Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

‘গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া নিয়ে’ বাজেট ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

\‘গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া নিয়ে’ বাজেট ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


“সময় বেঁধে নির্বাহের কাজ এবং কর্মসূচি রূপায়ণের প্রেক্ষাপট থেকে বাজেট পরবর্তী বিশ্লেষণ ধর্মী বুদ্ধিচর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। করদাতাদের দেয় অর্থের যথাযথ রূপায়ণ তাতে সুনিশ্চিত হয়”

“গন্তব্যে উপনীত হওয়া সম্পর্কে আমাদের লক্ষ্য আরও সহজে কী সম্পন্ন করতেই সুশাসনের ওপর আমরা অধিক গুরুত্ব দিচ্ছি”

“শেষতম দূরত্বে পৌঁছানোর অভিমুখ এবং সম্পৃক্তির নীতি পরস্পরের পরিপূরক”

“আমাদের লক্ষ্য যখন সকলের কাছে পৌঁছানো তখন বৈষম্য এবং দুর্নীতির কোনো জায়গা নেই”

“গ্রামাঞ্চল এবং আদিবাসীদের উন্নয়নের স্বার্থে শেষ সীমায় পৌঁছানোর মন্ত্রে এ বছরের বাজেট বিশেষ নজর দিয়েছে”

“এই প্রথমবার আমাদের দেশে আদিবাসী সমাজের বিপুল সম্ভাবনার ভান্ডারের সদ্ব্যবহারের বিরাট উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে”

“আদিবাসী সমাজে সব থেকে অবহেলিত শ্রেণীর কাছে দ্রুত সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার বিশেষ লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করা হয়েছে”

“সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে উচ্চাকাঙ্খী জেলা কর্মসূচি এক সফল মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে”

গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী একটি বাজেট ওয়েবিনারে ভাষণ দেন। বাজেট পরবর্তী ১২টি ওয়েবিনারের যে আয়োজন করা হয়েছে এটি তার চতুর্থ। কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৩এ ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচির সফল রূপায়ণের দিকে তাকিয়ে সরকার এবং মতামত এবং পরামর্শ চেয়ে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী সংসদে বাজেট বিতর্কের গুরুত্বের কথা জানিয়ে বলেন, এই কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে বাজেট পেশের পর অংশীদারদের মতামত এবং পরামর্শ চেয়ে বুদ্ধিভিত্তিক বিশ্লেষণাত্মক আলোচনার এই নতুন ধারা শেষ কয়েক বছর ধরে চালু করা হয়েছে। সময় বেঁধে কাজ করার কর্মসূচি রূপায়ণের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  এর ফলে করদাতাদের দেয় অর্থের যথাযথ সদ্ব্যবহার সুনিশ্চিত করা যায় বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থের পাশাপাশি উন্নয়নের স্বার্থে রাজনৈতিক সদিচ্ছাও জরুরি। সুশাসনের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে এবং কাঙ্খিত লক্ষ্য পূরণের স্বার্থে প্রতিনিয়ত নজরদারির কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুশাসনের ওপর আমরা যতো বেশি গুরুত্ব দেবো সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছনোর বিষয়ে আমাদের লক্ষ্য আরও সহজেই তাতে পূরণ করা যাবে। করোনা অতিমারী এবং মিশন ইন্দ্রধনুষে টিকাকরণ কর্মসূচির দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি বলেন, সুবিধা যাদের প্রাপ্য তাদের কাছে সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া এবং সুশাসনের শক্ত এর মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয়।

সম্পৃক্তির নীতিতে যে দৃষ্টিভঙ্গী কাজ করেছে তার ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুবিধাভোগীদের দরজায় পৌঁছানোর অভিমুখ এবং সংপৃক্তির নীতি পরস্পরের পরিপূরক। অতীতে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধার স্বার্থে দরিদ্র মানুষদেরকে সরকারের পিছনে ছুটে বেড়াতে হতো। সেই প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী এই পদক্ষেপে সরকার গরিব মানুষের দরজায় সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যেদিন আমরা সিদ্ধান্ত নিই দেশের প্রত্যেকটি এলাকার প্রত্যেকটি নাগরিকের কাছে প্রতিটি ন্যূনতম সুবিধা আমরা পৌঁছে দেব তখনই স্থানীয় স্তরে কর্মসংস্কৃতির বিপুল পরিবর্তন আমরা প্রত্যক্ষ করি। সম্পৃক্তির নীতির পিছনে এই ভাবাবেগ কাজ করেছে। আমাদের লক্ষ্য যখন সকলের কাছে পৌঁছানো তখন বৈষম্য এবং দুনীর্তির কোনো জায়গা নেই এবং এর মধ্য দিয়েই সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্য আমরা পূরণ করতে পারবো।”

এই দৃষ্টিভঙ্গীর তুলনা টেনে প্রধানমন্ত্রী পিএম স্বনিধি প্রকল্পের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে ফুটপাত হকারদের প্রচলিত ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। অনুল্লিখিত এবং যাযাবর ও আধা যাযাবর সম্প্রদায়ের স্বার্থে উন্নয়ন এবং কল্যাণ পর্ষদ গড়ে তোলা হয়েছে। গ্রামে ৫ লক্ষ সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র গঠন করা হয়েছে এবং টেলি-মেডিসিনের ক্ষেত্রে ১০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে গ্রামাঞ্চল এবং আদিবাসীদের কাছে জন-পরিষেবা পৌঁছে দিতে প্রাপকদের কাছে পৌঁছানোর মন্ত্রে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই লক্ষ্যে জন জীবন মিশন হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ৬০ হাজারেরও বেশি অমৃত সরোবরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে যার মধ্যে ৩০ হাজার সরোবর ইতিমধ্যেই নির্মাণ করা হয়ে গেছে। এই সমস্ত অভিযান ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মানুষ, যারা দশকের পর দশক ধরে এইসব পরিষেবার দিকে তাকিয়ে ছিলেন, তাদের জীবন ধারনের মানোন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হচ্ছে। আমাদের এখানেই থামলে চলবে না। আমাদের নতুন জল সংযোগ গড়তে হবে এবং জলের ব্যবহার নিয়ে নতুন প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করতে হবে। জল কমিটিগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে কী কী করা দরকার সে বিষয়ে আমাদের পর্যালোচনা করতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।

প্রধানমন্ত্রী শক্ত ভিতের ওপর নির্মিত কিন্তু ব্যয়সাশ্রয়ী বাড়ি গড়ে তুলতে কী জাতীয় প্রযুক্তির সংযোগ ঘটানো দরকার তার পন্থা-পদ্ধতি নিয়ে অংশীদারদের আলোচনা করতে বলেন। সৌরশক্তির আরও সুবিধাগত দিক খুঁজে বের করতে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলে গোষ্ঠী আবাসন মডেল গড়ে তুলতে আলোচনার ওপর জোর দেন তিনি। তিনি বলেন, দরিদ্রদের আবাসনের স্বার্থে এ বছরের বাজেটে ৮০ হাজার কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রথমবার এতো বিরাটভাবে আমাদের দেশের আদিবাসী সমাজের বিপুল সম্ভাবনার সদ্ব্যবহার ঘটানো হচ্ছে। আদিবাসী উন্নয়নকে এবারের বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। একলব্য আবাসন বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মী নিয়োগে বিপুল বরাদ্দের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইসব বিদ্যালয়গুলির শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্রদের মতামত সংগ্রহ করতে হবে যাতে বড় শহরগুলিতে এইসব ছাত্ররা সুযোগ পেতে পারে। এইসব বিদ্যালয়গুলিতে আরও বেশি অটল টিঙ্কারিং ল্যাবস গড়ে তোলার এবং স্টার্টআপ সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মশালার দিক নিয়ে তিনি তাদেরকে আলোচনা করতে বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রথমবার আদিবাসী সম্প্রদায়ের সর্বাপেক্ষা অবহেলিত শ্রেণীর স্বার্থে বিশেষ লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশের ২০০রও বেশি জেলায় ২২ হাজারেরও বেশি গ্রামে আদিবাসী বন্ধুদের কাছে আমাদের সুযোগ-সুবিধা দ্রুত পৌঁছে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে পসমান্ডা মুসলিম সম্প্রদায়েরও উল্লেখ করেন। সিকল কোষ অ্যানিমিয়া ব্যাধির হাত থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় পেতে এবারের বাজেটে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এ জন্য দেশের এক সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গীর দরকার। এই কারনেই স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জড়িত প্রত্যেক অংশীদারকে দ্রুত কাজ করতে হবে বলে তিনি জানান।

প্রাপকদের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে উচ্চাকাঙ্খী জেলা কর্মসূচি এক সফল মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অভিমুখকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে দেশের ৫০০টি ব্লকে উচ্চাকাঙ্খী ব্লক কর্মসূচি এখন শুরু করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চাকাঙ্খী ব্লক কর্মসূচির ক্ষেত্রে উচ্চাকাঙ্খী জেলার জন্য আমরা যে পন্থা-পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলাম তার তুলনামূলক নির্ণায়ক ক্ষেত্রগুলিকে আমাদের মাথায় রাখতে হবে। প্রত্যেকটি ব্লক স্তরে প্রতিযোগিতার বাতাবরণ সৃষ্টি করতে হবে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।