নয়াদিল্লি, ৩০ অক্টোবর, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের ভদোদরায় আজ সি-২৯৫ বিমান নির্মাণ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আত্মনির্ভর ভারতের অধীন প্রযুক্তি ও মহাকাশ শিল্প ক্ষেত্রে নির্মাণের উদ্যোগ সম্পর্কিত একটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।
সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ভারতকে বিশ্ব নির্মাণ ক্ষেত্র হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বৃহৎ পদক্ষেপ নিয়েছি। তিনি বলেন, ভারতে তৈরি যুদ্ধ বিমান, ট্যাঙ্ক, ডুবোজাহাজ, ওষুধ, টিকা, বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম, মোবাইল ফোন, গাড়ি অনেক দেশেই জনপ্রিয়। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারতে তৈরি বিশ্বের জন্য’ এই মন্ত্রের উপর নির্ভর করে এগিয়ে চলছে। ভারত এখন বিশ্বে পণ্যবাহী বিমান নির্মাণে এক জনপ্রিয় ক্ষেত্র হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, আমি দেখতে পাচ্ছি আগামী দিনে ভারত বড় যাত্রীবাহী বিমানও নির্মাণ করবে, যে বিমানের গায়ে লেখা থাকবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’।
তিনি বলেন, আজ যে নির্মাণ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হ’ল, তা দেশে প্রতিরক্ষা ও পরিবহণ ক্ষেত্রের রূপান্তর ঘটাতে সক্ষম। শ্রী মোদী বলেন, এই প্রথম ভারতে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এই পরিমাণ বড় বিনিয়োগ হ’ল। এখানে যে পণ্যবাহী বিমান নির্মাণ করা হবে, তা কেবল সশস্ত্র বাহিনীকেই শক্তি যোগাবে না, দেশের বিমান নির্মাণ ক্ষেত্রে বাস্তুতন্ত্র গঠনের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। তিনি বলেন, “ভদোদরা একসময় সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা ক্ষেত্র হিসাবে বিখ্যাত ছিল, তা উড়ান ক্ষেত্র হাব হিসাবে নতুন পরিচয় গড়ে তুলবে”। ১০০টিরও বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি ক্ষেত্র এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই প্রকল্প থেকে এই জায়গা ভবিষ্যতে বিদেশ থেকে রপ্তানির সুযোগ পেলে ‘ভারতে তৈরি বিশ্বের জন্য’ এই সংকল্পের গতিশীলতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
ভারতে বিমান ক্ষেত্র ক্রমপ্রসারিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বে শীর্ষ স্থানীয় তিনটি দেশের মধ্যে নিজেদের জায়গা করে নিতে চলেছে। উড়ান প্রকল্পের ফলে অনেক পণ্য পরিবহণকারী আজ বিমানে যাতায়াত করছেন। বিমানে যাত্রী সংখ্যা ও পণ্য পরিবহণে বৃদ্ধির উপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ১৫ বছরে ভারতে ২ হাজারেরও বেশি বিমানের প্রয়োজন হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই উদ্যোগ এই লক্ষ্যে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুতি-স্বরূপ। করোনা মহামারী, যুদ্ধ এবং সরবরাহ-শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটায় বিধ্বস্ত বিশ্বের সামনে ভারত সম্ভাবনার নজির গড়ে তুলেছে। তিনি বলেন, এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেই তার বৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, ভারতে উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুণমান বজায় ও ব্যয় সাশ্রয়ের দিকে লক্ষ্য রেখে পরিচালন পদ্ধতি উত্তরোত্তর উন্নতি লাভ করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উচ্চ গুণমানসম্পন্ন ব্যয় সাশ্রয়ী উৎপাদনের সুযোগ ভারত গড়ে তুলছে”। তিনি আরও বলেন, ভারতে উন্নত মেধা দক্ষ মানবসম্পদ রয়েছে। গত ৮ বছরে যেসব সংস্কারমূলক প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে, তার উপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উৎপাদন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবেশ ভারত গড়ে তুলছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামুখী করে তুলতে কর্পোরেট কর কাঠামো সরলীকরণ করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা, মহাকাশ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্য ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের দ্বার উন্মুক্ত করা হয়েছে। ২৯টি কেন্দ্রীয় শ্রম আইন সংস্কার করে মাত্র ৪টি পর্যায়ে আনা হয়েছে। ৩৩ হাজার বাধ্যবাধকতাকে বাতিল করা হয়েছে। কয়েক ডজন করের অবসান ঘটিয়ে পণ্য পরিবহণ কর চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আজকের ভারত নতুন আর্থিক সংস্কারের মন্ত্র রচিত করছে এবং নির্মাণ ক্ষেত্রগুলি এর থেকে সুবিধা লাভ করছে”।
মানসিকতার পরিবর্তন-ই এই সাফল্যের স্বীকৃতি বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আজকের ভারত নতুন মানসিকতা নিয়ে কাজ করছে, তা এক নতুন কর্ম-কেন্দ্রিক মানসিকতা”। তিনি উল্লেখ করেন, একটা সময় এমন মানসিকতা ছিল যে, সরকার-ই সবকিছু জানে। এর ফলে, দেশের মেধাশক্তি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের যে শক্তি তাকে চাপিয়ে রাখার একটা মানসিকতা প্রকট ছিল। “আজ ‘সবকা প্রয়াস’ – এর মধ্য দিয়ে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্র উভয়কেই অনুরূপ গুরুত্ব দিচ্ছে”। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল, সরকারের মানসিকতার দরুন কেবলমাত্র ভর্তুকি দেওয়ায় নির্মাণ ক্ষেত্রগুলি প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছিল। লজিস্টিক, বিদ্যুৎ সরবরাহ, জল সরবরাহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সুযোগগুলি গুরুত্বহীন হয়ে থাকতো। “আমরা এই ঘন ঘন পরিবর্তনকারী সিদ্ধান্তের বদল ঘটিয়ে বিনিয়োগকারীদের জন্য উৎপাদন-ভিত্তিক বিভিন্ন অনুদান চালু করেছি। উৎপাদন-ভিত্তিক অনুদান প্রকল্প চালুর ফলে অনেক পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। আজকের নীতিসমূহ, স্থায়ী, সম্ভাব্য ও সুদূরপ্রসারী”, বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী এমন একটি সময়ের কথাও স্মরণ করেন একটা সময় উৎপাদন ক্ষেত্র নাগালের বাইরে থাকায় পরিষেবা খাতে গুরুত্ব দেওয়া হ’ত।। তিনি বলেন, “আজ আমরা পরিষেবা এবং উৎপাদন উভয় ক্ষেত্রেই উন্নতি করছি। তিনি একটি সামগ্রিক পদ্ধতির গুরুত্ব তুলে ধরেন, যা উৎপাদন এবং পরিষেবা উভয় ক্ষেত্রেই আলোকপাত করে। “আজ ভারত উৎপাদনে সবার থেকে এগিয়ে থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে”। “এটা সম্ভব হয়েছে কারণ, গত ৮ বছরে আমরা দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছি এবং এর একটি পরিবেশ গড়ে তুলেছি। এই সমস্ত পরিবর্তনগুলির সমন্বয় ঘটিয়ে আজ উৎপাদন ক্ষেত্রে ভারতের উন্নয়ন যাত্রা এই পর্যায়ে পৌঁছেছে”, বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
সরকারের বিনিয়োগ-বান্ধব নীতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের সুফল স্পষ্টতই দৃশ্যমান। তিনি বলেন, ” গত ৮ বছরে ১৬০টিরও বেশি কোম্পানি ভারতে বিনিয়োগ করেছে”। তিনি আরও বিশদভাবে বলেন যে, এই ধরনের বিদেশী বিনিয়োগ নির্দিষ্ট শিল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং অর্থনীতির ৬১টি ক্ষেত্র জুড়ে বিস্তৃত এবং ভারতের ৩১টি রাজ্যে তা ছড়িয়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, শুধু মহাকাশ ক্ষেত্রে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, ২০০০ – ২০১৪ সালের মধ্যে যে বিনিয়োগ হয়েছিল ২০১৪ সালের পর তা ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, আগামী বছরগুলিতে প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশ ক্ষেত্রগুলি আত্মনির্ভরের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হতে চলেছে৷ আমাদের লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যেই প্রতিরক্ষা উৎপাদন ২৫০০ কোটি ডলারের বেশি করা। আমাদের প্রতিরক্ষা রপ্তানিও ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে”, বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, উত্তর প্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে যে প্রতিরক্ষা করিডর তৈরি করা হচ্ছে, তা এই ক্ষেত্রের প্রসারে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে। শ্রী মোদী গান্ধীনগরে সর্বকালের সর্ববৃহৎ ডেফ-এক্সপো আয়োজনের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং গুজরাট সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন যে, ডেফ-এক্সপো’তে প্রদর্শিত সমস্ত সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তি ভারতেই প্রস্তুত হয়েছে। “সি-২৯৫ প্রকল্পের প্রতিফলন আগামী বছরের ডেফ-এক্সপো’তে আমরা দেখব”, বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে দেশে অভূতপূর্ব বিনিয়োগের আস্থার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করার জন্য শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরও যোগ করেছেন যে দেশের স্টার্ট-আপগুলিকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করার জন্য আরও চিন্তাভাবনার প্রয়োজন। গবেষণার ক্ষেত্রে বেসরকারি অংশগ্রহণ বৃদ্ধির উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। “যদি আমরা এই দিকে এগিয়ে যাই, তাহলে আমরা উদ্ভাবন এবং উৎপাদনের আরও শক্তিশালী বাস্তুতন্ত্রের উন্নতি করতে সক্ষম হব। আপনাদের ‘সবকা প্রয়াস’ – এর মন্ত্রটি মনে রাখতে হবে”।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবব্রত, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, টাটা সন্সের চেয়ারম্যান শ্রী এন চন্দ্রশেখরণ এবং এয়ারবাসের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার শ্রী ক্রিশ্চিয়ান শেরার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রেক্ষাপট:
সি-২৯৫ বিমান নির্মাণ কেন্দ্রটি হবে দেশের প্রথম বেসরকারী বিমান নির্মাণ সংস্থা। টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেম লিমিটেড এবং এয়ারবাস ডিফেন্স অ্যান্ড স্পেস – স্পেনের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য ৪০টি সি-২৯৫ বিমান তৈরির জন্য এই সুবিধাটি ব্যবহার করা হবে। এই সুবিধাটি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা অর্জনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে এবং এই খাতে বেসরকারি প্রতিযোগীদের সামনে সম্ভাবনার সুযোগ তৈরি করবে।
PG/AB/SB
Aircraft manufacturing facility in Vadodara is India's giant leap towards becoming self-reliant in aviation sector. https://t.co/0IL0aIS68r
— Narendra Modi (@narendramodi) October 30, 2022
India is becoming a big manufacturing hub for the world. pic.twitter.com/AAlEcJrQrX
— PMO India (@PMOIndia) October 30, 2022
Make in India, make for the globe. pic.twitter.com/5NbRMzB5Qg
— PMO India (@PMOIndia) October 30, 2022
Transport aircraft हमारी सेना को तो ताकत देंगे ही, इससे Aircraft manufacturing के लिए एक नए इकोसिस्टम का भी विकास होगा। pic.twitter.com/FDqMjiS2hy
— PMO India (@PMOIndia) October 30, 2022
India's aviation sector is rapidly growing. pic.twitter.com/6HB9URQS9Q
— PMO India (@PMOIndia) October 30, 2022
A golden opportunity for the world to invest in India. pic.twitter.com/qxMNRSFaFv
— PMO India (@PMOIndia) October 30, 2022
A new saga of economic reforms is being written in India today. pic.twitter.com/neyjuOWqaF
— PMO India (@PMOIndia) October 30, 2022
Today, India is working with a new mindset, a new work-culture. pic.twitter.com/rR4JyLbOO6
— PMO India (@PMOIndia) October 30, 2022
Today our policy is stable, predictable and futuristic. pic.twitter.com/Z5S7HRNj5m
— PMO India (@PMOIndia) October 30, 2022
Today, India is set to be at the forefront of manufacturing. pic.twitter.com/5UoXoP2e4a
— PMO India (@PMOIndia) October 30, 2022
Make in India, Make for the Globe! pic.twitter.com/X31mZ5oHyi
— Narendra Modi (@narendramodi) October 30, 2022
Make in India, Make for the Globe! pic.twitter.com/X31mZ5oHyi
— Narendra Modi (@narendramodi) October 30, 2022
The facility whose foundation stone has been laid today is all set to transform the defence and aviation sector. The benefits for MSME sector are immense too. pic.twitter.com/x2uP8sx4Qk
— Narendra Modi (@narendramodi) October 30, 2022
Despite multiple global challenges, India offers a golden opportunity to those who want to invest. pic.twitter.com/sw2H1EvXro
— Narendra Modi (@narendramodi) October 30, 2022
A glimpse of how our Government has supported the manufacturing sector, breaking free from the conventional mindset that was followed for decades. pic.twitter.com/t4hKepzVei
— Narendra Modi (@narendramodi) October 30, 2022