Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

গঙ্গা নদীকে নির্মল এবং অবিরল করে তোলার জন্য উত্তরাখন্ডে ৬টি বৃহৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী

গঙ্গা নদীকে নির্মল এবং অবিরল করে তোলার জন্য উত্তরাখন্ডে ৬টি বৃহৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী


নয়াদিল্লী, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

 

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তরাখন্ডে নমামী গঙ্গে মিশনের আওতায় ৬টি বৃহৎ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। 

শ্রী মোদী হরিদ্বারে গঙ্গা নদীর ওপর গঙ্গা অবলোকন সংগ্রহশালারও উদ্বোধন করেছেন। এ ধরণের সংগ্রহশালা দেশে এই প্রথম। তিনি ‘রোয়িং ডাউন দ্য গ্যাঞ্জেস’ বইটি প্রকাশ করেছেন এবং জল জীবন মিশনের নতুন লোগোও উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী জল জীবন মিশনের আওতায় গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পানি সমিতি (জল কমিটি)গুলির জন্য নীতি-নির্দেশিকা সম্বলিত ‘মার্গদর্শিকা’ও প্রকাশ করেছেন। 

এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা জল জীবন মিশনের উদ্দেশ্য। তিনি বলেছেন, এই মিশনের নতুন লোগো প্রতি ফোঁটা জলের সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাকে অনুপ্রাণিত করবে। 

মার্গদর্শিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গ্রামাঞ্চলে যেসব মানুষরা থাকেন তাদের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের গুরুত্ব যেমন অপরিসীম, একই ভাবে প্রশাসনিক ব্যবস্থার কাছেও এর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।  

রোয়িং ডাউন দ্য গাঞ্জেস বইটির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সংস্কৃতি, বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যের প্রতীক কেমনভাবে গঙ্গা নদী হয়ে উঠেছে সে বিষয়ে এই বইয়ে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা আছে। 

শ্রী মোদী গঙ্গা নদীকে পরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন, কারণ এই নদীর উৎস স্থল উত্তরাখন্ড থেকে সঙ্গম স্থল পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত দেশের ৫০ শতাংশ মানুষের জীবনে এই নদী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।   

নমামী গঙ্গে মিশনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এটি একটি বৃহত্তম সুসংহত নদী সংরক্ষণ প্রকল্প। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র গঙ্গা নদীর পরিচ্ছন্নতা বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়না, এই নদীর সর্বাঙ্গীন রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টিও এখানে গুরুত্ব পেয়েছে। এই নতুন ভাবনা এবং উদ্যোগের ফলে গঙ্গা নদী তার জীবন ফিরে পেয়েছে। পুরনো পদ্ধতি ব্যবহার করলে পরিস্থিতি আজও খারাপই থাকতো। পুরনো পদ্ধতিতে দূরদর্শীতা এবং সর্বসাধারণের অংশগ্রহণ- দুটিই কম ছিল। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকার লক্ষ্য অর্জনের জন্য গৃহিত কৌশলকে ৪টি ভাগে ভাগ করেছে। 

প্রথমত বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রগুলিকে একটি নির্দিষ্ট কর্মসূচির মাধ্যমে বাস্তবায়িত করা হয়েছে যাতে দূষিত জল গঙ্গায় না ফেলা হয়। 

দ্বিতীয়ত এই বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রগুলি আগামী ১০-১৫ বছরের চাহিদার কথা বিবেচনা করে তৈরি করা হয়েছে। 

তৃতীয়ত গঙ্গা নদীর তীরবর্তী শত শত বড় শহর এবং ৫ হাজার গ্রামকে খোলা স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত করা হয়েছে।  

চতুর্থত গঙ্গার উপনদীগুলিকে দূষণমুক্ত করার সব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।   

শ্রী মোদী নমামী গঙ্গে প্রকল্পের বিভিন্ন তথ্যের কথা তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। ৩০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ হয় শেষ হয়েছে, নয়তো সেগুলি পুরোদমে শেষ হওয়ার দিকে এগিয়ে চলেছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বিশেষ করে ঋষিকেশের মুনি কি রেতিতে চন্দ্রেশ্বর নগরের নর্দমার কথা উল্লেখ করেছেন। এই নর্দমা দর্শনার্থী এবং র্যাদফটরদের কাছে দৃষ্টিকটু ছিল। মুনি কি রেতিতে একটি ৪ তলা বর্জ্য নিষ্কাষণ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র গড়ে তোলা এবং নর্দমাটি বন্ধ করার উদ্যোগের তিনি প্রশংসা করেছেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়াগরাজ কুম্ভের তীর্থযাত্রীদের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে হরিদ্বার কুম্ভের দর্শনার্থীরা উত্তরাখন্ডে গঙ্গা নদীকে বিশুদ্ধ এবং পবিত্রভাবে পেয়েছেন। হরিদ্বারে গঙ্গার শত শত ঘাটগুলির সৌন্দর্যায়ন এবং নদী তীরের আধুনিক উন্নয়নের কথাও প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তীর্থযাত্রীদের জন্য গঙ্গা অবলোকন সংগ্রহশালাটি একটি বিশেষ আকর্ষণীয় কেন্দ্র হয়ে উঠবে। গঙ্গা নদীর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ঐতিহ্য সম্পর্কে এখানে আরও ভালোভাবে জানা যাবে।   

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গঙ্গা নদীকে পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি সমস্ত গাঙ্গেয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশ এবং পরিবেশের দিকটিও নমামী গঙ্গে প্রকল্পে গুরুত্ব পেয়েছে। তিনি বলেছেন জৈব চাষ এবং আর্য়ুবেদিক উপাদানের চাষের বিষয়ে সরকার একটি সর্বাঙ্গীন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। শ্রী মোদী বলেছেন, এবছর ১৫ই আগস্ট যে মিশন ডলফিন প্রকল্পের কথা ঘোষণা হয়েছে, নমামী গঙ্গে প্রকল্পের মাধ্যমেও তা শক্তিশালী হবে। 

নির্দিষ্ট নীতি-নির্দেশিকা এবং সমন্বয়ের অভাবে বিভিন্ন মন্ত্রক এবং দপ্তর জলের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ইতস্ততভাবে কাজ করত। এর ফলে সেচ এবং পানীয় জলের সমস্যা রয়ে গেছে। স্বাধীনতার এতগুলি বছর পরেও দেশে ১৫ কোটির বেশি বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া কেন সম্ভব হয়নি , সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন। 

শ্রী মোদী বলেছেন, জলশক্তি মন্ত্রক গঠন করা হয়েছে এই চ্যালেঞ্জগুলিকে যথাযথভাবে মোকাবিলা করার জন্য। তিনি বলেছেন, এই মন্ত্রক দেশের প্রতিটি বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করে চলেছে।

তিনি বলেছেন, আজ জল জীবন মিশনের আওতায় প্রতিদিন প্রায় ১ লক্ষ বাড়িতে পাইপের মাধ্যমে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মাত্র ১ বছরে দেশে ২ কোটি পরিবারের কাছে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।  

উত্তরাখন্ড সরকার গত ৪-৫ মাসের মধ্যে করোনার সময়েও ৫০ লক্ষের বেশি পরিবারের কাছে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দিয়েছে যা প্রশংসনীয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জল জীবন মিশন তৃণমূল থেকে শীর্ষ স্তরে পৌঁছানোর নীতি গ্রহণ করেছে যা আগের কর্মসূচিগুলি থেকে পুরো আলাদা। গ্রামে জল কমিটি বা পানী সমিতি এবং ব্যবহারকারীরা পুরো প্রকল্পটি তদারকি করেন। অর্থাৎ প্রকল্পে বাস্তবায়ন থেকে তা রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনের দায়িত্ব౼সবকিছু  তারাই পালন করেন। তিনি বলেছেন  জল কমিটিগুলির ৫০ শতাংশ সদস্যই যাতে মহিলা হন, এই মিশন সেটিকে নিশ্চিত করেছে । মার্গদর্শিকা নীতি-নির্দেশিকা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এর মাধ্যমে জল কমিটির সদস্যরা সঠিক দিশায় চলতে পারবেন এবং গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।  

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ বছরের দোসরা অক্টোবর থেকে জল জীবন মিশনের আওতায় ১০০ দিনের বিশেষ কর্মসূচি শুরু করা হবে। দেশের প্রতিটি বিদ্যালয় এবং অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রে পানীয় জলের সংযোগ নিশ্চিত করাই  এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকার সম্প্রতি কৃষক, শিল্প সংস্থার শ্রমিক এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বৃহৎ সংস্কার নিয়ে এসেছে। 

যাঁরা নিছক বিরোধীতা করার জন্যই এইসব সংস্কারগুলির বিরোধীতা করছেন, তিনি তাঁদের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যাঁরা দশকের পর দশক ধরে এই দেশকে শাসন করে এসেছেন তাঁরা দেশের শ্রমিক, যুব সম্প্রদায়, কৃষক এবং  মহিলাদের ক্ষমতায়ণের বিষয় নিয়ে কখনই চিন্তা-ভাবনা করেননি।  

শ্রী মোদী বলেছেন, কৃষকরা লাভজনক মূল্যে যাতে দেশের যেকোন প্রান্তে যেকোন ব্যক্তিকে তাঁদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে না পারেন এইসব মানুষরা সেটিই চান । 

প্রধানমন্ত্রী জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ডিজিটাল ইন্ডিয়া ক্যাম্পেন, আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের মতো সরকারি উদ্যোগগুলির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এই প্রকল্পগুলির ফলে জনসাধারণ উপকৃত হওয়া সত্ত্বেও বিরোধীরা এগুলির বিরোধিতা করেছেন।  

তিনি বলেছেন, এইসব লোকেরাই বিমান বাহিনীর আধুনিকীকরণ এবং বিমান বাহিনীতে আধুনিক যুদ্ধবিমান অন্তর্ভুক্ত করারও বিরোধীতা করেছেন। সরকারের এক পদ এক পেনশন নীতির বিরোধীতাও এই একই লোকেরা করেছেন। অথচ সরকার স্বশস্ত্র বাহিনীর পেনশন ভোগীদের এরিয়ার হিসেবে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি ইতিমধ্যেই দিয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই একই লোকেরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সমালোচনা করেছেন এবং সৈন্যদের কাছে এই স্ট্রাইকের বিষয়ে প্রমান চেয়েছেন। শ্রী মোদী বলেছেন এর মাধ্যমে সারা দেশের কাছে এটা স্পষ্ট যে এইসব লোকেদের আসল উদ্দেশ্য কি। 

তিনি আরও বলেছেন, আজ যারা বিরোধীতা এবং প্রতিবাদ করছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পরবেন। 

 

 

CG/CB/NS