূচনা হয়েছে। এই বাড়িগুলি এমনভাবে গড়ে তোলা উচিৎ যাতে তা প্রকৃত অর্থেই বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। এই বাড়িগুলিতে থাকা প্রয়োজন শৌচাগার, বিদ্যুৎ, জল, গ্যাস, ইন্টারনেট সংযোগ, অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ইত্যাদি। কারণ এগুলি হল আধুনিক জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ।

দারিদ্র্যের কবলমুক্ত একটি পরিবারের ওপর আরও একবার দারিদ্র্যের ছায়া নেমে আসতে পারে যদি সেই পরিবারের কোনো একজন সদস্য গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন ভিক্ষাপাত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়া ছাড়া তাঁদের কাছে আর কিছুই করার থাকে না। এই বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা রূপায়িত করেছি ‘আয়ুষ্মান ভারত – প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা’। এই কর্মসূচির আওতায় বর্তমানে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার চিকিৎসার সুযোগ নিখরচায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে তাঁদের জন্য। এই কর্মসূচিতে লাভবান হয়েছেন কোটি কোটি মানুষ।

‘গরীবি হটাও’ এবং ‘রোটি কাপড়া’ – এই স্লোগান দুটি এক সময় খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। বেশ কয়েক বছর ধরেই তা আলোড়ন তুলেছিল। কিন্তু, এই সমস্ত স্লোগান ছিল অন্তঃসারশূন্য। অর্থাৎ, আধপেটা খেয়ে দিনভর কাজ করে যাওয়াই বোধহয় ছিল এই স্লোগানের মূলমন্ত্র। কিন্তু বাস্তবে এগুলি ছিল স্লোগান সর্বস্ব। কিন্তু আমি আপনাদের জীবনকে এক রূপান্তর প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। তাই, আধপেটা খেয়ে থাকলেই চলবে না। আমাদের সকলের প্রয়োজন ভরপেট খাবার। আমাদের জীবনকে গড়ে তুলতে হবে এমনভাবে যাতে কোনো ক্ষুধার্থ মানুষ যদি আমাদের দ্বারপ্রান্তে কোনদিন এসে উপস্থিত হন, তাহলে খালি পেটে যেন তাঁকে আবার না ফিরে যেতে হয়। অনেক মানুষই রাজনীতিতে যোগদান করার পর প্রাসাদোপম অট্টালিকা তৈরি করেছেন। কিন্তু দরিদ্র মানুষেরও যে একটি নিজস্ব বাড়ির প্রয়োজন রয়েছে, একথা কোনদিন তাঁরা ভেবে দেখেননি। তাই, দরিদ্র মানুষদের সকলেই যাতে একটি করে পাকা বাড়ির মালিক হতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমি সারা দেশেই এক ব্যাপক অভিযান শুরু করেছিলাম।

রাজকোট এবং সেইসঙ্গে সমগ্র গুজরাটই আজ শিল্পের জন্য সুপরিচিত। কয়েক বছর আগে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আমি একথাই বলেছিলাম যে মোরবী, রাজকোট এবং জামনগর এক সময় এক মিনি জাপানের চেহারা নেবে। তখন লোকে আমার কথা শুনে হাসাহাসি করেছিল। এখন আপনারা বলুন তো আমার সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হয়েছে কিনা? রাজকোট বর্তমানে দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের এক বিশেষ কেন্দ্র রূপে গড়ে উঠেছে। মোরবী, রাজকোট ও জামনগর গুজরাটকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে অনুঘটকের কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস।

গুজরাটের দরিদ্র মানুষের স্বার্থে ১০ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছিলাম। তার মধ্যে নির্মিত ৭ লক্ষ বাড়ি ইতিমধ্যেই তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁদের হাতে। এজন্য আমি ভূপেন্দ্রভাই এবং তাঁর কর্মীদের বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাই। শুধুমাত্র দরিদ্রদের জন্যই নয়, সাধারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য তাঁর চিন্তাভাবনারও আমি প্রশংসা করি। রেরা বলবৎ করার মাধ্যমে মধ্যবিত্ত মানুষের বাড়ির স্বপ্নকে আমরা আরও জোরদার করে তুলেছি।

গুজরাটের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ যাতে তাঁদের নিজেদের বাড়ি তৈরি করার সুযোগ পেতে পারেন সেজন্য ১১ হাজার কোটি টাকা আমরা তুলে দিয়েছি তাঁদের হাতে। গুজরাটে এই ধরনের বহু কর্মযজ্ঞেরই সূচনা হয়েছে। দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে অনেক শ্রমিক ও কর্মীও এখানে এসে উন্নয়নের কাজে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের জন্যও বাসস্থানের ব্যবস্থা করার কথা আমরা চিন্তা করেছি।

পূর্ববর্তী সরকারগুলির আমলে যেভাবে বাড়ি-ঘর তৈরি করা হত, আমরা কিন্তু সেইভাবে কাজ করে যাচ্ছি না। সাধারণ মানুষ যাতে স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারেন তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। যে কাজই আমরা শুরু করি না কেন, তার অনেকগুলি মাত্রা থাকে। রাজকোটের ‘লাইট হাউজ’ প্রকল্পটি হল এই ধরনেরই একটি কর্মসূচি যা এক শক্তিশালী সমাজ গঠন এবং স্বাধীন ভারতের স্বপ্নের বাস্তবায়নে আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টারই এক বিশেষ ফসল।

রাজকোটের ‘লাইট হাউজ’ প্রকল্পটি সারা দেশের কাছেই একটি আদর্শ হয়ে উঠতে পারে। এই প্রকল্পের আওতায় উপকৃত হবেন সকলেই – বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলির ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে রিয়েল এস্টেটে কর্মরত মানুষ, প্রত্যেকেই। কোটি কোটি দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নিজস্ব ঘর-বাড়ি গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত হবে এই কর্মসূচি রূপায়ণের মাধ্যমে। এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব করে তুলতে আমরা কাজ করে চলেছি নিরলসভাবেই।

স্বনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে প্রয়োজন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার। এই লক্ষ্যে আমরা এমন এক অভিযানের সূচনা করেছি যাতে সাধারণ মানুষের জীবন অর্থবহ হয়ে উঠতে পারে। নতুন নতুন স্টার্ট-আপ গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি দেশের তরুণ ও যুবকদের জন্য।

উন্নয়ন বলতে শুধুমাত্র শহরে সড়ক, বিপণন কেন্দ্র, মল ও প্লাজা নির্মাণকেই বোঝায় না, নগর জীবনের দায়দায়িত্ব আরও অনেক বেশি। তাই, শহরাঞ্চলের বিক্রেতা ও দোকানদারদের জীবনকে আরও সহজ করে তোলার লক্ষ্যে আমরা এক বিশেষ পরিকল্পনা করেছি। সহজ শর্তে তাঁরা যাতে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ গ্রহণের সুযোগ লাভ করেন তা আমরা নিশ্চিত করেছি।

ডিজিটাল ইন্ডিয়া বর্তমানে উন্নয়নযজ্ঞে একটি বড় হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। সারা বিশ্বের মধ্যে আমরাই সবচেয়ে সস্তায় ইন্টারনেটের সুযোগ পৌঁছে দিতে পেরেছি সাধারণ মানুষের দ্বারপ্রান্তে। তাই, রাস্তার হকার, দোকানদার ও বিক্রেতারাও আজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এর প্রচুর দৃষ্টান্ত রয়েছে গুজরাটেও। এই ব্যবস্থা ক্রমশ আরও প্রসারিত হচ্ছে।

রাজকোটের উন্নয়নে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অণু শিল্প সংস্থাগুলির অবদান রয়েছে যথেষ্ট। রাজকোটে নির্মিত পাম্প, যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের ব্যবহার হয় না এমন অঞ্চল দেশে খুঁজে পাওয়া ভার। শুধু তাই নয়, রাজকোটে উৎপাদিত এই সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রী আজ রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।

দেশে বর্তমানে যানবাহন শিল্পে যে যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয় তাও কিন্তু রাজকোটেই তৈরি। এই ঘটনাও যথেষ্ট গর্বের আমাদের কাছে।

গত দু’দশকে এই ধরনেরই অনেক অসাধ্য সাধন করেছে গুজরাট। গত দু’দশকে দেশে যে এক নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে, একথা বলাই বাহুল্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষায় প্রকাশ, রাজকোট থেকে বিদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রী রপ্তানির মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫ লক্ষ কোটি টাকার মতো। এইভাবেই রাজকোট উদ্যোগী যুব সমাজের ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করে তুলতে নিজেকে প্রস্তুত করেছে।

অন্যদিকে, মোরবীও নতুন নতুন বিস্ময় সৃষ্টি করে চলেছে। এখানকার সেরামিক টালি এখন জগদ্বিখ্যাত। বিশ্বের মোট সেরামিকের চাহিদার ১৩ শতাংশই পূরণ করে গুজরাটের এই অঞ্চলটি। এই কারণেই রপ্তানি নগরী হিসেবেও এক বিশেষ খ্যাতি রয়েছে এই অঞ্চলটির। বর্তমান যুগে ঘরের মেঝে, দেওয়াল, বাথরুম, শৌচাগার ইত্যাদির নির্মাণ অসম্পূর্ণ থেকে যায় মোরবীর সেরামিক টালি ছাড়া। মোরবী এক সময় বন্যায় প্রায় ভেসে গিয়েছিল। তখন কেউই কল্পনা করতে পারেননি যে মোরবী আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবে। মোরবী আজ শুধু নিজেই ঘুরে দাঁড়ায়নি, সেইসঙ্গে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অন্যের দিকেও।

মোরবীর সেই পুনরুত্থানের দিনগুলি আমার বেশ মনে রয়েছে। গ্যাস সংযোগ যদি সেই সময় পৌঁছে দেওয়া যেত, মোরবী তাহলে তখনই অনেক কিছু অসাধ্য সাধন করতে পারত। এই বিষয়টি উপলব্ধি করে আমরা মোরবীর শিল্প সম্ভাবনার বিকাশে নতুন গ্যাস পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করে দিয়েছিলাম। আজ সেখানে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে সেরামিক পার্ক গড়ে উঠতে চলেছে। গত ২০-২২ বছর ধরে মোরবী-তে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের কলকারখানা। ভূপেন্দ্র ভাইয়ের সরকার যে নতুন শিল্পনীতি রাজ্যের জন্য ঘোষণা করেছে তা ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্মের প্রভূত কল্যাণসাধন করবে বলেই আমার বিশ্বাস।

রাজকোটে যে সমস্ত শিল্প গড়ে উঠেছে তার পাশাপাশি রাজকোট ও সৌরাষ্ট্র সহ সমগ্র গুজরাটেই আরও নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। আজ আমি আপনাদের এতগুলি প্রকল্প উপহার দিতে পেরে শুধুমাত্র খুশিই নই, সেইসঙ্গে গর্বিতও। যে উষ্ণ ও আন্তরিক সংবর্ধনা আমি এখানে লাভ করেছি তাতে আমি অভিভূত। এজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই রাজকোটবাসীদের। রাজকোটের কাছে আমি চিরঋণী হয়ে থাকব এবং এই শহরের সেবা করার কোনো সুযোগকেই কোনো অবস্থাতেই আমি হাতছাড়া করব না। আমার এই বিশ্বাস নিয়েই আমি আরও একবার আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

ধন্যবাদ!
প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে