নয়াদিল্লি, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপানিজি, উপ–মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতিন প্যাটেলজি, গুজরাট সরকারের মন্ত্রীগণ, সাংসদগণ, আর আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
কি কচ্ছ–এর ভাই–বোনেরা, ভালো আছেন তো? এই করোনার সময়ে নিজের ছেলে–মেয়ে ও বয়স্কদের খেয়াল রাখবেন! আজ কচ্ছ–এ এসে আমার ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। আজ এখানে বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পেরে আমি আনন্দিত।
বন্ধুগণ,
আজ গুজরাট তথা দেশের মহান সুপুত্র সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলজির মৃত্যু দিবস। মা নর্মদার জল দিয়ে গুজরাটের কায়াকল্প করার স্বপ্ন দেখেছিলেন সর্দার সাহেব। তাঁর স্বপ্ন আজ দ্রুতগতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। কেভাডিয়াতে তাঁর স্ট্যাচু অফ ইউনিটি, বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তিটি আমাদের দিনরাত একজোট হয়ে দেশের জন্য কাজ করার প্রেরণা জোগায়। সর্দার সাহেবকে স্মরণ করে আমাদের এভাবেই দেশ তথা গুজরাটের গৌরব বৃদ্ধি করে যেতে হবে।
বন্ধুগণ,
আজ কচ্ছ–এলাকাতেও নতুন প্রাণশক্তি সঞ্চার হচ্ছে। ভাবুন, আমাদের কচ্ছ–এ বিশ্বের সর্ববৃহৎ হাইব্রিড পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন পার্ক গড়ে উঠছে! আর এটি কত বড়? সিঙ্গাপুর নামে যে দেশটি রয়েছে, বাহরিন নামে যে দেশটি রয়েছে, আয়তনে প্রায় ওই দেশগুলির সমান আকারের একটি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন পার্ক এই কচ্ছ–এ গড়ে উঠতে চলেছে। এখন আপনারা আন্দাজ করতে পারছেন যে কত বিশাল অঞ্চল নিয়ে এই পার্কটি গড়ে উঠবে। ৭০ হাজার হেক্টর। অর্থাৎ, ভারতের অনেক বড় বড় শহরের থেকেও বড় এই কচ্ছ–এর পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন পার্ক। এটা যখন কেউ শুনবেন, যখন কানে আসবে, শুনে কত ভালো লাগবে। লাগবে কি লাগবে না আমার কচ্ছ–এর ভাই–বোনেরা? আপনাদের মন নিশ্চয়ই অনেক গর্বে ভরে উঠছে।
বন্ধুগণ,
আজ কচ্ছ নতুন যুগের আধুনিকতম প্রযুক্তি আর নতুন যুগের অর্থনীতি উভয় লক্ষ্যেই একটি বড় পদক্ষেপ করেছে। খাওড়া–তে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন পার্ক থেকে শুরু করে মান্ডোই–তে ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্ট এবং আঞ্জার–এ সরহদ ডেহরির নতুন অটোমেটিক প্ল্যান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, এই তিনটি প্রকল্প কচ্ছ–এর উন্নয়ন যাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে। আর এর দ্বারা সবচাইতে বেশি লাভবান হবেন আমার এখানকার কৃষক ভাই–বোনেরা, পশুপালক ভাই–বোনেরা, এখানকার সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে, আমার মা ও বোনেরা।
বন্ধগণ,
আমি যখন কচ্ছ–এর উন্নয়নের কথা বলি, তখন আমার অনেক পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে, অনেক ছবি একসঙ্গে ভাসতে থাকে। একটা সময় বলা হত কচ্ছ এত দূর; উন্নয়নের কোনও নামগন্ধ নেই, যোগাযোগ ব্যবস্থা বলতে কিচ্ছু নেই। বিদ্যুৎ, পানীয় জল, সড়ক – সমস্ত সমস্যার অপর নাম ছিল কচ্ছ। সরকারি মহলেও এই কথা প্রচলিত ছিল। যদি কাউকে পানিশমেন্ট পোস্টিং দিতে হয়, তাহলে তাঁকে কচ্ছ–এ পাঠিয়ে দাও। আর কর্মচারী ও আধিকারিকরাও এমনই ভাবতেন যেন তাঁদের কালাপানির সাজা হয়ে গেছে। আজ পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে আধিকারিক ও কর্মচারীরা সুপারিশ নিয়ে আসেন যে আমাকে যেন কিছু সময়ের জন্য কচ্ছ–এ কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। আগে কেউ কেউ তো এমনও বলতেন যে এই অঞ্চলের উন্নয়ন কখনই হওয়া সম্ভব নয়। এমনই পরিস্থিতিতে কচ্ছ–এ ভূমিকম্পের ভয়ানক বিপর্যয়ও আসে। যা বাকি ছিল, যা বেঁচে ছিল, ভূমিকম্প তাও ছারখার করে দিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু একদিকে মা আশাপুরা দেবী আর কোটেশ্বর মহাদেবের আশীর্বাদ, আর অন্যদিকে আমার কচ্ছ–এর পরিশ্রমী জনগণের সাহস, তাঁদের পরিশ্রম, তাঁদের ইচ্ছাশক্তি। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই এই অঞ্চলের মানুষ এমন চমৎকার করে দেখালেন যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। কচ্ছ–এর জনগণ ওই নিরাশার পরিস্থিতিকে আশায় পরিবর্তিত করে দিলেন। আমি মনে করি এটাই মা আশাপুরা দেবীর আশীর্বাদ। এখানে নিরাশার কোনও স্থান নেই। শুধু আশাই আশা। ভূমিকম্প যতই তাঁদের বাড়ি ভেঙে দিক না কেন, কিন্তু এতবড় ভূমিকম্পও কচ্ছ–এর মানুষদের মনোবল ভাঙতে পারেনি। আমার কচ্ছ–এর ভাই–বোনেরাও উঠে দাঁড়িয়েছেন। আর দেখুন, তাঁরা এই অঞ্চলকে কোথা থেকে কোথায় পৌঁছে দিয়েছেন।
বন্ধুগণ,
আজ কচ্ছ–এর পরিচয় বদলে গেছে। আজ কচ্ছ–এর সম্মান দ্রুতগতিতে ক্রমবর্ধমান। আজ কচ্ছ দেশের দ্রুতগতিতে উন্নয়নশীল অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রেষ্ঠ স্থানে পরিণত হয়েছে। এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিদিন উন্নততর হচ্ছে। এই সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে আগে লাগাতার মানুষ পালিয়ে যেতেন। আগেকার জনসংখ্যার হিসাব দেখলে দেখা যেত প্রতি বছর ঋণাত্মক বৃদ্ধি হচ্ছে। আর তাঁরা গিয়ে অন্যান্য শহরের জনসংখ্যা বাড়িয়ে দিতেন। অধিকাংশ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মানুষ এভাবে শহরগুলিতে পালিয়ে যেতেন। সেজন্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও অনেক সমস্যা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। এখন যখন সেই পলায়নের প্রক্রিয়া থামানো গেছে, তখন যে গ্রামগুলি একদিন খালি হয়ে গিয়েছিল, সেখানকার মানুষ আবার সেই গ্রামগুলিতে বসবাসের জন্য ফিরে এসেছেন। জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও এর বড় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বন্ধুগণ,
যে কচ্ছ একদিন জনশূণ্য হয়ে পড়ছিল, সেই কচ্ছ আজ দেশ তথা বিশ্বের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। করোনা অনেক নতুন সমস্যা তৈরি করে দিয়েছিল, কিন্তু কচ্ছ–এর সাদা রাণ, কচ্ছ–এর রাণোৎসব গোটা বিশ্বকে আকর্ষণ করছে। প্রতি বছর রাণোৎসবের সময় এখন গড়ে ৪–৫ লক্ষ পর্যটক পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন। তাঁরা এই সাদা মরুদেশ এবং নীল আকাশের আনন্দ উপভোগ করেন। এরকম পরিবেশে এত বড় মাত্রায় সাংস্কৃতিক কর্মসূচি, কচ্ছ–এর স্থানীয় উৎপাদিত পণ্যগুলির এত বড় মাত্রায় বিক্রি, এখানকার পারম্পরিক খাদ্যাভ্যাসও পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, তাঁদের তৈরি করা বিশেষ জনপ্রিয় হচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন কেউ এরকম ভাবতেও পারত না। আজ আমি আমার অনেক পুরনো পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলা ও কিছুক্ষণআড্ডা মারার সুযোগ পেয়েছি। তাঁরা আমাকে এমনই বলছিলেন। বলছিলেন যে এখন তো আমাদের ছেলে–মেয়েরা ইংরেজি বলা শিখে গেছে। আমি জিজ্ঞাসা করি যে কেমন করে? তাঁরা বলেন, আমরা এখন বাড়িতে ‘হোম–স্টে’ করাই। আমরা বাড়িতে নতুন ঘর তুলে সেখানে ‘হোম–স্টে’–র মতো করে সমস্ত ব্যবস্থাপনা করেছি। সেখানে থাকতে আসা পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে বলে আমাদের ছেলে–মেয়েরা অনেক কিছু শিখেছে। কচ্ছ গোটা দেশকে দেখিয়েছে যে নিজেদের সম্পদ ও সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে কিভাবে আত্মনির্ভরতার দিকে এগিয়ে চলা যায়। আমি বিশ্বের উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির গবেষকদের এবং এই অঞ্চল নিয়ে যাঁরা গবেষণা করছেন তাঁদের বলব, ভূমিকম্পের পর যেভাবে কচ্ছ–এ চতুর্মুখী উন্নয়ন হয়েছে, আমি মনে করি এই কেস স্টাডি তাঁদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হবে। সেজন্য তাঁদের এ ধরনের কেস স্টাডির জন্য এগিয়ে আসা উচিৎ। আর এই ধরনের মডেল কিভাবে কাজ করছে তা নিয়ে এই গবেষকরা বলুন। এত বড় ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প বা বিপর্যয়ের দু‘দশকের মধ্যে এত বড় সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন চারিদিকে অধিকাংশ অঞ্চল শুধু ঊষর ভূমি – মরুভূমি, এটা সত্যিই গবেষণার বিষয়।
বন্ধুগণ,
আমি সব সময় মনে করি যে আমার ওপর সব সময় ঈশ্বরের কৃপা ছিল, আর ঈশ্বরের কৃপাতেই হয়তো সেই ভয়ানক ভূমিকম্পের সময় আমার বিশেষভাবে কচ্ছ–এর জনগণের সেবা করার সুযোগ এসেছিল। এটাকে কালতালীয়ই বলব যে ভূমিকম্পের পরের বছর যখন রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে, তার যে তারিখটি ছিল সেটি ছিল ১৫ ডিসেম্বর। আর আজকের দিনটিও ১৫ ডিসেম্বর। কেউ কল্পনাও করতে পারবে না যে এতবড় ভূমিকম্পের পর এখানকার জনগণ আমাদের দলকে আশীর্বাদ দেবেন। অনেক নেতিবাচক সমালোচনা চলছিল। সেই নির্বাচনের ফল যখন ১৫ ডিসেম্বরে প্রকাশিত হল, তখন দেখা গেল কচ্ছ–এর মানুষ আমাদের যেমন ভালোবাসা জানিয়েছেন, আশীর্বাদ দিয়েছেন, সেই পরম্পরা আজও জারি রয়েছে। আজও দেখুন, আপনাদের আশীর্বাদ রয়েছে। এমনিতে বন্ধুগণ, আজকের দিনটিও ১৫ ডিসেম্বর। অনেকেই হয়তো এই কাকতালীয় সংযোগের কথা জেনে অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হচ্ছেন, খুশি হচ্ছেন। দেখুন আমাদের পূর্বজরাও কত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন। আজকাল কখনও কখনও নতুন প্রজন্মের অনেকেই ভাবেন যে পুরনোরা সবাই নিষ্কর্মা। তাঁরা অযথাই এ ধরনের কথা বলতেন। আমি একটি ঘটনা শোনাচ্ছি। আজ থেকে ১১৮ বছর আগে আজকের দিনে, ১৫ ডিসেম্বরে আমেদাবাদে একটি শিল্প প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছিল। সেই প্রদর্শনীর মুখ্য আকর্ষণ ছিল ‘ভানু তাপ যন্ত্র‘। অর্থাৎ, ১১৮ বছর আগেও আমাদের এখানকার মানুষের শিল্পোদ্যোগের কথা ভেবে দেখুন। ভানু তাপ যন্ত্র, মানে সূর্য তাপ যন্ত্র। এটাই ছিল সবচাইতে বড় আকর্ষণের বিষয়। ভানু তাপ যন্ত্র, অর্থাৎ সূর্যের উত্তাপ দিয়ে যে যন্ত্র চলে সেরকমই একটি সোলার কুকার তখন আবিষ্কৃত হয়েছিল। আর আজ ১১৮ বছর পর ১৫ ডিসেম্বরেই সেই সূর্যের উত্তাপকে ভিত্তি করেই এতবড় পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন পার্কের উদ্বোধন করা হচ্ছে। এই পার্কে সৌরশক্তির পাশাপাশি, বায়ুশক্তি এই দুটির মাধ্যমে প্রায় ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা থাকবে। এই পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন পার্কে প্রায় ১.৫ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। ভাবুন, এই নিষ্ফলা মরু অঞ্চলের কত বড় ভূমির সদ্ব্যবহার হবে। সীমান্ত বরাবর এই বায়ুশক্তি উৎপাদনের যন্ত্রগুলি প্রোথিত হওয়ার ফলে সীমান্ত সুরক্ষাও আরও উন্নত হবে। আপনাদের বিদ্যুতের বিল হ্রাস করার যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ এগিয়ে চলেছে, সেই লক্ষ্য পূরণেও আমরা সফল হব। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক এবং শিল্পপতি উভয়েরই অনেক লাভ হবে। আর সব থেকে বড় কথা, এতে বায়ু দূষণ হ্রাস পাবে, আমাদের পরিবেশও লাভবান হবে। এই পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন পার্ক থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে তা প্রতি বছর ৫ কোটি টন কার্বন ডাই–অক্সাইড নিঃসরণকে কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। আর এই যে কাজ এগিয়ে চলেছে, তাকে যদি পরিবেশের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হয়, তাহলে এই কাজ প্রায় ৯ কোটি গাছ লাগানোর সমান প্রভাবসম্পন্ন হবে। এ শক্তি উৎপাদন পার্ক ভারতে মাথাপিছু কার্বন ডাই–অক্সাইড নিঃসরণ হ্রাস করতে অনেক বড় অবদান রাখবে। এর ফলে প্রায় ১ লক্ষ মানুষের নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এর দ্বারা সবচাইতে বেশি লাভবান হবেন আমার কচ্ছ–এর যুব সম্প্রদায়।
বন্ধুগণ,
একটা সময় ছিল যখন গুজরাটের মানুষের দাবি ছিল যাতে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য একটু সময় দিয়ে যাতে বিদ্যুৎ যায়। আর আজ গুজরাট দেশের সেই রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম যেখানে শহর থেকে গ্রাম – সর্বত্র ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ সুনিশ্চিত করা হয়েছে। আজ যেসব যুবক–যুবতীদের বয়স ২০ বছর, তারা হয়তো জানতেই পারবে না আগে পরিস্থিতি কেমন ছিল। তারা তো কল্পনাও করতে পারবে না যে এতবড় পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তন গুজরাটের জনগণের অক্লান্ত পরিশ্রমের দ্বারাই সম্ভব হয়েছে। এখন তো কৃষকদের জন্য ‘কিষাণ সূর্যোদয় যোজনা‘র মাধ্যমে আলাদাভাবে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্কও তৈরি করা হচ্ছে। কৃষকদের যাতে রাতে সেচের দরকার না হয়, সেই লক্ষ্য রেখে বিশেষ লাইন পাতা হচ্ছে।
ভাই ও বোনেরা,
গুজরাট দেশের প্রথম রাজ্য যেখানে শক্তি উৎপাদনকে মাথায় রেখে নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা খালের দু‘পাড়েও সৌর প্যানেল লাগিয়ে দিয়েছি। এগুলির খবর বিদেশেও পৌঁছে গেছে। আমার মনে পড়ে, যখন গুজরাট সৌরশক্তিকে এগিয়ে দেওয়া শুরু করেছিল, তখন এমন কথাও উঠেছিল যে এই মূল্যবান বিদ্যুৎ নিয়ে কী করব? কারণ, এখন গুজরাট এত বড় পদক্ষেপ উঠিয়েছে যে সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে সেগুলি থেকে ১৬ বা ১৭ টাকা প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা উঠেছিল। কিন্তু ভবিষ্যতের সম্ভাবনাগুলির দিকে তাকিয়ে আমরা গুজরাটে এই প্রকল্পের কাজ জারি রেখেছি। কিন্তু ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দিকে তাকিয়ে গুজরাট এই কাজ চালু রেখেছে আর সেই বিদ্যুৎ শুধু গুজরাট নয়, সারা দেশে ২ টাকা কিংবা ৩ টাকা ইউনিট দরে বিক্রি হচ্ছে। গুজরাট তখন যে কাজ করেছিল, তার তখনকার অভিজ্ঞতা আজ দেশকে পথ দেখাচ্ছে। আজ ভারত পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষেত্রে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম শক্তি। একথা শুনলে প্রত্যেক ভারতবাসীর গর্ব হবে বন্ধুগণ, বিগত ছয় বছরে আমাদের সৌরশক্তি উৎপাদন ক্ষমতা ১৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি একটি ক্লিন এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট র্যাঙ্কিং বা স্বচ্ছ শক্তি বিনিয়োগ র্যাঙ্কিং এসেছে। এই র্যাঙ্কিং–এ বিশ্বের যে ১০৪টি দেশকে নেওয়া হয়েছে তার প্রথম তিনটি স্থানের মধ্যে ভারত নিজের জায়গা করে নিয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখন ভারত গোটা বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বন্ধুগণ,
একবিংশ শতাব্দীর ভারতের জন্য যেমন শক্তি উৎপাদনক্ষেত্রে নিরাপত্তা প্রয়োজনীয়, তেমনই জলের নিরাপত্তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর আমি গোড়া থেকেই দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করছি যাতে কখনও জলের অভাবে জনগণের উন্নয়ন থেমে না থাকে। জল নিয়ে গুজরাটে যে কাজ করেছি, তা আজ দেশের জন্য পথ প্রদর্শক হয়ে উঠেছে। একটা সময় ছিল যখন কচ্ছ–এ মা নর্মদার জল পৌঁছে দেওয়ার কথা বললে কিছু মানুষ বিদ্রূপ করতেন। তাঁরা এটা বলতেন যে, এইসব ফাঁপা রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি, বাস্তবে কিছু হবে না। কখনও কখনও অনেকে বলত, ৬০০–৭০০ কিলোমিটার দূর থেকে মা নর্মদার এখানে কিভাবে পৌঁছতে পারে? এটা কখনই হবে না। কিন্তু আজ কচ্ছ–এ মা নর্মদার জল পৌঁছচ্ছে আর কচ্ছবাসী মা নর্মদার আশীর্বাদও পাচ্ছেন। কচ্ছ–এর কৃষক থেকে শুরু করে সীমান্ত সেনা – উভয়েরই জলের চিন্তা দূর হয়েছে। আমি এখানকার নাগরিকদের বিশেষ প্রশংসা করব, যাঁরা জল সংরক্ষণকে একটি গণ–আন্দোলনে পরিণত করেছেন। গ্রামের মানুষ এগিয়ে এসেছেন, একের পর এক জল সমিতি গড়ে উঠেছে। মহিলারাও এক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছেন, ‘চেক ড্যাম’ বানিয়েছেন, জলের ট্যাঙ্ক বানিয়েছেন, খাল কাটার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন। আমি সেদিনের কথা কখনও ভুলতে পারব না। যেদিন প্রথমবার নর্মদার জল এখানে এসেছিল, আমার সেদিনের কথা খুব মনে পড়ছে। সেদিন কচ্ছ–এর যে কোনও মানুষ বিশ্বের যে কোনও জায়গায় থাকুন না কেন, মা নর্মদার জল যখন কচ্ছ–এর মাটি স্পর্শ করেছিল সেদিন প্রত্যেকের চোখে আনন্দের অশ্রু প্রবাহিত হয়েছিল। সেই দৃশ্য আমি নিজের চোখে দেখেছিলাম। জল কাকে বলে, – এটা কচ্ছ–এর মানুষ যতটা বুঝতে পারবেন, তা হয়তো আর কেউ বুঝবেন না। গুজরাটে জলের জন্য যে বিশেষ গ্রিড তৈরি হয়েছে, খালের জাল বিছানো হয়েছে, তার দ্বারা এখন কোটি কোটি মানুষের উপকার হচ্ছে। এখানকার জনগণের প্রচেষ্টা জাতীয় স্তরে জল জীবন মিশনেরও প্রেরণার উৎস। দেশের প্রত্যেক বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়ার অভিযান দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। মাত্র এক বছর তিন মাসের মধ্যে এই অভিযান প্রায় ৩ কোটি বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দিয়েছে। এমনিতে সমগ্র গুজরাটেও ৮০ শতাংশের বেশি মানুষের বাড়িতে নলের মাধ্যমে জলের পরিষেবা পৌঁছে গেছে। আমাকে বলা হয়েছে যে, আর কিছুদিনের মধ্যেই গুজরাটের প্রত্যেক জেলায় নলের মাধ্যমে জল পৌঁছনোর পরিষেবা চালু হয়ে যাবে।
ভাই ও বোনেরা,
বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি জলের নতুন উৎস খুঁজে বের করাও অত্যন্ত জরুরি। এই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের বাড়ির কাছেই সমুদ্রের নোনা জল পরিশোধন করে ব্যবহারের ব্যাপক প্রকল্পের কাজ চলছে। মান্ডবিতেও যে ডিস্যালাইনেশন প্ল্যান্ট গড়ে উঠবে, নর্মদা গ্রিড, সৌনি নেটওয়ার্ক এবং ওয়েস্ট ওয়াটার ট্রিটমেন্টের মতো প্রচেষ্টাগুলি আরও বিস্তার লাভ করবে। জল পরিশোধনের এই প্রকল্প যখন প্রস্তুত হয়ে যাবে, তখন এখানেই মান্ডবি ছাড়া মুন্দ্রা, নখাতরানা, লখপত এবং আবদাসার লক্ষ লক্ষ পরিবার লাভবান হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এই অঞ্চলগুলির প্রায় ৮ লক্ষ মানুষ রোজ ১০ কোটি লিটার পরিচ্ছন্ন জল পাবেন। আরেকটি লাভ হবে যে হাজার হাজার কিলোমিটার দূর থেকে এখানে যে নর্মদার জল আসছে, আমরা সেই জলও সর্বাধিক সদ্ব্যবহার করতে পারব। তাছাড়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে কচ্ছ–এর অন্যান্য তালুক যেমন রাপড়, ভোচাও, ডান্ডিগ্রাম এবং অঞ্জারের ৮ লক্ষ মানুষের কাছে প্রায় ১০ কোটি লিটার জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
বন্ধুগণ,
কচ্ছ ছাড়াও দহেজ, দ্বারকা, ঘোঘা, ভাবনগর, গির, সোমনাথ অঞ্চলেও এই প্রকল্পের কাজ আগামীদিনে শুরু হতে চলেছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে সমুদ্র তটবর্তী অন্যান্য রাজ্যগুলিকেও মান্ডবির এই প্রকল্প নতুন প্রেরণা জোগাবে, তাঁদের উৎসাহিত করবে।
ভাই ও বোনেরা,
সময়ের সঙ্গে প্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন আনা, এটা কচ্ছ তথা গুজরাটের শক্তি। আজ গুজরাটের কৃষক, এখানকার পশুপালক, এখানকার মৎস্যজীবী ভাই–বোনেরা আগের থেকে অনেক উন্নত পরিস্থিতিতে রয়েছেন। এর একটা কারণ এটাও যে এখানকার ফসলের খেতে পারম্পরিক চাষের পাশাপাশি, আধুনিক পদ্ধতি এবং প্রযুক্তিকেও যুক্ত করা হয়েছে। ফসলের বৈচিত্র্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কচ্ছ সহ গুজরাটে কৃষকরা বেশি চাহিদা এবং বেশি মূল্যসম্পন্ন ফসলের দিকে বেশি ঝুঁকে গেছে। আর আজ সেসব ক্ষেত্রে তাঁরা দ্রুত এগিয়ে চলেছেন। এখন আমাদের এই কচ্ছ থেকেই কৃষিজ পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এটা আগে কেউ ভাবতেও পারেনি। আজ এখানে উৎপাদিত খেজুর, কমলা এবং ড্রাগন ফ্রুটের মতো অনেক ফল বিদেশে রপ্তানি হয়। মাত্র দেড় দশকে গুজরাট কৃষি উৎপাদনে দেড়গুণেরও বেশি বৃদ্ধি করতে পেরেছে।
ভাই ও বোনেরা,
গুজরাট কৃষিক্ষেত্রে মজবুত হওয়ার আরেকটি বড় কারণ হল এখানকার অন্যান্য শিল্পগুলির মতোই চাষ থেকে শুরু করে বাণিজ্য – যে কোনও ক্ষেত্রেই সরকার নাক গলায় না, খবরদারি করে না। গুজরাটে সরকার কৃষক ও শিল্পপতিদের সব ধরনের বাধা–নিষেধ থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। আজ আমরা দেখছি যে ডেয়ারি এবং মৎস্যচাষের সঙ্গে যুক্ত দুটো ক্ষেত্র এমন যেখানে দেশের মধ্যে সবচাইতে দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। অনেক কম গবেষকই এই বিষয়ে গবেষণা করেছেন। অনেক কম মানুষ এগুলি নিয়ে লিখেছেন। গুজরাটেও দুধ–ভিত্তিক শিল্পগুলির ব্যাপক প্রসার হয়েছে কারণ এগুলির ওপর থেকে সরকার সমস্ত রকম বাধা–নিষেধ তুলে নিয়েছে। সরকার অবশ্যই প্রয়োজনীয় সাহায্য করে কিন্তু বাকি কাজের ক্ষেত্রে সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা কিংবা আমাদের কৃষক ভাই–বোনেরা করেন। আজ আঞ্জারা সরহদ ডেয়ারিও তার একটি উত্তম উদাহরণ। আমার মনে আছে, কচ্ছ–এ ডেয়ারি হওয়া উচিৎ – এই বিষয় নিয়ে যখন আমি শুরুতে কথা বলতাম, তখন সকলেই আমার সঙ্গে নেতিবাচক কথা বলতেন, নিরাশার কথা বলতেন। আমি তাঁদেরকে বলি যে ছোট উদ্যোগ থেকে শুরু করতে চাই, দেখতে চাই কী হয়। সেই ছোট করে শুরু করা কাজ আজ কোথায় পৌঁছে গেছে। এই ডেয়ারি কচ্ছ–এর পশুপালকদের জীবন পরিবর্তনে অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত কচ্ছ থেকে খুব কম মাত্রায় দুধ প্রক্রিয়াকরণের জন্য গান্ধীনগরের ডেয়ারিতে পাঠানো হত। কিন্তু এখন তার প্রক্রিয়াকরণ আঞ্জারের ডেয়ারি প্ল্যান্টেই হচ্ছে। এর মাধ্যমে কৃষকদের প্রতিদিনকার পরিবহণ খরচ বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। এখন সরহদ ডেয়ারির অটোমেটিক প্ল্যান্টের ক্ষমতা আরও বাড়তে চলেছে। আগামীদিনে এখানকার ডেয়ারি প্ল্যান্টে প্রতিদিন ২ লক্ষ লিটারেরও বেশি দুধ প্রক্রিয়াকরণ হবে। তার চারপাশের এলাকার পশুপালকরাও অত্যন্ত লাভবান হবেন। শুধু তাই নয়, নতুন প্ল্যান্টে দই, বাটার মিল্ক, লস্যি, মাখন ও ক্ষীরের মতো অনেক দুগ্ধজাত পণ্যে মূল্য সংযোজনও সম্ভব হবে।
বন্ধুগণ,
যে পশুপালকরা লাভবান হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ক্ষুদ্র কৃষক। কারোর ৩–৪টি গবাদি পশু রয়েছে, কারোর ৫–৭টি। এই অবস্থা প্রায় গোটা দেশেই। এখানকার মোষ, কচ্ছ–এর বন্নী মোষ সারা পৃথিবীতে সুনাম অর্জন করেছে। কচ্ছ–এর তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি থেকে শুরু করে শূণ্যের নিচে পর্যন্ত চলে যায়। এই তাপমাত্রায় বন্নী মোষ সহজেই চলাফেরা করতে পারে, খুব ভালোভাবে থাকতে পারে। এই মোষগুলির খুব কম জল দরকার আর খাদ্যের অনেক দূর পর্যন্ত যেতে তাদের কোনও অসুবিধা হয় না। অথচ এই মোষগুলি গড়ে প্রতিদিন ১৫ লিটার দুধ দেয়। এর ফলে, কৃষকের বার্ষিক আয় একটি মোষ থেকে ২–৩ লক্ষ টাকা হতে পারে। আমাকে বলা হয়েছে যে, সম্প্রতি একটি বন্নী মোষ ৫ লক্ষ টাকারও বেশি মূল্যে বিক্রি হয়েছে। দেশের অন্য প্রান্তের মানুষ যদি শোনেন তাহলে আশ্চর্য হবেন যে বন্নী মোষ ৫ লক্ষ টাকায় কেনা যায়। অর্থাৎ, যে টাকা দিয়ে দুটো ছোট গাড়ি কেনা যায়, সেই টাকা দিয়ে একটি বন্নী মোষ কিনতে হয়।
বন্ধুগণ,
২০১০ সালে বন্নী মোষকে জাতীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার পর এটিই মোষের প্রথম প্রজাতি যাকে জাতীয় স্তরে এ ধরনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
বন্ধুগণ,
বন্নী মোষের দুধের ব্যবসা আর সেজন্য তৈরি বিভিন্ন ব্যবস্থা কচ্ছ–এ অত্যন্ত সফল হয়েছে। দেশের অন্যান্য জায়গাও দুধ উৎপাদক এবং দুধের ব্যবসা করা বেসরকারি এবং সমবায় ক্ষেত্র ভালো কাজ করছে।
এই দুটি বিষয় পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। তারা একটি উন্নত সরবরাহ শৃঙ্খল গড়ে তুলেছে। এর ফলে ফল, সব্জি ইত্যাদি ব্যবসার ক্ষেত্রেও অধিকাংশ বাজারে সরকার সরাসরি নাক গলায় না।
বন্ধুগণ,
আমি এত বিস্তারিতভাবে উদাহরণ এজন্য দিচ্ছি কারণ আজকাল দিল্লির চারপাশে কৃষকদের বিভ্রান্ত করার বড় ষড়যন্ত্র চলছে। তাঁদেরকে ভয় দেখানো হচ্ছে যে নতুন কৃষি সংস্কারের পর কৃষকদের জমি অন্যরা দখল নিয়ে নেবে।
ভাই ও বোনেরা,
আমি আপনাদের কাছে জানতে চাই, কোনও ডেয়ারিওয়ালা যদি আপনাদের সঙ্গে দুধ নেওয়ার চুক্তি করে তাহলে আপনাদের গরু–মোষ কি তারা নিয়ে যান? কেউ যদি আপনার ফল–সব্জি কেনার ব্যবসা করে তাহলে কি তারা আপনাদের জমি নিয়ে নেয়? আপনার জমি উঠিয়ে কোথায় নিয়ে যাবেন তাঁরা?
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে ডেয়ারি শিল্পের অবদান কৃষি অর্থনীতির মোট মূল্যের ২৫ শতাংশ থেকেও বেশি।
এই অবদান প্রায় ৮ লক্ষ কোটি টাকার। দুধ উৎপাদনের মোট মূল্য শস্য এবং ডালের মোট মূল্য থেকেও বেশি। এই ব্যবস্থায় পশুপালকরা স্বাধীন। আজকে দেশ জিজ্ঞাসা করছে যে এমন স্বাধীনতা শস্য ও ডাল উৎপাদনকারী ছোট ও প্রান্তিক চাষীরা কেন পাবে না?
বন্ধুগণ,
সম্প্রতি যে কৃষি সংস্কারগুলি হয়েছিল, সেগুলির জন্য অনেক অনেক বছর ধরে দাবি উঠছিল। অনেক কৃষক সংগঠনও আগে এ বিষয়ে দাবি রাখত যাতে তাঁদের শস্য যে কোনও জায়গায় বিক্রি করার বিকল্প দেওয়া হয়। আজ যাঁরা বিপক্ষে বসে কৃষকদের বিভ্রান্ত করছেন, তাঁরাও নিজেদের সরকারের সময় এই কৃষি সংস্কারগুলিকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু নিজেদের সরকারের সময় তাঁরা যে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, কৃষকদের মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে গেছেন। আজ যখন দেশ এরকম একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে, তখন ওই মানুষেরাই কৃষকদের বিভ্রান্ত করার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আমি আমার কৃষক ভাই–বোনেদের আরেকবার বলতে চাই, বারবার বলতে চাই, তাঁদের সমস্ত শঙ্কার সমাধানের জন্য সরকার ২৪ ঘন্টা প্রস্তুত। কৃষকদের হিতকে প্রথমদিন থেকে আমার সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। কৃষি বাবদ কৃষকদের খরচ কমানো, তাঁদের সামনে নতুন নতুন বিকল্প তুলে ধরা, তাঁদের আয় বৃদ্ধি এবং কৃষকদের সমস্যা লাঘবের জন্য আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের সরকারের সৎ দৃষ্টিভঙ্গি, আমাদের সরকারের সৎ প্রচেষ্টা, আর যাঁদেরকে প্রায় গোটা দেশ আশীর্বাদ দিয়েছে, দেশের প্রত্যেক প্রান্তের কৃষকরা আশীর্বাদ দিয়েছে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস দেশের কৃষকদের আশীর্বাদের এই শক্তি যাঁরা বিভ্রান্ত করছেন, যাঁরা রাজনীতি করছেন, যাঁরা কৃষকের কাঁধে বন্দুক রেখে চালাচ্ছেন, তাঁদেরকেও দেশের সমস্ত সচেতন কৃষকরা পরাস্ত করে দেবেন।
ভাই ও বোনেরা,
এটুকু বলেই আরেকবার কচ্ছবাসীকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আর কিছুক্ষণ পরেই কচ্ছ–এর ঐতিহ্য, কচ্ছ–এর সংস্কৃতিকে প্রণাম জানিয়ে আরেকটি কর্মসূচি ‘প্রলোৎসব‘-এ অংশ নেব। আরেকবার কিছুক্ষণের জন্য সেই মুহূর্তগুলি উপভোগ করার চেষ্টা করব। কচ্ছ–এ বিশ্ব প্রষিদ্ধ সাদা মরুর স্মৃতিও নিজের সঙ্গে নিয়ে আরেকবার দিল্লি ফিরে যাব। কচ্ছ উন্নয়নের নতুন নতুন উচ্চতা স্পর্শ করবে এই কামনাই আমি সব সময় করে যাব। আমি আরেকবার আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই, অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
***
CG/SB/DM
Speaking at the Foundation Stone Laying Ceremony of development projects in Kutch. https://t.co/1LwsxK9GB5
— Narendra Modi (@narendramodi) December 15, 2020
आज कच्छ ने New Age Technology और New Age Economy, दोनों ही दिशा में बहुत बड़ा कदम उठाया है: PM @narendramodi in Kutch
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
इसका बहुत बड़ा लाभ यहां के मेरे आदिवासी भाई-बहनों, यहां के किसानों-पशुपालकों, सामान्य जनों को होने वाला है: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
खावड़ा में Renewable Energy पार्क हो,
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
मांडवी में Desalination plant हो,
और अंजार में सरहद डेहरी के नए ऑटोमैटिक प्लांट का शिलान्यास,
तीनों ही कच्छ की विकास यात्रा में नए आयाम लिखने वाले हैं: PM @narendramodi
आज कच्छ देश के सबसे तेज़ी से विकसित होते क्षेत्रों में से एक है।
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
यहां की कनेक्टिविटी दिनों दिन बेहतर हो रही है: PM @narendramodi
I can never forget the time when the people of Gujarat had a ‘simple’ demand - to get electricity during dinner time.
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
Things have changed so much in Gujarat. Today’s youth in Gujarat are not aware of the earlier days of inconvenience: PM @narendramodi
Over the last twenty years, Gujarat introduced many farmer friendly schemes.
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
Gujarat was among the earliest to work on strengthening solar energy capacities: PM @narendramodi
Energy security & water security are vital in the 21st century. Who can forget the water problems of Kutch. When our team spoke of getting Narmada waters to Kutch, we were mocked. Now, Narmada waters have reached Kutch & by the blessings of Maa Narmada, Kutch is progressing: PM
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
One has to keep changing with the times and embrace global best practices. In this regard I want to laud the farmers in Kutch. They are exporting fruits abroad. This is phenomenal and indicates the innovative zeal of our farmers: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
The agriculture, dairy and fisheries sectors have prospered in Gujarat over the last two decades. The reason is- minimum interference from the Government. What Gujarat did was to empower farmers and cooperatives: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
The agriculture reforms that have taken place is exactly what farmer bodies and even opposition parties have been asking over the years.
— PMO India (@PMOIndia) December 15, 2020
Government of India is always committed to farmer welfare and we will keep assuring the farmers, addressing their concerns: PM @narendramodi
सरकार में पहले ऐसा कहा जाता था कि अगर किसी को पनिशमेंट पोस्टिंग देनी है तो कच्छ में भेज दो, और लोग भी कहते थे कि कालापानी की सजा हो गई।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 15, 2020
आज लोग चाहते हैं कि कुछ समय कच्छ में मौका मिल जाए।
आज कच्छ की पहचान बदल गई है, कच्छ की शान और तेजी से बढ़ रही है। pic.twitter.com/qtCGaukhqB
हमारे पूर्वज भी कितनी दूर की सोच रखते थे, इसका पता ठीक 118 साल पहले अहमदाबाद में लगी उस Industrial Exhibition से चलता है, जिसका मुख्य आकर्षण था- भानु ताप यंत्र।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 15, 2020
आज 118 साल बाद 15 दिसंबर को ही सूरज की गर्मी से चलने वाले एक बड़े Renewable Energy पार्क का उद्घाटन किया गया है। pic.twitter.com/7uKs2xnn9y
एक समय था, जब कच्छ में मां नर्मदा का पानी पहुंचाने की बात की जाती थी, तो कुछ लोग मजाक उड़ाते थे। लेकिन जब नर्मदा मां यहां कच्छ की धरती पर पहुंचीं, तो हर किसी की आंखों में हर्ष के आंसू बह रहे थे।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 15, 2020
आज कच्छ का किसान हो या फिर सरहद पर खड़ा जवान, दोनों की पानी की चिंता दूर हुई है। pic.twitter.com/I9L6l1NQnh
पानी को घरों तक पहुंचाने के साथ-साथ पीने के पानी के नए स्रोत बनाना भी बहुत जरूरी है।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 15, 2020
इसी लक्ष्य के साथ समंदर के खारे पानी को शुद्ध करके इस्तेमाल करने की व्यापक योजना पर भी काम हो रहा है।
मांडवी का Desalination Plant जब तैयार हो जाएगा, तो इससे लाखों परिवारों को लाभ होगा। pic.twitter.com/qcphFwZD6f
सिर्फ डेढ़ दशक में गुजरात में कृषि उत्पादन में डेढ़ गुना से ज्यादा बढ़ोतरी दर्ज की गई है।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 15, 2020
गुजरात में कृषि सेक्टर मजबूत होने का एक बड़ा कारण यह रहा है कि यहां बाकी उद्योगों की तरह ही खेती से जुड़े व्यापार में भी सरकार टांग नहीं अड़ाती है। सरकार अपना दखल बहुत सीमित रखती है। pic.twitter.com/XCSPMrJY5k
हमारी सरकार की ईमानदार नीयत और ईमानदार प्रयास को पूरे देश ने आशीर्वाद दिया, हर कोने के किसानों ने आशीर्वाद दिए।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 15, 2020
मुझे विश्वास है कि भ्रम फैलाने वाले और किसानों के कंधे पर रखकर बंदूकें चलाने वाले लोगों को देश के सारे जागरूक किसान परास्त करके रहेंगे। pic.twitter.com/jQA0PmMuWF