Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

গাজিপুরে মহারাজা সুহেলদেও-এর স্মৃতিতে ডাকটিকিট প্রকাশ এবং মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

গাজিপুরে মহারাজা সুহেলদেও-এর স্মৃতিতে ডাকটিকিট প্রকাশ এবং মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

গাজিপুরে মহারাজা সুহেলদেও-এর স্মৃতিতে ডাকটিকিট প্রকাশ এবং মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

গাজিপুরে মহারাজা সুহেলদেও-এর স্মৃতিতে ডাকটিকিট প্রকাশ এবং মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


ভারত মাতার জয়, ভারত মাতার জয়, ভারত মাতার জয়, আমি জয়ধ্বনি দেবো, আপনারা আমার সঙ্গে প্রতিধ্বনি করুন। আমি বলবো … মহারাজা সুহেলদেও … আপনারা সবাই দু’হাত ওপরে তুলে দু’বার বলবেন – অমর রহে!

 

মহারাজা সুহেলদেও – অমর রহে অমর রহে!

 

বিপুল সংখ্যায় আগত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,

 

দেশের নিরাপত্তায় নিয়োজিত অসংখ্য বীর সন্তানের জন্মদাত্রী, অসংখ্য বীর সৈনিকের জন্মদাত্রী এই মাটিতে যুগ যুগ ধরে অনেক ঋষি-মুনিরা পা রেখেছেন। এহেন পবিত্র গাজিপুরের মাটিতে আরেকবার এসে অত্যন্ত আনন্দিত।

 

আপনাদের সকলের উৎসাহ ও উদ্দীপনা সর্বদাই প্রাণশক্তির উৎস। আজও আপনারা এখানে এত শীতের মধ্যেও আমাকে আর্শীবাদ জানাতে এত বিপুল সংখ্যায় এসেছেন, সেজন্য আপনাদের সবাইকে প্রণাম জানাই।

 

বন্ধুগণ, উত্তরপ্রদেশে আজ আমার উপস্থিতিতে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে একটি বড় মেডিকেল হাব গড়ে তোলার প্রকল্প, কৃষি গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, উত্তরপ্রদেশের ক্ষুদ্র শিল্পগুলিকে মজবুত করার লক্ষ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একটু আগেই গাজিপুরে একটি মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করার সৌভাগ্য হয়েছে।

 

আজ এখানে উত্তরপ্রদেশের গৌরব বর্ধনকারী একটি পূণ্যকার্য সম্পাদিত হল। মহারাজা সুহেলদেও-এর শৌর্যগাথা, দেশের জন্য তাঁর অবদানকে স্মরনীয় করে রাখার জন্য কিছুক্ষণ আগেই তাঁর স্মৃতিতে একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়েছে। পাঁচ টাকা মূল্যের এই ডাকটিকিটটি এখন ডাকঘরের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের হাতে পৌঁছে যাবে।

 

বন্ধুগণ, মহারাজা সুহেলদেও দেশের সেই বীরদের অন্যতম, যাঁরা দেশের উন্নয়নের স্বার্থে লড়াই করেছেন। তিনি প্রত্যেক বঞ্চিত ও শোষিত মানুষের কাছে প্রেরণাস্বরূপ। তাঁর স্মৃতি আমাদের ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ মন্ত্রকে শক্তি যোগায়। বলা হয় যে, মহারাজা সুহেলদেও-এর রাজত্বে মানুষ বাড়ির দরজায় তালা লাগানোর প্রয়োজন বোধ করতেন না। নিজের শাসনকালে তিনি মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করে তুলতে, গরিবদের ক্ষমতায়নে অনেক কাজ করেছেন। সড়কপথ নির্মাণ, বাগিচা নির্মাণ, পাঠশালা চালু করা, মন্দির স্থাপনে তিনি নিজের রাজ্যকে অনেক সুন্দর রূপ দিয়েছিলেন। যখন বিদেশে হানাদারেরা ভারত ভূমিতে আক্রমণ হানে, তখন যে মুষ্টিমেয় বীরেরা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন এবং তাদের পরাস্ত করেছেন তাঁদের মধ্যে মহারাজ সুহেলদেও অন্যতম। প্রতিবেশী রাজাদের সঙ্গে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে তিনি আঘাতকারীদের আক্রমণ প্রতিহত করতে পেরেছিলেন। তিনি একজন বীর যোদ্ধা, দক্ষ রণনীতিবিদ এবং অগ্রণী সংগঠক ছিলেন। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতেন।

 

ভাই ও বোনেরা, দেশের এরকম বীর ও বীরাঙ্গণাদের পূর্ববর্তী সরকারগুলি একরকম বিস্মৃত হয়েছিল, প্রাপ্য সম্মান দেয়নি। আমাদের সরকার তাঁদের সম্মান জানানোর কাজ, নিজেদের দায়িত্ব বুঝে কাজ করে চলেছে।

 

ভাই ও বোনেরা, উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ জনপদের চিতোরাকে আমরা কখনও ভুলতে পারবো না। এই মাটিতেই মহারাজা সুহেলদেও হানাদারদের পরাস্ত করেছিলেন। এক হাজার বছর আগে তাঁর এই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখার দায়িত্ব স্বাধীন ভারতে এই প্রথম যোগীজির নেতৃত্বাধীন উত্তরপ্রদেশ সরকার নিয়েছে। একটি সুরম্য স্মারক নির্মাণের মাধ্যমে এহেন বীরপুরুষকে স্মরণের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অবহিত করানোর এই সিদ্ধান্তকে আমি অন্তর থেকে সাধুবাদ জানাই। ইতিহাসকে পুনরুদ্ধারের এই শুভ প্রচেষ্টার জন্য আমি রাজ্য সরকারকে শুভেচ্ছা জানাই।

 

ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারও দেশের নিরাপত্তার খাতিরে এবং সামাজিক জীবনকে উন্নত করার লক্ষ্যে যাঁরাই অবদান রেখেছেন, তাঁদের স্মৃতিকে ভাস্বর করে রাখতে এ ধরণের নির্মাণের পক্ষে। আমরা নিজেদের ইতিহাস, পুরাতন সংস্কৃতির সোনালি পৃষ্ঠাগুলিতে ধুলো জমতে দিতে চাই না।

 

বন্ধুগণ, মহারাজা সুহেলদেও যতবড় বীর ছিলেন, ততবড় দয়ালু এবং সংবেদনশীল ছিলেন। সংবেদনশীলতার এই সংস্কৃতিকে আমরা সরকার ও প্রশাসন ব্যবস্থায় পুনর্স্থাপনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় সরকার এবং উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সরকার সততার সঙ্গে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যাতে গরিব, পিছিয়ে পড়া, দলিত, শোষিত, বঞ্চিতদের ক্ষমতায়ন ও তাঁদের অধিকার রক্ষা সুনিশ্চিত হয়, তাঁদের আওয়াজ যাতে প্রশাসনের কানে পৌঁছয় এবং তাদের স্বার্থে কাজ হয়।

 

ভাই ও বোনেরা, আজ সরকার সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে। সরকার অনেক সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রচেষ্টা জারি রেখেছে। ভোটের খাতিরে জনপ্রিয় ঘোষণা, ফিতে কাটার ঐতিহ্য আমাদের সরকার পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। কর্মসংস্কৃতিতে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেজন্যই আজ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনে ইতিবাচক ও ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ গ্রহণের আবহ গড়ে উঠেছে। কিন্তু এই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে মজবুত ইমারত গড়ে তোলার কাজ এখনও করা হয়নি। উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিষেবার বিস্তার এই লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রেক্ষিতে দেশে সবচাইতে কম বিকশিত ক্ষেত্রগুলির অন্যতম উত্তরপ্রদেশের এই পূর্বাঞ্চলে মেডিকেল হাব গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত এই লক্ষ্যে অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।

 

ভাই ও বোনেরা, একটু আগেই যে মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করা হয়েছে, সেটির মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষ উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। পাশাপাশি, এখান থেকে অনেক মেধাবী চিকিৎসক পাশ করে বেরোবে। এলাকার মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের চিকিৎসক হওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে এই মেডিকেল কলেজ গাজিপুর জেলা হাসপাতালকে ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট করে তুলবে। এর দ্বারা গাজিপুরের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলির সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন। দীর্ঘকাল ধরেই আপনাদের এই দাবি ছিল। আপনাদের সকলের প্রিয় জনপ্রতিনিধি, আমার সহযোগী মনোজ সিন্‌হা নিয়মিত এই দাবি জানিয়ে গেছেন। পাশাপাশি, গাজিপুরে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ম্যাটারনিটি হাসপাতালের পরিষেবা গড়ে উঠেছে। জেলা হাসপাতালে আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হয়েছে। আগামীদিনে এই পরিষেবাগুলি বিস্তারিত করা হবে।

 

ভাই ও বোনেরা, গাজিপুরের এই নতুন মেডিকেল কলেজ, গোরক্ষপুরে এইম্‌স হাসপাতাল, বারাণসীতে নির্মীয়মান আধুনিক হাসপাতাল এবং পুরনো হাসপাতালগুলির বিস্তার, পূর্ব উত্তরপ্রদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে অনেক উন্নত করে তোলা হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই প্রথমবার গরিব ও মধ্যবিত্তদের স্বাস্থ্যকে এত অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত যোজনা, পিএমজেএওয়াই-কে অনেক মানুষ আদর করে ‘মোদী কেয়ার’ নাম দিয়েছে। এই আয়ুষ্মান যোজনার দ্বারা যাতে অধিকাংশ জনগণ উপকৃত হন, সেদিকে লক্ষ্য রেখে দ্রুতগতিতে কাজ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্যান্সার এবং কয়েকশ’ কঠিন রোগের ক্ষেত্রে বছরে পরিবারপিছু ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা সুনিশ্চিত হয়েছে। এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পর মাত্র ১০০ দিনের মধ্যে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ গরিব ভাই-বোন বিনামূল্যে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়েছেন, কিংবা এখনও চিকিৎসা চলছে। এর মধ্যে আমাদের উত্তরপ্রদেশের ১৪ হাজার ভাই-বোন ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। এরা ২-৫ বছর ধরে কঠিন রোগের শিকার হয়ে অসহায়ের মতো মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছিলেন। চিকিৎসার সামর্থ্য ছিল না। আজ সেই পরিবারগুলির মুখে হাসি ফুটেছে।

 

বন্ধুগণ, দেশের প্রতিটি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি এবং সুরক্ষা বিমার মতো প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। ৯০ পয়সা প্রতিদিন এবং মাসে ১ টাকা কিস্তি জমা দিয়ে সঙ্কটের সময় ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সাহায্য পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পগুলির সঙ্গে ২০ কোটিরও বেশি জনসাধারণ যুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে আমাদের উত্তরপ্রদেশের ১ কোটি ৭৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ রয়েছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই সঙ্কটে পড়া পরিবারগুলিকে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিমার টাকা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

 

বন্ধুগণ, সরকার যখন স্বচ্ছভাবে কাজ করে, যখন জনহিতকে ব্যক্তিস্বার্থের ওপরে রাখা হয়, সংবেদনশীলতা যখন প্রশাসনের স্বভাবে পরিণত হয়, তখনই এত বড় বড় কাজ অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই সম্পাদিত হয়। তখনই, সততা ও দূরদর্শিতার সঙ্গে স্থায়ী পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়।

 

বন্ধুগণ, কাশীতে গড়ে ওঠা ‘ধান গবেষণা কেন্দ্র’, বারাণসী এবং গাজিপুরে নির্মিত ‘কার্গো সেন্টার’, গোরক্ষপুরে নির্মীয়মান খাদ্য কারখানা, বানসাগরে গড়ে ওঠা সেচ প্রকল্প – সারা দেশে বীজ থেকে বাজার পর্যন্ত এমনই অনেক ব্যবস্থা গড়ে উঠছে। আমাকে বলা হয়েছে যে গাজিপুরে যে ‘পেরিশেব্‌ল কার্গো সেন্টার’ গড়ে উঠেছে তার মাধ্যমে এখানকার কাঁচা লঙ্কা এবং সবুজ মটর … আমাদের মনোজজি বলছিলেন যে, দুবাইয়ের বিক্রি হচ্ছে। কৃষকরা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি দাম পাচ্ছেন।

 

আজ যে কাজ হচ্ছে তা সততার সঙ্গে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। কৃষকরা যাতে কম বিনিয়োগে অধিক রোজগার করতে পারেন সেকথা মাথায় রেখে সততার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে।

 

ভাই ও বোনেরা, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের কৃষকরা ইতিমধ্যেই ভোটের রাজনীতি আর লোভ দেখানো প্রতিশ্রুতির অসাড়তা টের পাচ্ছেন। সরকার পাল্টাতেই ঐ দুই রাজ্যে খাদ্যের জন্য, ইউরিয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া চালু হয়েছে, পুলিশের লাঠি চলছে। কালোবাজারীরা মাঠে নেমে পড়েছে। কর্ণাটকে লক্ষ কোটি কৃষককে কৃষিঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। পেছনের দরজা দিয়ে সরকার গঠিত হয়েছিল। কিন্তু এতদিন পরও মাত্র ৮০০ জন কৃষকের ঋণ মকুব হয়েছে।

 

আপনারা আমাকে বলুন, এ কেমন প্রতিশ্রুতি? এ কেমন ছিনিমিনি খেলা? কৃষকদের কিভাবে ধোকা দেওয়া হচ্ছে তা আপনারা বোঝার চেষ্টা করুন ভাই ও বোনেরা। ঋণ মকুব তো দূর, এখন সে সব কৃষকদের পুলিশি নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। তাঁদেরকে যেন তেন প্রকারেণ ঋণ শোধের জন্য বাধ্য করা হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ, তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেশের সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হয় না।

 

২০০৯-এর নির্বাচনের আগে কি হয়েছিল আপনারা তার সাক্ষী। তখনও তারা এমনই সারা দেশের কৃষকদের কৃষিঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আমি এখানে উপস্থিত কৃষকদের কাছে জানতে চাই, ২০০৯-এর নির্বাচনে জিতে এসে তৎকালীন সরকার কি আদৌ আপনাদের ঋণ মকুব করেছিল? আপনাদের ঋণ মকুব হয়েছিল? তাহলে এমন প্রতিশ্রুতি, এমন ললিপপকে কি আপনারা বিশ্বাস করবেন? মিথ্যাবাদী, ধোঁকাবাজদের বিশ্বাস করবেন?

 

ভাই ও বোনেরা, আপনারা শুনে অবাক হবেন যে, তখন সারা দেশে কৃষিঋণ ছিল ৬ লক্ষ কোটি টাকা, আর মকুব হয়েছিল মাত্র ৬০ হাজার কোটি টাকা। এখন চিন্তা করুন ওরা কত বড় ধোঁকাবাজ! পরে, সিএজি-র রিপোর্ট থেকে জানা গেছে যে ঐ ৬০ হাজার কোটি টাকার সিংহভাগ এমন ৩৫ লক্ষ মানুষকে দেওয়া হয়েছে যারা কৃষকই নন। তারা কোনও কৃষিঋণও নেননি। আর যাঁদের সত্যি সত্যি মকুব হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে লক্ষাধিক কৃষক যথাসময়ে শংসাপত্র না পাওয়ায় তাঁদের অতিরিক্ত সুদের টাকা জমা দিতে হয়েছে। এরকম পাপ করে গেছে তারা।

 

ভাই ও বোনেরা, তাদের পাপের ফলে ঐ কৃষকরা আবার ঋণ পাওয়ার অধিকার হারিয়েছে। অনেকে মদে চুর হয়ে নিজের ও পরিবারের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। অন্যরা সুদখোর মহাজনদের থেকে অতিরিক্ত সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছে।

 

বন্ধুগণ, এভাবে তাঁদের ঘোষিত কৃষিঋণ মকুবের দ্বারা আর যাঁরাই লাভবান হন না কেন, দেশের কৃষকরা লাভবান হননি। সেজন্য আমার অনুরোধ, কংগ্রেসের এই মিথ্যা এবং বেইমানি থেকে সতর্ক থাকুন। মনে রাখবেন, কংগ্রেস সরকার স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাবগুলিও বাস্তবায়িত করে যায়নি। কৃষকদের বিনিয়োগের দেড়গুণ ন্যূনতম সমর্থন মূল্য প্রদানের জন্য স্বামীনাথন কমিশন যে সুপারিশ করেছিল তাকে কংগ্রেস সরকার বছরের পর বছর ধরে ঠান্ডাঘরে ফেলে রাখে। তারা যদি আজ থেকে ১১ বছর আগেই ঐ সুপারিশ হাতে পেয়ে মঞ্জুর করত এবং বাস্তবায়িত করত, আজও আমাদের অনেক কৃষক ভাই-বোনেদের ঋণের জন্য হা-পিত্যেশ করতে হত না। কিন্তু তাদের পাপ, তারা ঐ সুপারিশকে ফাইলচাপা দিয়ে রেখেছে, কৃষকদের ন্যূনতম সমর্থন মূল্যে বৃদ্ধি নিশ্চিত করেনি। কৃষকদের ঋণ বাড়তে থাকে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার সেই ফাইল খুঁজে বের করে এবং সুপারিশ অনুযায়ী ২২টি ফসলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সমর্থন মূল্য বিনিয়োগের দেড়গুণ নির্ধারিত করে।

 

ভাই ও বোনেরা, এরকম অনেক ইতিবাচক কাজ আমরা বিগত সাড়ে চার বছর ধরে করে চলেছি। আমাদের সরকার ছোট কৃষকদের ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত করছে। বড় বাজার ও মান্ডিগুলিতে নতুন পরিকাঠামো, নতুন নতুন পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে মান্ডিগুলিকে আধুনিক করা হচ্ছে। নতুন নতুন হিমঘর, জেলা ফুড পার্কের শৃঙ্খলা গড়ে তোলা হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ, কৃষকদের ফসল থেকে শুরু করে শিল্পের জন্য জরুরি আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি, উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে বিগত সাড়ে চার বছরে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য অনেক ক’টা প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আরও অনেক প্রকল্পেরকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ের কাজও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।

 

গতবার আমি তরিঘাট রেল-রোড পুলের শিলান্যাস করতে গাজিপুরে এসেছিলাম। আমাকে বলা হয়েছে যে অতি শীঘ্রই ঐ সেতুর কাজ সম্পূর্ণ হবে। তখন গাজিপুরের মানুষ দিল্লি ও কলকাতা যাওয়ার পথ পাবেন।

 

বন্ধুগণ, বিগত সাড়ে চার বছরে উত্তরপ্রদেশে রেল পরিষেবা অনেক উন্নত হয়েছে। স্টেশন আধুনিকীকরণ, রেললাইন দ্বিগুণ করা এবং বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ ছাড়াও অনেক নতুন ট্রেন চালু হয়েছে। গ্রামগুলিতে সড়কপথ, জাতীয় সড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ে – এই সবক’টি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই এলাকার চেহারাই বদলে যাবে। সম্প্রতি কলকাতা থেকে নদীপথে বারাণসী পর্যন্ত মালবাহী জাহাজ পরিবহণ চালু হয়েছে। গাজিপুরেও জেটি তৈরি হচ্ছে। এগুলি সব তৈরি হলে এই অঞ্চলের যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানও অবধারিতভাবে বৃদ্ধি পাবে।

 

বন্ধুগণ, সুশাসন ও স্বায়ত্তশাসনের সঙ্কল্প নিয়ে আমরা কাজ করে চলেছি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, স্বচ্ছ ভারত অভিযান, উজ্জ্বলা যোজনা, আয়ুষ্মান ভারত যোজনা, মুদ্রা যোজনা, সৌভাগ্য যোজনাগুলি সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নকে সুনিশ্চিত করছে। উন্নয়নের পঞ্চধারা – বাচ্চাদের লেখাপড়া, যুবকদের রোজগার, বয়স্কদের ওষুধ, কৃষকদের সেচ ব্যবস্থা আর প্রত্যেক নাগরিকের অভাব-অভিযোগ শুনে তাঁদের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এগুলি অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে।

 

ভাই ও বোনেরা, আপনাদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনকে উন্নত করতে আপনাদের এই চৌকিদার অত্যন্ত সততার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছে। আপনারা এভাবেই নিজেদের বিশ্বাস ও আশীর্বাদ রাখুন। এই চৌকিদারের তৎপরতায় অনেক চোরের রাতের ঘুম উড়ে গেছে। আপনাদের আস্থা ও আশীর্বাদই একদিন এই চোরদের সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।

 

আরেকবার আপনাদের নতুন মেডিকেল কলেজের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আরেকবার মহারাজা সুহেলদেও-এর মহান পরাক্রমকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি। দু’দিন পর ২০১৯ শুরু হবে। সেজন্য আপনাদের অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

 

ভারত মাতার জয় … ভারত মাতার জয়।

 

 

SSS/SB/DM/